<p style="text-align:justify">ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার সম্পদের তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমদ ও তার পরিবারের। সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি বেনজীরের নানা অপকর্মও এখন ধীরে ধীরে প্রকাশ পাচ্ছে। এবার সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যাকে ঘিরে আরেকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে বেনজীরের।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="অমিত হাবিবের জন্মদিন আজ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/04/1728019172-85d1577a9186861babab050195111499.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>অমিত হাবিবের জন্মদিন আজ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/10/04/1431698" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">অভিযোগ আছে, কক্সবাজারের টেকনাফে আলোচিত মেজর সিনহা হত্যা মামলা থেকে বাঁচানোর আশ্বাস দিয়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত তৎকালীন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশের (বরখাস্ত) কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমদ।</p> <p style="text-align:justify">সিনহা হত্যার পর একজন পুলিশ সুপারের মাধ্যমে এ টাকা দেন ওসি প্রদীপ। এ বিষয়ে অবগত আছেন এমন একজন পুলিশ কর্মকর্তাও। একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সিনহা হত্যার পর বেনজীর স্যার এক ধমকে ওসি প্রদীপ কুমার দাসের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। প্রদীপের ঘনিষ্ঠ একজন সুপারের মাধ্যমে এ টাকা দেন প্রদীপ। একইভাবে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল স্যারও মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন প্রদীপকে বাঁচানোর কথা বলে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="দায়িত্ব পেলে জামায়াতকর্মীরা সমাজকর্মী হয়ে থাকবে : ডা. শফিকুর রহমান" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/04/1728018327-b69b39ac945ef9eee3c004a21f8a39a8.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>দায়িত্ব পেলে জামায়াতকর্মীরা সমাজকর্মী হয়ে থাকবে : ডা. শফিকুর রহমান</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Politics/2024/10/04/1431695" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, সিনহা হত্যার পর নিজেদের মোবাইল এড়িয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় বেনজীর স্যার ওসি প্রদীপের সঙ্গে কথা বলেন। ওই সময় বেনজীর স্যার ওসি প্রদীপকে ধমকের সুরে বলেছিলেন, ক্রসফায়ার বাণিজ্য করে তুমি হাজার কোটি টাকা আয় করেছ। শত শত মানুষকে গুলি করে মেরেছ, এখন আমি তোমাকে কেন বাঁচাব? আমি তো আগেও কয়েকবার তোমাকে বাঁচিয়েছি।</p> <p style="text-align:justify">পরে প্রদীপকে হত্যা মামলা থেকে বাঁচানোর আশ্বাস দিয়ে শতকোটি টাকা দাবি করেন বেনজীর। এমনকি ক্রসফায়ারে নিহতদের লাশ গুনে গুনে টাকা দিতে হবে বলে ধমক দেন। পরবর্তী সময়ে একজন পুলিশ সুপারের মাধ্যমে ৫০ কোটি টাকা বেনজীরকে দেন প্রদীপ।</p> <p style="text-align:justify">পুলিশের সূত্র বলছে, সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ডের দায় থেকে প্রদীপকে বাঁচতে না পারলেও যে পুলিশ সুপারের মাধ্যমে টাকা নিয়েছেন, তাকে বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন বেনজীর। যে অপরাধের কারণে ওই পুলিশ সুপারের শাস্তি বা চারকিচ্যুত হতে পারতেন। </p> <p style="text-align:justify">অভিযোগ আছে, টেকনাফ ক্রসফায়ার বাণিজ্য ও অস্ত্রের মুখে চিহ্নিত মাদক কারবারিদের তুলে নিয়ে বা ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে শত শত কোটি টাকা আদায় করেছেন ওসি প্রদীপ। সেই বাণিজ্য থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল এবং সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমদ মোটা অঙ্কের ভাগ নিতেন বলে জানিয়েছেন তৎকালীন কক্সবাজারে কর্মরত পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা। প্রদীপ কুমার দাশ টেকনাফের ওসি থাকাকালীন পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ১৪৫ জন মানুষ ক্রসফায়ারে নিহত হন। বেশির ভাগ ক্রসফায়ারে বাণিজ্য হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="টাঙ্গাইলে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৪" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/04/1728017313-f967068cb28fb1f9729a8c6383b2e08b.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>টাঙ্গাইলে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৪</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/10/04/1431691" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ মামলায় ফাঁসির রায় হয় ওসি প্রদীপের। অভিযোগের বিষয়ে জানতে বেনজীর আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।</p> <p style="text-align:justify">ওসি প্রদীপের কাছে থেকে বেনজীরের ৫০ কোটি টাকা আদায় ও ক্রসফায়ার বাণিজ্যে লাশ গুনে গুনে টাকা দাবির বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। </p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, বেনজীর র‍্যাব ও পুলিশ দুটি বাহিনীরই প্রধান অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার প্রধান ছিলেন। সেই কারণে তিনি নিজেই বেশি অপরাধ সংঘটিত করেছেন। যারা অপরাধ করে তারা কিন্তু কিভাবে অপরাধ সংঘটিত করতে হয় সেটাও জানে, সেটাই করেছেন বেনজীর। </p> <p style="text-align:justify">ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অনেক সময় নির্মমভাবে, অনেক সময় লজ্জা পাবে, অনেক সময় মানুষকে জিম্মি করে একের পর এক অপরাধ সংঘটিত করেছেন বেনজীর। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, তার যে ক্ষমতা রয়েছে প্রতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিগত, এর বাইরে গিয়েও তিনি রাজনৈতিকভাবে বিভিন্ন পরিচয়ে তার উত্থান ঘটেছিল। এতে তিনি যৌথভাবে ক্ষমতার অপব্যহার করতে সক্ষম হয়েছেন। সঠিকভাবে বেনজীরের এসব অপরাধের বিচার করতে ব্যর্থ হলে আরো অনেক বেনজীর তৈরি হবে বলে মনে করেন তিনি। </p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, যখন যে বিষয়ে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠবে তদন্ত করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত না হলে দেশের পরিস্থিতি দিন দিন অন্ধকারের দিকে ধাবিত হবে।</p> <p style="text-align:justify">ক্ষমতার অপব্যহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে দেশজুড়ে বেনজীর আহমেদের জমিদারি রাজত্ব গড়ে উঠেছে। তথ্য অনুযায়ী, তার ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে বিভিন্ন জেলায় থাকা জমির পরিমাণ ২ হাজার ৩৮৫ বিঘা বা ৭৮৬ একর। তার সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।</p> <p style="text-align:justify">উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম এবং মধ্যাঞ্চল– সব অঞ্চলেই জমির খোঁজ মিলছে তার; যেন দেশজুড়ে তার জমিদারি। জেলায় জেলায় জমি কেনার এ অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক প্রধান বেনজীর আহমদের বিরুদ্ধে। নিজের, স্ত্রী-সন্তান, স্বজনদের নামে ও বেনামে কেনা হয়েছে কয়েক শ একর জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে পাঁচটি দেশেও তার সম্পদ গড়ার অভিযোগ আছে।</p> <p style="text-align:justify">রাজধানীসহ অন্তত ১০ জেলায় এখন পর্যন্ত পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। অন্য ৯টি জেলা হলো- গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর, সাতক্ষীরা, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, বান্দরবান ও কক্সবাজার। এসব জেলায় রয়েছে জমি, খামার, রিসোর্ট। সেন্টমার্টিন দ্বীপেও জমি  আছে তার।</p> <p style="text-align:justify">আত্মগোপনে থাকায় ও ব্যবহৃত নম্বর বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান কামাল ও বেনজীর আহমেদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।</p> <p style="text-align:justify">সূত্র : যুগান্তর</p>