<p>মো. নুরুন্নবী (৪৭) যাত্রাবাড়ীতে ব্যাটালিয়ন আনসারে কর্মরত ছিলেন। ছেলে সিফাতের সঙ্গে তার বাবার শেষ কথা হয়েছিল ৫ আগস্ট। সেদিন তিনি ছেলেকে ফোনে বলেছিলেন বাবা বাইরে থেকে আমাদের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে, এটাই হয়তো তোমাদের সঙ্গে আমার শেষ কথা।</p> <p>সত্যিই এটাই ছিল ছেলে সিফাতের সঙ্গে তার বাবার শেষ কথা। সেই থেকে নুরুন্নবীর সঙ্গে তার পরিবারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়, তার আর কোনো খোঁজ পায়নি তার পরিবার। অবশেষে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর নুরুন্নবীর মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল থেকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় তার স্ত্রী ও সন্তান বাড়ি নিয়ে যান।</p> <p>রাতে নুরুন্নবীর ছেলে সিফাত সাংবাদিকদের বলেন, ৭ আগস্ট আমরা জানতে পারি ঢাকা মেডিক্যালে অজ্ঞাত অনেকগুলো লাশ আছে। আমরা অনেক লাশ দেখেছি কিন্তু আমার বাবাকে চিনতে পারিনি। পরে আমাদের থেকে ডিএনএ টেস্টের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর আজ আমাদের জানানো হয় একটি মরদেহের সঙ্গে আপনার বাবার ডিএনএ ম্যাচ করেছে। এখন ঢাকা মেডিক্যাল থেকে আমার বাবার মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী সুধারাম থানা এলাকায় যাচ্ছি। সেখানে জানাজা শেষে আমার বাবাকে দাফন করা হবে।</p> <p>নুরুন্নবীর স্ত্রী ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, ৫ আগস্টের পর আমাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি। সে বেঁচে আছে না মারা গেছে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। পরে সেপ্টেম্বর মাসের ১৭ তারিখে ডিএনএ স্যাম্পল দেওয়া হয়। পরে আমাদের থানা থেকে খবর দেওয়া হয় আপনাদের সঙ্গে একটি মরদেহের ডিএনএ মিলে গেছে। </p> <p>জানা গেছে, নুরুন্নবীর বাড়ি নোয়াখালীর সুধারাম উপজেলার অস্বদিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুর রব। তার তিন ছেলেমেয়ে রয়েছে। গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।</p> <p>যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোশের্দ আলম বলেন, গত ৫ আগস্টে যাত্রাবাড়ী থানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অনেকেই পুড়ে মারা যায়। সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যালে রাখা হয়। অনেক পরিবার খোঁজাখুঁজি করলেও মরদেহ শনাক্ত করতে পারেনি। পরে আমরা ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করে ফরেনসিক ল‍্যাবে পাঠাই। এরপর ডিএনএ স্যাম্পলের রিপোর্ট আসে। </p> <p>উল্লেখ্য, নুরুন্নবী বি-বাড়িয়া ৫ ব্যাটালিয়ানে কর্মরত ছিলেন। গত ১৯ জুলাই তার ঢাকায় বদলি হয়। পরে ২ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় বদলি হয়।</p>