<p>২০২৫ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক একটি উচ্চ পর্যায়ের কনফারেন্স আয়োজনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে সাধারণ পরিষদের রেজ্যুলেশনে। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে নির্দিষ্ট সময়সীমা ভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণে সকল অংশীজনের সমন্বয়ে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।</p> <p>জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেছেন, ‘আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার স্বার্থে এবং আমাদের নিরাপত্তার জন্য মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বপ্রণোদিত ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ আজ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে রেজ্যুলেশন গৃহীত হওয়ার পরে প্রদত্ত বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি। </p> <p>ওআইসি এবং ইউরোপিও ইউনিয়ন কর্তৃক যৌথভাবে উপস্থাপিত ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক রেজ্যুলেশনটি আজ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। জাতিসংঘের ১০৬ টি সদস্যরাষ্ট্র এটি কো-স্পন্সর করে, যা এই রেজ্যুলেশনের প্রতি ব্যপক আন্তর্জাতিক সমর্থনের প্রতিফলন। </p> <p>রেজ্যুলেশনটিতে মিয়ানমারে ২০২৫ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক একটি উচ্চ পর্যায়ের কনফারেন্স আয়োজনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ। কনফারেন্সে রোহিঙ্গাদের স্বপ্রণোদিত, নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনসহ এই সংকটের টেকসই সমাধান নির্ভর পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য আলোচনা করা হবে।</p> <p>উল্লেখ্য, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে রোহিঙ্গা বিষয়ে এই উচ্চ পর্যায়ের কনফারেন্স আয়োজনের আহবান জানিয়েছিলেন। এবার অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা মুসলমানসহ সকল শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের অধিকার নিশ্চিত করাসহ টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানানো হয়েছে রেজ্যুলেশনটিতে।</p> <p>এ ছাড়া রেজ্যুলেশনটিতে হত্যা, বাড়িঘর পুড়িয়ে ফেলা, মানবিক সহায়তা প্রদানে বাধা, বিশেষ করে শিশুসহ রোহিঙ্গা মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জোরপূর্বক নিয়োগের মত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তুলে ধরা হয়। অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য জবাবদিহিতার সকল প্রক্রিয়াকেও সমর্থনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। </p> <p>এ ছাড়াও রেজ্যুলেশনটি একটি আঞ্চলিক সংস্থা হিসেবে আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দেয় এবং সংস্থাটির পাঁচ-দফা ঐক্যমত্য সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নে গৃহীত উদ্যোগসমূহ তুলে ধরে।</p> <p>রাষ্ট্রদূত মুহিত সাধারণ পরিষদে বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতি একটি জটিল ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করছে। গত সাত বছরেও সংকটের মূল কারণসমুহ নিরসনে কোনো বাস্তব অগ্রগতি সাধিত হয়নি। তিনি রোহিঙ্গা মুসলমানদের প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানান। </p> <p>তিনি রোহিঙ্গা মুসলমানদের প্রত্যাবর্তন না হওয়া পর্যন্ত তাদের মানবিক সহযোগিতা চালু রাখার জন্য পর্যাপ্ত অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।</p>