<p style="text-align:justify">দেশের ২০৬ জন পিএইচডি এবং এমফিল ডিগ্রিধারী শিক্ষক-শিক্ষিকাকে সংবর্ধনা দিয়েছে মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর গাউসুল আজম কমপ্লেক্সে তাদের এই বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।</p> <p style="text-align:justify">বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীনের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম।</p> <p style="text-align:justify">অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, আলেমদের মধ্যে এত ডক্টরেট ডিগ্রিধারী একসঙ্গে একত্র হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। এর আগে কখনো এমনটি হয়নি।</p> <p style="text-align:justify">ডিগ্রিধারীদের উদ্দেশে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম বলেন, ‘অনেক শ্রমের ফল হলো একটি ডিগ্রি। তবে এসব ডিগ্রি এবং গবেষণা যাতে দ্বীনের জন্য কাজে আসে এটা মাথায় রাখতে হবে। এমন বিষয়ে মাঝে মাঝে গবেষণা করা হয় যেটি নিয়ে হাসাহাসি হয়। বরং যুগের চাহিদা, উম্মাহর চাহিদার প্রতি দৃষ্টি রেখে সেসব বিষয়ের ওপর গবেষণা করেন, ডিগ্রি অর্জন করেন। আপনাদের গবেষণা, প্রবন্ধ, লেখা যাতে প্রত্যেক মানুষকে আকৃষ্ট করে।’</p> <p style="text-align:justify">ড. মো. শামছুল আলম আরো বলেন, গবেষণা ছাড়া পৃথিবীর কোনো জাতি উন্নত হতে পারেনি। ইউরোপ-আমেরিকা বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, এর অন্যতম কারণ গবেষণা। প্রতিবছর যে নোবেল দেওয়া হয় তা উন্নত বিশ্বের লোকেরা পায়। কারণ তারা প্রতিনিয়ত গবেষণা করছেন। এ জন্য গবেষণা ও চিন্তা দরকার। শুধু ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার জন্য কিংবা মাহফিলে বক্তব্য দিতে গিয়ে নামের আগে ডক্টরেট বসানোর জন্য যাতে ডিগ্রি অর্জন না হয়। গবেষণা এমন বিষয়ে করেন, এমন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন, যা উম্মাহর জন্য, দ্বীনের জন্য কাজে লাগবে।’ </p> <p style="text-align:justify">বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, ‘আমরা যে সমাজ চাই, যে সমাজের স্বপ্ন দেখি আগামী দিনে বাংলাদেশে সেরকম সমাজ হবে। তবে এজন্য আমাদের আরো লড়াই করতে হবে, লড়াই করেই আমরা বিজয়ী হব। যারা পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন তাদেরকে অবশ্যই বর্তমান জেনারেশনকে বুঝতে হবে। মাদরাসার নিজস্ব ছাত্র-ছাত্রীদের ওপরে গবেষণা করতে হবে। আগামী দিনের সমাজের রূপরেখা কী হবে সেটা আপনারা তৈরি করেন। যারা মাদরাসা থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন তাদেরকে অবশ্যই বর্তমান জেনারেশনকে বুঝতে হবে, তাদের (নতুন জেনারেশন) চিন্তা-চেতনা কী এগুলো জানতে হবে। এগুলো নিয়ে পড়াশুনা, গবেষণা করতে হবে। মাদরাসার নিজস্ব ছাত্র-ছাত্রীদের ওপরে গবেষণা করতে হবে।’</p> <p style="text-align:justify">ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে নারীদের ভূমিকার কথা তুলে ধরে এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, ‘নারীরা এই সমাজের ৫০ শতাংশ। তাদেরকে কর্মক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, সম্মান দিতে হবে। তবে তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতেই আসতে হবে। সমাজ গঠনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে মায়েদের। মা যদি ইমানদার না হয় তাহলে রাষ্ট্রের সম্পদ বাড়িয়েও কোনো কাজ হবে না। কারণ প্রতিটি সন্তানকে সু-সন্তান হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মূখ্য ভূমিকা পালন করেন একেকজন মা।’</p> <p style="text-align:justify">জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সহসভাপতি অধ্যক্ষ ড. মাওলানা এ কে এম মাহবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. শাহনওয়াজ দিলরুবা খান, জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী, অধ্যক্ষ মাওলানা আ ন ম আবুবকর সিদ্দিক, অধ্যক্ষ ড. মাওলানা সৈয়দ শরাফত আলী, মাওলানা আব্দুল লতিফ শেখ, অধ্যক্ষ মাওলানা মনোয়ার আলী, অধ্যক্ষ ড. মাওলানা মোর্শেদ আলম ছালেহী, অধ্যক্ষ মাওলানা এজহারুল হক, ড. মাওলানা ইদ্রিস খান, অধ্যক্ষ ড. মাওলানা আব্দুল বাতেন, ড. মাওলানা ইবরাহীম আনোয়ারী।</p>