<p style="text-align:justify">৫৩তম জাতীয় সমবায় দিবসে সমবায় পুরস্কার প্রদান করা হয় গত ২ নভেম্বর। তবে এবার নীতিমালা অমান্য করে পুরস্কারের সংখ্যা কমানো, সোনার পদকের পরিবর্তে পিতলের পদক এবং পুরস্কার দেওয়ায় ক্ষেত্রে অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের এলাকাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করায় এক সমবায়ীকে পুরস্কার বিতরণের দিন পুলিশে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">জানা গেছে, জাতীয় সমবায় পুরস্কার নীতিমালায় ব্যক্তিপর্যায়ে তিনজন সমবায়ী এবং ১০ প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও এবার পুরস্কারের সংখ্যা কমিয়ে সাতটি সমিতি এবং ব্যক্তিপর্যায়ে তিনজন সমবায়ীকে পুরস্কৃত করা হয়। সেই পুরস্কারে আবার জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এবার অজানা কারণে ব্যবসায়ী, মুক্তিযোদ্ধা ও গৃহায়ণ—এ তিন ক্যাটাগরির সমবায় সমিতিকে পুরস্কৃত করা হয়নি। জানা গেছে, পুরস্কারের সংখ্যা কমানোর মতো ঘটনা সমবায় অধিদপ্তরের ১২০ বছরের ইতিহাসে আর কখনো হয়নি।  </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="জুলাইয়ের পর থেকে বন্ধ ভাতা, বিপাকে দরিদ্র জনগোষ্ঠী" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/22/1732240011-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>জুলাইয়ের পর থেকে বন্ধ ভাতা, বিপাকে দরিদ্র জনগোষ্ঠী</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/22/1449345" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">এ নীতিমালার অনুচ্ছেদ-৪(ক)(খ)(গ) উল্লেখ আছে, শ্রেষ্ঠ সমবায় সমিতি ও শ্রেষ্ঠ সমবায়ীরা পুরস্কার হিসেবে একটি সোনার পদক (২১ ক্যারেটের ১০ গ্রাম), একটি সম্মাননা সনদ ও একটি লাখ টাকার অর্থমূল্য প্রদান করা হয়। পুরস্কারের সোনার পদকটিতে কী পরিমাণ সোনা থাকবে তা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলেও এবার দেওয়া হয় পুরোটাই পিতলের ক্রেস্ট। সংক্ষুব্ধ সমবায়ীরা বলছেন, পদকে সোনার পরিমাণের কথা নীতিমালায় সুস্পষ্টভাবে লেখা থাকলেও যা করা হয়েছে, তা জাতীয় সমবায় পুরস্কার নীতিমালার পরিপন্থী।</p> <p style="text-align:justify">তবে সমবায় অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এই দুটো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। তাঁদের মধ্যে তিন কর্মকর্তা বলেছেন, মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তটি লিখিত আকারে হয়নি, মৌখিকভাবে হয়েছে। তবে একজন কর্মকর্তা দাবি করেছেন, মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তটি লিখিত ছিল।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বাণিজ্যযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এশিয়ার অর্থনীতি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/22/1732225649-85b6f89b41cae26786ac72365fff771b.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বাণিজ্যযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এশিয়ার অর্থনীতি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/business/2024/11/22/1449343" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">এদিকে এবার খুলনা বিভাগে চারটি, ঢাকা বিভাগে তিনটি, চট্টগ্রাম বিভাগে দুটি, রাজশাহী বিভাগে একটি পুরস্কার দেওয়া হলেও বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট বিভাগে কোনো সমবায় পুরস্কার দেওয়া হয়নি। অভিযোগ আছে, সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালকের বাড়ি যশোর জেলায়। আঞ্চলিকতাদুষ্ট হয়ে এই কর্মকর্তা খুলনা বিভাগে চারটি পুরস্কার প্রদানে প্রভাব খাটান। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করায় এক সমবায়ীকে পুরস্কার বিতরণের দিন পুলিশে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">কিংশুক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত সমবায়ী এসএ মাহমুদী বলেন, ‘দেশের সমবায়ে সমবায়ী এবং সমবায় অধিদপপ্তর কোনোটিই ভালো নেই। আমি ৫৮ কোটি টাকা রিজার্ভ রেখে ২৩ বছর পর কিংশুক কর্মজীবন থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিই। পরবর্তী নেতৃত্বে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়ার পথে হাঁটে। অথচ এই লুটপাট হওয়া প্রতিষ্ঠানটিও স্বর্ণপদক পায়। অর্থাৎ এই পদকপ্রাপ্তিতেও রয়েছে শুভংকরের ফাঁকি।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘এ বছর জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন নিয়ে আমি অতিরিক্ত নিবন্ধক হাফিজুল হায়দারকে জানাই, স্বর্ণপদক ব্র্যান্ডকে নিয়ে যাতে অনিয়ম না হয়। এ ধরনের মতামতে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। আমি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গেলে পুলিশি হয়রানিসহ আমাকে থানায় নিয়ে আটক রাখে।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="পরমাণু বোমা বানাতে ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়িয়েছে ইরান" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/22/1732224604-edab7ba7e203cd7576d1200465194ea8.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>পরমাণু বোমা বানাতে ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়িয়েছে ইরান</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/11/22/1449341" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">পেশাভিত্তিক সমবায় ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ সমবায় পদক পায় আইসিডিডিআরবি কর্মচারীবৃন্দের বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড। এই সমিতির ম্যানেজার মো. আসাদুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ক্রেস্টটি কিসের আমি বলতে পারছি না।’</p> <p style="text-align:justify">কৃষিভিত্তিক/সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ সমবায় সমিতির পুরস্কার পায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি এলাকার হারুয়ালছড়ি খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড। সমিতির চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের একটি সিলভার ক্রেস্ট, একটি সনদসহ এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। শুনেছিলাম ক্রেস্টে স্বর্ণ থাকবে। পরে দেখি তা দেওয়া হয়নি।’</p> <p style="text-align:justify">চট্টগ্রামের পাঁচলাইশের বাকলিয়া মহিলা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের ম্যানেজার রীনা বেগম পুরস্কারপ্রাপ্ত তিনজন সমবায়ীর একজন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা জানতাম স্বর্ণের ক্রেস্ট দেবে। কিন্তু এটি তো স্বর্ণের না, পুরোটাই পিতলের।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ন্যায্য মূল্যে টিসিবির চাল, ডাল, তেল ও আলু" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/22/1732222098-4e59fb03b2e075daa8e0d19d84f5633f.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ন্যায্য মূল্যে টিসিবির চাল, ডাল, তেল ও আলু</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2024/11/22/1449338" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">তবে সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও ডিজি মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সোনার বদলে পিতল এবং ১৩ সমবায়ী পুরস্কারের জায়গায় ১০টি করা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত ছিল। কারা পুরস্কার পাবেন, সেই সিদ্ধান্তও ছিল মন্ত্রণালয়ের।’</p> <p style="text-align:justify">অতিরিক্ত সচিব (আইন ও প্রতিষ্ঠান) মুনিমা হাফিজ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সোনার বদলে পিতল দেওয়ার বিষয়টি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হয়েছে। এটি লিখিতভাবে সিদ্ধান্তও আছে, তবে সেটি ফাইলের তথ্য, দেখানো যাবে না।’</p> <p style="text-align:justify">জানা যায়, সমবায়ের পুরস্কারের বিষয়গুলো দেখে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রশাসন অধিশাখা-২। দুই রকম তথ্য সামনে আসায় কালের কণ্ঠ কথা বলে এই শাখার উপসচিব ড. অশোক কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার বিভাগ দেখে, কিন্তু আমি তখন চীনে ছিলাম। কী হয়েছিল বলতে পারছি না।’ পরে একই বিষয়ে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (সমবায়) মোহাম্মদ শফিউল আরিফ বলেন, ‘পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমি ছিলাম না। আমি এক মাস আগে জয়েন করেছি। এই বিষয়ে সমবায়ের ডিজি ভালো বলতে পারবেন। তাঁরাই এটি আয়োজন করেছেন।’</p>