<p>বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ৬১.১ শতাংশ মানুষ মনে করেন এক বছরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। তবে আরেকটি প্রশ্নের উত্তরে বেশির ভাগ মানুষ (৬৫.৯ শতাংশ) বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার যা যা সংস্কার করা প্রয়োজন মনে করবে তার সব সংস্কার করার পরই নির্বাচন আয়োজন করা উচিত। আর শুধু নির্বাচনসংক্রান্ত জরুরি সংস্কারগুলো শেষ করে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন ৩১.৯ শতাংশ মানুষ।</p> <p>শনিবার (২৩ নভেম্বর) ভয়েস অব আমেরিকা বাংলায় প্রকাশিত এক জরিপ এ তথ্য জানিয়েছে। ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর কেমন আছে বাংলাদেশ—এ নিয়ে কী ভাবছে দেশের নাগরিকরা’—এ বিষয়ে গত ১৩ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত ভয়েস অব আমেরিকা দেশব্যাপী এই জরিপ করে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বহু শাসক দেখেছি, পরিবর্তন দেখিনি : ফয়জুল করীম" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/23/1732372444-30e62fddc14c05988b44e7c02788e187.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বহু শাসক দেখেছি, পরিবর্তন দেখিনি : ফয়জুল করীম</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Politics/2024/11/23/1449817" target="_blank"> </a></div> </div> <p>জারিপে দেখা গেছে, ১৮.৭ শতাংশ মানুষ চান দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন, আর ৮.৬ শতাংশ নির্বাচন চায় ১৮ মাসের মধ্যে। সবচেয়ে কম ৫.৮ শতাংশ জনগণ চার বছর বা তার চেয়ে বেশি সময় পর আগামী জাতীয় নির্বাচন হওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। কত দ্রুত নির্বাচন হওয়া উচিত—এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলেছে ৪.৬ শতাংশ মানুষ। আর নির্বাচন কবে হওয়া উচিত এ সম্পর্কে কিছু বলতে চায়নি ১.১ শতাংশ।</p> <p>জরিপটি ভয়েস অব আমেরিকা বাংলার এডিটরিয়াল নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালনা করে গবেষণা ও জরিপ প্রতিষ্ঠান ওআরজি-কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেড। ভয়েস অব আমেরিকার ঠিক করে দেওয়া সুনির্দিষ্ট (ক্লোজ অ্যান্ড) প্রশ্নমালার ওপর ভিত্তি করে কম্পিউটার অ্যাসিস্টেড টেলিফোন ইন্টারভিউইংয়ের মাধ্যমে দেশের আটটি বিভাগে ১৮ বছর বা এর চেয়ে বেশি বয়সী এক হাজার মানুষের মধ্যে জরিপটি পরিচালিত হয়। জরিপটি করা হয় দ্বৈবচয়ন ডিজিটাল ডায়ালিং পদ্ধতিতে। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="জ্বালানি খাতের চুক্তি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হবে : উপদেষ্টা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/23/1732371699-bcffa0735052f0ce45bffb17c7e011c5.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>জ্বালানি খাতের চুক্তি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হবে : উপদেষ্টা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/business/2024/11/23/1449815" target="_blank"> </a></div> </div> <p>এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, জরিপটিতে মার্জিন অব এরর ৩.১ শতাংশ। জরিপটির উত্তরদাতারা প্রায় এক মাস আগে যেহেতু তাদের মতামত জানিয়েছেন, তাই এখন জরিপটি করলে এর ফলাফল অনেক ক্ষেত্রেই ভিন্ন হতে পারে। এই জরিপের ফলাফল নিয়ে আগামী কয়েক দিন কয়েক পর্বে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলেও জানিয়েছে ভয়েস অব আমেরিকা। </p> <p>জরিপে অংশ নেওয়া শহরের জনগণের ৬০.৪ শতাংশ ও গ্রামে বাস করে এমন ৬১.৪ শতাংশ আগামী এক বছরের মধ্যে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন চায়। জরিপে অংশ নেওয়া পুরুষের ৫৭.৩ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ নির্বাচন চায় এক বছরের মধ্যে। </p> <p>তরুণদের মধ্যে (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) ৬২.৪ শতাংশ এক বছরের মধ্যে নির্বাচন চায় আর ৩৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের যারা জরিপে অংশ নিয়েছেন, তাদের মধ্যে এক বছরের মধ্যে নির্বাচন চায় ৫৯.৮ শতাংশ।<br /> শহরাঞ্চলের ১৮.৯ শতাংশ ও গ্রামীণ এলাকার ১৮.৬ শতাংশ জরিপে অংশগ্রহণকারী চান আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন। দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছে জরিপে অংশ নেওয়া পুরুষের ২০.৩ শতাংশ ও নারীদের ১৭.১ শতাংশ। ১৮ থেকে ৩৪ বছরের তরুণদের ১৫.২ এবং ৩৫ ও তার চেয়ে বেশি বয়সের জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ২২.৪ শতাংশ মনে করে দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে আগামী নির্বাচন হওয়া উচিত।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="আরো বাড়ল সোনার দাম, রবিবার থেকে কার্যকর" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/23/1732371192-156200e8119437d76b03577a18fefa9f.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>আরো বাড়ল সোনার দাম, রবিবার থেকে কার্যকর</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/business/2024/11/23/1449813" target="_blank"> </a></div> </div> <p>১৮ মাসের মধ্যে আগামী নির্বাচন করার পক্ষে মত দিয়েছেন শহরের ১০.৩, গ্রামের ৮, পুরুষের ১২, নারীদের ৫.২, তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) ৮.৬ এবং ৩৫ বছর বা এর থেকে বেশি বয়সীদের মধ্যে ৮.৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী। চার বছর বা তার চেয়ে বেশি সময় পর নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছেন শহরের ৬.২, গ্রামের ৫.৭, পুরুষের ৬.৯, নারীদের ৪.৮, তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) ৭.৬, ৩৫ বছর বা এর থেকে বেশি বয়সীদের ৪ শতাংশ মানুষ।</p> <p>‘আপনি কি মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকার যা যা সংস্কার করা প্রয়োজন মনে করবে সব সংস্কার করার পর নাকি শুধু নির্বাচনসংক্রান্ত জরুরি সংস্কার করার পর নির্বাচন আয়োজন করা উচিত?’—এমন প্রশ্নের উত্তরে জরিপে বেশির ভাগ মানুষ (৬৫.৯ শতাংশ) মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার যা যা সংস্কার করা প্রয়োজন মনে করবে তার সব সংস্কার করার পরই নির্বাচন আয়োজন করা উচিত। শুধু নির্বাচনসংক্রান্ত জরুরি সংস্কারগুলো শেষ করে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত ৩১.৯ শতাংশ উত্তরদাতার। ১.৬ শতাংশ উত্তরদাতা এ ব্যাপারে কিছু জানেন না এবং দশমিক ৫ শতাংশ এ প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেছে।</p> <p>অন্তর্বর্তী সরকার যে যে সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন সেসব সংস্কার শেষ করেই আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা উচিত বলে যারা মনে করেন, তাদের বেশির ভাগ বিচার বিভাগ, সংবিধান, অর্থনৈতিক খাত, পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনসংক্রান্ত সংস্কারগুলো করার পক্ষে মত দিয়েছেন। তাদের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন ৯৬.৫ শতাংশ উত্তরদাতা। পুলিশ সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন ৯২.৩ শতাংশ, বিচার বিভাগ সংস্কারের পক্ষে ৯৫.৩ শতাংশ এবং অর্থনৈতিক খাতে সংস্কারের পক্ষে ৯৬.৪ শতাংশ উত্তরদাতা মত দিয়েছেন। সংবিধান সংস্কার চান ৯২.৫ শতাংশ উত্তরদাতা।</p> <p>আওয়ামী লীগ সরকারের তুলনায় অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনায় ভালো, খারাপ নাকি একই রকম করছে—এ প্রশ্নের জবাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ সরকারের তুলনায় দেশ পরিচালনায় ভালো করছে।  বাংলাদেশের ৫৮.৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের তুলনায় দেশ পরিচালনায় ভালো করছে। যদিও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ৪০.৫ শতাংশ মানুষের মতে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ শাসনে আওয়ামী লীগের চেয়ে খারাপ করছে বা একই রকম পারফর্ম করছে। যারা মনে করছেন অন্তর্বর্তী সরকার আগের সরকারের চেয়ে দেশ শাসনে খারাপ করছেন তাদের সংখ্যা ২০.৪ শতাংশ আর একই রকম করছে বলে মত দিয়েছে ২০.১ শতাংশ। জরিপে অংশ নেওয়াদের মধ্যে দশমিক ৮ শতাংশ এ প্রশ্নের উত্তরে বলেছে তারা জানে না আর দশমিক ৩ শতাংশ এ প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হয়নি।</p> <p>শহরে থাকেন, তুলনামূলকভাবে বেশি সংখ্যায় সেসব উত্তরদাতারা (৬১.৯ শতাংশ) যারা গ্রামে থাকেন, তাদের চেয়ে (৫৭.৩ শতাংশ) অন্তর্বর্তী সরকার বেশি ভালো করছে বলে মত দিয়েছেন। পুরুষ উত্তরদাতারা (৬২ শতাংশ) নারী উত্তরদাতাদের (৫৪.৮ শতাংশ) তুলনায় অন্তর্বর্তী সরকারের দেশ পরিচালনায় বেশি ভালো বলে মত দিয়েছেন। তরুণ উত্তরদাতাদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) মধ্যে ৫৮.৭ শতাংশ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার আগের সরকারের চেয়ে ভালো করছে আর ৩৫ বা তার চেয়ে বেশি বয়সীদের মধ্যে এই মত জানিয়েছেন ৫৮.১ শতাংশ উত্তরদাতা। <br /> ৬৩.২ শতাংশের মতে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকার আগের সরকারের চেয়ে ভালো করছে। ২১.৪ শতাংশ মনে করে, এটি এখন আরো খারাপ, আর ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ মনে করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দুই সরকারের আমলে একই।</p>