<p>প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলা একাডেমিতে। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় বাংলা একাডেমিতে এ জানাজা হয়। কবির দ্বিতীয় জানাজা বাদ জোহর জাতীয় প্রেসক্লাবে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে তাকে।</p> <p>কবির মরদেহ গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় নেওয়া হবে না বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কবির বড়ভাই দুলাল এ হাফিজ।</p> <p>গতকাল শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ‘একজন কষ্টের ফেরিওয়ালা’ কবি হেলাল হাফিজ। শাহবাগে সুপার হোমে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। মৃত্যুর আগে তিনি একা সেই আবাসিক হোটেলে থাকতেন। মৃত্যুকালে কবির বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।</p> <p>কবির মৃত্যুতে দেশের সব শ্রেনিপ্রেশার মানুষ শোক জানাচ্ছেন। তার কবিতার ধারে হৃদয় কাটেনি, এমন মানুষ পাওয়া হয়তো দুস্কর। সমকালীন সময়ে তাকে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কবি বলা হয়। বাংলা ভাষায় একটি মাত্র বই লিখে আর কোনো কবি এতো জনপ্রিয় হয়নি।</p> <p>কবি হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ সালে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে। তার শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্য কেটেছে নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়ায়।  ১৯৬৫ সালে নেত্রকোনা শহরের দত্ত উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৭ সালে নেত্রকোনা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেই যে রাজধানীবাসী হন, আর ফেরেননি নিজ এলাকায়।</p> <p>কবি হেলাল হাফিজের লেখালেখির সূচনা ঘটে ষাটের দশকের উত্তাল সময়ে। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময় রচিত ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ কবিতাটি তাকে কবিখ্যাতি এনে দেয়। সাংবাদিকতা করার দরুণ কবি ওই সময়ের উত্তাল পরিবেশের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হতে পেরেছিলেন। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'যে জলে আগুন জ্বলে' লেখার ঠিক ২৬ বছর পর ২০১২ সালে দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ লিখেন। বহুল প্রতিক্ষীত সেই 'কবিতা একাত্তর'ও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।</p> <p>স্বল্পপ্রজ এই কবি বিশের দশকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তার কবিতার ভাষা সঠিক সময়ে সঠিক শব্দকে ধারণ করায় সময়ের প্রাসঙ্গিক কবি বলেই পরিচিত। তাছাড়া প্রেম ও দ্রোহের কবি হিসেবেও তিনি জনপ্রিয়। শুক্রবার দুপুরে কবির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরার পর সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে।</p>