তিনজনকে বাদ দিয়ে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার চূড়ান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
তিনজনকে বাদ দিয়ে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার চূড়ান্ত
সংগৃহীত ছবি

স্থগিত করা সাহিত্য পুরস্কারের তালিকা কিছুটা বদলে পুনঃপ্রকাশ করেছে বাংলা একাডেমি। আগের তালিকা থেকে তিনজন লেখককে বাদ দিয়ে নতুন তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

বাদ পড়া তিনজন হলেন মোহাম্মদ হাননান, ফারুক নওয়াজ এবং সেলিম মোরশেদ। তারা যথাক্রমে মুক্তিযুদ্ধে, শিশুসাহিত্যে এবং কথাসাহিত্যে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন।

এদের মধ্যে কথাসাহিত্যে ২০২৪ সালের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারের মনোনীতদের তালিকায় থাকা সেলিম মোরশেদ আগেই বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে স্থগিতকৃত পুরস্কৃত লেখক তালিকা চূড়ান্ত করে প্রকাশ করে বাংলা একাডেমি। 

গত ২৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলা একাডেমি জানায়, এবার ১০ জন সাহিত্যিক বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন। এরপর সমালোচনার মুখে দুদিনের মাথায় শনিবার সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক আরেক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে পুরস্কার স্থগিতের সিদ্ধান্তের কথা জানান।

অনধিক তিন কর্মদিবসের মধ্যে পুনর্বিবেচনার পর তালিকাটি পুনঃপ্রকাশ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয় সেই বিজ্ঞপ্তিতে। চারদিনের মাথায় বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে তালিকাটি পুনঃপ্রকাশ করা হয়। 

স্থগিত তালিকায় থাকা মনোনীত লেখক সেলিম মোরশেদ গত সোমবার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারকে প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর গত মঙ্গলবার ফেসবুকে নিজের আইডি থেকে স্ট্যাটাস দিয়ে ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার কমিটি ২৪’ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানান মোরশেদ শফিউল হাসান।

ফেসবুকে মোরশেদ শফিউল হাসান লিখেছেন, ‘বিগত সরকারের আমলে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে যেমন, সেভাবে এখন থেকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রদানের বেলায়ও লেখকের বিষয়ে গোয়েন্দা রিপোর্ট এবং তাঁর অতীত রাজনৈতিক পরিচয় বা কার্যক্রম বিবেচনায় আনতে হবে, এমন ধারণা আমাদের কারো চিন্তায় আসেনি। আসা উচিত ছিল হয়তো! সামাজিক মাধ্যমে সংস্কৃতি উপদেষ্টার পরপর দুটি পোস্ট পড়ার পরই প্রথম আমি এ বিষয়ে সচেতন হই। এবং পুরস্কার পুনর্বিবেচনার কথা ওঠার পর, আত্মসম্মানবোধ থেকে এবং নিজের বিচারবুদ্ধির ওপর আস্থা রেখে (কমিটির অন্য সদস্যদের জানিয়েই) এই প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে পুরোপুরি সরিয়ে নিই।’

এর ভেতর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে বাংলা একাডেমি ধারণ ও লালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে মন্তব্য করে প্রতিষ্ঠানটিকে স্বৈরাচারের দোসরমুক্ত করার দাবি জানিয়েছে লেখকদের দুটি সংগঠন। গত শনিবার দুপুরে বাংলা একাডেমির প্রধান ফটকে আয়োজিত একটি সমাবেশ থেকে এই দাবি তোলা হয়েছে।

সমাবেশ থেকে ২০২৪ সালের বাংলা একাডেমি ঘোষিত সাহিত্য পুরস্কার বাতিল, একাডেমির আমূল সংস্কারসহ আরো কয়েকটি দাবি জানানো হয়।

বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার নিয়ে বিতর্ক পুরনো। প্রতি বছরই পুরস্কার ঘোষণার পর তীব্র বিতর্ক ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এমনকি পুরস্কারদাতা এবং পুরস্কৃতদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। এ পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের নজিরও একেবারে নতুন নয়। কবি জসীম উদদীন, লেখক ও বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন বা ফেরত পাঠিয়েছেন। 

চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী এবার পুরস্কারের জন্য মনোনীতরা হলেন কবিতায় মাসুদ খান, প্রবন্ধ/গদ্যে সলিমুল্লাহ খান, অনুবাদে জি এইচ হাবীব, নাটক ও নাট্যসাহিত্যে শুভাশিস সিনহা, গবেষণায় মুহম্মদ শাহজাহান মিয়া, বিজ্ঞানে রেজাউর রহমান এবং ফোকলোরে সৈয়দ জামিল আহমেদ।

প্রতি বছর বাংলা সাহিত্যের ১১টি শাখায় বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রদান করা হয়। এবার পুরস্কারের তালিকায় বঙ্গবন্ধুবিষয়ক গবেষণায় কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। রীতি অনুযায়ী, প্রতি বছর মাসব্যাপী আয়োজিত অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এ পুরস্কার তুলে দেন। এবার পয়লা ফেব্রুয়ারি বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার তুলে দেবেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

মন্তব্য
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

ধর্মীয় উসকানি দিয়ে ঐক্য বিনষ্টের অপচেষ্টা চলছে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ধর্মীয় উসকানি দিয়ে ঐক্য বিনষ্টের অপচেষ্টা চলছে

ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় উসকানি দিয়ে একটি বিশেষ চক্র ঐক্য ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে বিনষ্টের অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। 

শনিবার দিবাগত রাত ১টা ৪৬ মিনিটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স সেলের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি সংগঠনটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়েছে। 

ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এবং ধর্মীয় অবমাননার বিরুদ্ধে আমাদের দৃঢ় অবস্থান। বাংলাদেশ দীর্ঘকাল ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে।

আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ সব ধর্মের মানুষের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহাবস্থানের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। এই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ আমাদের ঐতিহ্যের অংশ, যা জাতিগত ঐক্য ও শান্তির মূল ভিত্তি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একটি বিশেষ চক্র ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় উসকানি দিয়ে আমাদের ঐক্য ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

আরো পড়ুন
ঢাকার বাতাস আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’, বেশি দূষণ যেখানে

ঢাকার বাতাস আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’, বেশি দূষণ যেখানে

 

বিশেষ করে, ইসলাম ধর্ম, মহান আল্লাহ এবং রাসূল (সা.)-এর প্রতি অবমাননাকর মন্তব্য ও প্রচারণা আমাদের সামাজিক ঐক্যে আঘাত হানছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এমন কিছু বক্তব্য দেখা যাচ্ছে, যা ধর্মপ্রাণ মানুষের অনুভূতিকে আঘাত করছে এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি করছে। দায়িত্বশীল অবস্থানে থেকে কেউ যদি ধর্মীয় অবমাননাকর বক্তব্য প্রদান করে, তবে তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। এ ধরনের বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

এতে আরো বলা হয়েছে, আমরা বিশ্বাস করি, যে কোনো ধর্মের প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য বা বিদ্বেষমূলক প্রচারণা শুধু ধর্মপ্রাণ মানুষের অনুভূতিতেই আঘাত হানে না, বরং এটি সামগ্রিক সামাজিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকিস্বরূপ।

আমরা সমাজের সর্বস্তরের মানুষ— শিক্ষার্থী, বুদ্ধিজীবী, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এবং সচেতন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন বিভেদ সৃষ্টিকারীদের অপচেষ্টা প্রতিহত করেন এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কখনোই কারও ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করার অধিকার দেয় না। প্রকৃত মুক্তচিন্তা ও গণতান্ত্রিক চর্চা তখনই অর্থবহ হয়, যখন তা সামাজিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে সুসংহত করে।

আরো পড়ুন
জুনেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্ভব : সংস্কার কমিশন

জুনেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্ভব : সংস্কার কমিশন

 

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মের মানুষও শহীদ হয়েছেন। সেই আত্মত্যাগের চেতনায় উজ্জীবিত নতুন বাংলাদেশে সব সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

আমরা চাই, বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি অব্যাহত থাকুক, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আরও দৃঢ় হোক এবং যেকোনো বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা ব্যর্থ হোক। আসুন, আমরা সকলে মিলে একটি শান্তিপূর্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ ও সম্প্রীতিময় সমাজ গড়ে তুলি, যেখানে প্রত্যেক ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতি সম্মান থাকবে, আর আমাদের জাতীয় ঐক্য আরো সুদৃঢ় হবে।


 

মন্তব্য

জুনেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্ভব : সংস্কার কমিশন

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
জুনেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্ভব : সংস্কার কমিশন
সংগৃহীত ছবি

সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন একসঙ্গে করার প্রস্তাব করেছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন। এ ছাড়া আগামী জুনের মধ্যে দেশের সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব বলে জানিয়েছে তারা। গতকাল শনিবার কমিশনের প্রকাশিত প্রাথমিক রিপোর্টে এসব সুপারিশ করা হয়েছে।

সুপারিশে বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশে কার্যত কোনো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নেই।

এই মুহূর্তে সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন একসঙ্গে করা সম্ভব। আগামী জুনের মধ্যে সব সমতল ও পাহাড়ের ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন ও জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যেতে পারে।

আরো পড়ুন
জমি বর্গা না দেওয়ায় পেঁয়াজের ক্ষেতে বিষ দেওয়ার অভিযোগ

জমি বর্গা না দেওয়ায় পেঁয়াজের ক্ষেতে বিষ দেওয়ার অভিযোগ

 

সুপারিশে আরো বলা হয়, বর্তমানে নতুন একটি স্বচ্ছ ক্যানভাসে নতুন ছবি আঁকা সম্ভব। নতুবা নির্বাচনের আগে অনেক প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আইনি জটিলতার উদ্ভব হতে পারে।

স্থানীয় সরকারব্যবস্থায় সংসদীয় পদ্ধতি চালু করার আলোচনা দীর্ঘদিন ধরে জনপরিসরে থাকলেও কোনো সুযোগ সৃষ্টি হয়নি।

এখন সে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আগামী মার্চ-এপ্রিলের (২০২৫) মধ্যে একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের জন্য দুটি একীভূত এই স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যেতে পারে। গত ১৮ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম, নারীবিষয়ক এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনসহ আরো পাঁচটি সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।

আরো পড়ুন
‘নৈশভোটের’ সহযোগী এসপিরা পেয়েছেন দ্রুত পদোন্নতি

‘নৈশভোটের’ সহযোগী এসপিরা পেয়েছেন দ্রুত পদোন্নতি

 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদকে প্রধান করে এই সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। তাঁর নেতৃত্বে কাজ করেছেন সাতজন সদস্য।

একই সঙ্গে ভোট, আইন একীভূত করার সুপারিশ 

সংস্কারের সুপারিশে বলা হয়, একই তফসিলে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশন অংশগ্রহণ করবে। প্রতিজন ভোটার নিজ নিজ ইউনিয়ন, পৌরসভা ও সিটির ওয়ার্ডের জন্য একটি ব্যালট পেপার, উপজেলার জন্য একটি এবং জেলার জন্য একটি ব্যালট পেপার পাবেন। তিনটি ব্যালটে তিনটি বা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) একাধিক ভোট দিয়ে তাঁদের ভোট শেষ করবেন।

আরো পড়ুন
ঢাকার বাতাস আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’, বেশি দূষণ যেখানে

ঢাকার বাতাস আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’, বেশি দূষণ যেখানে

 

সুপারিশে বলা হয়, ১৯৭২ সালের পর পাঁচটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জন্য পারস্পরিক সম্পর্কবিহীন যে পাঁচটি পৃথক আইন ও অসংখ্য বিধিমালা বিভিন্ন সময় জারি করা হয়েছে, সে সব আইন ও বিধিসমূহ বাতিল করে সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ দুটি একীভূত ও একক স্থানীয় সরকার আইন ও প্রয়োজনীয় বিধি প্রণয়ন করে সব পরিষদের মধ্যে আন্ত প্রতিষ্ঠান সম্পর্ক ও সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। এ রকম দুটি আইন করা হলে ওই আইন বলে পাঁচটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কাঠামো হবে একই ধাঁচের সংসদীয় পদ্ধতির। তখন নির্বাচনব্যবস্থাটিও হবে সহজ, ব্যয় ও সময় সাশ্রয়ী।

থাকবে স্থানীয় সরকার সার্ভিস

গ্রাম ও নগরের সর্বত্র সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কাঠামো হবে সমরূপ। স্থানীয় সরকারের ‘স্থানীয় সরকার সার্ভিস’ নামে একটি নিজস্ব সার্ভিস কাঠামো থাকবে। সেই সার্ভিসের অধীন জনবলের ঊর্ধ্বমুখী ও নিম্নমুখী পদায়নের সুযোগ থাকবে। কর্মচারীদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সিটি করপোরেশন পর্যন্ত অভিগম্যতা থাকলে পদোন্নতি ও পদায়নের সুযোগ সৃষ্টি হবে। মন্ত্রণালয়ের নামও পরিবর্তন ‘স্থানীয় সরকার, জনসংগঠন ও জনপ্রকৌশল সেবা’ করার সুপারিশ করা হয়েছে।

পৃথক অধিদপ্তর গঠনের সুপারিশ 

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি পৃথক অধিদপ্তর গঠনের সুপারিশ করেছে কমিশন৷ স্থানীয় সরকার বিভাগে বর্তমানে কার্যরত পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন অধিদপ্তরকে অধিকতর শক্তিশালী করে একটি পুনর্গঠিত নতুন অধিদপ্তর গঠন করার সুপারিশ করা হয়েছে৷ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সিটি করপোরেশন পর্যন্ত সব প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম এই অধিদপ্তরের আওতাধীন হবে।

বিভাগীয় কমিশনার অফিসের পরিচালক স্থানীয় সরকার এবং ডেপুটি কমিশনার অফিসের সঙ্গে সংযুক্ত উপপরিচালক স্থানীয় সরকারের পদসমূহ বিলুপ্ত হবে। একজন উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তার অধীনে অন্যূন ১০ জনের একটি সংগঠন ওপরে বিবৃত অধিদপ্তরের অধীনে প্রতিটি জেলায় কাজ করবে।

স্থানীয় সরকারের স্তর কমানোর সুপারিশ

আগামী ১০ বছরের মধ্যে স্থানীয় সরকারের স্তরসংখ্যা হ্রাস করে গ্রাম-শহরের পার্থক্য কমিয়ে আনার সুপারিশ করেছে কমিশন। গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক নতুন পদ্ধতির অধীনে নিম্নলিখিত তিনটি নতুন পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয় সুপারিশে। বর্তমানে ১৯৬০-এর দশকের (পাকিস্তান আমলের) জেনারেল আইয়ুব খান প্রবর্তিত রাষ্ট্রপতিব্যবস্থার আদলের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংসদীয় পদ্ধতির আদলে পুনর্বিন্যস্ত করা হবে।

তিনটি পৃথক আইনের বদলে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদকে একটি একক আইনের অধীনে আনা হবে। একইভাবে পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনগুলোকে ভিন্ন একটি একক আইনের অধীনে আনা হবে। বর্তমানে বিরাজিত পাঁচটি পৃথক আইনের স্থলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুটি মৌলিক আইনের অধীনে আনা যেতে পারে।  নতুন আইনের অধীনে একই তফসিলে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন একটি সুনির্দিষ্ট পদ্ধতির অধীনে আনয়নের সুপারিশ করা হয়।

স্থানীয় সরকারকে সংসদীয় আদলে পরিচালনার সুপারিশ 

জাতীয় সংসদে যেমন নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা থাকেন সব সংসদীয় কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু, গ্রাম ও নগর নির্বিশেষে সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সদস্য বা কাউন্সিলররা হবেন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সব সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রধান নিয়ামক। সুপারিশে বলা হয়েছে, গ্রাম-নগর নির্বিশেষে প্রতিটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সংগঠন কাঠামো দুটি প্রধান অংশে বিভক্ত থাকবে, (১) বিধানিক অংশ এবং (২) নির্বাহী অংশ।

বিধানিক অংশের প্রধান হবেন ‘সভাধ্যক্ষ’ (জাতীয় সংসদের স্পিকারের অনুরূপ) এবং নির্বাহী অংশের প্রধান হবেন ‘চেয়ারম্যান’ বা ‘মেয়র’। তিনি পরিষদ বা কাউন্সিল নেতা হিসেবেও থাকবেন। সভাধ্যক্ষ জাতীয় সংসদের স্পিকারের অনুরূপ দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শক্রমে পরিষদের সভা-অধিবেশন আহবান করবেন। সব সদস্য-সদস্যা যাতে তাঁদের মতামত দিতে পারেন, কোনো বিশেষ বিষয়ে বিতর্কে অংশ নিতে পারেন, সেসব বিষয় তিনি নিশ্চিত করবেন।

তেমনিভাবে সব স্থায়ী কমিটি গঠন ও সভা নিয়মিত অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সভাধ্যক্ষকে সহায়তা করবেন একজন পূর্ণকালীন ‘সচিব’ এবং পাঁচ সদস্যের একটি সচিবালয়। সাধারণ নির্বাচনের পর নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গেজেট প্রকাশের পর সদস্যরা আইনে নির্ধারিত একটি শপথনামা উপস্থিত একটি ভোটার সমাবেশে নিজ নিজ ধর্মগ্রন্থে হাত রেখে একে একে উচ্চৈঃস্বরে পাঠ করে সেটিতে স্বাক্ষর করবেন এবং সদস্যদের জন্য রক্ষিত আসনে আসন গ্রহণ করবেন।

পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট সাংবিধানিক মর্যাদাসম্পন্ন একটি স্থায়ী ‘স্থানীয় সরকার কমিশন’ গঠন করার সুপারিশ করা হয়।

সব উপজেলায় পূর্ণাঙ্গ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত স্থাপনের সুপারিশ

সুপারিশে আরো বলা হয়েছে, দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতের পাশাপাশি একই পদমর্যাদায় প্রতিটি উপজেলায় বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একজন সিনিয়র সহকারী জজ এবং বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির পূর্ণাঙ্গ কার্যালয় স্থাপন করা।

ইউনিয়ন পরিষদের অধীন গ্রাম আদালত বিলুপ্ত করে ওয়ার্ড পর্যায়ে সালিসি ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দান এবং সালিসসমূহের তত্ত্বাবধান, সালিসকারদের প্রশিক্ষণ ও সালিসের আপিল শুনানির জন্য এডিআর আদালতের বিচারকের এখতিয়ার ও প্রশাসনিক সহায়তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে সুপারিশে।

মন্তব্য

ঢাকার বাতাস আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’, বেশি দূষণ যেখানে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ঢাকার বাতাস আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’, বেশি দূষণ যেখানে
ছবি: কালের কণ্ঠ

বায়ুদূষণে বিশ্বের শহরগুলোর তালিকায় আজ পঞ্চম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে ১৮৫ স্কোর নিয়ে ঢাকার বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে। রবিবার সকাল সোয়া ১০টায় বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের সূচক থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

এদিন দূষণের শীর্ষ দুই শহর সেনেগালের ডাকার ও পাকিস্তানের লাহোর।

যথাক্রমে ২৬৯ ও ২৩৪ একিউআই স্কোর নিয়ে শহরদুটির বাতাসের মান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে। তালিকায় তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে উগান্ডার কাম্পালা ও ভারতের দিল্লি। শহরদুটির বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে। 

১৮৫ একিউআই স্কোর নিয়ে ঢাকার বাতাসের মান আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে।

এ সময় বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা (পিএম ২.৫)-এর পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ডের চেয়ে ২০ গুণেরও বেশি রয়েছে। বায়ুদূষণ থেকে নিরাপদে থাকতে বাইরে শরীরচর্চা এড়িয়ে চলতে বলেছে আইকিউএয়ার। এছাড়া ঘরের দরজা, জানালা বন্ধ রাখতে ও ঘরের বাইরে বের হলে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। আজ ঢাকার শীর্ষ তিন দূষিত এলাকা বেচারাম দেউড়ি (২৭৮), সাভারের হেমায়েতপুর (২৩৫) ও ঢাকার মার্কিন দূতাবাস (২০৬) এলাকায় বাতাসের মান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে।
 

একটি শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, তার লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক জানিয়ে থাকে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। প্রতিষ্ঠানটির মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়।

স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। এ ছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।

মন্তব্য

স্থানীয় সরকারকে সংসদীয় আদলে পরিচালনার সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
স্থানীয় সরকারকে সংসদীয় আদলে পরিচালনার সুপারিশ
সংগৃহীত ছবি

স্থানীয় সরকারকে সংসদীয় আদলে পরিচালনার সুপারিশ করেছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন। গতকাল শনিবার কমিশনের প্রকাশিত প্রাথমিক রিপোর্টে এসব সুপারিশ করা হয়েছে। জাতীয় সংসদে যেমন নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা থাকেন সব সংসদীয় কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু, গ্রাম ও নগর নির্বিশেষে সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সদস্য বা কাউন্সিলররা হবেন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সব সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রধান নিয়ামক। 

সুপারিশে বলা হয়েছে, গ্রাম-নগর নির্বিশেষে প্রতিটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সংগঠন কাঠামো দুটি প্রধান অংশে বিভক্ত থাকবে, (১) বিধানিক অংশ এবং (২) নির্বাহী অংশ।

বিধানিক অংশের প্রধান হবেন ‘সভাধ্যক্ষ’ (জাতীয় সংসদের স্পিকারের অনুরূপ) এবং নির্বাহী অংশের প্রধান হবেন ‘চেয়ারম্যান’ বা ‘মেয়র’। তিনি পরিষদ বা কাউন্সিল নেতা হিসেবেও থাকবেন। 

সভাধ্যক্ষ জাতীয় সংসদের স্পিকারের অনুরূপ দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শক্রমে পরিষদের সভা-অধিবেশন আহবান করবেন।

সব সদস্য-সদস্যা যাতে তাদের মতামত দিতে পারেন, কোনো বিশেষ বিষয়ে বিতর্কে অংশ নিতে পারেন, সেসব বিষয় তিনি নিশ্চিত করবেন। 

তেমনিভাবে সব স্থায়ী কমিটি গঠন ও সভা নিয়মিত অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সভাধ্যক্ষকে সহায়তা করবেন একজন পূর্ণকালীন ‘সচিব’ এবং পাঁচ সদস্যের একটি সচিবালয়। সাধারণ নির্বাচনের পর নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গেজেট প্রকাশের পর সদস্যরা আইনে নির্ধারিত একটি শপথনামা উপস্থিত একটি ভোটার সমাবেশে নিজ নিজ ধর্মগ্রন্থে হাত রেখে একে একে উচ্চৈঃস্বরে পাঠ করে সেটিতে স্বাক্ষর করবেন এবং সদস্যদের জন্য রক্ষিত আসনে আসন গ্রহণ করবেন।

আরো পড়ুন
‘আজীবন আমার ঘেন্নায় তোমাকে বাঁচতে হবে সোনা’

‘আজীবন আমার ঘেন্নায় তোমাকে বাঁচতে হবে সোনা’

 

পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট সাংবিধানিক মর্যাদাসম্পন্ন একটি স্থায়ী ‘স্থানীয় সরকার কমিশন’ গঠন করার সুপারিশ করা হয়।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ