স্বাস্থ্য খাত সংস্কারে ৭ প্রস্তাব জাতীয় নাগরিক কমিটির

বাসস
বাসস
শেয়ার
স্বাস্থ্য খাত সংস্কারে ৭ প্রস্তাব জাতীয় নাগরিক কমিটির
সংগৃহীত ছবি

দেশের স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে গঠিত স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের কাছে সাতটি প্রস্তাব পেশ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডের শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে সংস্কার কমিশনের প্রধান জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদের হাতে এই প্রস্তাব তুলে দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা।

পরে সাংবাদিকদের কাছে এই প্রস্তাবনা তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবনায় শুধু ছোটখাটো পরিবর্তনের সুপারিশ নয়, এটি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার রূপরেখা। স্বাস্থ্য খাতের দীর্ঘদিনের সমস্যা চিহ্নিত করে বাস্তবসম্মত, কার্যকর ও সুস্পষ্ট সমাধান তুলে ধরা হয়েছে, যা স্বাস্থ্যসেবা সবার জন্য সহজলভ্য করবে।

তাসনিম জারা বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা এমন হবে, যেখানে একজন কৃষক আর একজন মন্ত্রী একই মানের চিকিৎসা পাবেন। আমরা ছোটখাটো পরিবর্তনের কথা বলছি না, আমরা এমন এক সংস্কারের কথা বলছি, যা স্বাস্থ্যসেবায় আমূল পরিবর্তন আনবে; চিকিৎসা খরচ কমিয়ে দেবে, পুরো ব্যবস্থাকে স্বয়ংসম্পন্ন করে তুলবে ও স্বাস্থ্যসেবায় বৈষম্য থাকবে না।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে আমরা সরকার, চিকিৎসক সমাজ এবং সাধারণ নাগরিকদের এই সংস্কার বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি। রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং জনসাধারণের সহযোগিতা থাকলে বাংলাদেশে একটি আধুনিক, দক্ষ এবং সমতার ভিত্তিতে স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।

এখনই পরিবর্তনের সময় জানিয়ে ডা. তাসনিম জারা বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে আর অপেক্ষা করাটা ঠিক হবে না। রোগীরা কষ্টে, ডাক্তাররা হতাশ, আর দেশের সম্পদ অকারণে নষ্ট হচ্ছে। এই প্রস্তাবনা সমাধানের কিছু বাস্তবসম্মত উপায় দেখিয়েছে। এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব নীতিনির্ধারকদের।

স্বাস্থ্য খাত সংস্কার প্রস্তাবনায় জাতীয় নাগরিক কমিটির সাতটি প্রস্তাব :

১. জরুরি স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন ও আধুনিক অ্যাম্বুল্যান্স সিস্টেম চালুর কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশে জরুরি চিকিৎসাব্যবস্থা বিপর্যস্ত। অনেক রোগী সময়মতো অ্যাম্বুল্যান্স পান না, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই অনেকে মারা যান। এই প্রস্তাবনায় একটি আধুনিক জরুরি সেবাব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। অ্যাম্বুল্যান্সে প্রশিক্ষিত প্যারামেডিক থাকবে, যাতে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়।

এখনকার মতো শুধু রোগী পরিবহনের পরিবর্তে, অ্যাম্বুল্যান্সেই জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা শুরু হবে, যা মৃত্যুহার কমাতে সাহায্য করবে।

২. একটি কার্যকর রেফারেল সিস্টেম চালু করতে হবে। বাংলাদেশের বড় হাসপাতালগুলো রোগীর অতিরিক্ত চাপে বিপর্যস্ত, কারণ অনেক রোগী উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের হাসপাতাল বাদ দিয়ে সরাসরি ঢাকায় চলে আসেন। এর ফলে যারা সত্যিকারের জটিল রোগী, তারা প্রয়োজনীয় সময়ে চিকিৎসা পান না। এই প্রস্তাবনায় একটি কার্যকর রেফারেল সিস্টেম চালুর সুপারিশ করা হয়েছে, যাতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক হাসপাতালগুলোকে শক্তিশালী করা হয় এবং রোগীদের সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় চিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়।

৩. স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য উন্নত কর্মপরিবেশ ও ন্যায্য পারিশ্রমিক নিশ্চিত করতে হবে। দেশের  চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা দীর্ঘ সময় কাজ করেন, কিন্তু তাদের বেতন কম, পদোন্নতির সুযোগ অপ্রতুল, এবং অনেক সময় সহিংসতার শিকার হন। এই প্রস্তাবনায় ন্যায্য বেতন, কর্মজীবনের অগ্রগতি এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় চিকিৎসক ও নার্সদের কাজ করতে উৎসাহিত করতে অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা ও আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। নারীদের জন্য কাজের সুবিধাজনক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হাসপাতালে ডে-কেয়ার সুবিধাসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতির সুপারিশ করা হয়েছে।

৪. সারা দেশে ডিজিটাল স্বাস্থ্যব্যবস্থা (ইএইচআর) চালু করতে হবে। বর্তমানে একজন রোগী যখন এক হাসপাতাল থেকে আরেকটিতে যান, তখন তার আগের চিকিৎসার তথ্য নতুন চিকিৎসক জানেন না। ফলে বারবার পরীক্ষা করতে হয়, সময় নষ্ট হয়, আর চিকিৎসায় ভুলের ঝুঁকি বাড়ে। এই সমস্যা দূর করতে একটি জাতীয় ইলেকট্রনিক স্বাস্থ্য রেকর্ড (ইএইচআর) ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিটি রোগীর একটি ডিজিটাল স্বাস্থ্যপরিচয় থাকবে, যা দেশের সকল হাসপাতালে ব্যবহার করা যাবে। এতে চিকিৎসার গতি বাড়াবে ও খরচ কমাবে। পাশাপাশি চিকিৎসাসংক্রান্ত কোনো অনিয়ম ঘটলে তা দ্রুত চিহ্নিত ও সংশোধন করা সম্ভব হবে।

৫. চিকিৎসার জন্য প্রমাণভিত্তিক জাতীয় গাইডলাইন তৈরির কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশে চিকিৎসা পদ্ধতিতে কোনো নির্দিষ্ট মানদণ্ড নেই, ফলে একজন রোগী একই রোগের জন্য দুই জায়গায় দুই ধরনের চিকিৎসা পান। এই সমস্যার সমাধানে একটি জাতীয় চিকিৎসা গাইডলাইন চালু করা, যাতে দেশের সব চিকিৎসক একটি নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করেন। চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য এই গাইডলাইন অনুযায়ী প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হবে।

৬. একটি জাতীয় বায়োব্যাংক স্থাপন করতে হবে। বাংলাদেশে গবেষণার সুযোগ সীমিত, যার ফলে নতুন ওষুধ ও উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়ন সম্ভব হয় না। একটি জাতীয় বায়োব্যাংক স্থাপন করা হলে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও সংক্রামক রোগের গবেষণা সহজ হবে, যা ভবিষ্যতে আরো উন্নত চিকিৎসা নিয়ে আসবে। এতে বাংলাদেশ বিদেশের ওপর নির্ভর না করে নিজের চিকিৎসা গবেষণা এগিয়ে নিতে পারবে।

৭. সরকারি উদ্যোগে নির্ভরযোগ্য স্বাস্থ্য তথ্য প্ল্যাটফরম প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অসুস্থ হলে অনেকেই গুগল বা সামাজিক মাধ্যমে চিকিৎসা পরামর্শ খোঁজেন, যেখানে ভুয়া তথ্যের ছড়াছড়ি। এর ফলে অনেকে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা পান না। এই সমস্যা সমাধানে সরকারি উদ্যোগে পরিচালিত, নির্ভরযোগ্য ডিজিটাল স্বাস্থ্য প্ল্যাটফরম চালু করতে সুপারিশ করা হয়েছে। এখানে সহজ ভাষায় বিজ্ঞানভিত্তিক স্বাস্থ্য তথ্য ও চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়া হবে, যাতে সাধারণ মানুষ বুঝতে পারেন কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন এবং কোন চিকিৎসা বিজ্ঞানসম্মত ও নিরাপদ। এই প্ল্যাটফরমটি সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গেও যুক্ত থাকবে, যাতে রোগীরা সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় চিকিৎসা নিতে পারেন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

৩৪তম বিসিএস অল ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি গঠন

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
৩৪তম বিসিএস অল ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি গঠন
সংগৃহীত ছবি

দীর্ঘ নয় বছর পর ৩৪তম বিসিএস অল ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। এতে সভাপতি হয়েছেন রূপগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জয় এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন তেজগাঁও ডিভিশনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল রানা।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) অফিসার্স ক্লাব ঢাকায় এই কমিটি গঠন করা হয়।

আরো পড়ুন
৩ মের আগেই নারী কমিশনের প্রতিবেদন প্রত্যাহারের আলটিমেটাম

৩ মের আগেই নারী কমিশনের প্রতিবেদন প্রত্যাহারের আলটিমেটাম

 

৩৪তম বিসিএস অল ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এক জরুরি বিশেষ সভা বাংলাদেশ অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় ব্যাচের নতুন কমিটি গঠনসংক্রান্ত আলোচনা শেষে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয় যাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসাবে মানসুর আলী, ডিসিটি ট্যাক্স ক্যাডার এবং সদস্য হিসাবে আবিদুর রহমান, সিনিয়র সহকারী সচিব, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ সহকারীর একান্ত সচিব এবং রাসেল মনির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বাংলাদেশ পুলিশ।  

পরবর্তীতে  ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচনের মাধ্যমে দুই সদস্যদের কমিটি গঠনের বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কমিটিতে সভাপতিত্ব করেন মো. আজিজুর রহমান , সিনিয়র সহাকারী সচিব , পরিকল্পনা কমিশন। শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান মিঠু নতুন সভাপতি কমিটির নাম প্রস্তাব করেন।

 সর্বসম্মতিক্রমে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়। নতুন কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম জয় জানান এই কমিটি জুলাই স্পিরিট কে ধারন করে দেশের উন্নয়নে কাজ করবে।  আর সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা জানান, বিপ্লব পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে আমরা কোনো বৈষম্যকে প্রশয় দিব না। 

নব-নির্বাচিত কমিটি আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে প্রকাশ করবেন বলেও এতে জানানো হয়েছে

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

টিপুর জামিন গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের প্রথম বিজয় : বিএমএসএফ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
টিপুর জামিন গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের প্রথম বিজয় : বিএমএসএফ

দৈনিক কালের কণ্ঠের তালা উপজেলা প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান টিপুর জামিন দেশের গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের প্রথম বিজয় বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর বলেছেন, সামনে আরেকটি বিজয় অপেক্ষা করছে। তবে সেটি অনেক চ্যালেঞ্জিং।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

টিপুর জামিন নিয়ে সাতক্ষীরায় অনেক নাটক হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলী টিপুর পরিবার ও স্থানীয় সাংবাদিকদের মাঝে দ্বিধা বিভক্ত করে রাখায় দণ্ডাদেশ দেবার পর তিনদিনেও পরিবার কিংবা কারো থেকে জামিন কিংবা আপিল কোনটাই চাওয়া হয়নি।

 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঠিকাদারি এ চক্রটি তালা উপজেলায় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের মানববন্ধনের ব্যানার এবং উপস্থিত সাংবাদিকদের কৌশলে মানববন্ধন থেকে সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি টিপুর স্ত্রী উপজেলা কৃষি অফিসে কর্মরত থাকায় তিনি যাতে মামলার জামিন কিংবা আপিল করতে না পারেন এ জন্যও তাকে চাপে রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২৩ এপ্রিল ঢাকায় তথ্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর দৈনিক কালের কণ্ঠের সাংবাদিক টিপুর নিঃশর্ত মুক্তির জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। তবে অনেক নাটকীয়তা শেষে ২৪ ঘণ্টার আগেই  সাংবাদিক টিপু জামিন লাভ করে।

এ দিকে তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রের একটি টিম সাতক্ষীরায় পৌঁছান। জেলা প্রশাসকের অনুপস্থিতিতে টিমের সদস্যরা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এবং আইনজীবীর সঙ্গে বৈঠক করে দুপুর দেড়টার দিকে সাংবাদিকদের পক্ষে আহমেদ আবু জাফর জামিন এবং আপিল আবেদনে স্বাক্ষর করেন।

বিএমএসএফের পক্ষে থেকে বলা হয়, তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ রাসেলের দেওয়া কারাদণ্ডাদেশ ছিল অন্যায়, অবৈধ এবং কথিত আদালতের নামে সাংবাদিকদের সাথে একটি চূড়ান্ত প্রহসন। যা সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ২৩ তারিখে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

একজন সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের দ্বারা এহেন পরিস্থিতির শিকার কখনো হতে পারেন না। অন্যায় অনিয়ম, দুর্নীতি যখন আগ্রাসনে পরিণত হয় পরিস্থিতি তখন এমনটাই হয়ে থাকে।

সারা দেশের সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধতার ফসল হিসেবে বৃহস্পতিবার রোকনুজ্জামান টিপুর জামিনে মুক্ত করতে পারাটা সাংবাদিকদের প্রথম বিজয়। এটি একক কারো বিজয় নয়। চূড়ান্ত বিজয় তখনই আসবে যখন টিপুর ওপর বিচারের নাম কথিত আদালত বসিয়ে প্রহসনমূলক দণ্ডাদেশ বাতিল করানো যাবে।

এই কাজটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর। টিপুর কারাদণ্ড বাতিল করা জরুরি। এজন্য গোটা দেশের সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম।

যারা সাংবাদিক রোকনুজ্জামান টিপুর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি আদায়ের আন্দোলনে বিভিন্নভাবে ঐক্যবদ্ধ ছিলেন, মাঠে ছিলেন তাদের সকলের প্রতি বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

আফ্রিকায় জিম্মি করে মুক্তিপণ, মানবপাচার চক্রের মূল হোতা আটক (ভিডিওসহ)

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আফ্রিকায় জিম্মি করে মুক্তিপণ, মানবপাচার চক্রের মূল হোতা আটক (ভিডিওসহ)
ছবি: কালের কণ্ঠ

আফ্রিকায় জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়কারী মানবপাচার চক্রের মূল হোতাকে আটক করেছে র‍‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, মানবপাচারকারী চক্রের মূল হোতাকে আটক করা হয়েছে। আটক আসামি ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে লিবিয়াতে পাঠাতেন এবং সেখানে জিম্মি করে রেখে অমানবিক নির্যাতন চালাতেন। ভুক্তভোগীর পরিবারকে সেই নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করতেন।

 

বিস্তারিত ভিডিওতে...

 

মন্তব্য

কর্মস্থলে দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বৃদ্ধির সুপারিশ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
কর্মস্থলে দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বৃদ্ধির সুপারিশ
সংগৃহীত ছবি

কর্মস্থলে দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ, বেকারত্ব ও আকস্মিক কর্মহীনতা থেকে সুরক্ষার সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে শ্রম সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। 

কর্মস্থলে দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ ও সুরক্ষা বিষয়ে সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান ক্ষতিপূরণের পরিমাণ অপ্রতুল বিধায়, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বৃদ্ধি করে একটি সর্বনিম্ন সীমা নির্ধারণ করা, এবং একটি ত্রিপক্ষীয় কমিটির মাধ্যমে আইএলও কনভেনশন ১২১ ও হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের মানদণ্ড নির্ধারণ করা। দুর্ঘটনা বা অসুস্থতার পর শ্রমিকদের জন্য চিকিৎসা সুবিধা ও দীর্ঘমেয়াদি ভাতা নিশ্চিত করা।

প্রতিবন্ধী ও দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের জন্য আজীবন চিকিৎসা, ভরণপোষণ এবং পুনর্বাসন ব্যবস্থা প্রদান।’

সকল খাত এবং সব শ্রমিকের জন্য দুর্ঘটনা বিমা/এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিম বাধ্যতামূলক করা এবং এ জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন করার সুপারিশ করেছে কমিশন।

দুর্ঘটনায় মৃত অথবা আহত হয়ে কর্মক্ষমতা হারানো শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, যতদিন না তারা উপার্জনক্ষম হয়। এ সব শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের জন্য চাকরি প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতি প্রণয়নে সুপারিশ করা হয়েছে।

শ্রমিক কল্যাণ তহবিল ও কেন্দ্রীয় তহবিলের জন্য ডিজিটাল আবেদন পদ্ধতি চালু করা এবং তহবিল ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য ত্রিপক্ষীয় নিরীক্ষা ও মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করার সুপারিশ করেছে কমিশন। কল্যাণ সুবিধার আওতা বৃদ্ধি করে সব খাতের শ্রমিককে (প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক, স্বনিয়োজিত, গিগ/অ্যাপবেজড কর্মী) অন্তর্ভুক্ত করা এবং শ্রমিকদের পরিবারের জন্য সহায়তার পরিধি বৃদ্ধি করে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন সংশোধন করারও সুপারিশ করা হয়।

বেকারত্ব ও আকস্মিক কর্মহীনতা থেকে সুরক্ষা বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘১০০ দিনের কর্মসূচির মতো উদ্যোগ গ্রহণ, যা মৌসুমী শ্রমিকদের নির্দিষ্ট সময়েও কাজের সুযোগ ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা, যাতে মৌসুমি শ্রমিকদের জন্য টেকসই কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা যায়।

আধুনিক তথ্য ব্যবস্থা (কমিশন প্রস্তাবিত তথ্য ভাণ্ডার) ব্যবহার করে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে সহজ ও কার্যকর করা।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিআইএলএস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে ১০ সদস্যের একটি শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করে। 

কমিশন শ্রম বিষয়ে অংশীজন ও বিভিন্ন সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতবিনিময় করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাখিল করে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ