ঢাকা, শনিবার ২২ মার্চ ২০২৫
৭ চৈত্র ১৪৩১, ২১ রমজান ১৪৪৬

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিপীড়ন-হত্যাকাণ্ড যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে : ফর্টিফাই রাইটস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিপীড়ন-হত্যাকাণ্ড যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে : ফর্টিফাই রাইটস

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্যরা মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন এবং হুমকি দিয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ফর্টিফাই রাইটস-এর প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির এক প্রতিবেদন প্রকাশকালে এ দাবি করা হয়। 

‘বাংলাদেশ : রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের যুদ্ধাপরাধের জন্য জবাবদিহিতার আওতায় আনুন, আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার সাথে সহযোগিতা করুন’ শির্ষক সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির পরিচালক জন কুইনলি, সিনিয়র অ্যাডভোকেসি স্পেশালিস্ট পেট্রিক ফংসাথর্ন ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাভিন মুর্শিদ। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গা পুরুষ, নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী গোষ্ঠির নির্দিষ্ট কিছু কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধের আওতায় পড়ার যৌক্তিক ভিত্তি রয়েছে। এসব অপরাধমূলক ঘটনা ও মিয়ানমারে চলমান সশস্ত্র সংঘাতের মধ্যে একটি সুস্পষ্ট যোগসূত্র বিদ্যমান। 

যুদ্ধাপরাধ প্রতিষ্ঠার জন্য তিনটি অপরিহার্য উপাদান উপস্থিত থাকতে হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এরমধ্যে রয়েছে- এক. একটি সশস্ত্র সংঘর্ষ বিদ্যমান থাকতে হবে। দুই. একটি নিষিদ্ধ কার্যকলাপ অবশ্যই এমন ব্যক্তির বিরুদ্ধে সংঘটিত হতে হবে, যিনি সশস্ত্র সংঘর্ষে সক্রিয়ভাবে জড়িত নন এবং তিন. সশস্ত্র সংঘর্ষ ও সংঘটিত কার্যকলাপের মধ্যে অবশ্যই একটি যোগসূত্র থাকতে হবে। বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে সংগঠিত অপরাধগুলোতে এসব উপাদান বিদ্যমান থাকার যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি আছে। ফলে অন্ততপক্ষে চলমান যুদ্ধাপরাধের সম্ভাবনা নিয়ে আরও তদন্ত করা উচিত।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি আরসা এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) বিদ্রোহীরা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িত। তারা উভয়ই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অবস্থিত জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে মিয়ানমার জান্তার পক্ষে লড়াই করছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে তাদের সশস্ত্র অভিযান জোরদার করার জন্য তারাই বাংলাদেশে শরণার্থীদের অপহরণ করেছে এবং তাদের মিয়ানমারে যুদ্ধ করতে বাধ্য করেছে। যা যুদ্ধের আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ হিসেবে তদন্ত করা উচিত। সংস্থাটি আরসা ও আরএসও-এর সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছে এবং তাদের অপরাধের স্বীকারোক্তি নথিভুক্ত করেছে।

প্রতিবেদনের তথ্যমতে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে বছরের পর বছর ধরে সহিংসতা ও হত্যার শিকার হয়েছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে মোহিবুল্লাহ হত্যার পর থেকে বিদ্রোহী সহিংসতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। শরণার্থী শিবিরভিত্তিক বিদ্রোহীদের দ্বারা সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে সংখ্যা ২০২১ সালে ২২টি, ২০২২ সালে ৪২টি, ২০২৩ সালে ৯০টি এবং ২০২৪ সালে কমপক্ষে ৬৫টি রিপোর্ট করা হয়েছে।

জন কুইনলি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারে প্রায় সম্পূর্ণ দায়মুক্তির সঙ্গে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধ সাধারণত সশস্ত্র সংঘাতের প্রত্যক্ষ ক্ষেত্রেই সংঘটিত হয়। তবে এই ক্ষেত্রে, বাংলাদেশে সংঘটিত নির্দিষ্ট অপরাধগুলো মিয়ানমারের যুদ্ধে সরাসরি সংযুক্ত এবং যুদ্ধাপরাধের শামিল।’ 

তিনি বলেন, ‘সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করা উচিত।’

তিনি আরো বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা জরুরি। এর জন্য যারা দায়ী, বিশেষ করে আরসা ও আরএসও সদস্যদের অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত। দাতা সরকারগুলোর উচিত ঝুঁকিতে থাকা শরণার্থীদের সহায়তায় বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করা। যার মধ্যে রয়েছে সুরক্ষিত স্থান, চলাচলের স্বাধীনতা এবং তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের জন্য আরো বিকল্প প্রদান।’

শরণার্থী শিবিরে চলমান সহিংসতা নিয়ে ১১৬ জনের সাক্ষাতকার নিয়ে ৭৭ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে ভুক্তভোগী রোহিঙ্গাদের উপর অমানবিক নির্যাতন, হুমিকি ও ভয় ভীতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। 

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের রোহিঙ্গা নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী গোষ্ঠী থেকে রক্ষা করতে ব্যাপকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। বহু বছর ধরে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের অস্তিত্ব ও কার্যক্রমের কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। এর ফলে ভুক্তভোগী শরাণার্থী রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ন্যায়বিচারের সুযোগ ও যথাযথ প্রতিক্রিয়ার অভাব দেখা দেয়।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সাম্প্রতিক মার্কিন সরকারি তহবিল কাটছাঁটের ফলে শরণার্থী শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের জন্য আরও বেশি সুযোগ তৈরি হচ্ছে। যা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা ব্যাপকভাবে আরও খারাপ করবে। এছাড়াও রোহিঙ্গা শিবিরে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এবং বাংলাদেশে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ রোধে বেশ কিছু প্রতিকার উল্লেখ করা হয়।
 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আলোচিত-১০ (২১ মার্চ)

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার

দলগুলো অন্তঃসংঘাত বন্ধ করলে সঠিক সময়ে সংসদ নির্বাচন : উপদেষ্টা মাহফুজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
দলগুলো অন্তঃসংঘাত বন্ধ করলে সঠিক সময়ে সংসদ নির্বাচন : উপদেষ্টা মাহফুজ
সংগৃহীত ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো অন্তঃসংঘাত বন্ধ করলে সঠিক সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শুক্রবার (২১ মার্চ) জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে রাজধানীতে নোফেল সোসাইটি আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, নির্বাচনের আগে হত্যাকারীদের বিচার ও সংস্কার দৃশ্যমান হবে। ’৭২ ও ’৭৫-এ দিল্লি থেকে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানো হয় এবং সেখান থেকে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিকে অন্তঃকোন্দলে ব্যস্ত না থেকে সবাইকে এক থাকার আহ্বানও জানান তথ্য উপদেষ্টা।

মন্তব্য

বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ইউনূস-মোদি বৈঠকের সম্ভাবনা ‘ক্ষীণ’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ইউনূস-মোদি বৈঠকের সম্ভাবনা ‘ক্ষীণ’
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী মাসে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। সেখানে দুই দেশের প্রধানের দেখা হওয়ার সুযোগ থাকলেও আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। গতকাল বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বরাতে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

ষষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে দুই নেতার ২ এপ্রিল থেকে ৪ এপ্রিল ব্যাংকক সফর করার কথা রয়েছে।

সম্মেলনের ফাঁকে দুই দেশের সরকারপ্রধানের বৈঠকের জন্য দিল্লিকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করেছে ঢাকা। গতকাল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে এ তথ্য জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত তিনজন ব্যক্তি হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে বৈঠকের জন্য অনুকূল নয়।

তাদের একজন অবশ্য বলেন, ‘সাক্ষাৎ বা শুভেচ্ছা বিনিময়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

কারণ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সকল নেতা বেশ কয়েকবার একে অপরের সঙ্গে থাকবেন। তবে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা যায় না।’

আরেকজন বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক বৈঠক করা কঠিন বলে মনে হচ্ছে। বিশেষ করে যখন ঢাকায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কেউ কেউ প্রায়ই ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলছেন।

এই পরিস্থিতি বৈঠকের জন্য উপযুক্ত নয়।’

বৃহস্পতিবার এএনআইকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে আমরা ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ করেছি।’

এদিকে, আগামী ২৮ মার্চ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের।

এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে ওমানের রাজধানী মাস্কাটে ৮ম ভারত মহাসাগর সম্মেলনের সাইডলাইনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে উপদেষ্টা তৌহিদের বৈঠক হয়।

মন্তব্য

ঈদযাত্রায় সড়কপথে শৃঙ্খলায় কঠোর অবস্থানে সরকার

বাসস
বাসস
শেয়ার
ঈদযাত্রায় সড়কপথে শৃঙ্খলায় কঠোর অবস্থানে সরকার
ফাইল ছবি

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সড়ক পথে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ, নির্বিঘ্ন করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। ঈদ যাত্রা উপলক্ষে নতুন সেতু ও সড়ক খুলে দিয়েছে সরকার। যানজট নিরসন, যাত্রী নিরাপত্তা, টিকিটের অতিরিক্ত দাম ও টিকিট কালোবাজারি বন্ধসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।

এবারের ঈদ যাত্রায় অন্যান্য বারের মতো যেন বিড়ম্বনা তৈরি না হয়, সে জন্য সারাদেশে একযোগে কাজ করবে বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশ।

৩ হাজার ৯৯১ কিলোমিটার মহাসড়কে ১০১৮টি চেকপোস্ট ও টহলে থাকবে হাইওয়ে পুলিশ ও বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা। ঈদ যাত্রাকে বছরের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান হিসেবে দেখছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

ঈদ উপলক্ষে আগামী ২৫ মার্চ হতে ‘ঈদ স্পেশাল সার্ভিস’ চালু করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি)। ২০ মার্চ হতে বিআরটিসি’র ডিপো থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে এবং আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদ সার্ভিসের বাস চলাচল করবে।

সঙ্গে বাস রিজার্ভের সুবিধাও রেখেছে বিআরটিসি।

সড়কপথে ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে সারাদেশে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের হাইওয়ে ও ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। সারাদেশে তাদের কাজকে আরো গতিশীল করতে সড়ক-মহাসড়কে কাজ করবে জেলা পুলিশ, যা অন্যান্যবারের চেয়ে ব্যতিক্রম। আর ঈদে যাত্রী পরিবহনের সুবিধার্থে ঢাকার মূল সড়কগুলোয় ট্রাক চলাচল বন্ধ রাখবে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

সারাদেশের ৩ হাজার ৯৯১ কিলোমিটার মহাসড়কে নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে হাইওয়ে পুলিশ ৩৭৭টি চেকপোস্ট এবং জেলা পুলিশ ১১৪টি চেকপোস্ট ও ৫২৭টি টহল দল পরিচালনা করবে।

যানজট নিরসনে সারাদেশে ৬৪টি ‘ব্লাক স্পট’ চিহ্নিত করেছে হাইওয়ে পুলিশ। এসব এলাকায় পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য কাজ করবে। এছাড়া যেসব এলাকায় সংস্কার কাজ ও বাজারের জন্য যানজট লেগে যায়, সেসব এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে কাজ করা কথা জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। এর পাশাপাশি সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও যানচলাচল নির্বিঘ্ন করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, সারাদেশের চেকপোস্টগুলো লাইভ ভিডিও’র মাধ্যমে কেন্দ্র থেকে পর্যবেক্ষণ করা হবে। পুলিশের ৮টি রেঞ্জের ডিআইজিগণ এসব চেকপোস্ট তদারকি করবেন। ইতোমধ্যে এলেঙ্গা, চট্টগ্রাম হাইওয়ে, মহিপাল ও নোয়াখালীসহ সড়কে ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নাজমুল হাসান বাসস’কে বলেছেন, ঢাকা থেকে যেন বাস সহজে বের হতে পারে সেজন্য আমরা নানা উদ্যোগ নিয়েছি। ঢাকায় প্রবেশ ও বহির্গমনে যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হয় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। যাত্রী পরিবহনের সুবিধার্থে ঈদের তিন দিন আগে থেকে সড়কে ট্রাক-লরি চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। প্রয়োজনে এক টনের পিকআপ ট্রাকগুলোর চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হবে। 

বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার মিঞা বাসস’কে বলেছেন, এবারের ঈদে আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাবো। একইসাথে যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি। যাত্রীদের মধ্যে নিরাপত্তার কোনো শঙ্কা যেন না থাকে সেজন্য আমরা সারাদেশের মহাসড়কে টহল, চেকপোস্টসহ নিরাপত্তা জোরদার করছি। এবার সুন্দর ঈদ যাত্রা নিশ্চিত করার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ