এক-এগারোর কুশীলব ও সৃষ্টির নেপথ্যে

বিশেষ প্রতিবেদক
বিশেষ প্রতিবেদক
শেয়ার
এক-এগারোর কুশীলব ও সৃষ্টির নেপথ্যে

৫ আগস্টের বিপ্লবের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলো বেশ কয়েকটি বিষয়ে একমত। তার মধ্যে অন্যতম হলো আবার আরেকটি এক এগারো আসতে দেওয়া হবে না। বিএনপি, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক মঞ্চ এক এগারোর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে। সব রাজনৈতিক দলগুলো একটি কথা বলছে, ‘নতুন করে এক এগারো আনার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।

’ 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একাধিকবার বলেছেন, ‘আরেকটি এক এগারোর স্বপ্ন যদি কেউ দেখে থাকেন তাহলে তারা ভুল করছেন।’ একই কথা বলেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘কেউ যদি আরেকটা এক এগারো আনতে চায় তাদেরকে প্রতিহত করা হবে।’ অন্যদিকে এনসিপির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘এক এগারো পুনরাবৃত্তি বাংলাদেশের মানুষ দেখতে চায় না।

’ এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামও এক এগারোর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন একাধিবার। 

রাজনীতিবিদদের মধ্যে যখন নতুন করে এক এগারো সৃষ্টির ষড়যন্ত্র রূখে দেওয়ার প্রত্যয় ঠিক তখনই আড়ালে নতুন করে আরেকটি এক এগারোর নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা দৃশ্যমান। আর এই নীলনকশা বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করছে একটি সুশীল গোষ্ঠী। যার প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার।

যারা সবসময় বাংলাদেশে ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। এই গোষ্ঠী বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড বেসরকারি খাতকে পঙ্গু করার নিরন্তর চেষ্টায় লিপ্ত। 

তারা বিভিন্ন ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদেরকে হয়রানি করার জন্য উস্কে দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের দোসর এই গোষ্ঠী বিভিন্ন দুর্নীতির কল্পকাহিনী আবার নতুন করে প্রকাশ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং আগস্ট বিপ্লবের নায়কদের বিতর্কিত করার প্রয়াস এখন লক্ষণীয়।

দেশে পরিকল্পিত ভাবে একটি বিশৃঙ্খলা পরিবেশ সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে একটি মহল। এরা সেই ষড়যন্ত্রকারী যারা ২০০৭ সালে এক এগারোর কুশীলব ছিলো। বাংলাদেশে বিরাজনীতিকরণ বাস্তবায়ণের জন্য, এই দেশকে ভারতের অনুগত রাষ্ট্র বানানোর জন্যই তারা এক এগারোর প্লট সাজিয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ছিলো এক এগারোর সম্প্রসারিত রূপ। এক এগারোর ধারাবাহিকতা তারা বহাল রেখেছিল। এক এগারোতে বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানায়োট মামলা করা হয়। মঈন-ফখরুদ্দিন সরকার এই মামলা করেছিল বেগম জিয়াকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার জন্য। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সেই মামলা অব্যাহত রাখে। ঐ হাস্যকর মামলায় বেগম জিয়াকে সাজা দেওয়া হয়। দুই বছরের বেশী সময় অন্যায় ভাবে কারান্তরীণ রাখা হয় বিএনপির চেয়ারপারসনকে। এক এগারোর ষড়যন্ত্র ছিলো তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে হটিয়ে দেওয়া। আওয়ামী লীগ সেই ধারা অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখল করে অব্যাহত রেখেছিল। এক এগারোর মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে নানা মামলায় প্রহসনের সাজা দেওয়া হয়েছিল। এভাবেই গত ১৭ বছর দেশে বিরাজনীতিকরণের মাধ্যমে ভারতের আনুগত্য প্রতিপালনের সংস্কৃতি চালু করা হয়। এখনো এক এগারোর ধারা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা দৃশ্যমান। প্রথম আলো-ডেইলি স্টার আবারও ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে সচেষ্ট। আর এই গোষ্ঠীকে প্রতিহত করাই এখন রাজনীতির প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত বলেই আমি মনে করি। 

এখন এক এগারোর ষড়যন্ত্রকে অনুধাবন করতে গেলে আমাদের ২০০৭ সালের এক এগারো সময়কাল কার্যক্রমগুলোকে উপলব্ধি করতে হবে। সেই সময় শুধুমাত্র রাজনীতিবিদদের হয়রানি এবং হেনস্থা করা হয়নি, রাজনীতিবিদের কলঙ্কিত করার চেষ্টা করা হয়নি, ব্যবসায়ীদেরকেও পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যায় যে, এক এগারোর সময় ৭৬২ টি ছোট বড় শিল্প উদ্যোক্তারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলা করা হয়েছিল। প্রায় চার হাজার সাতশ ২৫ কোটি টাকা অবৈধভাবে আয় করা হয়েছিল বিভিন্ন ছোট বড় ব্যবসায়ী গ্রুপের কাছ থেকে। ব্যবসায়ীদের তালিকা প্রকাশ করে তাদের সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়। ব্যবসায়ীরা যেন ব্যবসা গুটিয়ে ফেলে সেজন্য কুৎসিত কলঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছিল। 
আর এই সমস্ত কিছুর মূল হোতা ছিল বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী সংবাদপত্র গোষ্ঠী প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার। তারা একের পর এক টার্গেট করে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মনগড়া আপত্তিকর বিভ্রান্তিকর খবর প্রকাশ করা শুরু করে। এই সমস্ত খবর প্রকাশিত হবার পরপরই দুর্নীতি দমন কমিশন সেই সমস্ত খবরের সত্যতা যাচাই বাছাই না করে তা লুফে নেয়। এসব ভিত্তিতে মনগড়া তদন্ত করে। আর এই সমস্ত তদন্তের কথা বলে বিভিন্ন গোষ্ঠী ওই সমস্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলোতে গিয়ে শুরু করে চাঁদাবাজি এবং অবৈধ ভাবে অর্থ আদায়। কর নেয়ার রাষ্ট্রীয় নিজস্ব একটি পদ্ধতি আছে। কিন্তু সেই পদ্ধতি উপেক্ষা করে এক এগারো কুশলীবরা চাঁদাবাজির নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করে এবং সেই পদ্ধতি ছিল নিপীড়ন মূলক। এর ফলে বাংলাদেশের বেসরকারি খাত মুখ থুবড়ে পড়েছিল। স্বনির্ভর বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় সৃষ্টি হয়েছিল বিশাল একটা প্রতিবন্ধকতা।

মূলত ভারত চায় না যে বাংলাদেশে বড় শিল্প বিনিয়োগ হোক। ব্যবসায়ীরা মাথা তুলে দাঁড়াক। কারণ বাংলাদেশের বেসরকারি খাত যদি সমৃদ্ধ হয়, তাহলে দেশও সমৃদ্ধ হবে। এজন্য এক এগারোতে রাজনীতিবিদের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও টার্গেট করা হয়েছিল। বেসরকারি খাতকে ধ্বংস করার মিশনের মূল হোতা ছিল প্রথম আলো-ডেইলি স্টার গোষ্ঠী। সেই সময় একের পর এক বিভিন্ন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ উত্থাপন করে, ব্যবসায়ীদের সম্বন্ধে জনগণের মধ্যে একটি নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সেই অবৈধ অন্ধকার সময়ে চার হাজার সাতশ ২৫ কোটি টাকা অবৈধ ভাবে আদায় করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এই অবৈধ অর্থ আদায়ের বিরুদ্ধে অনেকে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন। হাইকোর্টে দায়ের করা এই রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এই ধরনের জরিমানা আদায় অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন। অবৈধ ভাবে অর্জিত অর্থ গুলো সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদেরকে ফেরত দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। কিন্তু তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ছিল এক এগারোর ধারাবাহিকতা। এ কারণে তারা সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের পরও ওই সমস্ত অর্থ ব্যবসায়ীদেরকে ফেরত দেয়নি। এই অবৈধ তৎপরতার ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিপুল ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। 

আমরা যেমন ঋণ খেলাপিদের কথা বলছি, অর্থ পাচারের কথা বলছি, সাথে সাথে অন্যায় অযৌক্তিকভাবে ভয় দেখিয়ে রাষ্ট্রীয় চাঁদাবাজি হয়েছে সেটি প্রতিরোধের জন্য কোন কথাবার্তা বলা হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ আমলে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত ছিলো। বিভিন্ন অজুহাতে জোর করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার সংস্কৃতিকে আওয়ামী লীগ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়। অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হিসাবে এই সমস্ত অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ অবশ্যই বেসরকারি খাতের ভুক্তভোগীদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া দরকার। 

এবার আমরা বর্তমান প্রেক্ষাপটে ফিরে আসি। এখন রাজনীতিবিদদের চরিত্র হননের ক্ষেত্রে প্রথম আলো-ডেইলি স্টার গোষ্ঠীর কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করছে ভয়ে কিংবা তাদের অতীত অপকর্ম ঢাকতে। কিন্তু তারা ব্যবসায়ীদের চরিত্রহননের ক্ষেত্রে ঠিক এক এগারোর ফর্মুলাই বাস্তবায়ন করছে। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা লক্ষ্য করছি যে বিভিন্ন ব্যবসা এবং শিল্প গোষ্ঠীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। তাদেরকে অন্যায়ভাবে নানা রকম হয়রানি করা হচ্ছে। এক এগারোর স্টাইলে কোন তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই তাদের বিদেশের অর্থের উৎস সন্ধান করছে। এমনকি সংবাদপত্রে প্রকাশিত অসত্য, ভিত্তিহীন রিপোর্টের ভিত্তিতে তদন্তের নামে এক ধরনের প্রহসন চলছে। আর এসব হচ্ছে প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের তত্ত্বাবধানে। এরাই এক এগারোর আসল কুশীলব।

আমরা সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করেছি, বেশ কিছু প্রতিষ্ঠিত বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান এ রকম হয়রানির শিকার হচ্ছে। আমরা জানি যে বাংলাদেশের বেসরকারি খাত আমাদের অর্থনীতির প্রাণ। বেসরকারি খাতের কারণেই বাংলাদেশ আজ অর্থনীতির এই জায়গায় এসেছে। কাজেই বেসরকারি খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা হল অর্থনীতিকেই ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা। একটু গভীর ভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে, এখন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যে নোংরা খেলা চলছে তা আসলে বিরাজনীতিকরণের একটি অংশ। কারণ দেশে একটি নির্বাচনের পথে এগোতে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলো কয়েকটি ব্যাপারে এখন পর্যন্ত ঐক্যমত্য অবস্থায় রয়েছে। তার মধ্যে একটি হল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারকে পুনর্বাসন করতে দেওয়া হবে না। আর এটি বাস্তবায়ন করতে গেলে দেশে যেমন গণতান্ত্রিক ধারা দরকার তেমনি অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা দরকার। কিন্তু যদি বেসরকারি খাতকে এভাবে হয়রানি করা হয়, বেসরকারি খাতের বিরুদ্ধে যদি এক এগারোর মতোই নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তাহলে বেসরকারি খাত মুখ থুবড়ে পরবে। এমনিতেই ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন শিল্প কারখানায় অযৌক্তিকভাবে অগ্নিসংযোগ হয়েছে। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান লুটপাট হচ্ছে। ফলে অনেক ব্যবসায়ী উদ্যম হারিয়ে ফেলছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং বৈরী পরিবেশের কারণে ব্যবসায়ীরা নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। এরপরেও প্রধান উপদেষ্টার ঐকান্তিক চেষ্টায় যখন বাংলাদেশের শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে একটা নতুন প্রাণ সঞ্চারের চেষ্টা হচ্ছে, তখনই প্রথম আলো-ডেইলি স্টার গোষ্ঠী আবার বেসরকারি খাতের বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এর ফলে অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পরবে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটবে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ঘটবে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে। এরকম একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এক এগারোর পটভূমি তৈরি করে। সে রকম একটি পটভূমি তৈরি করার এখন নিভৃতে চেষ্টা চলছে বলে কেউ কেউ মনে করেন। আমি মনে করি যে, একদিকে রাজনৈতিক দলগুলো যেমন এক এগারো প্রতিরোধের জন্য বদ্ধপরিকর ঠিক তেমনি তাদেরকে সুষ্ঠু ব্যবসায়ী বান্ধব পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝতে হবে যে, অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়লে আবার নতুন করে ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। সেই সুযোগ সৃষ্টি করার জন্যই বিরাজনীতিকরণের মাস্টারমাইন্ড গোষ্ঠী এই কর্মকাণ্ড গুলো করছে বলেই অনেকের ধারণা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ভবিষ্যৎ স্থপতিদের অনুপ্রাণিত করতে ‘কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ভবিষ্যৎ স্থপতিদের অনুপ্রাণিত করতে ‘কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড’
ছবি: কালের কণ্ঠ

ভবিষ্যৎ স্থপতিদের অনুপ্রাণিত করার জন্য ষষ্ঠবারের মতো ‘কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ডস ফর ফিউচার আর্কিটেক্টস: বেস্ট আন্ডারগ্রাজুয়েট থিসিস’ অ্যাওয়ার্ডের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিবছরের মতো এবারও দেশের তিনজন উদীয়মান মেধাবী স্থপতিকে সম্মাননা দেওয়া হবে।

‎বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশের (আইএবি) মিলনায়তনে কেএসআরএম ও আইএবি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

‎দেশের শীর্ষস্থানীয় ইস্পাত শিল্প প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম ও ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ (আইএবি) এ আয়োজন করেছে।

‎সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন, আইএবি সভাপতি স্থপতি ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ।

আরো পড়ুন
মডেল মেঘনার জামিন মেলেনি

মডেল মেঘনার জামিন মেলেনি

 

‎এতে বলা হয়, আইএবির সহায়তায় কেএসআরএম আয়োজিত একটি মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি ‘কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ডস ফর ফিউচার আর্কিটেক্ট’। এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের আইএবি স্বীকৃত আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টের স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সেরা দূরদর্শী প্রকল্পগুলোকে সমাদৃত করা।

‎কেএসআরএম ও আইএবির মধ্যে ১০ বছর মেয়াদী একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে ২০১৯ সালে।

সেই থেকে জুরি বোর্ড নির্বাচিত উদীয়মান তিনজন স্থপতিকে প্রতিবছর অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় কেএসআরএমের পক্ষ থেকে। চুক্তির আওতায় আইএবি স্বীকৃত দেশের স্বনামধন্য ১৫টি আর্কিটেকচার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্নাতক পর্যায়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা এ অ্যাওয়ার্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সেরা তিন প্রতিযোগী চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের প্রজেক্টের মধ্য থেকে সেরা তিনজনকে বাছাই করবেন দেশের জ্যেষ্ঠ পাঁচজন স্থপতি নিয়ে গঠিত জুরি বোর্ড।


‎২৭ এপ্রিল সকাল ১০টায় আইএবি সেন্টারে প্রজেক্টগুলোর প্রদর্শনী উদ্বোধন করা হবে। চারদিনব্যাপী প্রদর্শনী চলবে ৩০ এপ্রিল রাত ৮টা পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আইএবি সেন্টার আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে থাকার সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

আরো পড়ুন
শেখ পরিবারের জুয়েল-রুবেল-সোহেল-তন্ময়ের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

শেখ পরিবারের জুয়েল-রুবেল-সোহেল-তন্ময়ের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

 


‎কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড-এ প্রথম পুরস্কার বিজয়ী পাবেন ১ লাখ টাকার সম্মাননা, দ্বিতীয় পুরস্কার বিজয়ী ৭৫ হাজার টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার বিজয়ী পাবেন ৫০ হাজার টাকার সম্মাননা। একই সঙ্গে উভয়কেই ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হবে।

‎অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, কেএসআরএমের মহাব্যবস্থাপক (মার্কেট রিচার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) কর্নেল আশফাকুল ইসলাম (অব.) ইঞ্জিনিয়ার, আইএবি সহ-সাধারণ সম্পাদক স্থপতি ড. মো. নওরোজ ফাতেমী, সম্পাদক (শিক্ষা) স্থপতি ড. মো. মারুফ হোসেন, সম্পাদক (প্রকাশনা ও প্রচার) স্থপতি মো. শফিউল আযম শামীম, জুড়ি চেয়ার স্থপতি নিশাত আফরোজ, অ্যাওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর স্থপতি সাকিব আহসান চৌধুরী।

উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম, আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সাইফুল আলম চৌধুরী, উপ-ব্যবস্থাপক সৈয়দ তানভীরুল হাসান, ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, অফিসার মো. মুন রহমান মুন্না।

‎কেএসআরএমের মহাব্যবস্থাপক কর্নেল আশফাকুল ইসলাম বলেন, ২০১৯ সালে প্রবর্তিত এ অ্যাওয়ার্ডটি স্থাপত্যের স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষার্থী এবং ডিপার্টমেন্টগুলোকে অনুপ্রাণিত করার জন্য বার্ষিকভাবে দেওয়া হয়। প্রদর্শনী এবং প্রকাশনা মিলিয়ে ‘কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ডস ফর ফিউচার আর্কিটেক্টস’ মেধাবী শিক্ষার্থী-প্রকল্পগুলো উপস্থাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। কেএসআরএম বিশ্বাস করে শুধু বিশ্বমানের অবকাঠামো নির্মাণই নয়, স্বপ্ন নির্মাণের দায়িত্বও আমাদের। স্থাপত্য কেবল একটি পেশা নয়, এটি একটি দৃষ্টিভঙ্গি, একটি ভাষা- সবকিছুতেই স্থাপত্য। যার মাধ্যমে আমরা আমাদের নগর, সংস্কৃতি ও আগামী দিনের চাহিদাকে রূপ দেয়।

‎এবারের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এআইইউবি), ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, স্ট্যামফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, লিডিং বিশ্ববিদ্যালয়, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিক, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি।

মন্তব্য

সাবেক রাষ্ট্রপতির জামাতাসহ ২ কর কমিশনার বাধ্যতামূলক অবসরে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সাবেক রাষ্ট্রপতির জামাতাসহ ২ কর কমিশনার বাধ্যতামূলক অবসরে

দুই অতিরিক্ত কর কমিশনার মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান ও মো. শফিকুল ইসলাম আকন্দকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) কর শাখা-২-এর সহকারী সচিব জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

মাহমুদুজ্জামান কর আপিল অঞ্চল, রাজশাহীর কমিশনারের চলতি দায়িত্বে ছিলেন এবং শফিকুল ইসলাম আকন্দ কর আপিল অঞ্চল-১, ঢাকার কমিশনারের চলতি দায়িত্বে ছিলেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে এবং সরকার জনস্বার্থে অবসর প্রদান করা প্রয়োজন বলে মনে করায়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তাদের অবসর দেওয়া হলো।

তাতে আরো জানানো হয়েছে, তারা বিধি অনুযায়ী অবসরসংক্রান্ত সব সুবিধা পাবেন।

উল্লেখ্য, মাহমুদুজ্জামান সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের জামাতা। কেউ কেউ মনে করছেন, এ কারণেই তাকে অবসরে পাঠানো হয়েছে। আবার কারো মতে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ছিল, যার পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শফিকুল ইসলাম আকন্দের বিরুদ্ধে এর আগে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ছিল। এ অভিযোগের কারণে তাকে একবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।

মন্তব্য

র‌্যাবের নতুন মুখপাত্র ইন্তেখাব

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
র‌্যাবের নতুন মুখপাত্র ইন্তেখাব
সংগৃহীত ছবি

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার (মুখপাত্র) দায়িত্ব পেয়েছেন উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী। র‍্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক সিনিয়র এএসপি মুত্তাজুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন
জাতীয় নির্বাচনে ইসিকে সহায়তা করতে চায় অস্ট্রেলিয়ার

জাতীয় নির্বাচনে ইসিকে সহায়তা করতে চায় অস্ট্রেলিয়ার

 

মুত্তাজুল ইসলাম জানান, বর্তমান মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমানের স্থলাভিষিক্ত হবেন ইন্তেখাব চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ইন্তেখাব চৌধুরী তার দায়িত্ব বুঝে নেবেন।

আরো পড়ুন
পাকিস্তানের ওপর ভারতের সিদ্ধান্তের প্রভাব কী?

পাকিস্তানের ওপর ভারতের সিদ্ধান্তের প্রভাব কী?

 

র‌্যাব প্রতিষ্ঠার পর এ পর্যন্ত ১৩ জন কর্মকর্তা মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ইন্তেখাব চৌধুরী হচ্ছেন ১৪তম মুখপাত্র। বর্তমান মুখপাত্র আশিকুর রহমান আইন ও গণমাধ্যম শাখার পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে বাহিনীটির অপারেশন উইংয়ের পরিচালকের (অতিরিক্ত) দায়িত্বও পালন করছেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

জাতীয় নির্বাচনে ইসিকে সহায়তা করতে চায় অস্ট্রেলিয়া

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
জাতীয় নির্বাচনে ইসিকে সহায়তা করতে চায় অস্ট্রেলিয়া

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়া।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এই মন্তব্য করেন অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইলি।

সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সুসান রাইলি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার আমাদের সময় দিয়েছেন, এ জন্য তাকে ধন্যবাদ। আমরা বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে পেরেছি।

অস্ট্রেলিয়া আশা করে, এই নির্বাচন হবে অবাধ ও সুষ্ঠু। আমাদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে এবং আমরা নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

এর আগে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন। অনেক দেশ নির্বাচনী সহায়তা দেওয়ার আগ্রহও প্রকাশ করেছে।

ইতিমধ্যে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনী উপকরণ সরবরাহের মাধ্যমে সহায়তা দিচ্ছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ