<p>মানুষের কোষে নানা ধরনের বিপাক ক্রিয়া চলে। এসব রাসায়নিক ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় উপজাত হিসেবে তৈরি হয় নানা রকম রাসায়নিক যৌগ, যা শরীরের জন্য অপ্রয়োজনীয় এবং বর্জ্য হিসেবেই বিবেচিত হয়। ইউরিক এসিড এমনই একটি রাসায়নিক যৌগ। এটি মানবদেহের কিডনির মাধ্যমে প্রস্রাবের সঙ্গে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।</p> <p>কোনো কারণে রক্তে এই ইউরিক এসিডের মাত্রা স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি হলে সেটিকে ‘হাইপার ইউরেসিমিয়া’ বলে। দুই-তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রে এই বাড়তি ইউরিক এসিড কোনো সমস্যা করে না। এক-তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রে গাউট বা গেঁটেবাত হয় এবং কিডনিতে পাথর হয়।</p> <p><strong>ইউরিক এসিড কেন বাড়ে?</strong></p> <p>আমাদের শরীরে যে ইউরিক এসিড আছে, তার এক-তৃতীয়াংশ আসে আমিষজাতীয় খাবার থেকে, আর বাকি দুই-তৃতীয়াংশই কিন্তু কোষের নানা বিপাক ক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন হয়।</p> <p>কোনো কারণে যদি কিডনি শরীর থেকে ইউরিক এসিড নিষ্কাশন করতে না পারে বা ইউরিক এসিড বিপাকে কোনো ত্রুটি হয়, এনজাইমে ঘাটতি থাকে কিংবা অতিরিক্ত ইউরিক এসিড তৈরি হতে থাকে, তবেই সমস্যা দেখা দেয়।</p> <p><strong>চিকিৎসা ও করণীয়</strong></p> <p>উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেতে হবে। বাজারে ইউরিক এসিড কমানোর জন্য বেশ কিছু ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়। তবে ইউরিক এসিড বাড়লেই সেসব ওষুধ খেতে হবে এমন নয়।</p> <p>সব সময় ওষুধ লাগেও না। বিশেষ করে অ্যাকিউট অ্যাটাক বা হঠাৎ সন্ধি প্রদাহের সময় ওষুধ দেওয়া হয় না। আবার দীর্ঘ মেয়াদে এসব ওষুধের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। তাই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ না করে ওষুধ খাওয়া শুরু করা, কমানো বা বাড়ানো যাবে না।</p> <p>ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।</p> <p>ওজন বেশি থাকলে কমাতে হবে। বাড়তি ওজন হাইপারইউরেসেমিয়ার একটি কারণ। চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত ওষুধ খাওয়া যাবে না। অ্যালকোহল বর্জন করতে হবে। ভিটামিন ‘সি’ ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রণে ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে পরামর্শ দেওয়া হয়।</p> <p> </p> <p>পরামর্শ দিয়েছেন</p> <p><strong>ডা. মো. গুলজার হোসেন</strong></p> <p>সহকারী অধ্যাপক, রক্তরোগ বিভাগ</p> <p>বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা</p>