<p style="text-align:justify">শিশুকে নিয়ে মা-বাবার নাজেহাল অবস্থা। স্কুলে তার বিরুদ্ধে শত নালিশ, সে অমনোযোগী, কোনো কাজ ঠিকমতো করে না, অকারণে ঝামেলা পাকায়। সে জন্য কয়েক দিন পর পর মা-বাবাকে স্কুল থেকে তলব করে। শিশুটিকে নিয়ে কারো বাড়িতে বেড়াতে যাবে তারও জো নেই। এই বুঝি এটা ভাঙল তো ওটা ফেলল! না ঘরে, না বাইরে কোথাও একদণ্ড স্থির হয়ে বসে না, কখন কি ভাঙে-কখন কোথায় পড়ে পা মচকায়, সব সময় আতঙ্গে রাখে। শিশুর এমন দুরন্তপনাকে বশে আনার জন্য জেনে নিন কিছু কৌশল</p> <p style="text-align:justify"><strong>হাইপার অ্যাকটিভ চাইল্ডের বিশেষত্ব</strong></p> <p style="text-align:justify">ডাক্তারি পরিভাষায় এই আচরণগত সমস্যাটির নাম-‘এডিএইচডি’ অর্থাৎ ‘এটেনশন ডিফিসিট হাইপার অ্যাকটিভ ডিস অর্ডার’। এটির বিশেষত্ব হচ্ছে অমনোযোগ, বেহিসেবি দস্যিপনা ও অস্থিরতা।</p> <p style="text-align:justify"><strong>কারণ</strong></p> <p style="text-align:justify">সমস্যাটির জন্য জেনেটিক ধাতকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে দায়ী করা হয়। কখনো বা বিভিন্ন ‘নিউরো কেমিক্যাল ফ্যাক্টরকে’ সংকট সূত্র বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। ‘এডিএইচডি’র আধিক্য মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের প্রায় চার থেকে ছয় গুণের মতো বেশি দেখা যায়। প্রায় অর্ধেকের বেশি ক্ষেত্রে শিশুর বয়স চার বছর হওয়ার আগেই সমস্যাটি প্রকাশ পেয়ে থাকে।</p> <p style="text-align:justify"><strong>চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা</strong></p> <p style="text-align:justify">এক.</p> <p style="text-align:justify">শিশুর জন্য একটি দৈনিক রুটিন তৈরি করে দিতে হবে, যা সে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করবে এবং যখনই সে রুটিন মেনে চলছে তখনই তাকে উৎসাহ দিতে হবে। পুরস্কৃত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রুটিন পালন করাতে গিয়ে সীমাহীন তাগাদা দেওয়া কিংবা তাকে অতিষ্ঠ করে তোলা, ক্লান্ত করে তোলা মোটেও সমীচীন নয়। খেলার পরে, কাজের মাঝে বিশ্রামের বন্দোবস্ত থাকা চাই।</p> <p style="text-align:justify">দুই.</p> <p style="text-align:justify">সাংঘাতিক রকমের ডানপিটে শিশুকে নিয়ে গাড়ি করে দূরের যাত্রায় যাওয়ার সময়ে সতর্ক থাকতে হবে। ঘরের পরিবেশ এমনতরো হওয়া চাই, যাতে করে ঘরের দামি ভঙ্গুর ও বিপজ্জনক জিনিসপত্রাদি শিশুর নাগালের বাইরে থাকে। শিশুর উন্নতি কিংবা পড়াশোনাতে ভালো ফল লাভ, প্রশংসা ও পুরস্কৃত করার দ্বারা উৎসাহ দিতে হবে।</p> <p style="text-align:justify">তিন.</p> <p style="text-align:justify">এসব শিশু চিকিৎসায় বিহেভিয়ার থেরাপি-ই মুখ্য। ওষুধের চিকিৎসা প্রয়োগের বিষয়টি শিশুর মা-বাবা, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে পরামর্শ করা হয়।</p> <p style="text-align:justify"><strong>পরামর্শ দিয়েছেন</strong></p> <p style="text-align:justify">প্রফেসর ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী<br /> সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশু স্বাস্থ্য বিভাগ<br /> চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল</p>