<p>গাছের কান্ডে ডালপালা থাকবে, পাতা থাকবে, ফুল হবে, ফল ধরবে, এটাই স্বাভাবিক। অধিকাংশ গাছেই কান্ড থেকে ছোট ছোট শাখা বের হয়। অনেক গাছের কান্ড থেকে কোনো শাখাই বের হয় না। এর মধ্যে রয়েছে তালগাছ, নারকেলগাছ, খেজুরগাছ। গাছের ডাল বা শাখা ঠিক পাতার ওপর দিকে পাতার গোড়া থেকেই বের হয়।</p> <p>কান্ডে যে জায়গা থেকে পাতা বের হয় তাকে কান্ডের পর্ব বলা হয়। কান্ডের পর্বের জায়গাটা অন্য জায়গাগুলোর তুলনায় কিছুটা ফোলা থাকে। ডাল বা শাখা কান্ড থেকে অকারণে বের হয় না। পাতার গোড়ায় কান্ডের পর্বের মধ্য অংশে আগে থেকেই ছোট্ট একটা মুকুল তৈরি হয়। এই মুকুল থেকে শুধুই শাখা তৈরি হয় বলে এদের অঙ্গজ মুকুল বলে। পাতার গোড়ায় থাকে বলে এদের কাক্ষিক মুকুল ও বলা হয়।</p> <p>গাছের বেড়ে ওঠার জন্য কান্ডের মাথায় এক ধরনের কোষ থাকে। এর নাম ভাজক টিস্যু। এদের কোষগুলো সব সময়েই বিভাজিত হয়। এই সব বিভাজিত কোষ থেকে নিচের অংশে পাতা কুড়ি ইত্যাদি তৈরি হচ্ছে। কান্ডের ডগা তে যে ভাজক টিস্যু থাকে তার কোষগুলো বিভাজিত হয়েই পাতা এবং কাক্ষিক মুকুল তৈরি হয়। যে সব গাছে শাখা থাকে তাতে এই দুটো অংশ আলাদা ভাবে তৈরি হতে পারে, এরা কেউ কাউকে দেয় না।  </p> <p>তালগাছের অগ্রমুকুল থেকে পাতা এবং শাখার অংশ দুটোই আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু তাল গাছের পর্বের মধ্য অংশ্য খুবই ছোট, তাই পর্বগুলি খুব কাছাকাছি থাকে। ফলে পাতাও খুবই কাছাকাছি বের হয়। তাই তাল গাছে পাতা সবই মাথার ওপরে এক জায়গায় জড়ো হয়; কান্ডের গায়ে ছাড়নো নয়। এছাড়া তালগাছের পাতার গোড়া বেশ চওড়া হয়। পত্রবৃন্ত কান্ডে অনেকটা অংশ ঢেকে রাখে, ফলে কাক্ষিক মুকুল চাপা পড়ে যায় আর বাড়তে পারে না। সেজন্যই তা শুকিয়ে আসে বা নষ্ট হয়। তখন আর কোনো শাখা বা ডাল তৈরি হবার সম্ভবনা থাকে না। তাই ডালের কান্ড থেকে কোনো শাখা তৈরি না হয়ে শুধু লম্বায় বাডতে থাকে। </p> <p>সূত্র: উদ্ভিদ বিজ্ঞান/ ভূপেন্দ্রনাথ স্যানাল <br />  </p>