<p>বিড়াল নিয়ে একটা প্রশ্ন হরহামেশাই দেখা যায় যে বিড়ালের চোখ রাতে জ্বলজ্বল করে। বিড়াল নিশাচর প্রাণীদের কাতারে পড়ে। পোষা বিড়াল অবশ্য দিনের বেলায়ও নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে। রাতের বেলায় বিড়ালের চোখে আমাদের চোখ পড়লে দেখা যায়, বিড়ালের চোখ যেন জ্বলজ্বল করছে। বিড়ালের ক্ষেত্রে যে শুধু এমনটা ঘটে তা নয়। কুকুর, শিয়াল, বাঘ, সিংহ- এদের চোখও রাতের বেলায় জ্বলজ্বল করে। কিন্তু এদের চোখ জ্বলজ্বল করে কেন? </p> <p>দিনের আলোয় বিড়ালের দিকে ভালো করে তাকালে দেখা যায়, সে তার চোখকে স্বাভাবিকের চেয়ে কুঁচকে অনেকটা ছোট করে নিয়েছে। একই সঙ্গে  চোখের তারারন্ধ্রও (চোখের মনি) ছোট করে ফেলেছে। তারারন্ধ্র ছোট করার কারণ, চোখের ভেতরে যাতে বেশি আলো ঢুকতে না পারে। কিন্তু এমনটা করে কেন?</p> <p>এর একটা কারণ আছে। বিড়ালের অক্ষিপটে রয়েছে দুই ধরনের কোষ। কোষ দুটি ‘কোন কোষ’ আর ‘রড কোষ’ নামে পরিচিত। কোন কোষের কাজ বেশি আলোতে দেখতে সাহায্য করা। রড কোষের কাজ কম আলোতে দেখতে সাহায্য করা। বিড়ালের চোখের অক্ষিপটে রড কোষের সংখ্যা বেশি। তাই বেশি আলোতে বিড়াল চোখ ছোট করার সঙ্গে তারারন্ধ্রও ছোট করে থাকে। </p> <p><a href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2023/11/01/1332212"><span style="color:#2980b9;">আরও পড়ুন: সাপ গরুর বাঁট থেকে দুধ খায়—সত্যি না কুসংস্কার?</span></a></p> <p>অক্ষিপট মূলত কোন কোষ, রড কোষ দিয়ে তৈরি চোখের ভেতরকার একটা পর্দা। বাইরে থেকে আলো তারারন্ধ্র দিয়ে ঢুকে অক্ষিপটে বাইরের বস্তুর ছবি তুলে ধরে। অনেকটা ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার মতো। বিড়ালের চোখে অক্ষিপটের পেছনে রয়েছে একটি স্তর। স্তরটি ট্যাপেডাম লুসিডাম নামে পরিচিত। এটা এক ধরনের কেলাস বা স্ফটিক দিয়ে তৈরি। এই কেলাসে বাইরের আলো পড়লে তা কেলাসের চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং আলো নানা দিকে প্রতিফলিত হয়। ফলে রাতে বিড়াল যখন বের হয় তখন তার চোখে আলো পড়তেই চোখ জ্বল জ্বল করে ওঠে। </p> <p><a href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2023/10/31/1331884"><span style="color:#2980b9;">আরও পড়ুন: জোনাকি পোকা আলো জ্বালে কেন? কিভাবে জ্বালে এই আলো?</span></a></p> <p>রাত বলতেই আমাদের অন্ধকারের কথা মনে হয়। প্রকৃতপক্ষে একেবারে অন্ধকার বলতে কিছু নেই। যতই ঘুটঘুটে অন্ধকার বলি না কেন, তাতে অল্পবিস্তর আলো থাকে। বিড়ালের চোখে রড কোষ সংখ্যায় বেশি থাকে। ফলে বিড়াল অন্ধকারে ভালো করে দেখতে পায়। রাতের আলোতে বিড়াল চোখের তারারন্ধ্র দিনের আলোর মতো কুঁচকে না রেখে পুরোটা খুলে রাখে, যাতে বাইরের সবটুকু চোখের ভেতরে ঢুকতে পারে। তারারন্ধ্র দিয়ে আলোটা ট্যাপেটাম লুসিডাম স্তরে পৌঁছায়। আলোকরশ্মি ট্যাপেটাম লুসিডাম থেকে প্রতিফলিত হয়ে চোখের চারদিকে ছডিয়ে পড়ে। ফলে বিড়ালের চোখের ভেতরটা আলোকিত হয়ে ওঠে আর অক্ষিপটেও বাইরের বস্তুর স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি গঠিত হয়। প্রতিফলিত আলোয় চোখের ভেতরটা উজ্জ্বল হয় বলেই অন্ধাকারে বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় বিড়ালের চোখের ভেতরটা জ্বলছে। </p> <p style="margin-bottom:13px"> </p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:Calibri,"sans-serif""><span style="font-family:SolaimanLipi">সূত্র : </span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><a href="https://pethelpful.com/cats/The-Anatomy-of-a-Cats-Eye"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:Calibri,"sans-serif""><span style="font-family:SolaimanLipi">১. The Anatomy and Function of a Cat's Eye</span></span></span></span></a></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:Calibri,"sans-serif""><span style="font-family:SolaimanLipi">২. প্রাণিবিজ্ঞান/ভূপেন্দ্রনাথ স্যানাল</span></span></span></span></p> <p> </p>