<p>ডিম আপনার প্রিয় খাদ্য হতে পারে, স্বাদেও অসাধারণ। কিন্তু এই স্বাদ আর গুণ আর থাকে না, যদি ডিমটা পচে যায়। ডিমের একটা মজার ধর্ম আছে। ভালো ডিম পানিতে ছেড়ে দিলে ডুবে যায়। কিন্তু পচা ডিম পানিতে ডোবে না, ভেসে ওঠে। কেন এমন হয়। </p> <p>একটি তাজা ডিমের ভেতরে থাকে ডিমের সাদা অংশ (অ্যালবুমিন), ডিমের কুসুম (ইয়োক), এবং একটি বায়ুর থলি। তাজা ডিমে এই বায়ুর থলি খুব ছোট থাকে, এবং এর ভেতরের প্রোটিন ও অন্যান্য উপাদান সতেজ থাকে। তবে সময়ের সাথে সাথে ডিমের অভ্যন্তরীণ উপাদানগুলোর রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে। </p> <p>ডিমের খোসা ছিদ্রযুক্ত হওয়ায় ডিমের অভ্যন্তরে ক্রমাগত গ্যাস প্রবেশ করতে পারে। ডিম পুরোনো হলে বা পচতে শুরু করলে, অভ্যন্তরীণ উপাদানগুলোর পচন শুরু হয় এবং এর ফলে ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো প্রোটিন ও অন্যান্য উপাদান ভেঙে দেয় এবং এর ফলে গ্যাস উৎপন্ন হয়। </p> <p>ডিমের অভ্যন্তরে উৎপন্ন গ্যাসের ফলে ডিমের ভেতরের চাপ বাড়তে থাকে, ফলে ডিমের ভেতরের বায়ুর থলি বড় হতে শুরু করে। ডিমের ভেতরের গ্যাসের পরিমাণ বাড়লে ডিমের মোট ঘনত্ব কমে যায়। </p> <p>তাজা ডিমের ঘনত্ব পানির চেয়ে বেশি থাকে, তাই তা পানিতে ডুবে যায়। কিন্তু যখন ডিম পচে যায় এবং অভ্যন্তরীণ গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যায়, তখন ডিমের ঘনত্ব পানির চেয়ে কম হয়ে যায়। ফলে, ডিমটি পানিতে ভেসে ওঠে।</p> <p>তাই ভালো বা পচা চিনতে ডিমের এই গুণটি বেশ কার্যকর। তাজা ডিম পানিতে রাখলে এটি তলায় ডুবে যায়, কিছুটা পুরানো ডিম হলে এটি একটু কাত হয়ে থাকে, আর পচা ডিম পুরোপুরি ভেসে ওঠে। এছাড়াও, পচা ডিমের একটি বিশেষ গন্ধ থাকে যা পচন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন গ্যাসের কারণে তৈরি হয়।</p> <p>পচা ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে। পচা ডিমে সালমোনেলা এবং অন্যান্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যা খাদ্য বিষক্রিয়ার কারণ হতে পারে। তাই, ডিম ব্যবহারের আগে অবশ্যই নিশ্চিত হওয়া উচিত যে তা তাজা এবং ভেতরে পচন শুরু হয়নি।</p>