<p>কিডনিতে পাথর হওয়ারপেছনে বেশ কয়েকটি কারণ কাজ করে। কিডনির পাথর হল কঠিন পদার্থের ক্ষুদ্র টুকরো যা আমাদের শরীরের মধ্যে খনিজ ও লবণ জমে তৈরি হয়। এই পাথর ছোট হলে প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যেতে পারে, তবে বড় হলে এটি তীব্র ব্যথার কারণ হতে পারে এবং চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। আসুন কিডনিতে পাথর কেন হয় তা সহজভাবে আলোচনা করি।</p> <p>আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পানি ঠিক মতো পেলে তা প্রস্রাবের মাধ্যমে বিভিন্ন খনিজ এবং লবণ বের করে দেয়। কিন্তু অনেকেই পর্যাপ্ত পানি পান করেন না, ফলে প্রস্রাবে থাকা খনিজ ও লবণ জমাট বেঁধে পাথর তৈরি করে।</p> <p>খাবারে অতিরিক্ত লবণ বা প্রোটিন থাকলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। লবণ শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, যা ক্যালসিয়াম কিডনিতে জমে গিয়ে পাথর তৈরি করতে পারে। আবার অতিরিক্ত প্রোটিন প্রস্রাবে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা পাথরের সৃষ্টি করতে পারে।</p> <p>যাদের পরিবারের সদস্যদের কিডনিতে পাথর হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এটি একধরনের জেনেটিক কারণ হতে পারে, যা বংশপরম্পরায় চলতে পারে।</p> <p>কিডনির পাথর অনেক সময় অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম প্রস্রাবে জমা হওয়ার কারণে হয়। যারা ক্যালসিয়ামের সাপ্লিমেন্ট বেশি নেন, তাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি বেশি থাকে।</p> <p>প্রস্রাবে সংক্রমণ হলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে প্রস্রাবে ক্ষতিকর পদার্থ তৈরি হতে পারে যা পাথরের জন্ম দেয়।</p> <p>কিছু ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি কিডনিতে পাথর তৈরি করার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। যেমন: কিছু ওষুধে অক্সালেটের মাত্রা বেশি থাকে, যা কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে।</p> <p>কিডনিতে পাথর হলে তীব্র পেট বা পিঠে ব্যথা, প্রস্রাবে রক্ত, বমি বমি ভাব, বা প্রস্রাবের সাথে জ্বালা হতে পারে। ছোট পাথর হলে তা নিজে থেকেই প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়ে যায়, তবে বড় পাথর হলে চিকিৎসা দরকার হয়।</p> <p><strong>প্রতিরোধের উপায়</strong></p> <ul> <li>প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা।</li> <li>লবণ এবং প্রোটিনের পরিমাণ কমানো।</li> <li>নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ক্যালসিয়ামের সাপ্লিমেন্ট নেয়া।</li> <li>প্রস্রাবে কোনো ধরনের সমস্যা থাকলে দ্রুত চিকিৎসা করানো।</li> <li>সাধারণত কিডনির পাথর হলে ডাক্তার প্রাথমিকভাবে পানির পরিমাণ বাড়াতে বলেন এবং ব্যথা কমানোর ওষুধ দেন। অনেক সময় ছোট পাথর নিজেই প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। তবে পাথর বড় হলে বিশেষ চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে, যেমন: লিথোট্রিপসি (পাথর ভাঙার পদ্ধতি) বা সার্জারি।</li> </ul> <p>কিডনি ভালো রাখতে প্রচুর পানি পান করা এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।</p> <p>সূত্র:  এনআইএইচ</p>