<p>কিন্তু নৌবাহিনী জেনেশুনে এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ কেন করতে গেল? সে ব্যাপারেও আলেন্ড কিছু জোড়াতালি মার্কা ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁরমতে, নৌবাহিনী জানত না বিদ্যুৎচুম্বকীয় ফিল্ড নাবিকদের ওপর এমন প্রভাব ফেলতে পারে।</p> <p>এই চিঠি পাওয়ার পর জেসাপের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল জানা যায়নি। তবে ভিনসেন্ট গ্যাডিস তাঁর সেই বিখ্যাত বই দ্য ইনভিজিবল হরাইজন বইয়ে লিখেছেন, জেসাপ আলেন্ডের গল্পগুলো একদমই বিশ্বাস করেনেনি। গাঁজাখুরি বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।<br /> কিন্তু গ্যাডিসকে কি বিশ্বাস করা যায়? বারামুডা ট্রায়াঙ্গল গুজবকে কিংবদন্তি পৌঁছে দেওয়ার খলনায়ক তো তিনিই।</p> <p><a href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/09/17/1426247"><span style="color:#2980b9">আরো পড়ুন : ফিলাডেলফিয়া রহস্য : পর্ব ৮</span></a></p> <p>যাইহোক, জেসাপ আরেকটা চিঠি লেখেন আলেন্ডের কাছে। বলেন, তিনি যে দাবি করেছেন, তারপক্ষে যেন প্রমাণ হাজির করেন। কিন্তু এবারও এক মাস অপেক্ষা করতে হয় জেসাপকে। তারপরও কোনো জবাব এলো না, পরে একে একে আরও চারমাস পার হলো। পঞ্চম মাসে এসে আবার চিঠি পেলেন আলেন্ড। জানিয়েছেন, তারপক্ষে সেই ঘটনার প্রমাণ হাজির করা সম্ভব নয়। কারণ নৌবাহিনী অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে প্রমাণ লোপাট করেছে। তবে আলেন্ড কয়েকটা উপায় বাতলে দেন। তিনি বলেন, মিস্টার জেসাপ, নৌবাহিনীর রিসার্চ ডিপার্টমেন্ট তখন নৌবাহিনীর বর্তমান প্রধান এডমিরাল অ্যালবার্ট বার্কের অধীনে ছিল। বুঝতেই পারছেন, বার্কের কৌতূহল, ইচ্ছা এবং অনুপ্রেরণা থেকেই এই এক্সপেরিমেন্টটি করা হয়েছিল। সুতরাং আপনি চাইলেও নৌবাহিনীর অন্দর থেকে প্রমাণ বের করা সম্ভব নয়। <br />  <br /> <strong>একটি আত্মহত্যা</strong><br /> আলেন্ডের চিঠি জেসাপকে আরও ভাবিয়ে তোলে। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। নিজের মতো করে গবেষণা চালিয়ে গেছেনে রহস্য উদঘাটনের জন্য। ১৯৫৭ সালে ওয়াশিংটন থেকে ডাক আসে। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর রিসার্চ সেন্টার থেকে। সেখানে হাজির হন জেসাপ। সেখানকার এক অফিসার তাঁর হাতে ধরিয়ে দেন একটা বই। বইয়ের লেখক স্বয়ং জেসাপ। তার সেই দ্য কেসেস অব ইউএফও বইয়ের একটা পেপারব্যাক সংস্করণ। বইটা উল্টেপাল্টে দেখলেন জেসাপ। ফিলাডেলফিয়া অধ্যায়ে প্রচুর দাগাদাগি করা হয়েছে, দুই লাইনের ফাঁকে, প্যারাগ্রাফের গ্যাপে, ডানে-বায়ে মার্জিনে। দেখলে মনে হয়, তিন কালিতে তিনজন লিখেছেন। লেখকের ধারণা খণ্ডন করেছেন, কখনো তাঁর নিজের মত বলেছেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong><strong>আরো পড়ুন</strong></strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><strong><img alt="ফিলাডেলফিয়া রহস্য : পর্ব ৬" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/14/1726308349-52aa34b8e4bb4f5ddd6856b94bc0184a.jpg" width="100" /></strong></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p><strong>ফিলাডেলফিয়া রহস্য : পর্ব ৬</strong></p> </div> </div> </div> <strong><a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/09/14/1425379" target="_blank"> </a></strong></div> </div> </div> </div> <p>আসল উদ্দেশ্য ছিল নৌবাহিনীর রিসার্চ প্রধানকে নিজের মত ব্যাখ্যা করে। নৌবাহিনীর অফিসারেরা ধরেই নিয়েছিলেন, তিনজন লোক তিন রকম কালিতে দাগাদাগি করেছে। কিন্তু তারা কারা সে বিষয়ে কোনো ধারনাই পাননি। জেসাপ খুব ভালো করে খেয়াল করলেন, তিন কালিতে তিন ধরনের ছাঁদে লেখা হলেও আসলে লিখেছেন একই লোক। কারণ, তিনি সেই লোকের হাতেলেখা ভালোকরেই চেনেন। অর্থাৎ কার্লোস মিগুয়েল আলেন্ডই হচ্ছেন এই বইয়ের প্রেরক। তখন জেসাপ আলেন্ডের সঙ্গে চিঠি বিনিময়ের কথা সব খুলে বললেন।</p> <p>এরপর অবশ্যে উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু দু বছর পরেই ঘটে দুর্ঘটনা। ১৯৫৯ সালের ২০ এপ্রিল। ফ্লোরিডার ডেড কাউন্ট্রি গাড়ির ভেতর পাওয়া যায় জেসাপের লাশ। গাড়ির দরজা জানালা বন্ধ ছিল। জানালার কাঁচের নিচ ঢোকানো ছিল একটা এক্সট পাইপ। ইঞ্জিন থেকে সেই পাইপ দিয়ে ভেতরে ঢুকছিল কার্বন মনো-অক্সাইড। প্রচুর পরিমাণে কার্বণ মনো-অক্সাউড ভেতরে ঢোকার ফলে দেখা দেয় অক্সিজেনের সংকট। তাতেই দম বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় জেসাপের।</p> <p>সবাই এটাকে আত্মহত্যা হিসেবেই ধরে নিয়েছিল। কারণ, বেশ কিছুদিন ধরে তিনি বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন। কিছুদিন আগে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। সুতরাং আত্মহত্যা তিনি করতেই পারেন।</p> <p>কিন্তু কেউ কেউ মনে করেন, ফিলাডেলফিয়া এক্সিপেরিমেন্ট নিয়ে নাড়াচড়া করাই তাঁর জন্য কাল হয়েছিল, অনেক বেশি জেনে ফেলেছিলেন তিনি। তাই তাঁকে মেরে ফেলা হয়ছে। তবে খুনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।</p> <p>চলবে...<br /> সূত্র : অল অ্যাবাউট হিস্ট্রি</p>