<p>প্রতিবছরের মতো এবারেও চিকিৎসাবিজ্ঞানে পুরস্কার ঘোষণার মাধ্যমে পর্দা উঠল নোবেল সপ্তাহের। মাইক্রো-আরএনএ (microRNA) এবং এর পোস্ট-ট্রান্সক্রিপশনাল জিন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা আবিষ্কারের সফল হন ভিক্টর অ্যামব্রোস এবং গ্যারি রাভকুন। ২০২৪-এর প্রথম নোবেলটা তাদের ঝুলিতেই গেল। ৭ অক্টোবর, সোমবার, কারোলিন্সকা ইনস্টিটিউটের নোবেল পরিষদ তাদের নাম ঘোষণা করে।</p> <p>আমাদের দেহের ক্রোমোজোমে তথ্য জমা থাকে। এই তথ্যগুলো প্রতিটি কোষের জন্য নির্দেশিকা বই বা ম্যানুয়াল হিসেবে কাজ করে। প্রতিটি কোষ একই ক্রোমোজোম ধারণ করে। ফলে প্রতিটি কোষে একই ধরনের জিন এবং নির্দেশনা থাকে। তবে পেশি ও স্নায়ুকোষের ক্ষেত্রে বিষয়টা এক নয়। এগুলোতে ভিন্ন বৈশিষ্ট্য থাকে। ভিন্ন প্রোটিন তৈরি হয়। কেন এই পার্থক্য? </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"> <figure class="image"><img alt="ডিএনএ থেকে mRNA " height="315" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2024/10/07/my1182/১১১১.jpg" width="600" /> <figcaption>ডিএনএ থেকে mRNA এবং প্রোটিনে জেনেটিক তথ্য প্রবাহ। ছবি : নোবেল কমিটি ফর ফিজিওলজি অর মেডিসিন। অলংকরণ : ম্যাটিয়াস কারলেন</figcaption> </figure> <p>এর সমাধান আছে জিন নিয়ন্ত্রণ বা জিন রেগুল্যুশনে। যা প্রতিটি কোষের শুধু প্রয়োজনীয় নির্দেশনাগুলো বাছাই করে দেয়। এতে প্রতিটি কোষে নির্ভুল ও সঠিক সেটের জিন সক্রিয় থাকে।</p> <p><strong>আরো পড়ুন</strong></p> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="জিন নিয়ন্ত্রণবিষয়ক গবেষণার জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন দুই বিজ্ঞানী" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/07/1728296149-c383f27d925789478b09d26dc834e277.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>জিন নিয়ন্ত্রণবিষয়ক গবেষণার জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন দুই বিজ্ঞানী</p> </div> </div> </div> <p><a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/07/1432739" target="_blank"> </a></p> </div> </div> <p>অ্যামব্রোস ও রাভকুনের গবেষণা শুরু হয় বিভিন্ন কোষের ধরন খোঁজার মাধ্যমে। তারা ক্ষুদ্র আরএনের একটা নতুন শ্রেণি আবিষ্কার করেছেন। এর নাম দিয়েছেন মাইক্রো-আরএনএ। নামে ক্ষুদ্র হলেও জিন নিয়ন্ত্রণে এই আরএনএ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যা মানুষসহ বহুকোষী প্রাণীর জিন নিয়ন্ত্রণের সম্পূর্ণ নতুন এক জগৎ খুলে দিয়েছে। এখন আমরা জানি, মানব জিনোমে এক হাজারের বেশি মাইক্রো-আরএনএ রয়েছে। এই আরএনএ জীবের বিকাশ এবং কার্যকরিতার জন্য মৌলিক উপাদান।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="নোবেল পদকের ডিজাইনার কে ছিলেন?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/07/1728296603-b51b0e7568b46069c7e7b905ec46aafd.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>নোবেল পদকের ডিজাইনার কে ছিলেন?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/07/1432750" target="_blank"> </a></div> </div> <p>ট্রান্সক্রিপশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জেনেটিক তথ্য ডিএনএ থেকে মেসেঞ্জার আরএনএ (mRNA)-তে পৌঁছয়। এরপর তা চলে যায় প্রোটিন তৈরির কারখানায়। সেখানে mRNA ট্রান্সলেট বা অনুলিপি হয়। শেষে ডিএনএর পাওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী প্রোটিন তৈরি হয়। প্রোটিনই আমাদের দেহের দরকারি কাজগুলো সম্পাদন করে। ২০ শতাব্দীর মাঝের দিকে ট্রান্সক্রিপশন এবং টান্সলেশনের মতো আবিষ্কার জিন গবেষণায় বিপ্লব ঘটায়। পদ্ধতিগুলো জিন সম্পর্কিত গবেষণার সহজ সমাধান এনে দেয়। আমাদের পুরো শরীরে প্রায় সব কোষে একই ডিএনএ থাকে। কিন্তু পেশিকোষ, স্নায়ুকোষ বা অন্ত্রের কোষে একটু ভিন্ন প্রোটিন দেখা যায়। কারণ প্রতিটি কোষে শুধু নির্দিষ্ট কিছু জিন সক্রিয় থাকে। যথাযথ জিন নিয়ন্ত্রণ কোষগুলোর বিশেষায়িত কাজ সম্পাদন করার উপযোগী করে তোলে। এভাবে অঙ্গ এবং টিস্যুগুলো সঠিকভাবে কাজ করে। এটা না হলে নির্দিষ্ট কিছু জিন সক্রিয় থাকত এবং শরীরের কোনো অঙ্গ কাজ করত, কোনোটা করত না।</p> <figure class="image"><img alt="চিত্র: (A) বিভিন্ন ধরনের কোষ কীভাবে বিকাশ লাভ করে তা বোঝার জন্য একটি কার্যকর C. elegans  মডেল। (B) অ্যামব্রোস এবং রাভকুন lin-4 এবং lin-14 মিউট্যান্ট নিয়ে গবেষণা করেন অ্যামব্রোস দেখান, lin-4 মূলত lin-14-কে বাধা দেয়। (C) অ্যামব্রোস আবিষ্কার করেন, lin-4 জিন একটি ছোট RNA, মাইক্রোআরএনএ তৈরি করে। যা কোনো প্রোটিন তৈরি করে না। রাভকুন lin-14 জিন ক্লোন করেন। শেষে দুই বিজ্ঞানী দেখলেন, lin-4 মাইক্রোআরএনএ সিকোয়েন্স lin-14 mRNA-এর একটি পরিপূরক সিকোয়েন্সের সঙ্গে মিলে যায়। © নোবেল কমিটি ফর ফিজিওলজি অর মেডিসিন। অলংকরণে: ম্যাটিয়াস কারলেন" height="511" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2024/10/07/my1182/222.jpg" width="600" /> <figcaption>(A) বিভিন্ন ধরনের কোষ কীভাবে বিকাশ লাভ করে তা বোঝার জন্য একটি কার্যকর C. elegans  মডেল।<br /> (B) অ্যামব্রোস এবং রাভকুন lin-4 এবং lin-14 মিউট্যান্ট নিয়ে গবেষণা করেন অ্যামব্রোস দেখান, lin-4 মূলত lin-14-কে বাধা দেয়। (C) অ্যামব্রোস আবিষ্কার করেন, lin-4 জিন একটি ছোট RNA, মাইক্রোআরএনএ তৈরি করে। যা কোনো প্রোটিন তৈরি করে না। রাভকুন lin-14 জিন ক্লোন করেন। শেষে দুই বিজ্ঞানী দেখলেন, lin-4 মাইক্রো-আরএনএ সিকোয়েন্স lin-14 mRNA-এর একটি পরিপূরক সিকোয়েন্সের সঙ্গে মিলে যায়। ছবি : নোবেল কমিটি ফর ফিজিওলজি অর মেডিসিন। অলংকরণে : ম্যাটিয়াস কারলেন</figcaption> </figure> <p><br /> তাহলে জিন নিয়ন্ত্রণ সঠিকভাবে কাজ না করলে ক্যান্সার, ডায়াবেটিক বা অটোইমিউনের মতো ভয়ানক রোগের দেখা মিলতে পারে। তাই জিন নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া বোঝা বিজ্ঞানীদের জন্য অনেক দিনের জমিয়ে রাখা লক্ষ্য ছিল। ১৯৬০-এর দশকে বিশেষ ‘প্রোটিন ট্রন্সক্রিপশন’ ফ্যাক্টর আবিষ্কৃত হয়। যা ডিনএনের নির্দিষ্ট অঞ্চলে সংযুক্ত হয়ে নির্ধারণ করে দেয়, ঠিক কোনো এমআরএনএ তৈরি হবে। এর মাধ্যমে জানি, কিভাবে কিছু জিন সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় হয়। ১৯৯৩ সালেও মাইক্রো-আরএনে অবদানের জন্যই নোবেল দেওয়া হয়। তারা দেখিয়েছিলেন, মাইক্রো-আরএনএ প্রোটিন তৈরি করে না, কিন্তু জিন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। এর ফলে বিজ্ঞানীরা নতুন এক সিদ্ধান্তে আসেন। জিন নিয়ন্ত্রণ বেশ জটিল, ধারণার চেয়েও জটিল এ ব্যবস্থা। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="নোবেলজয়ী নিলস বোর" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/07/1728288757-27df57f20ff2190e5ed8d87d680576ae.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>নোবেলজয়ী নিলস বোর</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/07/1432720" target="_blank"> </a></div> </div> <p><strong>২০২৪-এ আবার কেন মাইক্রো-আরএনে নোবেল এলো?</strong><br /> হারভিটজের ল্যাবরেটরিতে ১ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের সাধারণ গোলাকার কৃমি C. elegans নিয়ে গবেষণা করেন অ্যামব্রোস ও রাভকুন। কৃমিটি ক্ষুদ্র হলেও এর মধ্যে বিশেষায়িত কোষের দেখা মেলে। অথচ স্নায়ু, পেশিকোষের মতো বিশেষায়িত কোষোগুলো বৃহত্তর ও জটিল গঠনের প্রাণীতেই পাওয়া যায়। ফলে বহুকোষী জীবের টিস্যুর বিকাশ ও পরিপক্বতা অনুসন্ধানে দারুণ এক নমুনা হয়ে ওঠে ১ মিমির কৃমি। অ্যামব্রোস ও রাভকুন এমন কিছু জিন খুঁজছিলেন, যেগুলো বিভিন্ন কোষের গঠনের সময় বলে দেবে। নির্ধারণ করে দেবে। নিশ্চিত করবে, বিভিন্ন ধরনের কোষ নির্ধারিত সময়েই গঠিত হয়।</p> <p>এই দুই বিজ্ঞানী হার্ভার্ড গবেষণাগারে কৃমি স্ট্রেইনের দুটি মিউট্যান্ট নিয়ে কাজ করেন। lin-4 এবং lin-14। এগুলোর বিকাশকালে জিনের সক্রিয়তার সময়ে ত্রুটি দেখা দেয়। মিউটেটেড জিন শনাক্ত ও কার্যকরিতা বোঝাটা ছিল লক্ষ্য। অ্যামব্রোস এর আগেই একটা বিষয় লক্ষ করেন, lin-4 জিনটি lin-14-কে বাধা দিচ্ছে। কিন্তু কিভাবে এটা ঘটে, তা ছিল অজানা। </p> <figure class="image"><img alt="রাভকুন let-7 নামের দ্বিতীয় জিনটি ক্লোন করেন, যা একটি মাইক্রোআরএনএ কোড করে। © নোবেল কমিটি ফর ফিজিওলজি অর মেডিসিন। ইলাস্ট্রেশন: ম্যাটিয়াস কারলেন" height="321" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2024/10/07/my1182/৪৩.jpg" width="600" /> <figcaption>রাভকুন let-7 নামের দ্বিতীয় জিনটি ক্লোন করেন, যা একটি মাইক্রো-আরএনএ কোড করে। ছবি : নোবেল কমিটি ফর ফিজিওলজি অর মেডিসিন। অলংকরণ : ম্যাটিয়াস কারলেন</figcaption> </figure> <p>অ্যামব্রোস পোস্টডক্টরেট গবেষণার বিষয় হিসেবে অমীমাংসিত lin-4-কেই বেছে নেন। হার্ভার্ডের নতুন গবেষণাগারে lin-4-এর নতুন বিশ্লেষণ শুরু করেন। এবার নতুন এক তথ্য এলো। এই lin-4 ছোট্ট এক আরএনএ তৈরি করে। যা প্রোটিন তৈরি করে না। প্রোটিন তৈরির কোনো কোডও বহন করে না। কিন্তু lin-14-কে বাধা দেয়। </p> <figure class="image"><img alt="চিত্র: হেটেরোক্রনিক কৃমির মিউট্যান্ট এবং বিকাশগত ত্রুটি: lin-4 এবং lin-14 জিনের মিউট্যান্ট নিমাটোডের (কৃমি) বিকাশে সমস্যা দেখা যায়। © অ্যামব্রোস" height="313" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2024/10/07/my1182/৬৭৭৭.jpg" width="439" /> <figcaption>হেটেরোক্রনিক কৃমির মিউট্যান্ট এবং বিকাশগত ত্রুটি : lin-4 এবং lin-14 জিনের মিউট্যান্ট নিমাটোডের (কৃমি) বিকাশে সমস্যা দেখা যায়। ছবি : ভিক্টর অ্যামব্রোস</figcaption> </figure> <p><br /> একই সময় ম্যাসাসুসেটস জেনারেল হাসপাতাল ও হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গবেষণাগারে রাভকুন গবেষণা করছিলেন lin-14 নিয়ে। তিনি দেখলেন, lin-4 অপর মিউট্যান্ট lin-14-এর এমআরএনের উৎপাদনে বাধা দেয় না। নিয়ন্ত্রণ বা বাধাটি ঘটে জিন প্রডাক্টশনের (জিন প্রকাশ) শেষের দিকে। পরীক্ষায় পাওয়া যায়, lin-14 এমআরএনের নির্দিষ্ট এক অংশ lin-4-এর বাধার সামনে পড়ে। </p> <p>এবার দুই বিজ্ঞানী নিজেদের আলাদা আলাদা গবেষণার ফল একত্র করলেন। দেখা গেল যুগান্তকারী এক আবিষ্কার করে ফেলেছেন দুজনে মিলে। দেখা যায়, lin-4 এর ছোট RNA সিকোয়েন্স lin-14 mRNA-এর একটি বিশেষ অংশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। অ্যামব্রোস এবং রাভকুন পরবর্তী গবেষণায় পান অন্য এক তথ্য। lin-4 মাইক্রোআরএনএ lin-14 mRNA-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে lin-14 প্রোটিনের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। এটা ছিল একদম নতুন ধরনের জিন নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি। যা পুরোটাই মাইক্রো-আরএনএ নিয়ন্ত্রণ করে। ১৯৯৩ সালে এই গবেষণাফল ‘সেল’ জার্নালে প্রকাশিত হয়।</p> <p>প্রকাশের পর বিজ্ঞানমহলে খুব একটা সাড়া মেলেনি। অনেকের ধারণা ছিল, শুধু কৃমির জন্যই কাজ করে বিষয়টি। মানুষের মতো জটিল শরীরে এমন জিন নিয়ন্ত্রণ হওয়া সম্ভব নয়। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="নোবেল পুরস্কার ও ব্যর্থ প্রেমের কাহিনি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/07/1728287344-42346b41183c8dbe3d9c3c8d7e9556a6.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>নোবেল পুরস্কার ও ব্যর্থ প্রেমের কাহিনি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/07/1432716" target="_blank"> </a></div> </div> <p>২০০০ সাল। অ্যামব্রোসের দল আবার মাঠে নামে। এবার অন্য মাইক্রো-আরএনএ let-7 আবিষ্কার করেন। lin-4 শুধু কৃমির মতো ক্ষুদ্র সত্তায় পাওয়া গেলেও len-7 প্রাণিজগতে বিপুল পরিমাণে পাওয়া যায়। এবার বিজ্ঞানীরা আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এরপর শত শত মাইক্রো-আরএনএ আবিষ্কার হয়। মানুষের দেহেই হাজারেরও বেশি আছে, তা তো শুরুতেই জানলাম। </p> <p>নতুন এই আরএনএ ম্যাপিংয়ের পাশাপাশি কিভাবে এটি তৈরি হয় এবং নিয়ন্ত্রিত এমআরএনএর টার্গেটেড অংশে কিভাবে পৌঁছে তা স্পষ্ট হয়েছে। একটি মাইক্রো-আরএনএ ভিন্ন ভিন্ন অসংখ্য জিনের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। একইভাবে একাধিক মাইক্রো-আরএনএর মাধ্যমে একটি জিনকেও নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। এভাবে সমন্বিত ও সুগঠিত জিন নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে। </p> <figure class="image"><img alt="চিত্র: মাইক্রোআরএনের আবিষ্কার ছিল অপ্রত্যাশিত এবং এটি জিন নিয়ন্ত্রণের একটি নতুন মাত্রা যোগ করে। © নোবেল কমিটি ফর ফিজিওলজি অর মেডিসিন। ইলাস্ট্রেশন: ম্যাটিয়াস কারলেন" height="254" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2024/10/07/my1182/৫৫৫.jpg" width="600" /> <figcaption>মাইক্রো-আরএনের আবিষ্কার ছিল অপ্রত্যাশিত এবং এটি জিন নিয়ন্ত্রণের একটি নতুন মাত্রা যোগ করে। ছবি : নোবেল কমিটি ফর ফিজিওলজি অর মেডিসিন। অলংকরণ : ম্যাটিয়াস কারলেন</figcaption> </figure> <p>অ্যামব্রোস ও রাভকুনের এই গবেষণা কিছুদিন আগের হলেও মাইক্রো-আরএনএর জিন নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া শত মিলিয়ন বছর ধরে কাজ করছে। এই প্রক্রিয়া জটিল জীবের বিবর্তন ব্যাখ্যায় বেশ ভূমিকা পালন করছে। জেনেটিক গবেষণাই জানাচ্ছে, এই ধরনের আরএনএ ছাড়া কোষ ও টিস্যুর স্বাভাবিক বিকাশ সম্ভব নয়। মাইক্রো-আরএনের ভুল জিন নিয়ন্ত্রণেই হতে পারে ক্যান্সার কোষ। মানবদেহে মাইক্রো-আরএনএ কোডিং জিনের মিউটেশনের ফলে জন্মগত শ্রবণশক্তি কম হওয়া, চোখ ও হাড়ে সমস্যা দেখা যায়। মাইক্রো-আরএনএ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় একটি প্রোটিনের মিউটেশন DICER1 সিনড্রোম দেখা যায়। যা অঙ্গ ও টিস্যুতে ক্যান্সারের মতো বিরল ও গুরুতর এক রোগ সৃষ্টি করে।</p> <p>সূত্র : নোবেল প্রাইজ ওয়েবসাইট</p> <p><strong>লেখক :</strong> শিক্ষার্থী, রসায়ন বিভাগ, ঢাকা কলেজ</p>