<p>বিয়ে বলতে আমরা সাধারণত জীবিত দুই মানুষের মিলনকেই বুঝি। কিন্তু ফ্রান্সে এক ধরনের বিয়ে আছে যা একটু ব্যতিক্রম—মরনোত্তর বিয়ে। সেখানে জীবিত ব্যক্তি তাঁর প্রয়াত সঙ্গীর সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রতি বছর ফ্রান্সে প্রায় ৫০টি মরোনোত্তর বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।</p> <p>মরোনোত্তর বিয়ের ধারণা ফ্রান্সে অনেক আগে থেকেই প্রচলিত। এর আইনি অনুমোদন আসে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়। তখন অনেক সৈনিক যুদ্ধে মারা যান। তাদের প্রেমিকারা বা সঙ্গীরা তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের জন্য আইন স্বীকৃত বিয়ের দাবি জানান। ১৯৫৯ সালে বড় এক বন্যার সময় এই আইনি প্রথাটি আরও সুসংগঠিত হয়।</p> <p>সে সময় ইরিন জোডার তাঁর প্রয়াত প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ের আবেদন জানান। সে বছর ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট চার্লস দ্য গল তাঁর আবেদনে সাড়া দেন এবং এটি আইনি বৈধতা পায়।</p> <p>ফ্রান্সে মরণোত্তর বিয়ে করতে হলে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়। আবেদনকারীকে প্রমাণ করতে হয় যে মৃত ব্যক্তির সঙ্গে তার সম্পর্কটি প্রকৃত ছিল এবং তারা বিয়ের পরিকল্পনা করেছিল। মৃত ব্যক্তির পরিবারের অনুমতি লাগে এই বিয়েতে। সবার শেষে আবেদনটি সরাসরি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের কাছে জমা দিতে হয়। তাঁরা অনুমতি পাওয়া পরই বিয়ে বৈধভাবে সম্পন্ন হয়।</p> <p>কেন মানুষ মরোনোত্তর বিয়ে করেন?</p> <p>এটা আসলে গভীর ভালোবাসার বহিপ্রকাশ। কিছু মানুষ মনে করেন, তাদের সঙ্গীর প্রতি এই বিয়ে ভালোবাসা ও সম্মানের চূড়ান্ত প্রকাশ। অনেকে তাদের সঙ্গীর মৃত্যুর আগেই বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাখেন। তাদের জন্য এই বিয়ে প্রতিশ্রুতি পূরণের একটি মাধ্যম। এই বিয়ের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির প্রতি সম্পর্কের আইনি স্বীকৃতি পাওয়া যায়। এটা অনেকের জন্য মানসিক শান্তি ও শোক কাটানোর একটি উপায়।</p> <p>মরণোত্তর বিয়ে একটি বিশেষ আইনি প্রক্রিয়া হলেও এর মাধ্যমে কিছু আইনি সুবিধাও পাওয়া যায়। যেমন, প্রয়াত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীর অংশীদার হতে পারে জীবিত সঙ্গী। সামাজিকভাবে সম্পর্কের স্বীকৃতি নিশ্চিত হয়।</p> <p>তবে মরোনোত্তর বিয়ে নিয়ে কিছু বিতর্কও রয়েছে। অনেকে মনে করেন, এটি অস্বাভাবিক এবং মেনে নেওয়া কঠিন। তবে ফ্রান্সে এটা ভালোবাসা ও সম্মানের নিদর্শন হিসেবেই দেখা হয়।</p> <p>সূত্র: বিবিসি</p> <p><br />  </p>