<p>'স্বপ্ন' কখনো কখনো এক নিমিষেই শেষ হয়ে যায়। এর জ্বলন্ত উদাহরণ করিম বেনজিমা। ২০১৪ সালের পর আরো একবার বিশ্বকাপের মঞ্চ মাতানোর অপেক্ষায় ছিলেন ফরাসি এই স্ট্রাইকার কিন্তু কাতারে এই মহাযজ্ঞের পর্দা উঠার কয়েক ঘণ্টা আগে খবর এলো বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন না তিনি। চোটে পড়ায় বৈশ্বিক এই আসর থেকে ছিটকে পড়েছেন করিম বেনজিমা।</p> <p>বেনজিমা ছাড়াও পল পগবা, এনগোলো কন্তে, প্রেসনেল কিমপেম্বে, এনকুনকুও চোটে পড়ে ফ্রান্স স্কোয়াড থেকে ছিটকে গেছেন। সেনেগালের সেরা তারকা সাদিও মানে, ইংল্যান্ডের রিচ রেজমস ও বেন চিলওয়েল, পর্তুগালের দিয়েগো জোতা, আর্জেন্টিনার লো সেলোকেও এই চোটের ছোবলে পড়তে হয়েছে।</p> <p>কাতার বিশ্বকাপের আগে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল খেলোয়াড়দের ইনজুরির শঙ্কা। ক্লাব ফুটবলের ঠাঁসা সূচির কারণে চোটে পড়ার শঙ্কা প্রবলভাবে বেড়ে যায়। ইতোমধ্যে চোটে পড়ে বেশ কয়েকজন তারকা ফুটবলারের বিশ্বকাপ স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। আজ রাতে কাতারে পর্দা উঠছে ২২তম বিশ্বকাপ। চোটের ছোবলে পড়ে যারা বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছেন তাদের নিয়েই এই আয়োজন।</p> <p><strong>এনগোলো কন্তে: </strong>মৌসুমের শুরুতেই হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরিতে পড়েন ফরাসি মিডফিল্ডার কন্তে। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার পর মাঠে ফিরলে আবারো চোট পান চেলসির এই খেলোয়াড়। এতে ছিটকে যান কাতার বিশ্বকাপ থেকে। ২০১৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্সকে চ্যাম্পিয়ন করতে বড় অবদান রেখেছিলেন কন্তে।</p> <p><strong>পল পগবা: </strong>গত সেপ্টেম্বরে অস্ত্রোপচার করান ফ্রান্সের এই মিডফিল্ডার। পুনর্বাসন শেষে অনুশীলনেও ফিরেছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেকে পুরোপুরি ফিট করে তুলতে পারেননি ২০১৮ বিশ্বকাপ জয়ী এই খেলোয়াড়। কন্তের পর পগবার ছিটকে যাওয়া ফ্রান্সের মধ্যমাঠে শক্তি কমিয়েছে।</p> <p><strong>করিম বেনজিমা: </strong>কাতার বিশ্বকাপের পর্দা উঠার কয়েক ঘণ্টা আগে ছিটকে যান ফরাসি এই স্ট্রাইকার। পেশির চোটে পড়ে কোনো ম্যাচ না খেলেই ফিরে যেতে হচ্ছে ব্যালন ডি'অর জয়ী এই ফুটবলারকে। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলার অপেক্ষায় ছিলেন বেনজিমা কিন্তু সেই স্বপ্ন নিমিষেই শেষ হয়ে যায়। বেনজিমার না পাওয়া ফ্রান্সের দুশ্চিন্তার বড় কারণ হতে পারে।</p> <p><strong>সাদিও মানে:</strong> সেনেগালের স্বপ্নসারথি। যাকে নিয়ে আশায় বুক বেধেছিল আফ্রিকার দেশটি। কিন্তু সেই সাদিও মানেকেই পাচ্ছে না বিশ্বকাপ অভিযানে। বায়ার্ন মিউনিখের জার্সিতে খেলতে নেমে হাঁটুতে চোট পান মানে। তবু তাকে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে রেখেছিলেন সেনেগাল কোচ আলিউ সিসে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচার করাতে হবে মানের। তাই ছিটকে যান বিশ্বকাপ থেকে।</p> <p><strong>জিওভান্নি লে সেলসো: </strong>আর্জেন্টিনার মধ্যমাঠে অন্যতম ভরসার প্রতীক ছিলেন লে সেলসো। কিন্তু এ মাসের শুরুর দিকে চোট পান। ২০১৮ বিশ্বকাপে স্কোয়াড থাকলেও সেবার কোনো ম্যাচ খেলা হয়নি তার। তাই কাতারে মঞ্চ মাতানোর অপেক্ষায় ছিলেন সেলসো। কিন্তু চোট থেকে সেরে উঠতে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন তার। এ কারণে ছিটকে যান বিশ্বকাপ থেকে।</p> <p><strong>প্রেসনেল কিমপেমবে: </strong>জায়গা পেয়েছিলেন ফ্রান্সের চূড়ান্ত স্কোয়াডে। কিন্তু চোট থেকে পুরোপুরি ফিট না হওয়ায় নিজেই নাম প্রত্যাহার করে নেন ফরাসি ডিফেন্ডার প্রেসনেল কিমপেমবে। ইন্সটাগ্রামে কিমপেমবে লিখেছিলেন, বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দুর্ভাগ্যবশত আমি শতভাগ ফিট নই। আর বিশ্বকাপে এর চেয়েও বেশি দিতে হয়।'</p> <p><strong>দিয়োগো জোতা: </strong>লিভারপুলের হয়ে খেলতে নেমে পেশির চোটে পড়েন পর্তুগিজ এই তারকা। চোটে এতটাই গুরুতর ছিল যে ছিটকে যেতে হয়েছে বিশ্বকাপ থেকে। খেলা হলো না ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপে। পর্তুগালের আক্রমণভাগে অন্যতম ছিলেন জোতা। </p> <p><strong>হোয়াকিন কোরেয়া: </strong>একদম শেষ মুহূর্তে কপাল পুড়েছে হোয়াকিন কোরেয়ার। আর্জেন্টিনা দলের সঙ্গে আবিধাবিতে এসেছিলেন তিনি। প্রস্তুতি ম্যাচে আরব আমিরাতে বিপক্ষে গোলও করেছিলেন এই ফরোয়ার্ড। কিন্তু গোড়ালিতে চোট পেয়ে অস্বস্তি অনুভব করেন। চোট বেশ গুরুতর হওয়ায় বিশ্বকাপে খেলা হচ্ছে না তার। ফিরে গিয়েছেন আর্জেন্টিনায়।</p> <p><strong>রিস জেমস:</strong> চেলসির হয়ে খেলা এই ডিফেন্ডার ছিটকে গেছে বেশ আগেই। চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে হাঁটুর চোটে পড়েন এই রাইট ব্যাক। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকলেও শেষ পর্যন্ত শতভাগ ফিট হতে পারেননি। রিস জেমসকে না পাওয়ায় ইংল্যান্ডের রক্ষণে কমেছে শক্তি।</p> <p><strong>টিমো ভেরনার: </strong>চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে গোঁড়ালিতে চোট পান এই স্ট্রাইকার। এরপরই জানা যায়, বিশ্বকাপ থেকেও ছিটকে গেছেন ২৬ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। হান্সি ফ্লিকের দলের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন ভেরনার। তার না থাকায় আক্রমণে ভুগতে পারে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৫ ম্যাচ খেলে ২৪ গোল করেছেন তিনি।</p> <p><strong>ক্রিস্তফার এনকুনকু:</strong> দলের সঙ্গে এসেছিলেন কাতারে। প্রথমবার বিশ্বকাপে খেলার অপেক্ষায় ছিলেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড। কিন্তু অনুশীলনে সতীর্থ এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার সঙ্গে সংঘর্ষে হাঁটুর লিগামেন্টে আঘাত পেয়ে ছিটকে যান ২৫ বছর বয়সী এই ফুটবলার। লিপজিগের এই খেলোয়াড় এ মৌসুমে দারুণ ছন্দে ছিলেন।</p> <p><strong>নিকোলাস গনজালেস: </strong>আবুধাবিতে অনুশীলনের সময় পেশিতে চোট পান আর্জেন্টাইন এই ফরোয়ার্ড।  এতে ছিটকে যান বিশ্বকাপ থেকে।</p>