<p>খানিক পরপরই তাঁরা মুখ লাগাচ্ছেন পানির বোতলে। একটু অনুশীলন, একটু বিশ্রাম—এভাবেই মিরপুরে ভাদ্রের খরতাপে ভারত সিরিজের প্রস্তুতি নিচ্ছেন মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেনরা। দুই টেস্টের জন্য বৃহস্পতিবার দেওয়া ১৬ সদস্যের দলের অন্যরাও মিরপুরে নিজেদের প্রস্তুতির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবু আলোচনা হচ্ছে, চেন্নাই আর কানপুরের তীব্র দাবদাহের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবেন তো খেলোয়াড়রা? ব্যতিক্রম শুধু একজন।</p> <p>তিনি সাকিব আল হাসান। ভারত সিরিজের প্রস্তুতি নিতে ইংল্যান্ডে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে খেলেছেন এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার, যেখানে কন্ডিশন একদমই বিপরীত। কনকনে বাতাসে গায়ে মোটা কাপড় পরেই নামতে হয়েছিল তাঁকে। সেখানে সারের হয়ে এক ম্যাচ খেলে ৯ উইকেট নিলেও দুই ইনিংসে ব্যাট হাতে ব্যর্থ সাকিব, করেন মোটে ১২ রান, যা ভারত সিরিজের আগে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।</p> <p>বেশ কিছুদিন ধরেই ব্যাটিংটা ঠিকঠাক হচ্ছে না সাকিবের। চোখের সমস্যার কারণে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সর্বশেষ মৌসুমে শুধু বোলার হিসেবেই অনেক ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এই বছর তিন টেস্ট খেলে পাঁচ ইনিংসে ফিফটির দেখা পাননি সাকিব। সাদা বলের সংস্করণেও মলিন তাঁর ব্যাট।</p> <p>এই সময়ে টি-টোয়েন্টিতে ১৬ ইনিংসে সাকিবের ব্যাটিং গড় ১৮.৪২। সর্বশেষ ভারত বিশ্বকাপের পর আর ওয়ানডে খেলেননি। সেই বিশ্বকাপেও সাত ম্যাচে ফিফটি মোটে একটি। বিসিবির কোচ মিজানুর রহমান এটিকে এভাবেই দেখতে চাইলেন, ‘প্রতিটি খেলোয়াড়েরই এমন কিছু সময় যায়। ফর্মে থাকে না, রান পায় না।</p> <p>’ সাকিব সেই সময়টি পেরিয়ে যেতে চেষ্টার ত্রুটিও রাখছেন না বলে মনে হয়েছে তাঁর, ‘যেমনটা দেখলাম, সাকিবও খুব করে চাচ্ছে রানে ফিরতে।’</p> <p>বিসিবির পরিচালক পদে বসেছেন সাকিবের ক্রিকেট গুরু নাজমুল আবেদীন। নতুন দায়িত্ব নিয়ে গত ২৬ আগস্ট সাকিব প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘আমার তো দুটি রোল (ভূমিকা) আছে ওর সঙ্গে।’ এর একটি কোচ বা পরামর্শক। সর্বশেষ পাকিস্তান সফরেও হাসেনি সাকিবের ব্যাট। এক ইনিংসে ২১ রানে অপরাজিত থাকলেও একটিতে ১৫ এবং আরেকটিতে ২ রান করে আউট হয়েছিলেন। সে সময় নাজমুলের শরণাপন্ন হয়েছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। এখন ইংল্যান্ডে গিয়ে ভারত সিরিজের জন্য ব্যাটিং প্রস্তুতিটা ঠিকঠাক হয়নি সাকিবের। প্রথম ইনিংসে ১২ এবং পরের ইনিংসে শূন্য রানে আউট হন তিনি। ভারত সিরিজের আগে সাকিবের রানে ফেরা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কি না, জানতে চাইলে কোনো মন্তব্যই করতে চাইলেন না দ্বৈত ভূমিকায় থাকা নাজমুল। কৌশলের পথ ধরে ছোট্ট করে বললেন, ‘রানের মধ্যে না থাকলে এটা তো চিন্তার বিষয়। সেটি সব ব্যাটারের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।’</p> <p>তবে সবার সঙ্গে তুলনা করতে পছন্দ করলেন না মিজানুর। সাকিবের মতো অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার দলে থাকা মানেই বাড়তি শক্তি মনে করেন তিনি, ‘সাকিব দলে আছে, এটা একটা দলকে অনেকখানি নির্ভার রাখে। তার কাছ থেকে তরুণরা শিখতে পারবে।’ নির্বাচক হান্নান সরকার মনে করেন, ব্যাটিংয়ের অপেক্ষায় সাকিবের ড্রেসিংরুমে বসে থাকা মানে প্রতিপক্ষের জন্য বাড়তি চিন্তার বিষয়। তবে এটা একবাক্যে স্বীকার করে নিলেন যে, ‘সাকিব ব্যাটিংয়ে আসলে ছন্দে নেই। ফর্মটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’</p> <p>সর্বশেষ ২০১৭ সালে টেস্ট সেঞ্চুরি পাওয়া সাকিব ব্যাট হাতেও রান করার গুরুদায়িত্বে ফিরবেন কবে?</p>