<p>রঙিন পোশাকে আফগানদের মুখোমুখি হওয়া মানেই বাংলাদেশের জন্য প্রতিপক্ষের পেসার ফজল হক ফারুকিই শুধু নন, নতুন বলে স্পিনার মুজিব-উর রহমানকে সামলানোর চ্যালেঞ্জও থাকে। এই রহস্য স্পিনার বেশির ভাগ সময়ই বাংলাদেশের টপ অর্ডারকে ঝামেলায়ও ফেলেন। এবার অবশ্য মুজিবকে নিয়ে চিন্তামুক্ত নাজমুল হোসেনরা। কারণ আজ থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজায় শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে চোটের জন্য অনুপস্থিত এই স্পিনার।</p> <p>যদিও নিজেদের পছন্দের সংস্করণে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স সুবিধার নয় বলে তাদের একদম নিশ্চিন্ত থাকারও উপায় নেই। তার ওপর ভারত সফর থেকে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টিতে বাজেভাবে হারতে থাকা দলের মনোবলও তলানিতে। সেই সঙ্গে গত সাত মাস ওয়ানডে ভুবনের বাইরে থাকার অনভ্যস্ততাও আছে। সব মিলিয়ে আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় শুরু হতে যাওয়া প্রথম ওয়ানডের আগে নাজমুলদের নিয়ে উচ্চাশাও কম। সেটি তাঁরা আজ বাড়িয়ে নিতে পারলে অবশ্য ভিন্ন কথা।</p> <p>চ্যালেঞ্জও প্রথম ওয়ানডের ফল যা-ই হোক, এই ম্যাচ দিয়ে শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ইতিহাসে ঢুকে যাওয়াটা নিশ্চিতই। টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে প্রথম ভেন্যু হিসেবে ৩০০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচের মাইলফলক স্পর্শ করতে যাচ্ছে মরূদ্যানের এই স্টেডিয়াম, যে ইতিহাসের অংশ হতে যাচ্ছেন নাজমুলরাও। চলতি বছর মার্চে নিজেদের শেষ ওয়ানডে সিরিজ খেলেছিলেন তাঁরা।</p> <p>তাতে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কাকে ২-১ ব্যবধানে হারালেও এই সংস্করণে তাঁদের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান চলনসই নয়। নিজেদের মাঠে শেষ তিনটি সিরিজের দুটিতেই হেরেছেন। এর মধ্যে একটিতে খোদ আফগানদের কাছেই। গত বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ সফরে আসা নিউজিল্যান্ডের ওয়ানডে দলটিও ছিল দ্বিতীয় সারির ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া। ডিসেম্বরে ফিরতি সফরে নিউজিল্যান্ডে গিয়ে প্রথমবার ওয়ানডে জয়ের মুখ দেখলেও সিরিজ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ওয়ানডে বিশ্বকাপ আফগানদের হারিয়ে শুরু করলেও পুরো আসর তাদের জন্য বিভীষিকারই ছিল।</p> <p>এ জন্যই পছন্দের সংস্করণও এখন দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলছে। এই সিরিজ আবার আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রস্তুতির অংশও। ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় টুর্নামেন্টের আগে আর একটিই সিরিজ আছে বাংলাদেশের। সেটি ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। বড় আসরের প্রস্তুতি শুরুর সময় বাংলাদেশকে নামতে হচ্ছে আফগানদের একরকম ‘হোম’-এ পরিণত হওয়া শারজায়। এই মাঠে খেলা ২৮ ম্যাচের ১৮টিতেই জিতেছে আফগানরা। এর মধ্যে ফল হওয়া শেষ ১০টি ওয়ানডের আটটিতেই জিতেছে তারা। অন্যদিকে এই মাঠে ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দুটি ম্যাচ খেলা বাংলাদেশ দল শেষবার সেখানে ওয়ানডে খেলেছে ১৯৯৫ সালে। এই সিরিজ তাই একরকম প্রতিপক্ষের মাঠেই শুরু করতে হচ্ছে নাজমুলদের। এ ছাড়া প্রথম ম্যাচের আগে পুরো বাংলাদেশ দলও শারজায় নেই। ভিসা জটিলতার কারণে গত রাতে এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত আমিরাতের ফ্লাইটে চড়তে পারেননি পেসার নাহিদ রানা ও বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। এ জন্যই আজ প্রথম ওয়ানডের একাদশ বাছাই করতে হবে ১৩ জনের দল থেকে। মাঠে নামার আগে এই একটিই নয়, আরো কিছু চ্যালেঞ্জ সামলানোর কথা ভেবেও নামতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এমনিতেই ওপেনিং নিয়ে সমস্যায় তারা, এর মধ্যে আবার অভিজ্ঞ লিটন কুমার দাস অসুস্থতার কারণে যেতে পারেননি। দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঢাকায় বিদায়ি টেস্ট ম্যাচ খেলতে দেশে আসতে না পারা সাকিব আল হাসানও মানসিক ধাক্কা সামলাতে এই সিরিজ থেকে সরে দাঁড়ান আগেই। লম্বা সময় এই সংস্করণ থেকে দূরে থাকার অনভ্যস্ততার সঙ্গে অভিজ্ঞতার ঘাটতিও তাই যোগ হচ্ছে।</p> <p><strong>মুখোমুখি</strong></p> <p><strong>বাংলাদেশ-আফগানিস্তান</strong></p> <p>ম্যাচ : ১৬</p> <p>বাংলাদেশ জয়ী : ১০</p> <p>আফগানিস্তান জয়ী : ৬</p> <p><strong>দলীয় সর্বোচ্চ</strong></p> <p>বাংলাদেশ : ৩৩৪/৫</p> <p>লাহোর, ২০২৩</p> <p>আফগানিস্তান : ৩৩১/৯</p> <p>চট্টগ্রাম, ২০২৩</p> <p><strong>দলীয় সর্বনিম্ন</strong></p> <p>বাংলাদেশ : ১১৯</p> <p>আবুধাবি, ২০১৮</p> <p>আফগানিস্তান : ১২৬</p> <p>চট্টগ্রাম, ২০২৩</p> <p><strong>সবচেয়ে বেশি রান</strong></p> <p>বাংলাদেশ : মুশফিকুর রহিম, ৪৫৯</p> <p>আফগানিস্তান : হাশমতউল্লাহ</p> <p>শহীদি, ৩৬৩</p> <p><strong>সর্বোচ্চ ইনিংস</strong></p> <p>বাংলাদেশ : লিটন দাস, ১৩৬</p> <p>আফগানিস্তান : রহমানউল্লাহ</p> <p>গুরবাজ, ১৪৫</p> <p><strong>সবচেয়ে বেশি উইকেট</strong></p> <p>বাংলাদেশ : সাকিব আল হাসান, ৩০</p> <p>আফগানিস্তান : রশিদ খান, ১৯</p>