<p>‘আমি দেয়ালে আঘাত করতেও প্রস্তুত, যদি সেটা নিজের জন্য প্রয়োজন হয়।’—এই সাহসী উক্তিটি রিয়াল মাদ্রিদের জার্মান ডিফেন্ডার অ্যান্টনিও রুডিগারের, যার জীবনের প্রতিটি ধাপে লড়াই করার মানসিকতাই তাকে ফুটবলে অপরিহার্য এবং রিয়ালের অন্যতম নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।  </p> <p>বার্লিনের দক্ষিণাঞ্চলের নিউকোলন জেলার সাধারণ পরিবেশে বেড়ে ওঠা রুডিগার ছোটবেলা থেকেই পরিচিত ছিলেন ‘ইয়ং র‍্যাম্বো’ নামে। তার মধ্যকার দৃঢ়তা এবং প্রতিজ্ঞা তাকে ফুটবল বিশ্বে বিশেষভাবে পরিচিত করেছে। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন রিয়াল মাদ্রিদের রক্ষণভাগের প্রধান স্তম্ভ এবং দলের অন্যতম নেতা হিসেবে।  </p> <p>৩১ বছর বয়সী রুডিগারই বর্তমানে রিয়াল মাদ্রিদের রক্ষণের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এখন। রক্ষণভাগের নিয়মিত খেলোয়াড়দের চোটে নেতার ভূমিকায় হাল ধরেছেন। শুধু হালই ধরেননি, লুকাস ভাসকেজ, মেন্দি এবং চুয়োমেনির মতো খেলোয়াড়দের সঙ্গে মিলে দলের রক্ষণকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। </p> <p>তবে রুডিগারের যাত্রা সহজ ছিল না। ২০২৩-২৪ মৌসুমে আলাবা এবং মিলিতাওয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের চোট, মেন্দির অনিয়মিত পারফরম্যান্স এবং এই বছর কারবাহালের চোটে রিয়াল মাদ্রিদ রক্ষণের নেতৃত্ব দেওয়ার গুরুদায়িত্ব পড়ে তার ওপর। তবে তিনি কখনো এই দায়িত্ব থেকে পিছু হটেননি। বরং তিনি নিজের কঠোর পরিশ্রম এবং দৃঢ়তার মাধ্যমে মাদ্রিদের রক্ষণকে শক্তিশালী করেছেন।</p> <p>২০২৪ সালের প্রথম ভাগে রুডিগার রিয়ালের হয়ে সবচেয়ে বেশি সময় খেলেছেন। লা লিগার ১৮ ম্যাচের মধ্যে ১৭টিতে পুরো ৯০ মিনিট খেলেছেন। তা ছাড়া চ্যাম্পিয়নস লিগ, ইউরোপিয়ান সুপার কাপ এবং আন্ত মহাদেশীয় কাপেও তিনি প্রতিটি ম্যাচে পুরো সময় মাঠে থেকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দিয়েছেন।</p> <p>২০২৩-২৪ মৌসুমের দ্বিতীয় ভাগে আলাবা এবং মিলিতাওয়ের অনুপস্থিতিতে দলের রক্ষণের প্রধান দায়িত্ব নিয়ে বছরের প্রথম সাত মাসে লা লিগায় ১,২২৭ মিনিট, চ্যাম্পিয়নস লিগে ৫৭০ মিনিট এবং ইউরোতে জার্মানির পাঁচটি ম্যাচে ৪৮০ মিনিট খেলেছেন। এই কঠোর পরিশ্রম সত্ত্বেও তিনি চোটমুক্ত, যা তার কঠোর ফিটনেস রুটিন এবং মানসিক দৃঢ়তার ফল।</p> <p>রুডিগারের সাফল্যের মূল রহস্য তার শারীরিক এবং মানসিক শক্তি। নিজের ফিটনেস ধরে রাখতে তিনি ব্যক্তিগত জিম, সাউনা এবং হাইপারবারিক চেম্বার ব্যবহার করেন। তার ফিজিক্যাল ট্রেনার নোহা সানির সঙ্গে কাজ করে তিনি নিজের শরীরকে এমনভাবে তৈরি করেছেন, যা তাকে চোটমুক্ত থাকতে সাহায্য করেছে। রুডিগার ওজন না বাড়িয়ে নিজের শরীরের ওজন ব্যবহার করে শরীরকে শক্তিশালী এবং নমনীয় রেখেছেন। এই বিপুল পরিশ্রম সত্ত্বেও তিনি চোটমুক্ত ছিলেন, যা তার কঠোর ফিটনেস রুটিন এবং মানসিক দৃঢ়তার ফল।</p> <p> ২০২৪ সালটি রুদিগারের জন্য চ্যালেঞ্জিং হলেও নিজেকে অটুট রেখেছেন তিনি। চোট থেকে মুক্ত থাকার পাশাপাশি তার শারীরিক এবং মানসিক সক্ষমতা তাকে রিয়াল মাদ্রিদের জন্য অপরিহার্য খেলোয়াড়ে পরিণত করেছে। তার এই পরিশ্রম এবং অদম্য মানসিকতা তাকে শুধু রিয়াল মাদ্রিদের নয়, পুরো ফুটবল বিশ্বের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। </p>