আইসিসির বর্ষসেরা ক্রিকেটারও বুমরাহ

ক্রীড়া ডেস্ক
ক্রীড়া ডেস্ক
শেয়ার
আইসিসির বর্ষসেরা ক্রিকেটারও বুমরাহ
ভারতের পঞ্চম ক্রিকেটার হিসেবে বর্ষসেরা হয়েছেন বুমরাহ। ছবি : ক্রিকইনফো

সময়টা যখন জাসপ্রিত বুমরাহর তখন সেরার স্বীকৃতি ধরা দেবে, সেটাই স্বাভাবিক। গতকাল বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটারের পুরস্কার পাওয়া বুমরাহ আজ আরো বড় স্বীকৃতি পেয়েছেন। প্রথমবারের মতো বর্ষসেরা ক্রিকেটার হয়েছেন। ২০২৪ সালের সেরা ক্রিকেটার হিসেবে ভারতীয় পেসারের হাতে উঠেছে মর্যাদাপূর্ণ ‘স্যার গ্যারফিল্ড সোবার্স ট্রফি’।

ভারতের পঞ্চম ক্রিকেটার হিসেবে এই পুরস্কার জিতলেন বুমরাহ। তার আগে জিতেছেন রাহুল দ্রাবিড় (২০০৪), শচীন টেন্ডুলকার (২০১০), রবিচন্দ্রন অশ্বিন (২০১৬) ও বিরাট কোহলি (২০১৭ ও ২০১৮)। ৩১ বছর বয়সী পেসার ভারতের চার কিংবদন্তির পাশে বসতে পুরস্কার জিততে পেছনে ফেলেছেন ট্রাভিস হেড, জো রুট ও হ্যারি ব্রুককে।

আরো পড়ুন
ওয়ান্ডারার্সকে উড়িয়ে নক আউট পর্বে বসুন্ধরা কিংস

ওয়ান্ডারার্সকে উড়িয়ে নক আউট পর্বে বসুন্ধরা কিংস

 

সোনায় মোড়ানো এক বছর কাটিয়েছেন বুমরাহ।

২০২৪ সালে ১৩ টেস্টে ৭১ উইকেট নিয়েছেন তিনি। যা গেল বছরের সর্বোচ্চ। দুইয়ে থাকা ইংল্যান্ডের পেসার গাস অ্যাটকিনসনের চেয়ে ১৯ উইকেট বেশি ৩১ বছর বয়সী পেসারের। ভারতীয় পেসার গত বছরের উইকেটে রেকর্ডও গড়েছেন।
টেস্ট ইতিহাসের এক পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে কম বোলিং গড়ে ৭০ উইকেট নেওয়া বোলার তিনি। গত বছর ১৪.৯১ গড়ে উইকেট নিয়েছেন তিনি।

আরো পড়ুন
টেস্টে প্রথমবার বর্ষসেরা বুমরাহ

টেস্টে প্রথমবার বর্ষসেরা বুমরাহ

 

এক পঞ্জিকাবর্ষে ৭০ উইকেট নেওয়া বিশ্বের ১৭তম বোলার বুমরাহ। আর ভারতীয়দের মধ্যে চতুর্থ। তার আগে এই কীর্তি গড়েছেন কপিল দেব, অনিল কুম্বলে ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন।

২০-এর কম গড়ে ২০০ টেস্ট উইকেট নেওয়া বিশ্বের প্রথম বোলারের রেকর্ডও গড়েছেন তিনি। 

দীর্ঘদিন পিঠের চোটে ভোগা বুমরাহ ২০২৩ সালের আগস্টে মাঠে ফিরে ব্যাটারদের শিরদাঁড়া দিয়ে শীতল পানি নামিয়েছেন। সর্বশেষ বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজই তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। দল হিসেবে ভারত প্রতিপক্ষদের কাছে ধরাশায়ী হলেও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের ‘যম’ হয়ে দাঁড়ান বুমরাহ। ৩-১ ব্যবধানে হারা সিরিজে ৩২ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরা হন তিনি। তার আগে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ে ১৯ উইকেট নেন বুমরাহ।

আরো পড়ুন
নেইমারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল আল হিলালের

নেইমারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল আল হিলালের

 

২০২৪ সালে দীর্ঘ ১৩ বছর পর আইসিসির কোনো ট্রফি জিতেছে ভারত। দ্বিতীয়বারের মতো সেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতাতে অনন্য অবদান রেখেছেন বুমরাহ। টুর্নামেন্টে ১৫ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টসেরাও হয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে মেয়েদের বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জিতেছেন অ্যামেলিয়া কার। ‘র‍্যাচেল হেহো ফ্লিন্ট ট্রফি’ জেতা প্রথম নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটার এই অলরাউন্ডার। সেরার লড়াইয়ে হারিয়েছেন শ্রীলঙ্কার চামারি আতাপাত্তু, দক্ষিণ আফ্রিকার লরা উলভার্ট, অস্ট্রেলিয়ার অ্যানাবেল সাদারল্যান্ডকে। 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

সাবিনাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বাফুফের বিশেষ কমিটি

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ক্রীড়া প্রতিবেদক
শেয়ার
সাবিনাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বাফুফের বিশেষ কমিটি
সংগৃহীত ছবি

পিটার বাটলার কোচ হিসেবে থাকলে আর অনুশীলনে তো নামবেই না, এমনকি ফুটবল ছেড়ে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন নারী ফুটবল দলের একাংশ।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাফুফে ভবনে ব্রিটিশ কোচের বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ সামনে এনে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছেন সাবিনা খাতুন-মাসুরা পারভিনসহ ১৮ ফুটবলার।

কোচের বিরুদ্ধে মেয়েদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই বিশেষ একটি কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।

বৃহস্পতিবার রাতেই জরুরি সভা ডেকে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন সভাপতি তাবিথ আউয়াল।

যেখানে প্রধান করা হয়েছে ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইমরুল হাসানকে। তার সঙ্গে আছেন ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম, সদস্য শাখাওয়াত হোসেন শাহীন।

বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, মেয়েদের এসব অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হবে। প্রত্যেক নারী ফুটবলারের সঙ্গে কথা বলে তাদের সমস্যা শোনা হবে।

এরপর আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে এই কমিটি তাদের যাচাই-বাছাইয়ের প্রতিবেদন জানাবে।

মন্তব্য

বিপিএলের পারিশ্রমিক নিয়ে ‘সত্যানুসন্ধান কমিটি’ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের

ক্রীড়া ডেস্ক
ক্রীড়া ডেস্ক
শেয়ার
বিপিএলের পারিশ্রমিক নিয়ে ‘সত্যানুসন্ধান কমিটি’ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের
ছবি : সংগৃহীত

ক্রিকেটারদের ব্যাট-বলের পারফরম্যান্স নিয়েই মজে থাকার কথা ছিল দর্শক-সমর্থকদের। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে এমনই আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল বিসিবির পক্ষ থেকে। বিপিএলের ইতিহাসে অন্যরকম এক টুর্নামেন্টের গল্পই শোনা গিয়েছিল। 

সব শোনা গল্পই যে সত্যি হয় না তা যেন আরেকবার বিপিএল চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিল।

গল্প সত্যি করার দায়িত্ব যাদের কাঁধে সেই ক্রিকেটারদের সঙ্গেই তো নয়ছয় করছে ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকরা। পারিশ্রমিক নিয়ে মালিকরা নয়ছয় করলেও নিজেদের সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা করছেন ক্রিকেটাররা। তবে মাঠের চেয়ে বাইরের বিতর্কিত বিষয় নিয়েই বেশি সমালোচনা হচ্ছে। 

এতে দেশের সম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে মনে করে আজ বিশেষ এক কমিটি গঠন করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।

পারিশ্রমিকের সঙ্গে অন্যান্য সব বিতর্কিত বিষয় খতিয়ে দেখবে তিন সদস্যের কমিটিটি। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘সত্যানুসন্ধান কমিটি’। এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।

তিন সদস্যের কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে ক্রীড়া পরিষদের পরিচালককে।

আর বাকি দুজন হচ্ছেন ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব ও সহকারী পরিচালক। সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘২০২৫ বিপিএলকে কেন্দ্র করে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বকেয়া থাকা সংক্রান্তে উত্থাপিত ইস্যুসমূহ যথাযথ পরীক্ষান্তে খতিয়ে দেখতে একটা সত্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হলো।’

মন্তব্য

সিলেটকে গুঁড়িয়ে প্লে-অফ নিশ্চিত চিটাগাংয়ের

ক্রীড়া ডেস্ক
ক্রীড়া ডেস্ক
শেয়ার
সিলেটকে গুঁড়িয়ে প্লে-অফ নিশ্চিত চিটাগাংয়ের
দুর্দান্ত বোলিংয়ে সিলেটকে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন শরীফুল-খালেদরা। ছবি : মীর ফরিদ, মিরপুর থেকে

বিপিএল থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয়েছিল সিলেট স্ট্রাইকার্সের। আজ শেষ ম্যাচে সুযোগ ছিল সান্ত্বনার জয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করার। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগানো তো দূরে থাক, বড় ব্যবধানে পরাজয় দেখেছে সিলেট।

চিটাগাং কিংসের কাছে ৯৬ রানের বড় পরাজয় দেখেছে সিলেট।

প্রতিপক্ষের হতাশার হলেও চিটাগাংয়ের জন্য আনন্দের। বড় জয়ে শেষ চার নিশ্চিত করেছে তারা। ১৪ পয়েন্টে চিটাগাং এখন তিনে। তাদের সামনে সুযোগ রয়েছে শেষ ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে হারাতে পারলেও শীর্ষ দুই দলের একটি হতে পারবে।
এতে রংপুর রাইডার্সকে পেছনে ফেলে ফাইনালে ওঠার দুটি সুযোগ পাবে।

মিরপুরে আগে ব্যাট করে খাজা নাফি ও মোহাম্মদ মিঠুনের ফিফটিতে ৮ উইকেটে ১৯৬ রান তোলে চিটাগাং। শুরুটা ভালো না হলেও দুজনের তৃতীয় উইকেটে ৯৪ রানের জুটি দলকে দুই শ ছুঁই ছুঁই স্কোর এনে দেয়। পাকিস্তানি ওপেনার নাফির মতো সমান ৫২ রানে আউট হন দলের অধিনায়ক মিঠুনও।

রান সমান করলেও চার-ছক্কায় অমিল ছিল দুজনের। মিঠুনের ৩ ছক্কা ও ২ চারের বিপরীতে ১ চার ও ৫ ছক্কা হাঁকান নাফি।

তবে বড় স্কোরে অবদান রেখেছেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি ও খালেদ আহমেদও। শেষ দিকে সপ্তম উইকেটে ৬১ রানের দারুণ জুটি গড়েন তারা। শামীমের ৩৮ রানের বিপরীতে সমান ২ ছক্কা-চারে ২৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন পেসার খালেদ।

প্রতিপক্ষের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব।

শুধু ব্যাটিংয়েই রাখেননি, নিজের মূল কাজ বোলিংয়েও দারুণ অবদান রেখেছেন খালেদ। তার ও সতীর্থ শরীফুল ইসলামের পেসের তোপে দাঁড়াতেই পারেননি সিলেটের ব্যাটাররা। দুজনে ৪ টি করে উইকেট নিয়ে ১০০ রানে প্রতিপক্ষকে অলআউট হতে বাধ্য করেছেন। সিলেটের হয়ে সর্বোচ্চ ১৯ রান করেছেন বাঁহাতি ব্যাটার জাকির হাসান। আজকের হারটি ছিল সিলেটের টানা সপ্তম। আর সব মিলিয়ে দশম হারে সবার নিচে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করেছে সিলেট।

মন্তব্য

বাটলারের বিরুদ্ধে মেয়েদের যত অভিযোগ

ক্রীড়া ডেস্ক
ক্রীড়া ডেস্ক
শেয়ার
বাটলারের বিরুদ্ধে মেয়েদের যত অভিযোগ
খেলোয়াড় আর কোচের মাঝে এখন শক্ত এক দেয়াল। ছবি : বাফুফে

নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলা চলাকালীন সময় কোচ পিটার বাটলার ও বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। মাঠের বাইরের এমন দ্বন্দ্বের পরও অবশ্য দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন হলেও দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব মিটে যায়নি। কোচ বাটলার দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পাওয়ায় এবার সেই দ্বন্দ্ব আরো চরমে উঠেছে।

এতটাই যে, ইংলিশ কোচ দায়িত্বে থাকলে গণ-অবসর নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন সাবিনা খাতুন-মনিকা চাকমরা।

কোচ বাটলারের বিরুদ্ধে সাবিনা-মাসুরা পারভীদের লিখিত অভিযোগ নিচে তুলে ধরা হলো-

পাকিস্তানের বিপক্ষে কোচের সিনিয়র ফুটবলারদের বাদ দেওয়া একাদশ যে ভুল ছিল, সেটা সবাই দেখেছে। কারণ ওই ম্যাচ আমরা হারতে হারতে কোনো রকমে ড্র করেছিলাম। ভারতের বিপক্ষে আমাদের চাপে তিনি একাদশ বদলাতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং সিনিয়র সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দল ভারতকে হারিয়ে গ্রুপ সেরা হয়েছিল।

এটাই প্রমাণ করে আমরাই সঠিক ছিলাম। কিন্তু ওই ম্যাচে নামার আগেই জানতাম কোচের বিরুদ্ধে একরম বিদ্রোহ এই একাদশ তৈরী হয়েছিল। আমরা যদি ব্যর্থ হই, বাফুফে কর্তারা এবং দেশের মানুষের কাছে আমরা ভিলেন হয়ে যেতাম। ওই ম্যাচেই আমাদের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেত।
এটা বুঝেও আমরা ঝুঁকি নিয়েছিলাম দেশের হয়ে লড়াই করার জন্য দেশের জন্য আমাদের এই লড়াই ও আবেগ, ভালোবাসার মূল্য ফুটবল ফেডারেশন থেকে আশা করেছিলাম।
সেটা হয়নি। বরং সাফ থেকে ফেরার পর যা হলো, তার জন্য আমরা মোটেই প্ৰস্তুত ছিলাম না। এই বিতর্কিত ব্যক্তির সঙ্গে আরও দুই বছরের চুক্তি নবায়ন করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। এই সিদ্ধান্তে মেয়েদের দাবি-দাওয়াকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা হয়েছে।
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে বাটলারকে কেন আমরা কোচ হিসেবে চাই না? সেটা জানাতেই আমাদের আজকের প্রয়াশ।

১. খেলোয়াড়দের সঙ্গে নেপালে ঘটে যাওয়া এতো এতো ঘটনার পরও কোচ পারতেন বিষয়টি সেখানেই সমাধান করতে। সাফ জিতে আসার পরপরই তিনি পারতেন আমাদের সঙ্গে বসতে। সেটা না করে বরং আমাদের ইগনোর করেছেন প্রতিনিয়ত। 

সত্যি বলতে আমরা অবাক হয়েছিলাম এবং অপেক্ষায় ছিলাম যে উনি কখন মিটিং ডাকবেন। কিন্তু ডাকেননি। বাংলাদেশে এসে বাফুফের এক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমাদের ইস্যু নিয়ে কোচের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং ওনাকে ওনার ব্যবহার আচার সম্পর্কে সতর্ক হতে বলেন। আমাদের প্রশ্ন হলো ওনাকে কেন সতর্ক করতে হবে, ওনার নিজের কি কোনো জ্ঞানবুদ্ধি নেই যে ওনার কী করা উচিত, কী করা উচিত নয়?

২. বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলে এই ঘটনা একেবারেই প্রথম। একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কোচ ভুলে যান যে তাঁর হাতে ৫টা পরিবর্তন আছে! সাফের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা যখন ১-০ গোলে হারার পথে, তখন হেড কোচ সানজিদাকে নামানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নামানোর সময় দেখেন খেলোয়াড় বদলের কাগজ তার কাছে নেই। আগে তিনটা পরিবর্তন করায় সঙ্গে থাকা তিনটি কাগজই শেষ হয়ে গেছে! তখন ম্যাচের ৯৫ মিনিট চলে। যেখানে বাংলাদেশ ১-০ গোলে পিছিয়ে রয়েছে। তখনও বাংলাদেশের হাতে ২টা খেলোয়াড় পরিবর্তনের অপশন ছিলো, কিন্তু কাগজ ছিলো না। ব্যপারটা খুবই লজ্জাজনক ও হাস্যকর। এত বড় ডিগ্রিধারী কোচের থেকে এটা আশা করা যায় না।

৩. ওই ম্যাচেই কৃষ্ণাকে নামানোর আগ মুহূর্তে এক সহকারী কোচ তাঁর জার্সির নাম্বার জিজ্ঞেস করলে আরেকজন টিমমেট বলে দেয়। কৃষ্ণা তখনও সেভগার্ড পড়ায় ব্যাস্ত থাকায় দ্বিতীয়বার আবার জিজ্ঞেস করেন জার্সি নাম্বার। আবারও অন্য টিমমেট বলে দেওয়ায় কোচ রেগে কৃষ্ণার দিকে তেড়ে আসেন। মামুলি জার্সি নাম্বার না বলায় এরকম আচরণ কোনো কোচের পক্ষে সম্ভব কিনা আমাদের জানা নেই । 

৪. কেবল মাঠ নয়, মাঠের বাইরেও প্রতিনিয়ত কোচ আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। আমাদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করেন। দলের অভ্যন্তরে খেলোয়াড়দের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়রের কথা বলে বিভাজনের সৃষ্টি করেছেন। মেয়েদের পোশাক-আশাক নিয়ে কথা বলতে ছাড়েননি। বডি শেমিংও করেছেন। মেয়েদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলেন, বাজে মন্তব্যও করেন কোচ। আমাদের বিরুদ্ধে কোচ সবসময় শৃঙক্ষলাভঙ্গের অভিযোগ করেন। এটা যে ডাহা মিথ্যা কথা, তার বড় প্রমাণ হলো, অতীতের কোন কোচ মেয়েদের শৃঙক্ষলা নিয়ে কখনো কোন প্রশ্ন তুলতে পারেননি । পিটাররে এরকম উল্টাপাল্টা আরচণের বিষয়গুলো সহকারী কোচর্ও জানেন। কিন্তু তারা চাকুরি যাওয়ার ভয়ে মুখ খোলেন না ৷

৫. আমাদের সঙ্গে কোচ যা যা ঘটিয়েছেন, তা জানিয়ে আমরা বাফুফের মাননীয় সভাপতির কাছে গত বুধবার একটি চিঠি দিয়েছি। যে চিঠিতে আমরা লিখেছি- আমরা একটি জটিল বিষয় আপনার নজরে আনতে লিখছি। কোচ পিটারের আচরণ দলের মধ্যে মারাত্মক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে, যা একটি বিষাক্ত পরিবেশ তৈরী করেছে ক্যাম্পে। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ করছে। গত ছয় মাসে, পিটারের কাছ থেকে আমাদের অনেক গালিগালাজ শুনতে হয়েছে। আমাদের মানসিক হয়রানি এবং উৎপীড়নের একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছেন কোচ। তার কারণে ক্যাম্পে একটি আতঙ্ক বিরাজ করছে। খেলোয়াড়রাও তাতে ভীষণ অসম্মানিত এবং হতাশার মধ্যে সময় কাটাচ্ছে। খেলোয়াড়রা, বিশেষ করে দলের সিনিয়র সদস্যরা, ধারাবাহিক বৈষম্য এবং অন্যায় আচরণের শিকার হচ্ছেন। কোচের এসব আচরণ কেবল অবমাননাকর নয়, দলগতভাবে পারফরম করার ক্ষেত্রেও বাধা সৃষ্টি করেছে। এটা মানতে হবে যে, কোচিংয়ে শুধুমাত্র কৌশল এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা থাকলেই হয় না বরং পারস্পরিক সম্মান, বিশ্বাস এবং সমর্থনের পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষমতাও কোচের থাকতে হয়। দুর্ভাগ্যবশত, কোচ পিটারের নেতৃত্বে, খেলোয়াড়রা বিচ্ছিন্ন এবং হতাশাগ্রস্ত বোধ করে, যা একটি বাজে সংস্কৃতি তৈরি করেছে। 

৬. আমরা কোন অবস্থাতেই দলে বিভাজন চাই না। তাই বিভাজন সৃষ্টি করা কোচকেও আমাদের প্রয়োজন নেই। কোচ পিটার দলের কিছু জুনিয়র ফুটবলারকে গুটি হিসেবে ব্যবহার করে দলের অভ্যন্তরে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছেন। কিছু মেয়েদের ব্যবহার করে মিথ্যাচারও করছেন। তিনি সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, আমরা সিনিয়ররা নাকী জুনিয়র মেয়েদের চাপ দিচ্ছি যাতে তার অধীনে অনুশীলনে অংশ না নেয়। আমরা পরিস্কার জানাতে চাই, আমাদের পক্ষ থেকে কাউকে কোন প্রকার চাপ প্রয়োগ করা হয়নি। ভালোমন্দের বিচার করার বয়স-জ্ঞান ক্যাম্পে থাকা প্রতিটি মেয়ের হয়েছে। সুতরাং সবাই নিজ নিজ সিদ্ধান্তেই তাদের অবস্থান বেছে নিয়েছে।

পরিশেষে বলতে চাই, আমরা আশা করছি বাফুফের মাননীয় সভাপতি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে আশু সমাধানের ব্যবস্থা নেবেন। এর আগ পর্যন্ত আমরা পিটারের অধীনে কোনো ট্রেনিং ক্যাম্পে অংশ নেব না। যেহেতু গত অক্টোবরের পর কোনো ফুটবলারের সঙ্গে বাফুফে কোনো চুক্তি নবায়ন করেনি, তাই আইনত বাফুফে আমাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রাখে না। তার পরও যদি সে রকম কিছু করার সিদ্ধান্ত হয় এবং পিটার বাটলারকেই রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্তে বাফুফে অনড় থাকে, তবে আমরা একযোগে পদত্যাগ করতে বাধ্য হবো। ভেবে নেব, দেশের নারী ফুটবলে আমাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে।

সবাইকে ধন্যবাদ

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ