বাটলারের বিরুদ্ধে মেয়েদের যত অভিযোগ

ক্রীড়া ডেস্ক
ক্রীড়া ডেস্ক
শেয়ার
বাটলারের বিরুদ্ধে মেয়েদের যত অভিযোগ
খেলোয়াড় আর কোচের মাঝে এখন শক্ত এক দেয়াল। ছবি : বাফুফে

নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলা চলাকালীন সময় কোচ পিটার বাটলার ও বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। মাঠের বাইরের এমন দ্বন্দ্বের পরও অবশ্য দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন হলেও দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব মিটে যায়নি। কোচ বাটলার দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পাওয়ায় এবার সেই দ্বন্দ্ব আরো চরমে উঠেছে।

এতটাই যে, ইংলিশ কোচ দায়িত্বে থাকলে গণ-অবসর নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন সাবিনা খাতুন-মনিকা চাকমরা।

কোচ বাটলারের বিরুদ্ধে সাবিনা-মাসুরা পারভীদের লিখিত অভিযোগ নিচে তুলে ধরা হলো-

পাকিস্তানের বিপক্ষে কোচের সিনিয়র ফুটবলারদের বাদ দেওয়া একাদশ যে ভুল ছিল, সেটা সবাই দেখেছে। কারণ ওই ম্যাচ আমরা হারতে হারতে কোনো রকমে ড্র করেছিলাম। ভারতের বিপক্ষে আমাদের চাপে তিনি একাদশ বদলাতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং সিনিয়র সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দল ভারতকে হারিয়ে গ্রুপ সেরা হয়েছিল।

এটাই প্রমাণ করে আমরাই সঠিক ছিলাম। কিন্তু ওই ম্যাচে নামার আগেই জানতাম কোচের বিরুদ্ধে একরম বিদ্রোহ এই একাদশ তৈরী হয়েছিল। আমরা যদি ব্যর্থ হই, বাফুফে কর্তারা এবং দেশের মানুষের কাছে আমরা ভিলেন হয়ে যেতাম। ওই ম্যাচেই আমাদের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেত।
এটা বুঝেও আমরা ঝুঁকি নিয়েছিলাম দেশের হয়ে লড়াই করার জন্য দেশের জন্য আমাদের এই লড়াই ও আবেগ, ভালোবাসার মূল্য ফুটবল ফেডারেশন থেকে আশা করেছিলাম।
সেটা হয়নি। বরং সাফ থেকে ফেরার পর যা হলো, তার জন্য আমরা মোটেই প্ৰস্তুত ছিলাম না। এই বিতর্কিত ব্যক্তির সঙ্গে আরও দুই বছরের চুক্তি নবায়ন করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। এই সিদ্ধান্তে মেয়েদের দাবি-দাওয়াকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা হয়েছে।
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে বাটলারকে কেন আমরা কোচ হিসেবে চাই না? সেটা জানাতেই আমাদের আজকের প্রয়াশ।

১. খেলোয়াড়দের সঙ্গে নেপালে ঘটে যাওয়া এতো এতো ঘটনার পরও কোচ পারতেন বিষয়টি সেখানেই সমাধান করতে। সাফ জিতে আসার পরপরই তিনি পারতেন আমাদের সঙ্গে বসতে। সেটা না করে বরং আমাদের ইগনোর করেছেন প্রতিনিয়ত। 

সত্যি বলতে আমরা অবাক হয়েছিলাম এবং অপেক্ষায় ছিলাম যে উনি কখন মিটিং ডাকবেন। কিন্তু ডাকেননি। বাংলাদেশে এসে বাফুফের এক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমাদের ইস্যু নিয়ে কোচের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং ওনাকে ওনার ব্যবহার আচার সম্পর্কে সতর্ক হতে বলেন। আমাদের প্রশ্ন হলো ওনাকে কেন সতর্ক করতে হবে, ওনার নিজের কি কোনো জ্ঞানবুদ্ধি নেই যে ওনার কী করা উচিত, কী করা উচিত নয়?

২. বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলে এই ঘটনা একেবারেই প্রথম। একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কোচ ভুলে যান যে তাঁর হাতে ৫টা পরিবর্তন আছে! সাফের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা যখন ১-০ গোলে হারার পথে, তখন হেড কোচ সানজিদাকে নামানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নামানোর সময় দেখেন খেলোয়াড় বদলের কাগজ তার কাছে নেই। আগে তিনটা পরিবর্তন করায় সঙ্গে থাকা তিনটি কাগজই শেষ হয়ে গেছে! তখন ম্যাচের ৯৫ মিনিট চলে। যেখানে বাংলাদেশ ১-০ গোলে পিছিয়ে রয়েছে। তখনও বাংলাদেশের হাতে ২টা খেলোয়াড় পরিবর্তনের অপশন ছিলো, কিন্তু কাগজ ছিলো না। ব্যপারটা খুবই লজ্জাজনক ও হাস্যকর। এত বড় ডিগ্রিধারী কোচের থেকে এটা আশা করা যায় না।

৩. ওই ম্যাচেই কৃষ্ণাকে নামানোর আগ মুহূর্তে এক সহকারী কোচ তাঁর জার্সির নাম্বার জিজ্ঞেস করলে আরেকজন টিমমেট বলে দেয়। কৃষ্ণা তখনও সেভগার্ড পড়ায় ব্যাস্ত থাকায় দ্বিতীয়বার আবার জিজ্ঞেস করেন জার্সি নাম্বার। আবারও অন্য টিমমেট বলে দেওয়ায় কোচ রেগে কৃষ্ণার দিকে তেড়ে আসেন। মামুলি জার্সি নাম্বার না বলায় এরকম আচরণ কোনো কোচের পক্ষে সম্ভব কিনা আমাদের জানা নেই । 

৪. কেবল মাঠ নয়, মাঠের বাইরেও প্রতিনিয়ত কোচ আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। আমাদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করেন। দলের অভ্যন্তরে খেলোয়াড়দের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়রের কথা বলে বিভাজনের সৃষ্টি করেছেন। মেয়েদের পোশাক-আশাক নিয়ে কথা বলতে ছাড়েননি। বডি শেমিংও করেছেন। মেয়েদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলেন, বাজে মন্তব্যও করেন কোচ। আমাদের বিরুদ্ধে কোচ সবসময় শৃঙক্ষলাভঙ্গের অভিযোগ করেন। এটা যে ডাহা মিথ্যা কথা, তার বড় প্রমাণ হলো, অতীতের কোন কোচ মেয়েদের শৃঙক্ষলা নিয়ে কখনো কোন প্রশ্ন তুলতে পারেননি । পিটাররে এরকম উল্টাপাল্টা আরচণের বিষয়গুলো সহকারী কোচর্ও জানেন। কিন্তু তারা চাকুরি যাওয়ার ভয়ে মুখ খোলেন না ৷

৫. আমাদের সঙ্গে কোচ যা যা ঘটিয়েছেন, তা জানিয়ে আমরা বাফুফের মাননীয় সভাপতির কাছে গত বুধবার একটি চিঠি দিয়েছি। যে চিঠিতে আমরা লিখেছি- আমরা একটি জটিল বিষয় আপনার নজরে আনতে লিখছি। কোচ পিটারের আচরণ দলের মধ্যে মারাত্মক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে, যা একটি বিষাক্ত পরিবেশ তৈরী করেছে ক্যাম্পে। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ করছে। গত ছয় মাসে, পিটারের কাছ থেকে আমাদের অনেক গালিগালাজ শুনতে হয়েছে। আমাদের মানসিক হয়রানি এবং উৎপীড়নের একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছেন কোচ। তার কারণে ক্যাম্পে একটি আতঙ্ক বিরাজ করছে। খেলোয়াড়রাও তাতে ভীষণ অসম্মানিত এবং হতাশার মধ্যে সময় কাটাচ্ছে। খেলোয়াড়রা, বিশেষ করে দলের সিনিয়র সদস্যরা, ধারাবাহিক বৈষম্য এবং অন্যায় আচরণের শিকার হচ্ছেন। কোচের এসব আচরণ কেবল অবমাননাকর নয়, দলগতভাবে পারফরম করার ক্ষেত্রেও বাধা সৃষ্টি করেছে। এটা মানতে হবে যে, কোচিংয়ে শুধুমাত্র কৌশল এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা থাকলেই হয় না বরং পারস্পরিক সম্মান, বিশ্বাস এবং সমর্থনের পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষমতাও কোচের থাকতে হয়। দুর্ভাগ্যবশত, কোচ পিটারের নেতৃত্বে, খেলোয়াড়রা বিচ্ছিন্ন এবং হতাশাগ্রস্ত বোধ করে, যা একটি বাজে সংস্কৃতি তৈরি করেছে। 

৬. আমরা কোন অবস্থাতেই দলে বিভাজন চাই না। তাই বিভাজন সৃষ্টি করা কোচকেও আমাদের প্রয়োজন নেই। কোচ পিটার দলের কিছু জুনিয়র ফুটবলারকে গুটি হিসেবে ব্যবহার করে দলের অভ্যন্তরে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছেন। কিছু মেয়েদের ব্যবহার করে মিথ্যাচারও করছেন। তিনি সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, আমরা সিনিয়ররা নাকী জুনিয়র মেয়েদের চাপ দিচ্ছি যাতে তার অধীনে অনুশীলনে অংশ না নেয়। আমরা পরিস্কার জানাতে চাই, আমাদের পক্ষ থেকে কাউকে কোন প্রকার চাপ প্রয়োগ করা হয়নি। ভালোমন্দের বিচার করার বয়স-জ্ঞান ক্যাম্পে থাকা প্রতিটি মেয়ের হয়েছে। সুতরাং সবাই নিজ নিজ সিদ্ধান্তেই তাদের অবস্থান বেছে নিয়েছে।

পরিশেষে বলতে চাই, আমরা আশা করছি বাফুফের মাননীয় সভাপতি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে আশু সমাধানের ব্যবস্থা নেবেন। এর আগ পর্যন্ত আমরা পিটারের অধীনে কোনো ট্রেনিং ক্যাম্পে অংশ নেব না। যেহেতু গত অক্টোবরের পর কোনো ফুটবলারের সঙ্গে বাফুফে কোনো চুক্তি নবায়ন করেনি, তাই আইনত বাফুফে আমাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রাখে না। তার পরও যদি সে রকম কিছু করার সিদ্ধান্ত হয় এবং পিটার বাটলারকেই রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্তে বাফুফে অনড় থাকে, তবে আমরা একযোগে পদত্যাগ করতে বাধ্য হবো। ভেবে নেব, দেশের নারী ফুটবলে আমাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে।

সবাইকে ধন্যবাদ

মন্তব্য

মেসি নৈপুণ্যে শেষ সময়ে হার এড়াল মায়ামি

ক্রীড়া ডেস্ক
ক্রীড়া ডেস্ক
শেয়ার
মেসি নৈপুণ্যে শেষ সময়ে হার এড়াল মায়ামি
লিওনেল মেসি। ছবি : এএফপি

যোগ করা সেময়ের শেষ মিনিটের গোলে ২-২ গোলে ড্র নিয়ে মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) নতুন মৌসুম শুরু করল ইন্টার মায়ামি। শেষ সময়ে মেসির এসিস্ট থেকে তালেকসকো সেগোভিয়া মায়ামিকে সমতায় ফিরিয়ে এক পয়েন্ট এনে দেন।

বাংলাদেশ সময় আজ সকালে নিউইয়র্ক সিটির বিপক্ষে ম্যাচের ৫ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় মায়ামি। নিউইয়র্কের পেনাল্টি বক্সে ঢুকে মেসি পাস দেন তমাস আভিলেসের কাছে।

গোল করে মায়ামিকে লিড এনে দেন ২১ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন সেন্টারব্যাক। গোল করা আভিলেসই ১৮ মিনিট পর লাল কার্ড দেখে বিপদে ফেলে দেন দলকে। আর তাতেই ২৩ মিনিটেই ১০ জনের দল হয়ে যায়া ইন্টার মায়ামি। 

মায়ামি ১০ জনের দল হয়ে যাওয়ার ৩ মিনিট পরেই সমতায় ফিরে নিউইয়র্ক।

মিতিয়া ইলেনিচের গোলে সমতায় ফেরার পর ৫৫ মিনিটে আলোনসো মার্তিনেজের গোলে এগিয়ে যায় দলটি। 

নিউইয়র্ক সিটি এই লিড ধরে রেখেছিল যোগ করা সময়ের ৯ মিনিট পর্যন্ত। মৌসুমের শুরুর ম্যাচে যখন হারের শঙ্কায় পড়ে মায়ামি তখন দলকে সেখান থেকে টেনে তুলেন আর্জেন্টাইন জাদুকর জাদুকর লিওনেল মেসিই। মাঝ মাঠের একটু ওপরে সেগোভিয়ার কাছ বল পাওয়া মেসি অনেকখানি দৌড়ে সামনে এগিয়ে গিয়ে ডিফেন্সচেরা এক পাস বাড়ান বক্সে ঢুকে পড়া সেই সেগোভিয়াকে।

ভেনেজুয়েলান মিডফিল্ডার নিউইয়র্কের গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে চিপ করে গোল করে সমতা আনেন।

৩

আর তাতেই হারের মুখ থেকে সমতা নিয়ে মাঠ ছাড়ে  হাভিয়ের মাচেরানোর শিষ্যরা।

মন্তব্য

ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ আজ, রিজওয়ানদের টিকে থাকার লড়াই

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ক্রীড়া প্রতিবেদক
শেয়ার
ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ আজ, রিজওয়ানদের টিকে থাকার লড়াই
ছবি : এক্স থেকে

ঘরের মাঠে টুর্নামেন্ট, অথচ ক্রিকেট বাণিজ্যে আধিপত্য বিস্তার করা ভারতের জেদের কাছে একপ্রকার নত হতে হয়েছে পাকিস্তানকে! সে জন্য আয়োজক হয়েও নিজেদের মাঠে রোহিত শর্মাদের বিপক্ষে খেলা হচ্ছে না মোহাম্মদ রিজওয়ানদের। আজ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান-ভারত। এ জন্য নিজ দেশের সমর্থক আর সাবেক ক্রিকেটারদের কাছে সমালোচিত হতে হচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে। তবে এসব সমালোচনা কানে তোলার সময় কোথায় বাবর আজমদের! জয়ের দিকে সব দৃষ্টি দলটির খেলোয়াড়দের।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির লড়াইয়ে টিকে থাকতে ২ পয়েন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের কাছে।
ভারতকে হারিয়ে ২০১৭ সালে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। এরপর বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপ মিলিয়ে রোহিতদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে কোনো জয় পাননি রিজওয়ানরা, ছয় ম্যাচের পাঁচটি হার, অন্যটি পরিত্যক্ত হয়েছে। যদিও সার্বিক পরিসংখ্যানে এগিয়ে পাকিস্তানই, ১৩৫ বার লড়াইয়ে ৭৩টি জয় দলটির, ভারত জিতেছে ৫৭টি ওয়ানডে।

তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচ জিতে বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে ভারত। উল্টো অবস্থান পাকিস্তানের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু করেছে দলটি।
তবে অতীত নিয়ে পড়ে থাকতে চান না বলে জানান পাকিস্তানি পেসার হারিস রউফ।

তিনি বলছিলেন, ‘যা হয়ে গেছে, তা এখন অতীত। আমরা সবটুকু মনোযোগ দিচ্ছি ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে। আগের ম্যাচের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নেব আমরা এবং চেষ্টা করব সেগুলোর পুনরাবৃত্তি না করতে। আমাদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ এক লড়াই, অনেকটা বাঁচা-মরার ম্যাচ। সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ বাঁচিয়ে রাখতে জেতাটা জরুরি।

দুই দলের ধ্রুপদি লড়াইয়ের আগে অবশ্য কৌশলী পথে হাঁটলেন ভার‍তের ওপেনার শুভমান গিল, ‘ভারত-পাকিস্তান মানেই বড় ম্যাচ। ফাইনাল হলে তো আরো বড়। আমরা ভালো খেলছি। তার মানে পাকিস্তানকে ছোট করে দেখার কোনো কারণ নেই।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘যে দল বেশি চাপ সামলাতে পারবে, তারাই জিতবে। ওয়ানডে এমন একটি সংস্করণ, যেখানে খেলতে নামলে মনে হয় হাতে খুব বেশি সময় নেই। আউট হলে মনে হয়, হাতে কত সময় ছিল। তাই স্কোরবোর্ডের দিকে তাকিয়ে খেলতে হবে।’

ম্যাচের ভেন্যু দুবাইয়ের কন্ডিশনে স্পিনাররা বাড়তি সাহায্য পেয়ে থাকেন। কিন্তু এই বিভাগে ঘাটতি রয়েছে পাকিস্তানের। স্কোয়াডে থাকা একমাত্র বিশেষজ্ঞ স্পিনার আবরার আহমেদ। কিউইদের বিপক্ষে হাত ঘোরানো অনিয়মিত দুই স্পিনার খুশদিল শাহ ও সালমান আগা ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিংয়ের বিপক্ষে কতটা কার্যকর হতে পারেন, তা নিয়ে সংশয় থাকছে। এদিকে ভারত পাঁচজন স্পিনার নিয়ে এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এসেছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনজনকে খেলিয়েছে তারা। এসব হিসাব করে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের কোনো সুযোগই দেখছেন না দেশটির সাবেক ক্রিকেটার সঞ্জয় মাঞ্জরেকর, ‘ভারতের মানের ধারেকাছেও নেই পাকিস্তান। সম্প্রতি তাদের ওপর একচ্ছত্র আধিপত্য করছে ভারত। এবার পাকিস্তানকে আরো দুর্বল দেখাচ্ছে। তবে এর পরও এই লড়াই নিয়ে উন্মাদনায় ভাটা পড়েনি।’ পাকিস্তানের সাবেক অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক অবশ্য উত্তরসূরিদের হয়ে ব্যাট করেছেন, ‘ভারতের বিপক্ষে জেতার সামর্থ্য আমাদের দলের আছে। কিন্তু দায়িত্বটা খেলোয়াড়দের নিতে হবে, বিশেষ করে সিনিয়রদের। ভেবে দেখো, ভারতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচটা যদি কেউ জেতায়, তাহলে রাতারাতি মহাতারকা হয়ে যাবে। তাই চাপ থাকলেও এটাকে সুযোগ হিসেবে নাও।’

মন্তব্য
অনুশীলনে বাংলাদেশ দল

এভাবেও মানিয়ে নেওয়া যায়!

মাসুদ পারভেজ
মাসুদ পারভেজ
শেয়ার
এভাবেও মানিয়ে নেওয়া যায়!

২লাগেজ বেল্টের পাশে স্তূপ করে রাখা কিটব্যাগ আর স্যুটকেস দেখেই শুধু বোঝার উপায় ছিল যে একটু আগে নামা এমিরেটসের ফ্লাইটে বাংলাদেশ দলও ছিল। দুবাই থেকে সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে ফ্লাইটে উঠলেও শনিবার প্রথম প্রহরের ইসলামাবাদ অবশ্য ক্রিকেটারদের জন্য নতুন কোনো অভিজ্ঞতা নিয়ে আসেনি। পাকিস্তানে এলে যেভাবে তাঁদের নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে ফেলা হয়, এবারও এর ব্যতিক্রম নয়।

এভাবেও মানিয়ে নেওয়া যায়!বিমান থেকে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় রাষ্ট্রীয় অতিথিদের জন্য সংরক্ষিত লাউঞ্জে।

সেখান থেকে হোটেলে যেতে যেতে সেই একই নিরাপত্তাব্যবস্থা, যেটি শুধু রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্যই থাকে। ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ক্রিকেটারদেরও নিয়ে উঠিয়েছে একই কাতারে। দীর্ঘদিন পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ থাকার পর আবার চালু হতেই সব দলের জন্য নিশ্চিত করে আসা হচ্ছে এ রকম নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। যেটিকে প্রথম প্রথম ‘শেকল’ বলেই মনে করে এসেছেন বিভিন্ন দলের ক্রিকেটাররা।

চাইলেও অন্যান্য দেশের মতো ঘুরতে কিংবা খেতে বের হওয়া যায় না। ম্যাচ খেলতে এবং অনুশীলনের জন্য মাঠে যাওয়া-আসা ছাড়া একরকম হোটেলবন্দি জীবনই। বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার রাবীদ ইমাম মজা করেই বলছিলেন, ‘কেউ দাওয়াত দিলেও তাঁকে খাবারদাবার নিয়ে হোটেলে এসে খাইয়ে যেতে হয়!’ তা-ও আবার এমন আতিথেয়তার সুযোগ একমাত্র পেয়ে থাকে পাকিস্তানে বাংলাদেশ হাইকমিশনই। ইসলামাবাদের স্যারিনা হোটেলের যে ফ্লোরে এখন আছে বাংলাদেশ দল, সেখানে অন্য কোনো অতিথি রাখা হয়নি এবারও।

সেই ফ্লোরে আছে সশস্ত্র নিরাপত্তা প্রহরাও।

হোটেলের বাইরেও কম নয়। পাকিস্তানের রাজধানীজুড়ে মার্গলা মাউন্টেন রেঞ্জের যে ব্যাকড্রপ, সেটি নয়নাভিরাম করে তুলেছে ইসলামাবাদ ক্লাবের ক্রিকেট ওভালকেও। গতকাল দুপুর থেকে বিকেল অব্দি সেখানে নাজমুল হোসেনদের অনুশীলনের সময় বাইরের লোক বলতে নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে ঢুকতে পারলেন শুধু চ্যাম্পিয়নস ট্রফি কাভার করতে আসা বাংলাদেশের সাংবাদিকরাই। ঢোকার পথে দেখা মিলল স্বয়ংক্রিয় কারবাইন হাতে দাঁড়িয়ে সেনা সদস্যরা।

 

১

পাকিস্তানে গত কয়েক বছরে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতে করতে অবশ্য এ রকম ‘শেকলে বাঁধা জীবন’ গা-সওয়াই হয়ে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। অন্তত রাবীদের দাবি তা-ই। বিভিন্ন দেশে খেলতে গেলে খেলোয়াড়দের সেখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ থাকে। এবারও তা কিছুটা থাকছে। গত আগস্ট-সেপ্টেম্বরে রাওয়ালপিন্ডিতে দুই টেস্টের সিরিজে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করে যাওয়া দল এবার খেলবে ভিন্ন সংস্করণে। কন্ডিশন আবার নতুন করে বোঝাপড়ার ব্যাপারও তাই থাকছে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গ্রুপ পর্বে তাদের শেষ দুই ম্যাচ ইসলামাবাদের একদম লাগোয়া রাওয়ালপিন্ডিতে। এই দুই জায়গার মধ্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক যোগসূত্রও নিবিড়। দুই শহরকে চেনাতে তাই ‘টুইন সিটি’ বা ‘যমজ শহর’ বললেই হয়।

ইসলামাবাদে থেকে রাওয়ালপিন্ডিতে খেলার অপেক্ষায় থাকা বাংলাদেশ দলের এবারের চ্যালেঞ্জ অবশ্য ‘টুইন’ নয় কিছুতেই। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ কিছুটা থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু নিরাপত্তাব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ নেই। রাবীদ বলছিলেন সে কথাই, ‘এই নিয়ে কম তো আমরা পাকিস্তানে এলাম না। খেলোয়াড়রা তাই জানে এখানে এলে কিভাবে জীবন কাটাতে হবে। বলতে পারেন, এখানে আসতে আসতে ওরা অভ্যস্তই হয়ে উঠেছে।’

গত পাঁচ বছরে এখানে তাঁদের আসা হয়েছে পাঁচবার। ২০২০ সালে কভিডে সারা পৃথিবী স্তব্ধ হয়ে না গেলে ওই বছরই তিনবার আসা হতো। এরপর ২০২৩ সালে আসে এশিয়া কাপ খেলতে। গত বছরের টেস্ট সিরিজ থেকে ফিরেছে স্মরণীয় সাফল্য নিয়ে। তবে জাতীয় দলই শুধু নয়, পাকিস্তানে এসে খেলে গেছে বাংলাদেশ ‘এ’ থেকে শুরু করে অনূর্ধ্ব-১৯ এবং নারী জাতীয় দলও। কালকের অনুশীলনের ভেন্যুতে গত বছর চার দিনের ম্যাচ জিতে গেছে ‘এ’ দলও। যে ম্যাচে ১৭২ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা জাকের আলীর মতো জাতীয় দলে নতুনরাও তাই এমন কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থায় অনভ্যস্ত নন। পাকিস্তানে নিয়মিত যাতায়াত যে তাঁদের শিখিয়েছে এভাবেও মানিয়ে নেওয়া যায়!

মন্তব্য

ডাকেটের রেকর্ড ১৬৫, ইংলিশদের ৩৫১ রানের সংগ্রহ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ডাকেটের রেকর্ড ১৬৫, ইংলিশদের ৩৫১ রানের সংগ্রহ
ছবি : এএফপি

বেন ডাকেটের দুর্দন্ত ১৬৫ রানের ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৫১ রানের সংগ্রহ পেয়েছে ইংল্যান্ড। বিশাল এই সংগ্রহ তাড়া করতে এখন ব্যাট করছে অজিরা।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। কিন্তু অজি বোলাররা সুবিধা করতে পারেনি পাকিস্তানের সামনে।

প্রথম তিন ম্যাচের মতো চ্যাম্পিয়নস ট্রফির এবারের আসরের চতুর্থ ম্যাচে এসেও হয়েছে সেঞ্চুরি। এবারের সেঞ্চুরিটিকে বলা চলে সবচেয়ে দাপুটে এখন পর্যন্ত চলমান আসরে। ১৪৩ বলে ১৬৫ রানের ইনিংস খেলেছেন ইংল্যান্ডের উদ্বোধনী ব্যাটার বেন ডাকেট। ইনিংসটি সাজিয়েছেন তিনি ১৭ চার ও ৩ ছক্কায়।

৪৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা নড়বড়ে শুরু করে ইংলিশরা। ফিল সল্ট ৬ বলে ১০ এবং জেমি স্মিথ আউট হন ১৫ রান করে। দুই উইকেটই শিকার করেন বেন দ্বারশুইস। 

যদিও দ্রুত ২ উইকেট হারানোর ধকল ইংল্যান্ড সামাল দেয় বেন ডাকেট ও জো রুটের ১৫৮ রানের বড় জুটিতে।

সেই জুটি ভাঙেন অ্যাডাম জাম্পা। তার বলে ৬৮ রান করে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন রুট ৬৮ রান করে। দলীয় ২০১ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন হয় ইংল্যান্ডের। রুটের পর মাঠে আসা হ্যারি ব্রুক টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ৩ রানেই তিনি থেমেছেন সেই জাম্পার বলেই ক্যারিকে ক্যাচ দিয়ে।
অবিশ্বাস্য ক্যাচ নেন ক্যারি।

অধিনায়ক জস বাটলার ও লিয়াম লিভিংস্টোনের ইনিংসও বড় হয়নি। ২৩ ও ১৪ রান করেন দুজন। তবে শুরু থেকে ব্যাটিং করা ডাকেট টিকে ছিলেন ৪৭.২ ওভার পর্যন্ত। আউট হওয়ার আগে তিনিই ছিলেন ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের মূল স্তম্ভ। মারনাস লাবুশেনের বলে লেগ বিফোর হওয়ার আগে খেলেন অনবদ্য ১৬৫ রানের ইনিংস। তার বিদায়ে ৩২২ রানে ৭ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ৮ রানে আউট হন ব্রাইডন কার্স।

তবে শেষদিকে জোফরা আর্চার ২ চার ও ১ ছয়ে ১০ বলে ২১ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে দলের স্কোর ছাড়িয়ে দেন ৩৫০। তিনি ও আদিল রশিদ (১) অপরাজিত ছিলেন।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে বেন দ্বারশুইস সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন। জোড়া উইকেট শিকার করেন অ্যাডাম জাম্পা এবং মারনাস লাবুশেন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ঝুলিতে যায় ১ উইকেট।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ