<p>ইউক্রেনজুড়ে সোমবার রাশিয়া ব্যাপক হামলা চালানোর পর অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া কিছু বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিন সকালে কিয়েভসহ বেশ কয়েকটি শহরে বিস্ফোরণ হয়। দেশটির অর্ধেকেরও বেশি অঞ্চল আক্রমণের মুখে পড়ে।</p> <p>জাপোরিঝজিয়া, লুটস্ক, খারকিভ, জাইটোমির ও দিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ব্যাপক বিমান হামলায় মানুষ মারা গেছে। হামলায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও নিশ্চিত করেছে, তারা ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে এবং সব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। পশ্চিমে লুটস্ক থেকে পূর্বে দিনিপ্রো পর্যন্ত অসংখ্য শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ সময় লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে বলা হয়েছিল এবং পুরো দেশকে বিমান হামলার সতর্কতার মধ্যে রাখা হয়েছিল।</p> <p>ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিগাল বলেছেন, ড্রোন, ক্রুজ ও সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেনের প্রায় ১৫টি অঞ্চল রাশিয়া হামলা চালিয়েছে।</p> <p>দিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলে পৃথক হামলায় ৬৯ ও ৪৭ বছর বয়সী দুই পুরুষ নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় গভর্নর সার্জি লাইসাক জানিয়েছেন। এ সময় ১৪ বছর বয়সী এক মেয়েসহ অন্যরা আহত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। এ ছাড়া জাপোরিঝিয়ায় বাড়িতে হামলায় একজন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে লুটস্কের মেয়র একজন নিহত এবং আরো পাঁচজন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। শহরটির বেশির ভাগ অংশে পানি নেই বলেও জানান তিনি। পাশাপশি খারকিভ অঞ্চলের ইজিয়ামে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একজন নিহত হয়েছেন বলে আঞ্চলিক প্রধান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে পশ্চিম ইউক্রেনের জাইটোমির অঞ্চলে একজন নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে গভর্নর জানিয়েছেন। এ ছাড়া মধ্য পোলতাভা ও ওডেসা অঞ্চলে শিশুসহ আরো অনেকে আহত হয়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।</p> <p>ইউক্রেনের বিমানবাহিনী টেলিগ্রামে জানিয়েছে, সোমবার রাতভর দেশজুড়ে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়ে সকাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি জানান, রাশিয়া ১০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রায় ১০০টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে। জ্বালানি স্থাপনার অনেক ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি ছিল বৃহত্তম হামলাগুলোর একটি।’</p> <p>জেলেনস্কি ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সসহ পশ্চিমা মিত্রদেরকে তাদের নিয়ম পরিবর্তন করার এবং ইউক্রেনকে রাশিয়ার গভীরে আঘাত করার জন্য তাদের অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। রাশিয়ার অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার জন্য ইউক্রেনকে কিছু পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তবে সেগুলো দূরপাল্লার অস্ত্র নয়।</p> <p>রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তারা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে নতুন করে হামলা চালাচ্ছে। ফলে সারা দেশে ঘন ঘন ব্ল্যাকআউট হচ্ছে।</p> <p>সূত্র : বিবিসি</p>