<p>ভয়াবহ বন্যায় ইউরোপের অন্তত এক ডজন শহরের বড় অংশই পানিতে ডুবে গেছে। এ পর্যন্ত অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে বন্যায়। পোল্যান্ডের নেস শহরের সুরক্ষায় এগিয়ে এসেছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। বন্যায় আক্রান্ত ইউরোপের আর ১০টি শহরের মতো এই শহরের পরিস্থিতিও ভয়াবহ। নদীর পানি উপচে শহরের আবাসিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল।</p> <p>ইউরোপের আরেক দেশ চেক প্রজাতন্ত্রের নদীগুলো টইটুম্বুর। দানিয়ুব নদীর পানি উপচে পড়ছে স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরির বেশ কিছু শহরে। অস্ট্রিয়া ও রুমানিয়ার কিছু এলাকাও ভয়াবহভাবে আক্রান্ত।</p> <p>সপ্তাহান্তে শুরু হওয়া বন্যায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে চেক-পোলিশ সীমান্ত। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই অঞ্চলের সেতু আর বাসাবাড়ি। রাতভর পোল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নেস শহরের ৪০ হাজার বাসিন্দার সুরক্ষায় ভাঙা বাঁধে বালুর ব্যাগ দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। বুধবার দেশটির দমকল বিভাগের প্রধান জানান, শহরের বাঁধ সুরক্ষিত করা হয়েছে। বালুর ব্যাগ স্থাপনে দেশটির সমারিক বাহিনী হেলিকপ্টার নিয়ে সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে।</p> <p>বন্যার সময়ে বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়ায় লুটপাটের খবরও এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দা সাবিনা জাকুবোভস্কা বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে, তারা আমাদের মালামালের সুরক্ষা দেবে। কিন্তু আমরা উদ্বিগ্ন। কারণ আমরা শুনেছি লুটপাটকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে।’</p> <p>উল্লেখ্য, বন্যায় উদ্তভূত পরিস্থিতিতে ‘বিপর্যস্ত অবস্থা’ জারি করেছে পোলিশ সরকার। সেই সঙ্গে আক্রান্তদের সহায়তায় এরই মধ্যে ২৬০ মিলিয়ন ইউরোর তহবিল ঘোষণা করা হয়েছে।</p> <p>এদিকে চেক রিপাবলিক ও পোল্যান্ডের হাজার হাজার বাসিন্দা এখনো বিদ্যুৎবিহীন, নেই সুপেয় পানি। পোলান্ডের তৃতীয় বৃহত্তম শহর রোক্লো। অডার নদী তীরের এই শহরটির বন্যা পরিস্থিতিতে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে। শহরের মেয়র ইয়াচেক সুত্রিক বলেন, ‘লোকজনকে সরিয়ে নিতে আমরা বাস সরবরাহ করেছি। আজ আমরা বাঁধের সুরক্ষায় আরো কাজ চালিয়ে যাব।’</p> <p>প্রতিবেশী চেক প্রজাতন্ত্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মোরাবিয়া-সেলিসিয়া অঞ্চলের গভর্নর জোসেফ বেলিচা জানান, ওই অঞ্চল থেকে এরই মধ্যে ১৫ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বন্যার পানির কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া অঞ্চলগুলোতে সাহায্য পাঠাতে হেলিকপ্টার নিয়ে কাজ করছে সরকারের বাহিনী।</p> <p>বন্যার পানির প্রবাহ ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে হাঙ্গেরিও। দেশটির ভিসেগ্রাড ও সেন্টেন্দ্রে শহরে দানিয়ুব নদীর পানির প্রবেশ ঠেকাতে অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার। এমনকি রাজধানী বুদাপেস্টেও পানির প্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি নজর প্রশাসনের। হাজার হাজার বালির বস্তা বসিয়ে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন স্বেচ্ছাসেবীরা।</p> <p>স্লোভাকিয়ার পরিবেশমন্ত্রী টোমাস টারাবা জানান, দানিযুব নদীর পানি ১০ মিটার বেড়ে গিয়ে আবার আস্তে আস্তে নামতে শুরু করেছে। বন্যায় সারা দেশে মোট ২০ মিলিয়ন ইউরোর ক্ষতি হয়েছে বলে অনুমান মন্ত্রীর।</p>