<p>লেবাননে পেজার বিস্ফোরণে ১২ জনের মৃত্যুর ঘটনার এক দিন পার না হতেই এবার দেশজুড়ে ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় প্রথমে ১৪ জন নিহত হওয়ার কথা বলা হলেও পড়ে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ২০ জনে। </p> <p>গতকাল বুধবারের বিস্ফোরণে তিন শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর আগের বিস্ফোরণে আহত হয় প্রায় তিন হাজার মানুষ এবং নিহত হয় শিশুসহ ১২ জন। </p> <p>এসব ঘটনায় দেশটির সাধারণ মানুষ এখন কাউকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেখলে আতঙ্কিত হয়ে উঠছে। দক্ষিণ লেবাননের সিদন শহরে একটি মোবাইল ফোনের দোকান থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। সেই ধোঁয়ার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও ঘণ্টাখানেকের মধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে দফায় দফায় বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়।</p> <p>এর এক দিন আগে মঙ্গলবার লেবাননজুড়ে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করা পেজার বিস্ফোরণ ঘটে। বিশ্লেষকদের ধারণা, হিজবুল্লাহর পেজারগুলোতে বিস্ফোরণ ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের পরিকল্পনার ফল। হিজবুল্লাহর কেনা পাঁচ হাজার পেজারের ভেতরে বিস্ফোরক রেখে দিয়েছিল  মোসাদ, লেবাননের একটি নিরাপত্তা সূত্র এবং অন্য একটি সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এমন খবর জানিয়েছে। যদিও এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল।</p> <p>এরপর গতকাল বুধবার লেবাননে হিজবুল্লাহর ব্যবহার করা ওয়াকিটকিগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটে। দেশটির রাজধানী বৈরুতসহ বিভিন্ন এলাকায় বিস্ফোরণের এসব ঘটনা ঘটে। হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম দক্ষিণ ও পূর্ব লেবাননে একই ধরনের বিস্ফোরণের খবর দিয়েছে। লেবানন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুধবারের হামলায় অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো ৪৫০ জন। </p> <p>এ ছাড়া এএফপি টিভির ফুটেজে দেখা গেছে, দক্ষিণ বৈরুতে স্থানীয় সময় বুধবার বিকেলে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের ব্যবহার করা ওয়াকিটকিতে বিস্ফোরণ ঘটলে আশ্রয়ের জন্য লোকজন দৌড়াচ্ছে।</p> <p>মঙ্গলবারের ওই হামলার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ইসরায়েল ঘোষণা করেছিল, গাজা উপত্যকায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধের লক্ষ্যকে প্রসারিত করে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মিত্র হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে লড়াইও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।</p> <p>ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, যুদ্ধের নতুন পর্ব শুরু করেছে তার দেশ। ইসরায়েলের একটি বিমানঘাঁটি পরিদর্শনের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।<br />  <br /> হামলার পর হিজবুল্লাহ বলেছে, ইসরায়েল এই অপরাধমূলক আগ্রাসনের জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী। পাশাপাশি তারা গাজা যুদ্ধে হামাসের সমর্থনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার এবং আক্রমণের প্রতিশোধ নেবে বলে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।</p> <p>লেবাননের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ বাউ হাবিব সতর্ক করে বলেছেন, লেবাননের ‘সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার’ ওপর ‘নির্লজ্জ হামলা’ একটি বিপজ্জনক ঘটনা, যা ‘বৃহত্তর যুদ্ধের ইঙ্গিত দিতে পারে’। </p> <p>সূত্র : এএফপি, বিবিসি, আলজাজিরা<br />  </p>