<p>ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে, তিন মাস আগে তারা গাজায় হামাসের তিনজন শীর্ষস্থানীয় নেতাকে হত্যা করেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন রাহি মুস্তাহা, যাকে হামাস সরকারের প্রধান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি দুজন হলেন সামে আল-সিরাজ ও সামি ওদেহ, যারা হামাসের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।</p> <p>আইডিএফ জানিয়েছে, এই তিন নেতা গাজার উত্তরাঞ্চলে একটি ভূগর্ভস্থ কম্পাউন্ডে লুকিয়ে ছিলেন এবং বিমান হামলায় নিহত হন।</p> <p>এদিকে হামাস এই তিন নেতার মৃত্যুর খবর ঘোষণা করেনি। ইসরায়েল বলেছে, ‘যাতে তাদের (হামাস) সন্ত্রাসী কার্যক্রমে মনোবলের ক্ষতি না হয় এবং কার্যক্ষমতা নষ্ট না হয়’ সে জন্য গোষ্ঠীটি এ খবর জানায়নি । আইডিএফের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাহি মুস্তাহা ‘হামাসের অন্যতম শীর্ষ নেতা ছিলেন এবং হামাসের বাহিনী মোতায়েনসংক্রান্ত সিদ্ধান্তে সরাসরি প্রভাব ফেলেছিলেন’।</p> <p>আইডিএফ আরো জানিয়েছে, রাহি মুস্তাহা ছিলেন হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ‘ডান হাত ও তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের একজন’। মুস্তাহা ও সিনওয়ার একসঙ্গে ইসরায়েলের একটি কারাগারে শাস্তি ভোগ করেন এবং পরে একসঙ্গে হামাসের সাধারণ নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। মুস্তাহা ‘গাজা উপত্যকায় হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ সদস্য হিসেবে বিবেচিত হতেন এবং যুদ্ধের সময় হামাসের শাসনের নাগরিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার পাশাপাশি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন’। তিনি সামরিক সিদ্ধান্তগুলোতে জড়িত ছিলেন। একই সঙ্গে গাজা উপত্যকায় হামাসের নাগরিক শাসনের প্রধান হিসেবে কাজ করতেন এবং বন্দিবিষয়ক দায়িত্বে ছিলেন। তিনি আগে অর্থনৈতিকবিষয়ক দায়িত্বেও ছিলেন।</p> <p>২০১৫ সালে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর মুস্তাহাকে ‘বিশেষভাবে মনোনীত বিশ্ব সন্ত্রাসী’ হিসেবে মনোনীত করেছিল। এ ছাড়া ইউরোপীয় কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস মুস্তাহাকে হামাসের গাজা পলিটব্যুরোর সদস্য হিসেবে বর্ণনা করেছে, যিনি গোষ্ঠীটির আর্থিক বিষয়গুলোও তদারকি করেন। অন্যদিকে সিরাজ ছিলেন পলিটব্যুরোর সদস্য। আর ওদেহকে গোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার নেতা বলা হয়।</p> <p>এর আগে আগস্টে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, তারা পশ্চিম তীরে একটি বড় অভিযানের সময় হামাসের নেতা উইসাম খাজেমকে গুলি করে হত্যা করেছে। অন্যদিকে জুলাই মাসে ইরানের রাজধানী তেহরানে একটি বিস্ফোরণে হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়া নিহত হন। ইরান সেই ঘটনায় ইসরায়েলকে দায়ী করেছিল। তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা তা স্বীকার করেননি।</p> <p>ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশন গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) পরে জানিয়েছিল, গত মঙ্গলবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ছিল ইসরায়েলের ‘ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন ও হানিয়ার শহীদ হওয়ার প্রতিশোধ’।</p> <p>হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার পর গাজা যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছিল। সেই হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ২০৫ জন নিহত হয়, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক ছিল। অন্যদিকে হামাসশাসির ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক সামরিক আক্রমণে গাজায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪১ হাজার ৭৮৮ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক।</p> <p>সূত্র : বিবিসি, এএফপি, টাইমস অব ইসরায়েল</p>