লেবাননের পূর্ব বেকা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে। বালবেক অঞ্চলের ১২টি এলাকায় হামলায় দুই শিশুও নিহত হয়েছে বলে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া এ ঘটনায় ৫৮ জন আহত হয়েছেন।
লেবাননের পূর্ব বেকা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে। বালবেক অঞ্চলের ১২টি এলাকায় হামলায় দুই শিশুও নিহত হয়েছে বলে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া এ ঘটনায় ৫৮ জন আহত হয়েছেন।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, উপত্যকায় উদ্ধার প্রচেষ্টা এখনো চলছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখনো এ ঘটনায় কোনো মন্তব্য করেনি। এ হামলাকে বালবেকের গভর্নর বাচি খোদর গত মাসে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ সংঘাত বাড়ার পর থেকে এই এলাকায় ‘সবচেয়ে সহিংস’ হামলা বলে অভিহিত করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা একটি ভিডিওতে উদ্ধারকারীদের আহত লোকজনকে খোঁজ করতে দেখা যায়।
এর আগে সোমবার উপকূলীয় শহর টায়ারে ইসরায়েলি বিমান হামলায় সাতজন নিহত এবং ১৭ জন আহত হয় বলে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়। ইসরায়েল জনগণকে শহরের কেন্দ্রস্থল ছেড়ে যাওয়ার জন্য সতর্কতা জারি করেছে।
ইসরায়েল গত পাঁচ সপ্তাহে লেবাননজুড়ে হাজার হাজার বিমান হামলা চালিয়েছে। তারা হিজবুল্লাহর অবকাঠামো এবং অস্ত্রভাণ্ডার লক্ষ্য করে এই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে আন্তঃসীমান্ত শত্রুতা শুরু হয়, যখন সশস্ত্র লেবানিজ গোষ্ঠী ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে উত্তর ইসরায়েলে এবং তার আশপাশে রকেট ছুড়তে শুরু করে। ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে মারাত্মক আক্রমণের পরদিন থেকে এই রকেট হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, লেবাননে ইসরায়েলের হামলার পর থেকে দুই হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষ নিহত এবং ১২ হাজার ৪০০ জনের বেশি আহত হয়েছে। ইসরায়েল গত ৩০ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ লেবাননে আক্রমণ শুরু করে।
সূত্র : বিবিসি
সম্পর্কিত খবর
কানাডার ২৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন মার্ক কার্নি। শুক্রবার (১৪ মার্চ) শপথ নেওয়ার মধ্য দিয়ে জাস্টিন ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হলেন তিনি।
কানাডার নতুন এই প্রধানমন্ত্রী ফরাসি এবং ইংরেজি উভয় ভাষাতেই শপথ গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
নতুন প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণের পর তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নিচ্ছেন।
এর আগে, শপথ গ্রহণের প্রস্তুতির সময় কার্নি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি বার্তা দিয়েছেন।
তিনি লিখেছেন, ‘আজ আমরা সময়োপযোগী একটি সরকার গঠন করেছি।
কানাডায় গত রবিবার সদস্যদের ভোটে লিবারেল পার্টির নতুন নেতা বাছাই করা হয়।
অর্থনীতিবিদ মার্ক কার্নি কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন। তিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডেরও নেতৃত্ব দিয়েছেন। কার্নি এমন একসময় সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিচ্ছেন, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কানাডার বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার শঙ্কা বাড়ছে।
৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত জানুয়ারিতে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ট্রুডো। জনমত জরিপে দলের বাজে অবস্থা উঠে আসার পর দায়িত্ব ছাড়তে চাপে ছিলেন তিনি।
পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে রাশিয়া, চীনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে ইরানের। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত এ আলোচনায় ইরানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে চীন ও রাশিয়া।
যদিও সম্প্রতি পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইরানের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরমধ্যেই রাশিয়া ও চীনের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করল ইরান।
বৈঠক শেষে রাশিয়া ও চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পারস্পারিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে আলোচনা হওয়া উচিত। পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া উচিত।
২০১৫ সালে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের একটি চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তির মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করতে সম্মত হয়।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। তিনি নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন। বছরখানেক পর ইরানও চুক্তি থেকে সরে আসতে শুরু করে।
ইরানের সঙ্গে আলোচনার পর যৌথ বিবৃতিতে চীন ও রাশিয়া এবার বলেছে, তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কেবল শান্তিপূর্ণ উদ্দেশে।
চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মা ঝাওক্সু বৈঠকের পরে বলেন, চীন, রাশিয়া ও ইরান জোর দিয়ে বলেছে যে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে বর্তমান পরিস্থিতির মূল কারণ চিহ্নিত ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ‘চীন, রাশিয়া ও ইরান সব ধরনের বেআইনি একতরফা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছে।’
হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তনের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন। তবে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকা অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় অংশ নিতে রাজি নয় তেহরান।
সম্প্রতি ইরানকে পারমাণবিক আলোচনার আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ‘ইরান প্রত্যাখ্যান করলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।’
এরপর ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করবেন না। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশে বলেন, ‘কোনো ধরনের হুমকির মুখে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করবে না। আপনার যা ইচ্ছা তাই করুন।’
সূত্র : রয়টার্স
বেলুচিস্তানের ঘটনায় আফগানিস্তান ও ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে পাকিস্তান। সেই দাবি খারিজ করেছে ভারত ও আফগানিস্তান।
বেলুচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন ছিনতাইয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শফকাত আলী খান বৃহস্পতিবার আফগানিস্তান ও ভারতের সম্ভাব্য সম্পৃক্ততার অভিযোগ করেন। সেই দাবি নস্যাৎ করল ভারত ও আফগানিস্তান।
শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘পাকিস্তানের দাবি ভিত্তিহীন। সারা দুনিয়া জানে, আতঙ্কবাদের আঁতুড়ঘর কোথায়। অন্যদের দিকে আঙুল তোলার আগে নিজেদের দিকে তাকাক পাকিস্তান।
আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে
সাধারণভাবে পাকিস্তান তাদের দেশের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের পিছনে ভারতকে দায়ি করলেও, জাফর এক্সপ্রেসের ঘটনা নিয়ে আফগানিস্তানকেই মূল নিশানা করেছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শাফকত আলি জানান আফগানিস্তানেই ট্রেন হাইজ্যাকের ছক করেছিল বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।
তিনি জানিয়েছেন, ‘আমাদের নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। তথ্য অনুযায়ী পাকিস্তানে এই ধরনের হামলার জন্য দাযি থাকে ভারত।
শফকাত আরো বলেন সারা পৃথিবীজুড়ে 'হত্যার প্রচার' চালাচ্ছে ভারত। এর ফলে প্রতিবেশী দেশগুলো বিপদে পড়ছে। বেলুচিস্তান লিবারেশান আর্মি বা বিএলএ সম্পর্কে ভারতীয় মিডিয়ার সদর্থক প্রচারেরও সমালোচনা করেন তিনি। তারপরেই ভারত ওই প্রতিক্রিয়া জানায়।
আফগানিস্তানে তালেবান শাসকরাও জানিয়েছেন, তাদের সঙ্গে পাকিস্তানের ট্রেনে হামলার কোনো সম্পর্ক নেই। আফগানিস্তান কোনোভাবে এর সঙ্গে জড়িত নয়।
আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল কাহার বালখি বলেছেন, ‘পাকিস্তান ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে। আমরা এই অভিযোগ খারিজ করছি। আমরা পাকিস্তানকে বলছি, তারা যেন নিজেদের নিরাপত্তা এবং অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিয়ে এরকম দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য না করে।’
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় ২ হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারি ব্যয় কমানোর অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুদান বন্ধ করে দিয়েছে। অনুদান কমানোর জেরে কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
শীর্ষ গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাঁটাইয়ের বেশিরভাগ অংশই এর আন্তর্জাতিক কর্মীদের ওপর প্রভাব ফেলবে। বিশ্ববিদ্যালয়টি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৪৪টি দেশের ১ হাজার ৯৭৫ জন কর্মচারী ছাঁটাই করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আরো ২৪৭ জন কর্মচারী ছাঁটাই করা হয়েছে। প্রায় ১০০ জন অতিরিক্ত কর্মীকে সংক্ষিপ্ত সময়সূচীসহ ছুটিতে পাঠানো হবে।
প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এটা আমাদের পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্য একটা কঠিন দিন। ইউএসএইডের ৮০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি তহবিল বন্ধ করে দেয়ায় আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ এখন বন্ধ করে দিতে হচ্ছে।’
চলতি মাসের শুরুর দিকে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড ড্যানিয়েলস ছাত্র ও অধ্যাপকদের উদ্দেশে দেয়া এক বার্তায় বলেন, ‘গত বছর তাদের প্রাপ্ত তহবিলের প্রায় অর্ধেকই ছিল সরকারি অনুদান।’
মেরিল্যান্ড-ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়টি আরো জানিয়েছে, তারা তাদের কর্মীদের নিয়ে গর্বিত।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ইলন মাস্ক সরকারি ব্যয় কমানোর জন্য বিদেশি সহায়তা, গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএইড)-এর সহায়তা তহবিল বন্ধ করে দিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদানও বন্ধ করে দেয়া হয়।
সূত্র: সিএনএন