<p>জার্মানিতে অবস্থিত তিনটি ইরানি কনস্যুলেট বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে বৃহস্পতিবার বার্লিন ঘোষণা করেছে। ইরানে জার্মান-ইরানি নাগরিক জামশিদ শারমাহদকে নির্বিচারে ফাঁসিতে ঝোলানোর প্রতিক্রিয়ায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।</p> <p>জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক একটি টেলিভিশন ভাষণে ফ্রাংকফুর্ট, মিউনিখ ও হামবুর্গে অবস্থিত কনস্যুলেটগুলো বন্ধের ঘোষণা দেন। এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তেহরানকে একাধিকবার ও স্পষ্টভাবে জানিয়েছি, একজন জার্মান নাগরিকের মৃত্যুদণ্ডের গুরুতর পরিণতি হবে।’</p> <p>এর আগে সোমবার শারমাহদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘোষণার পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে কূটনৈতিক প্রতিবাদস্বরূপ কূটনীতিকদের বহিষ্কৃত করা হয়। চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের মতে, মৃত্যুদণ্ডের রায় একটি ‘কেলেঙ্কারি’।</p> <p>বেয়ারবক আরো বলেন, ‘এটি স্পষ্ট, এই হত্যাকাণ্ডটি মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির আলোকে ঘটেছে, যা (ইরানের) স্বৈরশাসক, অন্যায় শাসনের দৃষ্টান্ত; তারা স্বাভাবিক কূটনৈতিক যুক্তি অনুসারে কাজ করে না। আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ইতিমধ্যে সর্বকালের সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে, এটা অকারণে নয়।’</p> <p>৬৯ বছর বয়সী শারমাহদকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টির’ অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ইরানি সুপ্রিম কোর্টও এ সাজা নিশ্চিত করেন। তিনি ২০০৮ সালে সিরাজ শহরের একটি মসজিদে বোমা হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য দণ্ডিত হন, যেখানে ১৪ জন নিহত ও ৩০০ জন আহত হয়।</p> <p>শারমাহদের পরিবার দীর্ঘকাল ধরে দাবি করে আসছে, তিনি নির্দোষ ছিলেন। কিন্তু ইরান তার মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে থেকেছে এবং বলেছে, ‘জার্মান পাসপোর্ট কাউকে অপরাধমুক্তি প্রদান করে না, বিশেষত একজন সন্ত্রাসী অপরাধীকে।’</p> <p>ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল গত সপ্তাহে বলেছিলেন, ইইউ শারমাহদের ‘হত্যার জন্য সবচেয়ে কঠোর ভাষায় নিন্দা করছে’ এবং ‘প্রতিক্রিয়াস্বরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করছে’।</p> <p>শারমাহদ একজন ইরানি বংশোদ্ভূত জার্মান নাগরিক। তবে এই সফটওয়্যার প্রকৌশলী যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি একটি ইরানবিরোধী দলের ওয়েবসাইটের জন্য কাজ করতেন ও লেখালেখি করতেন, যা ইসলামী প্রজাতন্ত্রের নেতৃত্বের তীব্র সমালোচনা করতেন। পারিবারিক সূত্র মতে, ২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্য দিয়ে যাতায়াতকালে জামশিদ শারমাহদকে ইরানি কর্তৃপক্ষ গ্রেপ্তার করে।</p> <p>সূত্র : এএফপি</p>