<p style="text-align:justify">আসছে ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। তবে বেশি ভোট পেলেই যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া যাবে তা কিন্তু নয়। কারণ, ভোটাররা সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন না। ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ নামে দেশটিতে প্রচলিত এক পদ্ধতিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়ে থাকে।</p> <p style="text-align:justify">এবার ছয়জন প্রার্থী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনে লড়ছেন। তবে, তাদের মধ্যে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়েই যত আলোচনা। নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের আভাস হলো- তাদের মধ্য থেকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।</p> <p style="text-align:justify">তবে এই দুজনের মধ্যে কে জয়ী হবেন, সেটি ভোটারদের দেওয়া ভোটে সরাসরি নির্ধারিত হবে না। জাতীয় স্তরের নির্বাচনী লড়াইয়ের বদলে জয়ী নির্ধারিত হবেন একেকটি অঙ্গরাজ্যের নির্বাচনী লড়াইয়ের মাধ্যমে।</p> <p style="text-align:justify">যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের একটিতে জয়ী হওয়ার অর্থ একজন প্রার্থী সেই অঙ্গরাজ্যের সবকটি ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ ভোট পেয়ে যাবেন। ইলেক্টোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮। নিয়ম হলো- মাইন ও নেব্রাসকা এই দুটি অঙ্গরাজ্য বাদে বাকি সবগুলো রাজ্যের ইলেক্টোরাল ভোট মিলিয়ে যে প্রার্থী ২৭০টি বা তার বেশি ভোট পাবেন তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। আর সেই প্রার্থীর রানিং মেট হয়ে যাবেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট।</p> <p style="text-align:justify">কীভাবে কাজ করে ইলেক্টোরাল কলেজ?</p> <p style="text-align:justify">প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের বেশ কয়েকটি করে ইলেক্টোরাল ভোট থাকে, যা ওই অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যার মোটামুটিভাবে সমানুপাতিক। ক্যালিফোর্নিয়ায় সর্বাধিক ৫৪টি ইলেক্টোরাল ভোট রয়েছে। ভায়োমিং, আলাস্কা ও নর্থ ডাকোটা এবং ওয়াশিংটন ডিসির মতো যেসব অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যা খুবই কম, তাদের হাতে অন্তত তিনটি ইলেক্টোরাল ভোট আছে।</p> <p style="text-align:justify">সাধারণত অঙ্গরাজ্যগুলো তাদের হাতে থাকা ইলেক্টোরাল ভোট সেই প্রার্থীকেই দেয়, যিনি ওই অঙ্গরাজ্যের ভোটারদের সরাসরি ভোটে জয়ী হয়েছেন।</p> <p style="text-align:justify">ধরা যাক, টেক্সাসে একজন প্রার্থী ভোটারদের সরাসরি ভোটের ৫০.১% পেয়েছেন, তাকে ওই অঙ্গরাজ্যের হাতে থাকা ৪০টি ইলেক্টোরাল ভোটের সবগুলোই সেই প্রার্থী পেয়ে যাবেন। একটি অঙ্গরাজ্যে জয়ের ব্যবধান যদি বিরাট হয়ও, তাহলে জয়ী প্রার্থী অতগুলো ইলেক্টোরাল ভোটই পাবেন।</p> <p style="text-align:justify"><strong>যে কারণে নাম ‌‌‘ইলেক্টরাল কলেজ’</strong></p> <p style="text-align:justify">‘কলেজ’ শব্দটির মাধ্যমে সেই ব্যক্তিদের বোঝানো হয়, যারা একটি অঙ্গরাজ্যের ভোট দেওয়ার অধিকারী। ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ হচ্ছে কর্মকর্তাদের একটি প্যানেল, যাদের ‘ইলেকটরস্’ বলা হয়, এক কথায় নির্বাচকমণ্ডলী। প্রতি চার বছর পর পর এটি গঠন করা হয়। তারাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টকে বাছাই করেন।</p> <p style="text-align:justify">কংগ্রেসে প্রতিনিধিত্বের অনুপাতে প্রতিটি অঙ্গরাাজ্যের ইলেকটরসের সংখ্যা নির্ধারিত হয়। যা নির্ধারিত হয় অঙ্গরাজ্যের সিনেটরের সংখ্যা (প্রত্যেক রাজ্যে দুইজন) এবং প্রতিনিধি পরিষদে প্রতিনিধির (যা জনসংখ্যার অনুপাতে) যোগফল মিলে।</p> <p style="text-align:justify">ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতি অনুযায়ী যেসব রাজ্যে জনসংখ্যা বেশি, সেসব রাজ্যে ইলেকটোরাল ভোটও বেশি। এই প্রথা শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্যই ব্যবহৃত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অন্য সব নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয় সরাসরি মানুষের ভোটেই।</p>