<p>স্পেনের বন্যা কবলিত ভ্যালেন্সিয়া সফরের সময় বিক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা স্পেনের রাজা ও রানির দিকে মাটি ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছুড়ে মারে। তারা পাইপোর্তো শহরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, ওই সময় জনতা ‘খুনী’ বলে চিৎকার করতে থাকে। এই অঞ্চলের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে একটি ভ্যালেন্সিয়া।</p> <p>পাইপোর্তো  শহরে গিয়েছিলেন রাজা ফিলিপ, রানি লেটিজিয়া ও প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ও গভর্নর কার্লোস মাজন। ওই সময় বিব্রত এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তারা। প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের দিকেও জিনিসপত্র ছুড়ে মারে স্থানীয়রা। </p> <p>কয়েকটি ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যায়, হেঁটে আসছেন রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ ও রানি, সঙ্গে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও আঞ্চলিক গভর্নর কার্লোস মাথোন। ওই সময় পেছন দিক থেকে ছোঁড়া হচ্ছে কাদা ও ডিম। কয়েকজন ব্যক্তি ছাতা দিয়ে সেগুলো আটকানোর চেষ্টা করছিলেন। </p> <p>একটি ছবিতে দেখা যায়, রাজা ও রানির মুখে কাদা লেগে আছে। জনতার মধ্য থেকে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘এত লোক মারা গেল। আমরা না খেয়ে আছি। আর আপনারা চার দিন পর এলেন!’  তবে রাজা ফেলিপ সেখানেই থাকার সিদ্ধান্ত নেন। বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যেও রাজা ফেলিপে ও রানি লেতিসিয়া বন্যাদুর্গতদের কথা শোনেন এবং তাদের সান্ত্বনা দেন।</p> <p>গত কয়েক দিনের বন্যায় দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে স্পেনে। বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১১ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ। কয়েক দশক ধরে স্পেনে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা এটি। জরুরি উদ্ধার কর্মীরা বেঁচে যাওয়া এবং মৃতদেহ উদ্ধারের চেষ্টায় সব স্থানে চিরুনি তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন।</p> <p>স্প্যানিশ আবহাওয়া সংস্থা এইমেটের মতে, ভ্যালেন্সিয়ার নিকটবর্তী চিভা শহরে মাত্র আট ঘণ্টায় এক বছরের সমান বৃষ্টিপাত হয়েছে।  জলোচ্ছ্বাসে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাড়িগুলো পরস্পরের ওপর ভেঙে পড়েছে, গাছপালা উপড়ে গেছে, বিদ্যুতের লাইন ভেঙে গেছে এবং মাটিতে আটকে পড়েছে ঘরের বিভিন্ন সামগ্রী। বন্যায় স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তীর্ণ কৃষিজমিও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।</p> <p>বন্যার পরে সতর্কতার অভাব এবং কর্তৃপক্ষের অপর্যাপ্ত সহায়তার জন্য ক্ষোভ জন্মেছে স্পেনের নাগরিকেদের মনে। তবে জনগণের ক্ষোভের কারণ হলো আঞ্চলিক গভর্নর কার্লোস মাথোন ও প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ। ভ্যালেন্সিয়ায় আকস্মিক বন্যার এই সংকট মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ ছিল ধীরগতিতে। এ ছাড়া সমন্বয়হীনতার অভিযোগও আছে। জনগণের ক্ষোভ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বন্যার সতর্কতা দেওয়ার পরও এ বার্তা জানাতে কয়েক ঘণ্টা দেরি করেছে কর্তৃপক্ষ।</p> <p>বন্যাকবলিত এলাকায়, শত শত লোক অস্থায়ী বাসস্থানে আশ্রয় নেন। পাশাপাশি রাস্তা পরিষ্কার এবং বাড়িঘর ও ব্যবসা পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ শুরু করেন। বন্যায় হতাহতদের জন্য স্পেনে বৃহস্পতিবার সরকারি ভবনে পতাকা অর্ধনমিত রেখে এবং মিনিট নীরবতার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তিন দিনের জাতীয় শোক পালন করা হয়।</p> <p>সূত্র: বিবিসি</p> <p> </p>