<p>উত্তর প্রদেশের মাদরাসাগুলোতে আধুনিক শিক্ষা প্রদানের জন্য নিযুক্ত শিক্ষকদের ভাতা গত কয়েক বছর ধরে আটকে রয়েছে। এ বাবদ অর্থের যে অংশ রাজ্য সরকারের দেওয়ার কথা, তাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই তালিকা প্রায় ৭৪৪২টি মাদরাসা রয়েছে যেখানে সব মিলিয়ে ২২ হাজার শিক্ষক পড়াতেন।</p> <p>শিক্ষার্থীদের ইংরেজি, অংক, বিজ্ঞান এবং হিন্দি পড়ানোর জন্য এই শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয়েছিল। ১৯৯৩-৯৪ সালে এই প্রকল্প চালু করা হয়। ‘মাদরাসা আধুনিকীকরণ প্রকল্পে’ ব্যয়ের ৬০ শতাংশ দেওয়ার কথা কেন্দ্র সরকারের এবং বাকি ৪০ শতাংশ রাজ্য সরকারের দেওয়ার কথা।</p> <p>আধুনিক শিক্ষার জন্য নিযুক্ত শিক্ষকদের ভাতার জন্য কেন্দ্র যে অর্থ দেয় তা ২০১৭ সাল থেকে আসা বন্ধ হয়ে গেছে। আর রাজ্যের তরফে অর্থ আসছে না ২০২২-২০২৩ সাল থেকে।</p> <p>এই পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী শিক্ষকদের পাশাপাশি সেখানকার শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। ভাতা না পাওয়ার কারণে আধুনিক মাদরাসা প্রকল্পের আওতায় নিযুক্ত শিক্ষকরা সঙ্কটের মধ্যে রয়েছেন।</p> <p>মাদরাসা শিক্ষকদের দাবি, অনেকেই ইতিমধ্যে শিক্ষকতা ছেড়ে অন্য কাজ করছেন।</p> <p>শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কিছু মাদরাসা ব্যবস্থাপনা কমিটি নিজেরাই পথ খুঁজে বের করেছেন। শিক্ষকদের সামান্য কিছু অর্থ দিয়ে কোনোমতে কাজ চালাচ্ছেন। কিন্তু সেই অর্থের পরিমাণ এতটাই কম যে কেউই কাজ করতে রাজি নন।</p> <p>ভুক্তভোগী শিক্ষকদের অনেকেই জানিয়েছেন তাদের বয়স পেরিয়ে গেছে, এখন আর কিছু করার নেই।</p> <p>ওই প্রকল্পের আওতায় মাদরাসায় আধুনিক শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। উত্তরপ্রদেশের সংখ্যালঘু কল্যাণ মন্ত্রী ওমপ্রকাশ রাজভর জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার এই সমস্যার সমাধানের জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে ক্রমাগত আলাপ-আলোচনা করে চলেছে।</p> <p>নিগহত বানো, উত্তরপ্রদেশের গোণ্ডা জেলার বীরপুরের খুরশিদুল ইসলামিয়া মাদরাসায় পড়ান। শিক্ষার্থীদের ইংরেজি, হিন্দি, গণিত ও বিজ্ঞানে প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়া তার দায়িত্ব। ২০১১ সাল থেকে তিনি মাদরাসায় শিক্ষকতা করছেন।</p> <p>নিগহত বানো জানিয়েছেন তিনি গত আট বছর ধরে কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে সম্মানি (ভাতা) পাচ্ছেন না। দেড় বছর হলো রাজ্য সরকারের তরফেও সম্মানি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।</p> <p>এই মাদরাসায় মুসলিম নন, এমন শিক্ষার্থীও রয়েছে। নিগহত বানো জানিয়েছেন, মাদরাসায় অন্য ধর্মের শিক্ষার্থীদের আরবি এবং উর্দু ক্লাসের সময় ইংরেজি এবং হিন্দিতে অতিরিক্ত শিক্ষা দেওয়া হয়।</p> <p>গোণ্ডার বাসিন্দা রাবিয়া বানো কাটরা বাজারের মাদরাসা মকবুল মুসলিম আওয়ামী স্কুলের একজন আধুনিক শিক্ষক। তার ঝুলিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী রয়েছে। গত ১২ বছর ধরে এই মাদরাসায় শিক্ষকতা করছেন তিনি।</p> <p>রাবিয়া বানো বলেন, ‘চাঁদা তুলে মাদরাসার তরফে মাসে হাজার থেকে এক-দুই হাজার টাকা দেয়। কিন্তু সেটা দিয়ে সংসার চলে না। এই কারণে মাদরাসা থেকে ছুটি পাওয়ার পর সেলাই ও এমব্রয়ডারির কাজ করি।’</p> <p>ইত্তেহাদুল মুসলিমিন মাদরাসায় ছাত্রদের পড়ান মুহাম্মদ উবায়েদ খান। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর। বিএডও করেছেন তিনি।</p> <p>তিনি বলেন, ‘এখন এই কাজ ছাড়া অন্য কিছু করতে পারব না। অবসর সময়ে টিউশনি করি, কিন্তু ধর্মের ভিত্তিতে সরকারের বৈষম্য করা উচিৎ নয়।’</p> <p>‘মহারাষ্ট্র সরকার সাম্মানিকের পরিমাণ বাড়িয়েছে। এখানকার সরকারের উচিৎ অন্তত বকেয়া টাকা দিয়ে দেওয়া বা অন্য কোথাও সমন্বয় করা।’</p> <p>রাজ্য আধুনিক মাদরাসা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আফতাব আহমেদ আনসারির দাবি, ‘সম্মানি না পেয়ে আর্থিক অবস্থার অবনতির কারণে অনেক শিক্ষক হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। অনেকে অন্য কাজও শুরু করেছেন।’</p> <p>মুহাম্মদ মাসুদ বলেছেন, ‘সরকারের জন্য আর কতদিন অপেক্ষা করা যায়। সংসারের খরচ সামলানোর জন্য দোকানে বসতে বাধ্য হয়েছি।’</p> <p>মুহাম্মদ আসিম আনসারিও আধুনিক মাদরাসা শিক্ষক ছিলেন কিন্তু এখন সংসারের খরচ চালাতে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করেন। মোহাম্মদ আসিম আনসারীর কথায়, ‘কোনো সম্মানি ছাড়া কাজ করার চাইতে নিজের কোনো কাজ করা ভালো।’</p> <p>মাদরাসাতে বিনা পারিশ্রমিকে পড়ানো হয়। দরিদ্র শিশুরা লেখাপড়া করে সেখানে।</p> <p>অনেক মাদরাসা সঞ্চালকরা জানিয়েছেন তারা কোনোমতে অর্থ সংগ্রহ করে এই শিক্ষকদের মাদরাসায় রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন যাতে শিক্ষার্থীরা আধুনিক শিক্ষা পেতে পারে।</p> <p>কায়সার জাহানের ছেলেমেয়েরা রফিকুল ইসলাম মাদরাসায় লেখাপড়া করে। তিনি জানিয়েছেন, ‘মাদরাসায় দীনি ও উর্দু শিক্ষার পাশাপাশি বিনা বেতনে আধুনিক শিক্ষা দেওয়া হয়।’</p> <p>কিন্তু এটি বন্ধ হয়ে গেলে দরিদ্র পরিবারের শিশুরা সঙ্কটের সম্মুখীন হবে কারণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো অনেক দূরে এবং সেখানে উর্দু এবং আরবি পড়ানো হয় না।’</p> <p><strong>মন্ত্রী কী বলছেন?</strong></p> <p>উত্তরপ্রদেশের সংখ্যালঘু কল্যাণ মন্ত্রী ওমপ্রকাশ রাজভর মাদরাসাগুলোর বিরুদ্ধে কারচুপি ও অবৈধ কাজের অভিযোগ তুলেছেন এবং জানিয়েছেন প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য মাদরাসাগুলোই দায়ী।</p> <p>ওমপ্রকাশ রাজভর জানিয়েছেন, কেন্দ্র সরকারের তদন্তের সময় বহু মাদরাসাতে অনিয়মের তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। ৫০০টিরও বেশি মাদরাসার স্বীকৃতি বাতিলের চিঠি দেওয়া হয়েছে।</p> <p>তিনি আরো জানিয়েছেন, যারা মাদরাসা খুলেছে তারা ভুল করেছে। কেউ ভাড়া নিয়েছেন, ছাত্রদের সংখ্যা সঠিকভাবে জানায়নি, পরিবারের সদস্যদেরই শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত করেছে।</p> <p>তিনি বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার যখন অর্থ দেয়, তখন তদন্তও করে। সরকারের মনে হয়েছে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে, শিক্ষকদের সম্মানিও দেওয়া হচ্ছে এবং কারচুপিও চলছে! ৫১৩টি মাদরাসা নিজেরাই স্বীকৃতি বাতিল করার কথা বলেছে।’</p> <p>সংখ্যালঘু কল্যাণ মন্ত্রী জানিয়েছেন এর আগেও মাদরাসাগুলোর বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠেছে। চলতি বছরের আগস্ট মাসে প্রয়াগরাজের আতুরসুইয়ার একটি মাদরাসায় জাল নোট ছাপানোর অভিযোগ উঠেছিল। এই মামলায় অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।</p> <p>তবে ওমপ্রকাশ রাজভর একথাও জানিয়েছেন যে, রাজ্য সরকার এই বকেয়া ভাতা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান খুঁজছে। তার দাবি, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বহুবার এই বিষয়টি উত্থাপন করেছেন।</p> <p><strong>বিরোধীরা কী বলছে?</strong></p> <p>সংখ্যালঘু কল্যাণ মন্ত্রী এই অভিযোগের উত্তরে সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র ফখরুল হাসান চাঁদ জানিয়েছেন যদি অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে তার বিচারের জন্য সংবিধান রয়েছে। তবে সম্মানি বন্ধ করে দেওয়া ঠিক নয়।</p> <p>তার মতে, সরকারের উচিত বকেয়া সম্মানি দিয়ে দেওয়া। ফখরুল হাসান চাঁদের অভিযোগ, সংখ্যালঘু কল্যাণ মন্ত্রী ওমপ্রকাশ রাজভর বিজেপির মতোই কথা বলছে।</p> <p>এ বিষয়ে সরকারের সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তিনি বলেন, সমাজবাদী পার্টি এই শিক্ষকদের পাশে রয়েছে।</p> <p>রাজ্য কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অনিল যাদব বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে আধুনিক মাদরাসা শিক্ষকরা সম্মানি পাচ্ছেন না।</p> <p>তিনি বলেন, ‘মাদরাসা বোর্ডকে অবৈধ ঘোষণা করার জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকার ষড়যন্ত্র করছে। মুসলমানদের প্রতি বিজেপি সরকারের উদ্দেশ্য ভালো নয়। সংখ্যালঘু কল্যাণমন্ত্রী নিজেই মাদরাসাগুলোকে বদনাম করার চেষ্টা করছেন।’</p> <p>আধুনিক মাদরাসা শিক্ষক নিয়োগের প্রচলন শুরু হয় ১৯৯৩-৯৪ সালে। সম্মানি বন্ধ হওয়ার আগে কেন্দ্রীয় সরকার নিযুক্ত শিক্ষকদের যোগ্যতা অনুযায়ী ৬০০০-১২০০০ টাকা দিত এবং রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া হতো ২০০০-৩০০০ টাকা।</p> <p>কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৭ সাল পর্যন্ত সম্মানি দিলেও রাজ্য সরকার ২০২২-২০২৩ সাল পর্যন্ত তার নির্ধারিত অংশ দিয়েছে। কিন্তু তার পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।</p> <p><strong>কেন্দ্রের তরফে ৭৭,৭৫১ কোটি টাকা বকেয়া</strong></p> <p>রাজ্য সরকার জানিয়েছে, আধুনিক মাদরাসা শিক্ষকদের সম্মানির জন্য অর্থ জোগাড় করার প্রতিনিয়ত প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।</p> <p>সংখ্যালঘু কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী দানিশ আজাদ আনসারি ২২ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে একটি চিঠিতে সমস্ত সমস্যার কথা জানিয়ে এর সমাধান করার অনুরোধ জানিয়েছেন।</p> <p>২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল মাসে তৎকালীন মন্ত্রী ধর্মপাল সিং কেন্দ্র সরকারকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন যে রাজ্য তার বাজেটে বিধান করছে, কেন্দ্র সরকার যদি অর্থ দেয়, তাহলে এই শিক্ষকরা তাদের টাকা পেতে পারেন।</p> <p>এর আগে ২০২১ সালে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তৎকালীন সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভিকে একটি চিঠিতে বকেয়া ৭৭,৭৫১ কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। একইসঙ্গে সম্মানির জন্য কেন্দ্রের তরফে যে অংশ দেওয়ার কথা সেটা পাঠানোরও অনুরোধ জানান।</p> <p>মুখ্যমন্ত্রীর এই চিঠির আগে ২০২০ সালে তৎকালীন বিভাগীয় মন্ত্রী নন্দগোপাল নন্দী এবং প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিও এই বিষয়ে লিখিতভাবে কেন্দ্রকে জানিয়েছিলেন।</p> <p>তৎকালীন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি জানিয়েছেন, তিনি মন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই অর্থ বকেয়া ছিল। তিনি দায়িত্বে আসার পর রাজ্য সরকারকে কিছু বকেয়া দেওয়াও হয়েছিল।</p> <p><strong>উত্তরপ্রদেশে মাদরাসার সংখ্যা ২৫,৫২২</strong></p> <p>রাজ্য মাদরাসা বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ইফতিখার আহমেদ জাভেদ জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশে প্রায় ২৫,৫২২টি মাদরাসা রয়েছে। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৫১৩টি মাদরাসার স্বীকৃতি রয়েছে। ৮ হাজার ৪৪৯টির স্বীকৃতি নেই। এর মধ্যে ৫৬০টি মাদরাসা সরকারি সহায়তায় পরিচালিত হয়, যার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করে সরকার। এর আওতায় থাকা ১০ হাজার ৫০০ কর্মী নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন।</p> <p>স্বীকৃত বা অস্বীকৃত মাদরাসাগুলো দান বা চাঁদার ওপর নির্ভরশীল। স্বীকৃত মাদরাসাগুলোর প্রতিটিতে তিনজন আধুনিক শিক্ষক রাখার বিধান রাখা হয়েছিল।</p> <p>ইফতিখার আহমেদ জাভেদের জানিয়েছেন, সরকার আধুনিক শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনায় ইতি টেনেছে কি না সেই বিষয়টি এখনো পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। তিনি মাদরাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকাকালীন বেশ কয়েকটি চিঠি লিখেছেন বলেও জানিয়েছেন। যদিও এই বিষয়ে মাদরাসা বোর্ডের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না।</p> <p>মাদরাসা শিক্ষকদের মামলা সুপ্রিম কোর্টে থাকলেও এখনও পর্যন্ত কোনো রায় আসেনি।</p> <p>আধুনিক মাদরাসা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আফতাব আহমেদ বলেন, সরকারের কাছে এই বিষয়ে একাধিকবার আবেদন জানালেও কোনো লাভ হয়নি।</p> <p>আফতাব আহমেদ বলছেন, বেশিরভাগ শিক্ষকই এই আশায় রয়েছেন, যে সরকার এই সমস্যার সমাধান খুঁজে পেতে সক্ষম হবে এবং সম্মানির পরিমাণও বাড়াবে।</p> <p>আফতাব আহমেদ বলেন, ‘সম্প্রতি মহারাষ্ট্র সরকার মাদরাসা শিক্ষকদের সম্মানি তিনগুণ বাড়িয়েছে, সেখানেও এনডিএ সরকার রয়েছে। অনেক রাজ্য সরকারই নিজেদের মতো করে এই প্রকল্প চালাচ্ছে।’</p> <p>‘উত্তরপ্রদেশে প্রায় ২০ শতাংশ মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে কিন্তু তা সত্ত্বেও সরকার সেদিকে নজর দিচ্ছে না।’</p> <p><strong>সুপ্রিম কোর্ট কী বলছে?</strong></p> <p>সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে উত্তরপ্রদেশ মাদরাসা শিক্ষা আইন, ২০০৪-এর সাংবিধানিক বৈধতা বহাল রেখেছে। এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।</p> <p>সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, এই আইনকে অসাংবিধানিক বলে ঠিক করেনি এলাহবাদ হাইকোর্ট। চলতি বছরে হাইকোর্ট এই আইনটিকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছিল।</p> <p>আদালত রাজ্য সরকারকে মাদরাসায় পাঠরত শিক্ষার্থীদের নিয়মিত স্কুলে ভর্তি করার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।</p> <p>আবেদনকারীর আইনজীবী ফুজাইল আহমেদ আয়ুবি সুপ্রিম কোর্টে বলেন, উত্তরপ্রদেশ ও ত্রিপুরার সরকার মাদরাসাগুলো বন্ধ করে দিতে চায় এবং সেখানকার শিক্ষার্থীদের অন্য স্কুলে পাঠাতে বলেছে।</p> <p>আবেদনকারী জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের সভাপতি মৌলানা আরশাদ মাদানী বলেন, সংবিধানের ৩০(১) অনুচ্ছেদে সমস্ত সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা হয়েছে। সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদ এবং সংবিধানের ২৬নং অনুচ্ছেদে সংখ্যালঘুদের তাদের ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করার পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।</p> <p>সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের ২০১৪ সালের একটি রায়ের উদ্ধৃতি দিয়ে মৌলানা আরশাদ মাদানী বলেন, শিক্ষার অধিকার আইন, ২০০৯ কিন্তু সংখ্যালঘুদের দ্বারা পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। সূত্র : বিবিসি বাংলা</p>