<p>জাতিগত দাঙ্গা শুরুর পর মণিপুরের জিরিবাম থেকে নিখোঁজ ছয়জনের মধ্যে নিখোঁজ থাকা এক নারী ও দুই শিশুর মরদেহ নদীতে ভেসে উঠেছে। জিরিবাম জেলার জিরি নদীতে স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় জিরি নদীতে লাশগুলো ভাসতে দেখা যায়। মৃতদেহগুলোকে ময়নাতদন্তের জন্য শিলচর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে আসাম পুলিশ নিশ্চিত করেছে।</p> <p>যে এলাকা থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে তাকে বলা হয় জিরিমুখ, সেখানে জিরি নদী বরাক নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এলাকায় সহিংসতার পর জিরিবামের বোরোবেকরা থেকে একই পরিবারের ছয়জন (তিনজন নারী এবং তিনজন শিশু) নিখোঁজ হয়েছিল। ছয়জনই মেইতেই সম্প্রদায়ের এবং জুন মাসে এলাকায় সহিংসতার পরে বোরোবেকরা থানায় স্থাপিত একটি ত্রাণ শিবিরে বসবাস করছিলেন তারা। </p> <p>নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মতে, পরিবারের সদস্যরা এখনও মৃতদেহ শনাক্ত করতে না পারলেও, নিখোঁজদের মধ্যে তিনজনের বৈশিষ্ঠ্য লাশগুলোর সঙ্গে মিলে যায়। একজন কর্মকর্তার মতে, স্থানীয় একজন মৃতদেহগুলোকে নদীতে ভাসতে দেখে। এরপর আসাম রাইফেলসের কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে।</p> <p>নিখোঁজ হওয়া ছয়জন হলেন দাদি, তার দুই মেয়ে এবং তিন নাতি। তারা নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে মেইতেই গোষ্ঠীর অভিযোগ করছে, তাদের সশস্ত্র হামার গোষ্ঠীর লোকেরা অপহরণ করেছে। তারা গত সোমবার সকালে এই এলাকায় হামলা চালিয়েছিল। হামলা চালানোর পরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাল্টা অভিযান চালায় পুলিশ।</p> <p>ত্রাণ শিবিরে সহিংসতার পরে নিরাপত্তা বাহিনী ১১ জনকে গুলি করে হত্যা করে। এই সপ্তাহের শুরুর দিকে, দুই বয়স্ক মেইতেই পুরুষের মৃতদেহ এই এলাকায় পাওয়া গেছে। তারা ত্রাণ শিবিরের বাসিন্দা ছিলেন। অপহৃতদের মুক্তির দাবিতে সোমবার থেকে মেইতেই সম্প্রদায়ের লোকজন জিরিবামে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় অপহৃত তিনজনের মরদেহ উদ্ধার হলেও বাকি তিনজন এখনও নিখোঁজ।</p> <p>নিখোঁজ ছয় ব্যক্তির সন্ধানে এলাকায় তল্লাশি অভিযান চলছিল। কথিত এই অপহরণের ঘটনা জিরিবাম এবং রাজ্যের কেন্দ্রীয় মেইতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ উপত্যকায় ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="মণিপুরের পরিস্থিতি থমথমে, নারী, শিশুসহ নিখোঁজ ৬" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/13/1731468549-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>মণিপুরের পরিস্থিতি থমথমে, নারী, শিশুসহ নিখোঁজ ৬</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/11/13/1446079" target="_blank"> </a></div> </div> <p>প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মণিপুরে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে প্রচুর গোলাবারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ ও আধাসেনার যৌথ দল। </p> <p>এর মাঝে গত মাসের শুরুতেই মণিপুরে আরো ছয় মাসের জন্য বর্ধিত হয়েছে ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’ (‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বা আফস্পা) এর মেয়াদ। ইম্ফল, বিষ্ণুপুর, জিরিবাম এবং লামফেলসহ ১৯টি থানা এলাকা ছাড়া গোটা রাজ্যেই এই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে মণিপুরের উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে এখনো রাজনৈতিক চাপান-উতোর চলছেই। ২০২৩ সালের মে মাস থেকে মণিপুরে যে জাতিগত হিংসা শুরু হয়েছে, তার জেরে ঘরবাড়ি হারিয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার মানুষ।</p> <p>সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস</p>