<p>ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের সম্ভল জেলায় রবিবার সকালে মোগল আমলের জামা মসজিদে আদালত নির্ধারিত সমীক্ষাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিনজন নিহত ও ৩০ জনের বেশি পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। একটি বিতর্কিত আইনি লড়াইয়ে দাবি করা হয়েছে, মসজিদটি একটি হিন্দু মন্দিরের স্থানে নির্মিত হয়েছে।  </p> <p>পুলিশ জানিয়েছে, সমীক্ষাদলের নেতৃত্বে থাকা ‘অ্যাডভোকেট কমিশনার’ কাজ শুরু করার সময় মসজিদের কাছে একটি ভিড় জমা হয়। দ্রুত প্রায় এক হাজার মানুষ পৌঁছে যায় এবং পুলিশকে মসজিদে প্রবেশে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, জনগণের একাংশ পুলিশ সদস্যদের দিকে পাথর ছুড়ে এবং ১০টিরও বেশি যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে জনগণকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।</p> <p>সংঘর্ষে নিহত তিনজনকে নাঈম, বিলাল ও নোমান হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। মোরাদাবাদ ডিভিশনাল কমিশনার অঞ্জনেয় কুমার সিংয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে পিটিআই আরো জানিয়েছে, ‘পুলিশ সুপারের বন্দুকধারীসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।’</p> <p>সমীক্ষাটি স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে সাতটায় শুরু হয়। এটি একটি পিটিশনের অংশ, যেখানে বলা হয়েছে, ঐতিহাসিক গ্রন্থ ‘বাবুরনামা’ ও ‘আইন-ই-আকবরি’তে ১৫২৯ সালে মোগল সম্রাট বাবরের সময়ে মন্দির ধ্বংসের ঘটনা উল্লেখ রয়েছে। পিটিশনের সমর্থকরা সমীক্ষাকে ঐতিহাসিক সত্য উদঘাটনের জন্য প্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন। তবে সমালোচকরা এটিকে ১৯৯১ সালের প্লেসেস অব ওয়ারশিপ আইনের লঙ্ঘন ও ধর্মীয় স্থানের পবিত্রতা ক্ষুণ্ন করার উসকানি হিসেবে দেখছেন।</p> <p><iframe frameborder="0" height="400" sandbox="allow-scripts allow-same-origin" scrolling="yes" src="https://twitframe.com/show?url=https://twitter.com/yadavakhilesh/status/1860630768021545388" width="500"></iframe></p> <p>এর আগে মঙ্গলবারও একই ধরনের সমীক্ষা চালানো হয়। তার পর থেকেই সম্ভলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। যারা সহিংসতায় অংশ নিয়েছে তাদের শনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে মোরাদাবাদ পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, সহিংসতায় জড়িত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে তিনজন নারীও রয়েছেন।</p> <p>পুলিশ জানিয়েছে, ভিডিও ফুটেজে মসজিদের আশপাশে পাথর নিক্ষেপ ও গাড়িতে আগুন দেওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে। সহিংসতা সত্ত্বেও সমীক্ষাদল পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শেষ করতে সক্ষম হয়। অ্যাডভোকেট বিষ্ণু শঙ্কর জৈন জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ফটোগ্রাফি, ভিডিওগ্রাফিসহ বিশদ সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।  </p> <p>এদিকে ঘটনাটি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব অভিযোগ করেছেন, বিজেপি সরকার এই ধরনের অস্থিরতা ইচ্ছাকৃতভাবে সৃষ্টি করেছে। নির্বাচনে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে দৃষ্টি সরাতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এ ছাড়া সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জিয়া উর রেহমান বারক বলেছেন, সম্ভলের জামা মসজিদ একটি ঐতিহাসিক স্থান। ১৯৯১ সালের প্লেসেস অব ওয়ারশিপ আইনের অধীনে ধর্মীয় স্থানগুলো অপরিবর্তিত রাখা উচিত।</p> <p>সূত্র : এনডিটিভি</p>