<p>নিজের মৃত্যুদণ্ড ঠেকাতে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করে যাচ্ছেন ভিয়েতনামের এক ধনকুবের। ওই নারীর নাম ট্রুং মাই ল্যান। ব্যাংক জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত এপ্রিলে তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। ভিয়েতনামের খুব কম নারীকেই এ ধরনের জালিয়াতির অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তবে ৬৮ বছর বয়সী ট্রুং মাই ল্যানের বিরুদ্ধে দেওয়া রায়টি বিরল ছিল।</p> <p>এদিকে ভিয়েতনামের আইন অনুযায়ী, যদি ট্রুং মাই ল্যান আত্মসাৎ করা অর্থের ৭৫ শতাংশ ফেরত দিতে পারেন, তবেই তার শাস্তি কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হবে। তাই তিনি অর্থ সংগ্রহের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মাই ল্যানের করা আপিলের শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রায় ঘোষণা করা হবে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। </p> <p>মৃত্যুদণ্ড এড়াতে মাই লানকে ৯ বিলিয়ন ডলার ফেরত দিতে হবে। কিন্তু তার সম্পত্তি বিক্রি করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে শেয়ার এবং অন্যান্য ব্যবসা বা প্রকল্প। এর মধ্যে প্রায় এক হাজার সম্পত্তি জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় তা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই মাই লান এই অর্থ সংগ্রহের জন্য বন্ধুদের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছেন।</p> <p>তবে তার আইনজীবীদের ধারণা, এ পরিস্থিতিতে সম্পত্তি বিক্রি করে এই বিশাল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করা তার জন্য এখন কঠিন। কিন্তু যদি তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়, তবে সম্পত্তি বিক্রি করার জন্য সময় পাবেন। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তার সম্পত্তির মোট মূল্য প্রয়োজনীয় পরিমাণের চেয়ে বেশি হলেও বিক্রি করতে অনেক সময় লাগবে।</p> <p>এ পরিস্থিতিতে আদালত তাকে  সুবিধাজনক কোনো শর্ত দিতে পারে বলে মাই লান আশা করছেন। তবে আদালত বিচারকদের  যুক্তি মানবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।</p> <p>দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে সাধারণত অনেক সময় লাগে। বন্দিদের আগাম কোনো নোটিশও দেওয়া হয় কম। এবার যদি ট্রুং মাই লান সময়মতো ৯ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করতে পারেন, তবে জীবন রক্ষা পেতে পারেন। </p> <p>ভিয়েতনামের একটি বিচারিক আদালত জানিয়েছিল, মাই লান গোপনে ভিয়েতনামের পঞ্চম বৃহত্তম ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান সাইগন কমার্শিয়াল ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করতেন। তিনি শেল কম্পানির মাধ্যমে ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছেন এবং সেই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। উল্লেখ্য, মাই ল্যান একজন ডেভেলপার ব্যবসায়ী। </p> <p>আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এর মধ্যে ২৭ বিলিয়ন ডলার ছিল অপব্যবহৃত এবং ১২ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করা হয়েছিল। এ কারণেই তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।</p> <p>তবে এ কর্মকাণ্ডের জন্য মাই ল্যান দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, রাষ্ট্রের ওপর এমন বোঝা চাপানোর জন্য তিনি লজ্জিত এবং এখন তিনি যে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তা ফিরিয়ে দেওয়াই তার একমাত্র লক্ষ্য। </p> <p>অর্থ আত্মসাতের এ ঘটনায় ৮৫ জনকে শাস্তি দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ট্রুং মাই লানের স্বামী ও ভাগ্নিকে যথাক্রমে ৯ ও ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আইনজীবীরা মাই ল্যানের অপরাধকে ‘নজিরবিহীন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন, যা ছাড়ের যোগ্য নয়। </p> <p>সূত্র : বিবিসি</p>