<p>ঘূর্ণিঝড় চিডোর আঘাতে মোজাম্বিকে এ পর্যন্ত অন্তত ৯৪ জন প্রাণ হারিয়েছে বলে রবিবার দেশটির স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।  </p> <p>এ ছাড়া এই দুর্যোগে ৭৬৮ জন আহত এবং ছয় লাখ ২২ হাজারেরও বেশি মানুষ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মোজাম্বিকের জাতীয় ঝুঁকি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার (আইএনজিডি) জানিয়েছে।</p> <p>গত ১৫ ডিসেম্বর ঘূর্ণিঝড়টি পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে আঘাত হানে। ওই সময় ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায় এবং ২৪ ঘণ্টায় ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এর আগে ঘূর্ণিঝড়টি ভারত মহাসাগরের ফরাসি অঞ্চল মায়োতে আঘাত হানে এবং সেখান থেকে মোজাম্বিক, মালাওয়ি ও জিম্বাবুয়েতে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।  </p> <p>মোজাম্বিকে ঝড়টি কাবো দেলগাডো প্রদেশে প্রথম আঘাত হানে। পরে নিয়াসা ও নামপুলা অঞ্চলে আরো ভেতরের দিকে প্রভাব ফেলে। প্রদেশগুলোর শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। আইএনজিডি জানিয়েছে, এক লাখ ৯ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বহু স্কুল ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। স্বাস্থ্য খাতেও ঝড়ের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। ৫২টি স্যানিটারি ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় স্বাস্থ্যসেবায় চরম ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে যেসব এলাকায় আগে থেকেই স্বাস্থ্যসেবার সীমাবদ্ধতা ছিল, সেখানে পরিস্থিতি আরো সংকটময় হয়ে উঠেছে।</p> <p>সরকারি দলের নেতা ড্যানিয়েল চ্যাপো রবিবার কাবো দেলগাডো সফর করেন, যা ঝড়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের একটি। তিনি জানান, সরকার আইএনজিডির সঙ্গে কাজ করছে, যাতে মেকুফি, নামপুলা, মেম্বা ও নিয়াসা প্রদেশের ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ পুনর্গঠনের কাজ শুরু করতে পারে।</p> <p><strong>মায়োতের পরিস্থিতি</strong><br /> এদিকে মায়োতে চিডো ছিল গত ৯০ বছরে সবচেয়ে ভয়াবহ ঝড়। এতে হাজার হাজার মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, সেখানে অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছে।</p> <p>মায়োতের প্রশাসন জানিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পুরোপুরি নির্ধারণ করতে সময় লাগবে। তবে মৃতের সংখ্যা ‘নিঃসন্দেহে কয়েক শ ছাড়িয়ে যেতে পারে’ এবং এটি হাজারেও পৌঁছনোর আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানে এক হাজার ৩০০ জনেরও বেশি কর্মকর্তা স্থানীয় জনগণকে সহায়তায় মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া ঝড়-পরবর্তী এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও বহু বাসিন্দা এখনো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভাবে ভুগছে। ধীরে ধীরে রাজধানীতে পানির সরবরাহ ফের চালু হচ্ছে। তবে মন্ত্রণালয় সবাইকে পানি পান করার আগে তিন মিনিট ধরে ফোটানোর পরামর্শ দিয়েছে।</p> <p>প্রবল গতির বাতাস, ভারি বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের প্রভাবে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি—এসবই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের বৈশিষ্ট্য, যা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও বন্যার কারণ হয়। আইএনজিডি বলেছে, ঘূর্ণিঝড় চিডো আবারও দেখিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সামাজিক অবকাঠামোর দুর্বলতা রয়েছে এবং ভবিষ্যতের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য টেকসই পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।</p> <p>সূত্র : বিবিসি</p>