<p>কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে তার দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির অনেক সংসদ সদস্য। অন্যদিকে বড়দিন ও নববর্ষের ছুটিতে ট্রুডো নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাববেন বলে জানিয়েছে তার দলের একটি সূত্র।</p> <p>কানাডায় ৯ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে ট্রুডোর দল লিবারেল পার্টি। এই দলের প্রতি ভোটারদের আগ্রহে ভাটা পড়েছে বলে সাম্প্রতিক জরিপ বলছে। এ ছাড়া সব কিছুর দাম বাড়া ও আবাসন সংকটের কারণে ট্রুডো সরকারের জনপ্রিয়তাও পড়তির দিকে।</p> <p>এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কানাডা থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন। এই অবস্থায় সরকারি ব্যয় নিয়ে ট্রুডোর সঙ্গে মতভেদের জেরে গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেন অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। এর পরই সব বিরোধী দল জানিয়ে দেয়, ট্রুডোর সরকারকে হটাতে তারা একসঙ্গে কাজ করবে। শুল্ক আরোপ সংক্রান্ত মার্কিন হুমকি মোকাবেলায় একটি স্থিতিশীল সরকার প্রয়োজন বলে মনে করছে তারা।</p> <p>সর্বশেষ ২০২১ সালের নির্বাচনে ৩৩৮ আসনের মধ্যে ১৬০টিতে জেতে ট্রুডোর দল। কিন্তু এককভাবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৭০ আসন। তাই মাইনোরিটি সরকার পরিচালনা করছেন ট্রুডো। ২০২৫ সালের ২০ অক্টোবরের আগে পরবর্তী নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে দলকে শক্তিশালী করতে নতুন নেতৃত্ব প্রয়োজন বলে মনে করছেন লিবারের পার্টির নেতারা। সেই পথ তৈরি করতে ট্রুডোর পদত্যাগ করা উচিত বলে একমত হয়েছেন দেশটির ১০টি প্রদেশের মধ্যে সবচেয়ে জনবহুল অন্টারিও প্রদেশের ৫০-এর বেশি লিবারেল সংসদ সদস্য। শনিবার তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছন বলে জানিয়েছে কানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন (সিবিসি)।</p> <p>‘এই মুহূর্তে নেতৃত্ব পরিবর্তন আনা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই’ বলে রবিবার সিবিসিকে জানান লিবারেল সংসদ সদস্য চন্দ্রা আরিয়া। ট্রুডোর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তিনি।</p> <p>ট্রুডো পদত্যাগ করলে লিবারেল পার্টির দায়িত্বে যারা আসতে পারেন তাদের মধ্যে আছেন সদ্য পদত্যাগ করা অর্থমন্ত্রী ফ্রিল্যান্ড, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি, উদ্ভাবনবিষয়ক মন্ত্রী ফ্রঁসোয়া-ফিলিপ শম্পানিয়া ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মার্ক কার্নি।</p> <p>তবে পদত্যাগের ব্যাপারে এখনো আগ্রহ দেখাননি ট্রুডো। লিবারেল পার্টির একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল পত্রিকা জানিয়েছে, পরিবারের সঙ্গে বড়দিন পালনের পর ট্রুডো ছুটি কাটাতে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশে যাবেন। এ ছাড়া লিবারেল পার্টির একটি সূত্র গত সপ্তাহে রয়টার্সকে জানিয়েছে, বড়দিন ও নববর্ষের ছুটিতে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাববেন ট্রুডো।</p> <p>এদিকে জরিপ বলছে, নির্বাচনে বর্তমান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির কাছে ট্রুডোর লিবারেল পার্টির ভরাডুবি হবে। আর ট্রুডো পদত্যাগ না করলে অনাস্থা ভোটের ডাক দেওয়া হতে পারে। মার্চেই সেটি হতে পারে। সেই ভোটে ট্রুডোর হারা প্রায় নিশ্চিত।</p>