<p style="text-align:justify">বিনা মূল্যে পাওয়া ফ্ল্যাট নিয়ে যুক্তরাজ্যের দুর্নীতি-বিরোধী মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক মিথ্যা কথা বলেছিলেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল। আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক আবাসন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছিলন একটি ফ্ল্যাট। অথচ দুই বছর আগে টিউলিপ দাবি করেছিলেন, তার বাবা-মা তাকে এই ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছেন।</p> <p style="text-align:justify">যুক্তরাজ্যের সাপ্তাহিক পত্রিকা দ্য মেইল অন সানডের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপকে দুই বছর আগে একাধিকবার প্রশ্ন করা হয় যে তিনি কিভাবে দুই বেডরুমের ওই ফ্ল্যাট পেয়েছেন। জবাবে ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছিলেন তিনি। এই প্রশ্ন তোলায় পত্রিকাটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি।</p> <p style="text-align:justify">অথচ টিউলিপকে ‘কৃতজ্ঞতা’স্বরূপ ওই ফ্ল্যাট উপহার দেওয়া হয়েছিল বলে লেবার পার্টির সূত্র থেকেও এখন নিশ্চিত করা হয়েছে। গত রাতে ব্রিটেনের বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরা টিউলিপের উদ্দেশে বলেছেন, গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে না পারলে তিনি যেন পদত্যাগ করেন।</p> <p style="text-align:justify">গত শনিবার ফিন্যানশিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ আবাসন ব্যবসায়ী আবদুল মোতালিবের দুর্দিনে তাকে আর্থিক সহায়তা করেছিলেন টিউলিপের মা-বাবা। তাই কৃতজ্ঞতাস্বরূপ নিজের মালিকানায় থাকা ‘একটি সম্পত্তি’ তিনি টিউলিপকে দিয়েছিলেন।</p> <p style="text-align:justify">এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর লেবার পার্টির কয়েকজন মেইল অন সানডের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা বলেন, দুই বছর আগে যখন টিউলিপকে ওই ফ্ল্যাটের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তখন যে তারা সঠিক ছিল সে তথ্য যেন প্রকাশ করা হয়।</p> <p style="text-align:justify">এ ব্যাপারে টিউলিপ নতুন করে কোনো মন্তব্য না করলেও তার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র ডেইলি মেইলকে বলেছে, ওই সম্পত্তির মালিকানা পাওয়ার ব্যাপারে টিউলিপ আগে যা বলেছিলেন, সেখান থেকে তিনি সরে এসেছেন। তিনি যখন ভুল বুঝতে পেরেছেন, তখনই যে সাংবাদিকরা তাকে ওই ফ্ল্যাটের ব্যাপারে প্রশ্ন করেছিলেন, তাদের সঠিক তথ্য পাওয়ার বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেছেন।</p> <p style="text-align:justify">যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথিপত্রের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইল জানায়, টিউলিপ যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ থেকে এমএ ডিগ্রি পাওয়ার বছর ২০০৪ সালে কিংস ক্রস এলাকায় একটি ভবনের চতুর্থ তলার ওই ফ্ল্যাট পান। তখন তার বৈধ আয়ের কোনো উৎস ছিল না। ওই ফ্ল্যাটের বিপরীতে কোনো মর্টগেজ বা দাম পরিশোধ করা হয়নি। শুধু মালিকানা হস্তান্তর করা হয়।</p> <p style="text-align:justify">আব্দুল মোতালিফ ২০০১ সালে এক লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড দিয়ে ওই ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। এর পরের বছর এপ্রিল মাসে টিউলিপের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি কিভাবে ওই ফ্ল্যাট পেয়েছেন। তখন লেবার পার্টির পক্ষ থেকে ই-মেইলে দেওয়া জবাবে বলা হয়, ‘২০ বছর আগে টিউলিপের বাবা-মায়ের যখন বিচ্ছেদ হয়, তখন তারা তাদের পারিবারিক বাড়ি বিক্রি করে দেন। সেই অর্থ দিয়েই কিংস ক্রস এলাকায় তাকে ফ্ল্যাট কিনে দেওয়া হয়। এই অর্থ অন্য কোনো উৎস থেকে এসেছে এমন কোনো ইঙ্গিত সম্পূর্ণ ভুল এবং মানহানিকর।’</p> <p style="text-align:justify">টিউলিপের পারিবারিক বাড়ি বিক্রি করার দাবির বিষয়টি নিয়েও তখন অনুসন্ধান চালায় মেইল অন সানডে। তারা জানতে পারে, ২০০২ সাল বা এর আগে টিউলিপের পরিবার কোনো বাড়ি বিক্রি করেনি। এরপর জুলাই মাসে আবারও টিউলিপ ও লেবার পার্টিকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে, তিনি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/01/06/1736142873-c4873899436ef94f8baf28db589f249e.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা</p> </div> </div> </div> </div> </div> <p style="text-align:justify">টিউলিপের পার্লামেন্টারি অ্যাকাউন্ট থেকে পাঠানো এক ই-মেইল জবাবে বলা হয়, ‘যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে তা ভুল এবং অত্যন্ত ক্ষতিকর। এসব তথ্য কোনো লেখায় প্রকাশ করার পরিকল্পনা করা হলে টিউলিপ আইনি পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবেন না।'</p> <p style="text-align:justify">টিউলিপ এ কথা বলার পর তখন আর প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি মেইল অন সানডে।</p>