<p>ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা পশ্চিম তীরের খিরবেত আবু ফালাহ গ্রামে কৃষিজমিতে আগুন দিয়েছে এবং বর্ণবাদী স্লোগান লিখেছে। বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে অগ্নিসংযোগ ও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রাণঘাতী অভিযানের ঘটনা বেড়েছে।</p> <p>ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেটের (শাবাক) প্রধান রনেন বার শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে পশ্চিম তীরে একটি বড় ধরনের সামরিক অভিযান অনুমোদনের আহ্বান জানানোর পর এ ঘটনা ঘটল।</p> <p>ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, একদল বসতি স্থাপনকারী স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে খিরবেত আবু ফালাহর বাইরে একটি খামারে হামলা চালায়, একটি শেডে আগুন দেয় এবং হিব্রু ভাষায় বর্ণবাদী গ্রাফিতি লিখে যায়। অন্যদিকে কুদস নিউজ নেটওয়ার্ক অনলাইনে অগ্নিসংযোগের ভিডিও প্রকাশ করেছে। ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা আগুন নেভাতে কাজ করেন। তবে এই হামলায় কেউ আহত হয়নি।</p> <p>ওয়াফা আরো জানিয়েছে, খিরবেত আবু ফালাহ ছাড়াও রামাল্লাহর উত্তর-পূর্বে অবস্থিত তুরমুস আয়া ও আল-মুগাইয়্যার গ্রামে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা বারবার হামলা চালিয়েছে। এসব হামলা ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।</p> <p>এর আগে বৃহস্পতিবারই ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা বেথলেহেমের দক্ষিণে ওয়াদি রাহহাল গ্রামে ফিলিস্তিনিদের মালিকানাধীন একটি গাড়িতে আগুন দেয় বলে আল কুদস টুডে জানিয়েছে। বসতি স্থাপনকারীদের সর্বশেষ এ হামলা সোমবার অবৈধ কেদুমিম বসতির কাছে তিন ইসরায়েলিকে গুলি করে হত্যার পরপরই ঘটে।</p> <p>এদিকে ২০২৫ সালের প্রথম সপ্তাহে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় ১৮ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় কার্যালয় (ওসিএইচএ)। একই সময়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে অন্তত তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়, যাদের মধ্যে একজন কিশোরও রয়েছে। এ ছাড়া তিনজন ফিলিস্তিনি বিতর্কিত পরিস্থিতিতে নিহত হয় বলে ওসিএইচএ জানিয়েছে, যাদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। এই পরিসংখ্যানে বুধবার পশ্চিম তীরে তাম্মুন শহরে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় নিহত তিনজন ফিলিস্তিনির তথ্য অন্তর্ভুক্ত নয়। ২০২৫ সালের শুরু থেকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাড়িঘর ধ্বংসের কারণে ৫০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলেও সংস্থাটি জানিয়েছে।</p> <p>এদিকে শুক্রবার ইসরায়েলি বাহিনী পশ্চিম তীরে অভিযান চালায়, গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে আটক করে। জেনিনের দক্ষিণে কাফাতিয়া শহরে ইসরায়েলি বাহিনী বেসামরিক পোশাকে একটি বাড়ি ঘিরে রেখে তাতে বোমা হামলা চালায় বলে ওয়াফা স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।</p> <p>গত রাতে পশ্চিম তীরে নাবলুসসহ বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েল অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে। টেলিগ্রামে পোস্ট করা এবং আলজাজিরার সানাদ সংস্থার যাচাইকৃত ভিডিওতে দেখা যায়, ইসরায়েলি বাহিনী সালফিটের উত্তর-পশ্চিমে দেইর ইস্তিয়া শহরে অভিযানের সময় বেশ কয়েকজন তরুণকে আটক করেছে।</p> <p>ইসরায়েলি বাহিনী বেথলেহেমের দক্ষিণে আল-খাদার শহর, রামাল্লাহর পশ্চিমে নিলিন শহর, কালকিলিয়ার পূর্বে হাজ্জা ও বাকাত আল-হাতাব গ্রাম এবং ঘনঘন সামরিক অভিযানের লক্ষ্যবস্তু জলাজোন শরণার্থীশিবিরেও অভিযান চালায়।</p> <p>শুক্রবার চ্যানেল ১২-এর এক প্রতিবেদনে শিন বেটের প্রধান রনেন বারকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ইসরায়েলকে ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা থেকে শিক্ষা নিয়ে পশ্চিম তীরে বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করা উচিত। তিনি বলেন, ‘একটি ব্যাপক, বাস্তবতা বদলে দেওয়া অভিযান শুরু করা প্রয়োজন, যা সশস্ত্র ফিলিস্তিনি বাহিনীগুলোর উপস্থিতি ধ্বংস করে আমাদের পশ্চিম তীরে স্বাধীনভাবে অভিযান পরিচালনার সক্ষমতা নিশ্চিত করবে।’</p> <p>সূত্র : আলজাজিরা</p>