<p>সুদানের সেনাবাহিনী শনিবার জানিয়েছে, তারা দেশের পূর্বাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করেছে। এটি বিদ্রোহী আধাসামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধে সেনাবাহিনীর অন্যতম বড় অর্জন।</p> <p>সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সেনাসদস্যরা ওয়াদ মাদানি শহরে প্রবেশ করার সময় স্থানীয় জনগণ রাস্তায় নেমে আনন্দ উদযাপন করছে।</p> <p>র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নামে পরিচিত আধাসামরিক গোষ্ঠীর নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (হেমেদতি নামেও পরিচিত) একটি অডিও বার্তায় এই পরাজয়ের বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে বার্তাটি ছিল ক্ষুব্ধ ও অসংলগ্ন। তিনি পরাজয়ের জন্য সেনাবাহিনীর বিমান হামলার সক্ষমতা ও ইরান নির্মিত ড্রোন ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেন। তবে তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, আরো ২০ বছর লাগলেও তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন।</p> <p>এ ছাড়া সেনা সমর্থিত সরকারের মুখপাত্র এবং তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী খালিদ আল-আইসারের কার্যালয় জানিয়েছে, সেনাবাহিনী শহরটিকে ‘মুক্ত’ করেছে। সুদানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘আজ (শনিবার) অর্জিত মহান বিজয়কে’ স্বাগত জানিয়েছে বলেছে, সেনাবাহিনী ওয়াদ মাদানিকে পুনরুদ্ধার করেছে।</p> <p>ওয়াদ মাদানি আলজাজিরা প্রদেশের রাজধানী ও এটি দেশের রাজধানী খার্তুম থেকে ১৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। পাশাপাশি এটি বিভিন্ন রাজ্যকে সংযুক্তকারী গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ মহাসড়কের একটি কৌশলগত সংযোগস্থল।</p> <p>২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করার পর সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়, যা পরবর্তীতে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এই যুদ্ধে ইতিমধ্যে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। জাতিসংঘ এই সংঘর্ষকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাস্তুচ্যুতি সংকটগুলোর একটি বলেও উল্লেখ করেছে। সংঘর্ষের কারণে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।  </p> <p>এ ছাড়া দেশটি এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দুই কোটি ৪৬ লাখ মানুষের জরুরি খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে, যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক।</p> <p>চলতি মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র আরএসএফ নেতা মোহাম্মদ হামদান দাগালোকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে। সুদানি জনগণের বিরুদ্ধে ‘পরিকল্পিত’ নৃশংসতা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে আরএসএফের বিরুদ্ধে, যা জাতিসংঘ গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছে।</p> <p>সূত্র : বিবিসি, এএফপি</p>