সুইডেনে বেশ কয়েক কপি কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত এক ইরাকি ব্যক্তি মারা গেছেন। সুইডিশ মিডিয়া জানিয়েছে, কাছের একটি শহরে গুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন। স্টকহোমের একটি আদালত বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম সালওয়ান মোমিকা (৩৮)।
সুইডেনে বেশ কয়েক কপি কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত এক ইরাকি ব্যক্তি মারা গেছেন। সুইডিশ মিডিয়া জানিয়েছে, কাছের একটি শহরে গুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন। স্টকহোমের একটি আদালত বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম সালওয়ান মোমিকা (৩৮)।
সুইডিশ রাজধানী স্টকহোমের প্রধান মসজিদের সামনে পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে প্রকাশ্যে কোরআন শরিফে তিনি আগুন দিয়েছিলেন। তিনি ইরাকি বংশোদ্ভূত। সালওয়ান মোমিকা অভিবাসী হিসেবে সুইডেনে আসেন এবং সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছিলেন, তার সুইডিশ পাসপোর্ট রয়েছে। নিজেকে তিনি একজন নাস্তিক বলে দাবি করেছিলেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়।
পুলিশ বলেছে, তারা স্টকহোমের কাছে সোডারতালজে গত বুধবার রাতে বন্দুকের গুলিতে আহত এক ব্যক্তিকে পেয়েছিল। তিনি পরে মারা যান এবং তখন প্রাথমিক হত্যা তদন্ত চালানো হয়। ব্রডকাস্টার এসভিটি সূত্রের নাম প্রকাশ না করেই জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি ছিলেন মোমিকা। এতে বলা হয়, মোমিকা ২০১৮ সালে ইরাক থেকে সুইডেনে এসেছিলেন।
কোরআন পোড়ানোর যুক্তি হিসেবে মোমিকা বলেছিলেন, পশ্চিমা সমাজে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার এবং নারী অধিকারের মতো বিষয়গুলোর সঙ্গে কোরআন শরিফ সাংঘর্ষিক এবং তাই এটা নিষিদ্ধ করা উচিত।
মোমিকা এবং আরো একজনের বিরুদ্ধে স্টকহোম আদালতে জাতিগত বিদ্বেষের জন্য উসকানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল, কারণ তারা কোরআন পোড়ানোর বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এ মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল।
স্টকহোম জেলা আদালত বলেছে, একটি বিচারে বৃহস্পতিবার নির্ধারিত একটি রায় স্থগিত করা হয়েছে, যেখানে মোমিকা একজন আসামি ছিলেন। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, আসামিদের একজন মারা গেছেন।
আদালতের একজন বিচারক গোরান লুন্ডাহল নিশ্চিত করেছেন, মৃত ব্যক্তি মোমিকা। তিনি বলেন, মোমিকার মৃত্যু কখন এবং কিভাবে হয়েছে, সে বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই।
সুইডেনে প্রকাশ্যে কোরআনের অবমাননার কাজটি তিনিই প্রথম করেননি। কোরআন পোড়ানোর ভিডিওগুলো বিশ্বব্যাপী প্রচার হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশে ক্ষোভ ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এ ছাড়া এসব ঘটনা অনেক জায়গায় দাঙ্গা ও অশান্তি সৃষ্টি করেছে।
সুইডেনে কয়েকবার কোরআন পোড়ানো হয়েছে। মালমো শহরে স্ট্রাম কুর্স নামের একটি কট্টর ডানপন্থী সংগঠন কোরআন শরিফ পোড়ায় এবং এর জেরে সে দেশে ব্যাপক বিক্ষোভ চলে। স্ট্রাম কুর্স অভিবাসন-বিরোধী ও ইসলামবিদ্বেষী বলে পরিচিত এবং সংগঠনটির নেতৃত্বে রয়েছেন রাসমুস পালুদান নামের একজন উগ্রপন্থী। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে এবং ২০২০ সালেও সুইডেনে একই রকম ঘটনা ঘটেছে।
সূত্র : এপি
সম্পর্কিত খবর
ইসরায়েল বলেছে, তারা পশ্চিম তীরে তাদের সামরিক অভিযান সম্প্রসারণ করছে এবং কিছু শরণার্থীশিবিরে আগামী এক বছর পর্যন্ত সেনাদের রাখা হবে।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ রবিবার জানান, সেনাবাহিনী পশ্চিম তীরের উত্তরে তিনটি শরণার্থীশিবির থেকে ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের ‘উচ্ছেদ’ করেছে এবং তাদের ফিরে আসা রোধে সেখানে সেনা অবস্থান বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত ৪০ হাজার ফিলিস্তিনিকে জেনিন, তুলকারেম ও নুর শামসের শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা এখন বাসিন্দাশূন্য।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি (সেনাদের) নির্দেশ দিয়েছি, আগামী এক বছর পর্যন্ত খালি করা শিবিরগুলোতে দীর্ঘমেয়াদি অবস্থানের জন্য প্রস্তুতি নিতে এবং বাসিন্দাদের ফিরে আসা ও সন্ত্রাসবাদের পুনরুত্থান রোধ করতে।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘরে অভিযান চালাচ্ছে এবং বুলডোজার দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করছে। এই অভিযানগুলো মূলত জেনিন ও তুলকারেমকে ঘিরে কেন্দ্রীভূত। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ২০০৫ সালে দ্বিতীয় ইন্তিফাদার (বিপ্লব) সমাপ্তির পর প্রথমবারের মতো পশ্চিম তীরের জেনিনে ট্যাংক মোতায়েন করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনা এই ট্যাংক মোতায়েনের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘ইসরায়েলের এ বিপজ্জনক উত্তেজনা সৃষ্টি স্থিতিশীলতা বা শান্তি বয়ে আনবে না।
গত ১৯ জানুয়ারি গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে জেনিন ও এর আশপাশের শরণার্থীশিবিরগুলো ইসরায়েলের অবরোধে রয়েছে এবং সেখানে অন্তত ২৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
এর আগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার তেল আবিবের কাছে খালি বাসগুলোতে বিস্ফোরণের পর পশ্চিম তীরে ‘তীব্র’ অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন। নেতানিয়াহুর দপ্তর এই ঘটনাকে একটি সম্ভাব্য গণহত্যার চেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেছে।
এদিকে ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, পশ্চিম তীরজুড়ে রবিবারও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও বসতকারীদের হামলা অব্যাহত ছিল। নাবলুসে ইসরায়েলি অভিযানে অন্তত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আর পূর্ব জেরুজালেমের উত্তরাঞ্চলের বেইত হানিনা এলাকায় আরো দুজনকে আটক করা হয়েছে।
ওয়াফা আরো জানায়, জেনিনের দক্ষিণে অবস্থিত কাবাতিয়া শহরে ইসরায়েলি বুলডোজার দিয়ে বৈদ্যুতিক ও পানির সরবরাহ লাইন ধ্বংস করা হয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলি সেনারা দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-ইসসাউইয়া এলাকায় একটি সামরিক চেকপোস্ট ফের স্থাপন করেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েল পশ্চিম তীরে আট শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।
সূত্র : আলজাজিরা
সুদানের আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএস) ও তাদের মিত্ররা সমান্তরাল সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একাধিক সূত্র রবিবার এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে আরো বিভক্ত করে তুলতে পারে।
এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ইউনাইটেড সিভিল ফোর্সেসের মুখপাত্র নাজম আল-দিন দারিসা এএফপিকে বলেছেন, ‘সনদে স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে।
এই পদক্ষেপটি এমন এক সময় এলো, যখন দেশটির নিয়মিত সেনাবাহিনীর সঙ্গে দুই বছর ধরে চলমান এক বিধ্বংসী যুদ্ধে এক কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ ক্ষুধা ও স্থানচ্যুতি সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে।
বহুবার বিলম্বিত এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে গণমাধ্যমের আড়ালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। যারা এই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছে, তাদের মধ্যে ছিল সুদানের পিপলস লিবারেশন মুভমেন্ট-নর্থের (এসপিএলএম-এন) একটি অংশ, যেটি আবদেল আজিজ আল-হিলুর নেতৃত্বে দক্ষিণ কোরদোফান ও ব্লু নীল রাজ্যের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।
এএফপির হাতে পাওয়া ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, এটি একটি ‘ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, বিকেন্দ্রীকৃত রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান জানায়, যা স্বাধীনতা, সমতা ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে গড়ে উঠবে এবং কোনো সাংস্কৃতিক, জাতিগত, ধর্মীয় বা আঞ্চলিক পরিচয়ের প্রতি পক্ষপাত দেখাবে না।’
এতে আরো বলা হয়েছে, একটি ‘নতুন, ঐক্যবদ্ধ, পেশাদার ও জাতীয় সেনাবাহিনী’ গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে, যার একটি নতুন সামরিক নীতি থাকবে, যা ‘সুদানি রাষ্ট্রের বৈচিত্র্য ও বহুত্ববাদের প্রতিফলন ঘটাবে।’
প্রস্তাবিত সরকার যুদ্ধের অবসান, মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে একত্র করে একটি জাতীয় বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে।
বিভাজনের আশঙ্কা
মূলত আরএসএফকে নিয়মিত সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করা নিয়ে বিরোধ থেকেই এই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, যেখানে উভয় পক্ষই নৃশংসতার জন্য অভিযুক্ত। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, আরএসএফ দারফুর অঞ্চলে গণহত্যা চালিয়েছে।
এই সংঘাত দেশটিকে কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত করেছে—উত্তর ও পূর্বে সেনাবাহিনী এবং পশ্চিমের দারফুর ও দক্ষিণের বড় একটি অংশ আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেনাবাহিনী বর্তমানে রাজধানী খার্তুম পুনর্দখলের কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে। তারা ইতিমধ্যে মধ্য সুদানে অগ্রসর হয়েছে এবং বছরের শুরু থেকে বেশ কিছু এলাকা পুনর্দখল করেছে।
এসপিএলএম-এনের সঙ্গে মিত্রতার ফলে আরএসএফ এখন দক্ষিণে আরো বেশি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে এবং লিবিয়া, চাদ, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ সুদান ও ইথিওপিয়ার সীমানায় সরাসরি প্রবেশাধিকার পেয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের এক মুখপাত্র সতর্ক করেছেন, এই পদক্ষেপ সুদানের বিভাজন আরো বাড়াতে পারে এবং সংকটকে আরো জটিল করে তুলতে পারে।
তবে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারীরা দেশ বিভক্ত করার কোনো ইচ্ছার কথা অস্বীকার করেছেন। পেশাদার ইউনিয়নের প্রতিনিধিত্বকারী আলা এল-দিন নুকদ বলেছেন, প্রস্তাবিত সরকার আরএসএফ নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের মানুষের উপকারে আসবে, যাদের মৌলিক সেবা থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। এই সনদ যুদ্ধবিধ্বস্ত বেসামরিক নাগরিকদের ‘মর্যাদা রক্ষার’ একটি পদক্ষেপ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রতিক্রিয়া
অন্যদিকে বিশ্লেষকরা মনে করেন, সাম্প্রতিক যুদ্ধে আরএসএফের ব্যর্থতার পর এই পদক্ষেপটি তাদের শক্তি পুনরুদ্ধার করার একটি চেষ্টা।
সুদানি রাজনৈতিক বিশ্লেষক খুলুদ খাইর বলেন, আরএসএফের মূল লক্ষ্য হলো একটি বিমানবাহিনী গঠন, তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মানবিক সহায়তা সহজ করা এবং আরো শক্তিশালী সমঝোতার ভিত্তি তৈরি করা।
তিনি এএফপিকে আরো বলেন, ‘তারা মিলিশিয়া নয়, বরং একটি সরকার হিসেবে সমঝোতায় যেতে চায়।’
তবে এই প্রস্তাবিত সরকারের কাছে অস্ত্র বিক্রি করা দারফুরে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করবে, যা জাতিসংঘ সম্প্রসারণের সুপারিশ করেছে, যাতে তা পুরো সুদানকেই অন্তর্ভুক্ত করে।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো ক্যামেরন হাডসনের মতে, এই পদক্ষেপটি আরএসএফের ঘনিষ্ঠ সমর্থকদের ছাড়া আর কারো সমর্থন পাবে না। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধে যা অর্জন করতে পারেনি, রাজনৈতিকভাবে সেটি অর্জন করার একটি প্রচেষ্টা এটি।’
তবে তিনি আরো বলেন, এই পদক্ষেপটি অদূর ভবিষ্যতে সুদানের জনগণকে আরো বিভক্ত করতে পারে এবং সম্ভবত বৃহত্তর অঞ্চলেও বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে। কারণ কিছু সম্প্রদায় ও দেশ এই নতুন সরকারকে সমর্থন দিতে পারে।
কেনিয়া এই চুক্তি স্বাক্ষরের আয়োজন করায় সুদানের সেনা সমর্থিত সরকার কড়া সমালোচনা করেছে এবং বৃহস্পতিবার নাইরোবি থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করেছে। সুদানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর বিরুদ্ধে ‘আঞ্চলিক মিত্রদের বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগত স্বার্থে কাজ করার’ অভিযোগ করেছে।
গত জানুয়ারির মাঝামাঝি কেনিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) একটি অর্থনৈতিক চুক্তি স্বাক্ষর করে, যা দুই দেশের মধ্যে ‘অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র—উভয়েই আরএসএফকে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে দায়ী করেছে, তবে আবুধাবি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
নোনা পানির সুন্দরবন এলাকায় বৃষ্টির পানি ধরে রেখে নতুন প্রকল্প শুরু করতে চলেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। যাবতীয় পরিকল্পনা সম্পন্ন করে সেই প্রকল্পের বরাদ্দ পেতে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকেও সবুজ সংকেত পেয়ে গিয়েছে রাজ্য সচিবালয়। এবার সেই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতির জন্য আবেদন জানিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা রবিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ওয়াটার ইউজার্স কমিটি’ নাম দিয়ে প্রকল্পটি চালু করা হচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যের পানিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরকে। দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা ওই কমিটিকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। নেদারল্যান্ডসের একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থা এই কাজে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন দপ্তরের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।
এই প্রকল্প শুরুর আগে পানিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর সুন্দরবনের ওই ব্লকগুলোকে চিহ্নিত করে মজে যাওয়া খালগুলো পুনরুজ্জীবিত করেছে। বৃষ্টির পানি ওই খালগুলোতে ধরে রেখে কৃষিকাজসহ আরো বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। এই কাজে মোট খরচ হবে চার হাজার ১০০ কোটি রুপি।
পানিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি বলেছে, এই কাজের জন্য রাজ্য সরকারের খরচ হতে পারে এক হাজার ২৩০ কোটি রুপি। আপাতত সুন্দরবনের ব্লকগুলোতে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করতে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ধরে রাখা মিষ্টি পানিতে কৃষিকাজের পাশাপাশি মৎস্য চাষ, হর্টিকালচার উন্নয়নের কাজ হবে। এই প্রকল্পে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য রক্ষা করার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে এই প্রকল্পের অধীনে সুযোগ-সুবিধা পেতে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নিজের নাম সরকারিভাবে নথিভুক্ত করাতে হবে। দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত বছর মধ্য প্রদেশের ভোপালে পানি নিয়ে যে জাতীয় স্তরের সম্মেলন হয়েছিল, তাতে রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পের কথা তুলে ধরেছিল পানিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর। সেখানেও রাজ্য সরকারের এই ভাবনাকে প্রশংসা করেছিলেন জাতীয় সম্মেলনের আয়োজকরা। এর পাশাপাশি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সুন্দরবন উন্নয়নে আরো একটি বড় প্রকল্প রাজ্য সরকার চালু করতে চলেছে বলেই রাজ্য সচিবালয় সূত্র জানিয়েছে।
রাশিয়া শনিবার দিবাগত রাতে ইউক্রেনজুড়ে ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এতে বেসামরিকরা হতাহত হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর মুখপাত্র ইউরি ইগনাট বলেছেন, সমন্বিত এক হামলায় ‘রেকর্ডসংখ্যক’ ২৬৭টি রুশ ড্রোন উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩৮টি ড্রোন আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে এবং জ্যামিংয়ের কারণে ১১৯টি ড্রোন রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছে ও কোনো ক্ষয়ক্ষতি ঘটাতে পারেনি।
যদিও অনেক ড্রোন প্রতিহত করা হয়েছে, তবে জরুরি সেবা বিভাগগুলো জানিয়েছে, রাতে বিভিন্ন অঞ্চলে ড্রোন হামলায় ধ্বংসযজ্ঞ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
এই হামলা ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের তৃতীয় বার্ষিকীর এক দিন আগে ঘটেছে। এতে ঠিক কতজন নিহত হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। তবে জরুরি সেবা বিভাগের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, অন্তত তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষও নিশ্চিত করেছে, মধ্য ইউক্রেনের ক্রিভি রিহ শহরে একটি হামলায় একজন পুরুষ নিহত হয়েছে এবং কমপক্ষে তিনজন আহত হয়েছে। এ ছাড়া জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে ড্রোন হামলায় আহত ৫৩ বছর বয়সী এক নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং রাজধানী কিয়েভে একাধিক স্থানে আগুন নেভাতে অগ্নিনির্বাপণ বাহিনী ডাকা হয়েছে।
কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিচকো টেলিগ্রামে লিখেছেন, রাজধানীতে একাধিক ড্রোন হামলায় কয়েকটি বাড়ি ও গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের মতে, খারকিভ, পোলটাভা, সুমি, কিয়েভ, চেরনিহিভ, মাইকোলাইভ, ওডেসাসহ অন্তত ১৩টি অঞ্চলে ড্রোন প্রতিহত করা হয়েছে। পাশাপাশি রাতের বেলায় রাশিয়া তিনটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে বলেও ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে।
অন্যদিকে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রবিবার জানিয়েছে, রাতে ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার দিকে উৎক্ষেপণ করা ২০টি ড্রোন ‘ধ্বংস’ করা হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি