ভারত-পাকিস্তানের বিরোধ বদলে দিচ্ছে দ. এশিয়ার কূটনৈতিক অবস্থান

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
ভারত-পাকিস্তানের বিরোধ বদলে দিচ্ছে দ. এশিয়ার কূটনৈতিক অবস্থান
ফাইল ছবি : এএফপি

ভারত ও পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কে পরিবর্তন আনছে, যেখানে নয়াদিল্লি আফগানিস্তানের তালেবানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে, আর ইসলামাবাদ বিপ্লব-পরবর্তী বাংলাদেশের নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে।

দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক অবস্থান মূলত এ অঞ্চলের দুটি বৃহত্তম দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের অবিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।  পারমাণবিক শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তান—যারা ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশের অবসানের সময় উপমহাদেশ থেকে পৃথক হয়েছিল—এ পর্যন্ত একাধিক যুদ্ধ করেছে এবং এখনো তারা তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী।

এ প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনো অবসান হচ্ছে না, বরং তা আরো গভীর হচ্ছে।

জানুয়ারিতে নয়াদিল্লি অস্বীকার করেছিল, তারা পাকিস্তানের ভূখণ্ডে গোপন অভিযানের মাধ্যমে ভারতবিরোধী যোদ্ধাদের হত্যা করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল অভিযোগটি উড়িয়ে দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনার নিজের উঠানে সাপ পুষে রাখতে পারেন না এবং আশা করতে পারেন না যে তারা শুধু আপনার প্রতিবেশীদেরই কামড়াবে।’

এদিকে আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের প্রায় চার বছর পর দেশটির সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কও অবনতি হয়েছে। ইসলামাবাদ অভিযোগ করছে, তালেবান সরকার পাকিস্তানি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে, যারা আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করে হামলা চালিয়ে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর হাজারো সদস্যকে হত্যা করেছে।

এ ছাড়া ডিসেম্বরে পাকিস্তান আফগান সীমান্ত অঞ্চলে প্রাণঘাতী বিমান হামলা চালায়, যার পরবর্তী সময়ে সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে।

প্রথম দেখায় তালেবানের কঠোর ইসলামী ব্যাখ্যার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদের সম্পর্ক অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। ভারত তবু এই সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছে।

ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক হাসান আব্বাস এএফপিকে বলেন, ‘ভারত বেশ কিছুদিন ধরেই ধারাবাহিকভাবে এই কৌশল অনুসরণ করছে।

তিনি আরো বলেন, ‘তারা চায় না, তালেবান এমন কোনো গোষ্ঠীকে জায়গা দিক, যা শেষ পর্যন্ত ভারতের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠবে। একই সঙ্গে পাকিস্তানকে বিরক্ত করার সম্ভাবনাটিও নয়াদিল্লির কাছে আকর্ষণীয়।’

‘আরো কিছু করতে চাই’  
ভারতের শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিক বিক্রম মিসরি জানুয়ারিতে দুবাইয়ে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মৌলভি আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

জয়সওয়াল এই সাক্ষাৎকে ‘এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ পর্যায়ের সংযোগ’ বলে বর্ণনা করে বলেন, নয়াদিল্লি ‘আফগান জনগণের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক আরো দৃঢ় করতে চায়’।

এ ছাড়া মুত্তাকি ‘সম্পর্ক সম্প্রসারণের আশাবাদ’ ব্যক্ত করেছেন বলেও তার মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন।

জয়সওয়াল জানান, বৈঠকে ভারতের ৩৭০ মিলিয়ন ডলারের উন্নয়নকৃত ইরানের চাবাহার কনটেইনার বন্দরের ব্যবহারকে ‘উৎসাহিত করার’ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, যাতে এটি ভূমিবেষ্টিত আফগানিস্তানের বাণিজ্য ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে সহায়তা করতে পারে। চাবাহার বন্দর পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দরের ঠিক পশ্চিমে অবস্থিত, যা পাকিস্তানে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অবকাঠামো সম্প্রসারণের অন্যতম প্রধান প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হয়।

ভারত দীর্ঘদিন ধরে চীনের আঞ্চলিক প্রভাব বাড়ানো নিয়ে সতর্ক। পাশাপাশি বিশ্বে জনসংখ্যায় শীর্ষস্থানে থাকা এ দুটি দেশ দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব বিস্তারে প্রতিযোগিতা করছে, যদিও সম্প্রতি তাদের মধ্যে কূটনৈতিক উষ্ণতা দেখা যাচ্ছে।

দুবাই বৈঠকের পর দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া এক সম্পাদকীয়তে লিখেছে, তালেবানের সঙ্গে নয়াদিল্লির ‘নীরব কিন্তু সচেতন সংযোগ’ আঞ্চলিক কৌশলগত সম্পর্ক পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

পত্রিকাটি আরো লিখেছে, ‘তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না দিলেও ভারত আফগানিস্তানে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করার গুরুত্ব বুঝতে পারে।’

‘এই উদ্যোগ ভারতের বৃহত্তর আঞ্চলিক কৌশলের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ, যার লক্ষ্য পাকিস্তানে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ও এর প্রভাব মোকাবেলা করা।’

‘আমার শত্রুর শত্রু’  
একই সময়ে দীর্ঘদিনের শত্রু পাকিস্তান ও বাংলাদেশ এখন ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ সম্পর্কের কথা বলছে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ একসময় একই রাষ্ট্র ছিল, কিন্তু ১৯৭১ সালের ভয়াবহ যুদ্ধে তারা বিভক্ত হয়। এরপর বাংলাদেশ ভারতের আরো কাছাকাছি চলে আসে।

তবে দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের আগস্টে এক বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন এবং হেলিকপ্টারে করে তার পুরনো মিত্র ভারতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশের প্রত্যর্পণ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে অবস্থান করছেন, যদিও তার বিরুদ্ধে গণহত্যাসহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে।

এর পর থেকে বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক শীতল হয়ে পড়েছে, যা ইসলামাবাদ ও ঢাকার জন্য সম্পর্ক পুনর্গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে। পাকিস্তানের একটি কার্গো জাহাজ কয়েক দশক পর সরাসরি বাংলাদেশে পণ্য পরিবহন করে এবং গত নভেম্বরে চট্টগ্রাম বন্দরে মালামাল খালাস করে।

ডিসেম্বরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তারা ‘সম্পর্ক দৃঢ় করতে সম্মত হন’ বলে জানান। পরে শীর্ষস্থানীয় বাংলাদেশি সামরিক কমান্ডাররা পাকিস্তান সফর করেন এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় তারা দুই দেশের মধ্যে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের’ প্রশংসা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আমেনা মহসিন এএফপিকে বলেন, এই আকস্মিক ঘনিষ্ঠতা আন্তর্জাতিক কূটনীতির অন্যতম পুরনো নীতিকে প্রতিফলিত করে। তিনি বলেন, ‘আমার শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

গাজা পুনর্গঠন

আরব প্রস্তাবে সমর্থন মুসলিম ও ইউরোপীয় নেতাদের

    যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরোধিতা
অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আরব প্রস্তাবে সমর্থন মুসলিম ও ইউরোপীয় নেতাদের
জেদ্দায় ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের পরিষদের এক অতিরিক্ত সেশনে কূটনীতিকরা উপস্থিত হন। ছবি : এএফপি

ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ সম্প্রতি প্রকাশিত গাজাবিষয়ক আরব পরিকল্পনাকে সমর্থন জানিয়েছে, যা ইসরায়েলের ১৫ মাসের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের পর প্রস্তাব করা হয়েছে।

ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে গাজা পুনর্গঠনের জন্য ৫৩ বিলিয়ন ডলারের আরব পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই পরিকল্পনা গাজা পুনর্গঠনের জন্য একটি বাস্তবসম্মত পথ দেখায় এবং যদি এটি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের ভয়াবহ জীবনযাত্রার দ্রুত ও টেকসই উন্নতি ঘটবে।’

তারা আরো বলেন, হামাস ‘গাজার শাসনভার গ্রহণ করতে পারবে না এবং ইসরায়েলের জন্য আর হুমকি হতে পারবে না’ এবং চারটি দেশ ‘ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কেন্দ্রীয় ভূমিকা ও এর সংস্কার এজেন্ডার বাস্তবায়নকে সমর্থন করে’।

আরব পরিকল্পনার কাঠামো
এই পরিকল্পনাটি মিসর প্রণয়ন করে এবং এ মাসের শুরুতে কায়রোতে এক আরব লীগ সম্মেলনে আরব নেতারা এটি গ্রহণ করেছিলেন। এবার সৌদি আরবের জেদ্দায় শনিবার এক জরুরি বৈঠকে ৫৭ সদস্যের ওআইসি আনুষ্ঠানিকভাবে এই পরিকল্পনা গ্রহণ করে।

মুসলিমবিশ্বের প্রতিনিধিত্বকারী এই সংস্থা ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অর্থায়ন সংস্থাগুলোকে দ্রুত প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছে।

আরো পড়ুন
গাজা পুনর্গঠন পরিকল্পনা : নানা চ্যালেঞ্জ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া

গাজা পুনর্গঠন পরিকল্পনা : নানা চ্যালেঞ্জ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া

 

আরব সমর্থিত এই পরিকল্পনাটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে তিনি গাজা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে ‘যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে’ এই এলাকার ‘উন্নয়ন’ করার প্রস্তাব দিয়েছেন, যা অনেকেই জাতিগত নিধনের পরিকল্পনা হিসেবে বিবেচনা করেছেন।

এই পরিকল্পনার তিনটি প্রধান ধাপ রয়েছে—অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা, পুনর্গঠন ও শাসন। প্রথম ধাপ প্রায় ছয় মাস স্থায়ী হবে এবং পরবর্তী দুই ধাপ চার থেকে পাঁচ বছর ধরে বাস্তবায়ন করা হবে। এর লক্ষ্য হলো গাজার পুনর্গঠন, শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরোধিতা
তবে আরব পরিকল্পনাটি ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল প্রত্যাখ্যান করেছে।

ওয়াশিংটনের প্রত্যাশা অনুযায়ী এই পরিকল্পনা ‘পর্যাপ্ত নয়’। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

অন্যদিকে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ তুলনামূলক ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে এ পরিকল্পনাকে ‘মিসরীয়দের পক্ষ থেকে আন্তরিকতার প্রথম পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

সূত্র : আলজাজিরা

মন্তব্য

ইউক্রেনে রুশ হামলায় নিহত ১৪, আরো নিষেধাজ্ঞা চান জেলেনস্কি

    নিষেধাজ্ঞার হুমকি ট্রাম্পের কুরস্কে পুনর্দখল
অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইউক্রেনে রুশ হামলায় নিহত ১৪, আরো নিষেধাজ্ঞা চান জেলেনস্কি
৮ মার্চ ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের দোব্রোপিলিয়ায় হামলার পর ক্ষতিগ্রস্ত আবাসিক ভবনের কাছে এক নারীকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিচ্ছেন স্বজনরা। ছবি : এএফপি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি শনিবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন। এর আগে রাতভর রুশ হামলায় অন্তত ১৪ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়। এই হামলার মাত্র কয়েক দিন পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের আলোচকদের মধ্যে আসন্ন বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা হবে।  

ইউক্রেনের জরুরি সেবাদানকারী সংস্থা জানিয়েছে, শুক্রবার দিবাগত রাতে রুশ হামলায় ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চলের দোব্রোপিলিয়া শহরে ১১ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছে।

এ ছাড়া শনিবার ভোরে খারকিভ অঞ্চলের বগোদুখিভ শহরে ড্রোন হামলায় তিনজন নিহত ও সাতজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সামরিক প্রশাসক ওলেগ সিনেগুবভ। অন্যদিকে ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া বগোদুখিভে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৪৫টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে।  

এই হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। তবে তিনি এ-ও বলেছেন, যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে মস্কোর সঙ্গে আলোচনা করা ‘কিয়েভের চেয়ে সহজ’ হতে পারে।

 

জেলেনস্কি টেলিগ্রামে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘এই হামলা প্রমাণ করে, রাশিয়ার লক্ষ্য অপরিবর্তিত রয়েছে। তাই জীবন রক্ষায়, আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা (ব্যবস্থা) জোরদার করতে ও রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরো বাড়াতে আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’

দোব্রোপিলিয়ায় এএফপির এক সাংবাদিক ধ্বংসপ্রাপ্ত আবাসিক ভবন, বিধ্বস্ত বাজার ও গুচ্ছবোমার আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছেন। ৫৯ বছর বয়সী ইরিনা কোস্তেঙ্কো ও তার স্বামী রাতটি তাদের হলঘরে লুকিয়ে কাটান।

শনিবার সকালে বাইরে বেরিয়ে তিনি দেখেন, এক প্রতিবেশীর মৃতদেহ একটি কম্বলে ঢাকা অবস্থায় পড়ে আছে। কোস্তেঙ্কো এএফপিকে বলেন, ‘এটি ছিল চরম ভীতিকর, আমি এটি প্রকাশ করার মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।’

জেলেনস্কি দাবি করেন, রাশিয়া প্রথমে দোব্রোপিলিয়ায় হামলা চালায়, এরপর উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ তাদের লক্ষ্য করে দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো হয়। তিনি বলেন, ‘এটি একটি জঘন্য ও অমানবিক ভীতি প্রদর্শনের কৌশল, যা রাশিয়া প্রায়ই ব্যবহার করে।’

ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার হুমকি
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের আলোচকদের মধ্যে আগামী সপ্তাহে সৌদি আরবে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে টানাপড়েনের মধ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

এ ছাড়া হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকের সময় ট্রাম্প প্রকাশ্যে জেলেনস্কিকে তিরস্কার করেন ও কূটনৈতিক আলোচনায় উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কিয়েভের জন্য মার্কিন সহায়তা স্থগিত করেন। শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এখন ইউক্রেনের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছি, কারণ তাদের হাতে দর-কষাকষির উপযুক্ত কার্ড নেই। রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করা সম্ভবত আরো সহজ হবে।’

পাশাপাশি রাশিয়া যখন ইউক্রেনে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে, তখন ট্রাম্প শুক্রবার নতুন নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেন, দুই হয়ে যাওয়ার আগেই তোমরা এখনই আলোচনার টেবিলে বসো।’

সৌদি আরবে সোমবার যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন জেলেনস্কি। এ বৈঠকের পরপরই মঙ্গলবার সৌদি আরবে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচকদের মধ্যে নতুন দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

কুরস্কে পুনর্দখল
এদিকে রাশিয়া শনিবার দাবি করেছে, তারা ইউক্রেনের দখলে থাকা কুরস্ক অঞ্চলের তিনটি গ্রাম পুনর্দখল করেছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ভিক্তরোভকা, নিকোলায়েভকা ও স্তারায়া সরোচিনা পুনর্দখল করেছে।

গত গ্রীষ্মে ইউক্রেন কুরস্কে আক্রমণ শুরু করেছিল, তবে রাশিয়া এখন পর্যন্ত কিয়েভের দখলে থাকা দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা পুনরুদ্ধার করেছে।

এ ছাড়া রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার জানিয়েছে, গত রাতে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ৩১টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে। ইউক্রেনের ড্রোন হামলার লক্ষ্য ছিল রাশিয়ার কিরিশি তেল শোধনাগার। রাশিয়ার লেনিনগ্রাদ অঞ্চলের গভর্নর আলেকজান্দর দ্রোজদেনকো জানান, এ হামলার সময় এক ড্রোন শোধনাগারের কাছে ও আরেকটি শোধনাগারের ওপর গুলি করে ভূপাতিত করা হয়। এতে ‘একটি সংরক্ষণাগারের বাইরের কাঠামো’ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

অন্যদিকে ইউক্রেন সীমান্তবর্তী বেলগোরোদ অঞ্চলে এক ড্রোন হামলায় একজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছে বলে স্থানীয় গভর্নর ভিয়াচেস্লাভ গ্লাদকভ টেলিগ্রামে লিখেছেন।  

আলোচনা অব্যাহত
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুক্রবার নিশ্চিত করেছে, তারা ‘নির্ভুল হামলা’ চালিয়ে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করেছে। ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, গত মাসে ফ্রান্স থেকে পাওয়া মিরাজ যুদ্ধবিমান তারা প্রথমবারের মতো এই আক্রমণ প্রতিহত করতে ব্যবহার করেছে।  

রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগর উপকূলীয় ওডেসা ও কেন্দ্রীয় পোলতাভা অঞ্চলের জ্বালানি স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  

এই হামলার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা প্রতিরক্ষা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন থেকে সরে আসতে পারে—এমন আশঙ্কা তাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

বিশ্ব রাজনীতিতে নারী : ৪টি চমকপ্রদ তথ্য

শেয়ার
বিশ্ব রাজনীতিতে নারী : ৪টি চমকপ্রদ তথ্য
সংগৃহীত ছবি

গত শতাব্দীতে রাজনীতিতে নারীরা বেশ কিছু সাফল্য অর্জন করেছেন। নারীরা ভোটাধিকার পাওয়ার পাশাপাশি প্রায় সব দেশের সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন। তবে রাজনীতির সর্বোচ্চ পদগুলোতে এখনো নারীদের সংখ্যা কম। জেনে নেওয়া যাক বিশ্বরাজনীতিতে নারীদের নিয়ে কিছু চমকপ্রদ তথ্য।

বেশির ভাগ দেশে নারীরা ভোটাধিকার পেয়েছেন
সর্বপ্রথম ১৮৯৩ সালে নিউজিল্যান্ড নারীদের পূর্ণ ভোটাধিকার দেয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় কৃষ্ণাঙ্গ নারীরা প্রথম ভোট দেওয়ার সুযোগ পান ১৯৯৩ সালে। বিংশ শতাব্দীর আগে অনেক দেশের নারীদের ভোট দেওয়ার অধিকার ছিল না। তবে শতাব্দীর শেষের দিকে এটি বদলেছে।

২০১৫ সালে সৌদি আরব নারীদের স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকার দেয়। এর আগে আফগানিস্তানসহ কয়েকটি দেশে ভোটাধিকারের ক্ষেত্রে নারীরা পিছিয়ে ছিলেন। তালেবান শাসনের অধীনে বর্তমানে আফগান নারীরা তাদের রাজনৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। 
জাতিসংঘের নারীবিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেন বলছে, ‘আফগান নারীরা ১০০ বছর আগে ভোট দেওয়ার অধিকার পেয়েছিলেন।
কিন্তু তালেবান শাসনের অধীনে তাদের কার্যত জনজীবন থেকে মুছে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে কোনো আফগান নারী জাতীয় বা প্রাদেশিক স্তরে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পদে নেই।’ 

কয়েকটি দেশে নারীদের ভোটাধিকার থাকলেও সামাজিক বাধা এবং সহিংসতার কারণে তারা ভোট দিতে পারেন না।’

মাত্র তিনটি দেশে সংসদে নারীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ
ভ্যারাইটিজ অব ডেমোক্রেসির (ভি-ডেম)-এর তথ্য মতে, বিশ শতকের শুরুর দিক পর্যন্ত জাতীয় সংসদে নারীরা পুরোপুরি অনুপস্থিত ছিল। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ১৯০৭ সালে ফিনল্যান্ডে নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

ধীরগতিতে রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে। বিশ শতকের শেষের দিকে এবং একুশ শতকের শুরুতে এই হার বেড়ে যায়।
২০০৮ সালে রুয়ান্ডা প্রথম দেশ হিসেবে নারী সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ পায়। মার্কিন থিংক ট্যাংক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের (সিএফআর) উইমেন্স পাওয়ার ইনডেক্সের নোয়েল জেমস বলেন, ‘লিঙ্গ সমতা অর্জনে রুয়ান্ডার সাফল্যের কারণ ১৯৯৪ সালের গণহত্যা পরবর্তী সময়। সে সময় দেশটিতে নারীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল আর দেশ পুনর্গঠনে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।’   
বর্তমানে রুয়ান্ডা, কিউবা, নিকারাগুয়া এ তিনটি দেশে নারীরা সংসদে ৫০% বা তার বেশি আসন দখল করেছেন।

ইউএন উইমেন বলছে, বর্তমানে আফগানিস্তান, আজারবাইজান, সৌদি আরব, হাঙ্গেরি, পাপুয়া নিউ গিনি, ভানুয়াতু, ইয়েমেন এবং তুভালু এ আটটি দেশে জাতীয় সংসদে কোনো নারী নেই।

মাত্র ১৫% দেশে নারী নেতৃত্ব
ওমেন্স পাওয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র ২৬টি দেশ ২৬টি দেশ নারী প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। যা বিশ্বের মোট দেশগুলোর ১৫%-এর কম।

১৯৪৬ সাল থেকে ৮০টি দেশে নারী নেতৃত্ব ছিল
১৯৪৬ সাল থেকে ৮০টি দেশের রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী নারী ছিলেন। ১৯৬০ সালে সিরিমাভো বান্দারানায়েক প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তবে এখনো অনেক দেশের শীর্ষ পদে পুরুষদের সংখ্যা বেশি।

নারীর প্রতিনিধিত্ব কেন গুরুত্বপূর্ণ
২০২১ সালের কোলোরাডো বোলডার বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে সংসদে নারীরা প্রভাবশালী সে দেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় বিনিয়োগ বাড়ে, শিশু মৃত্যুর হার কমে। 
সিএফআরের উইমেন্স পাওয়ার ইনডেক্সের জেমস বলেন, নারীদের নির্বাচিত হওয়া মানেই যে সব ক্ষেত্রে সমতা আসবে তা নিশ্চিত নয়। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিভিন্ন ইস্যুতে নারীদের মতামত ভিন্ন হতে পারে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

মন্তব্য

সিরিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত আসাদের সম্প্রদায়ের ৩১১ জনকে হত্যা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সিরিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত আসাদের সম্প্রদায়ের ৩১১ জনকে হত্যা
ক্ষমতাচ্যুত বাশার আল-আসাদের অনুগত যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে সরকারি বাহিনীকে সহায়তা করতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা প্রবেশ করছেন। ছবিটি ৭ মার্চ উপকূলীয় তারতুস প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর বানিয়াস থেকে তোলা। ছবি : এএফপি

সিরিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনী ও তাদের মিত্রদের হাতে গত কয়েক দিনে আলাউইত সম্প্রদায়ের তিন শতাধিক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। একটি যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ সংস্থা শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে।

গত ডিসেম্বরে ইসলামপন্থী নেতৃত্বাধীন এক বিদ্রোহের মাধ্যমে বাশার আল-আসাদের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা সিরিয়ার নতুন কর্তৃপক্ষ এখন আসাদপন্থী যোদ্ধাদের সঙ্গে তীব্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দেশটিতে নিরাপত্তা পুনর্বহাল করা নতুন সরকারের জন্য অন্যতম কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরকারবিরোধী বিদ্রোহের পর আসাদ পরিবারের আলাউইত সম্প্রদায়ের সদস্যদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে তারা বৃহস্পতিবার থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে বড় ধরনের পাল্টা অভিযান শুরু করেছে।

ব্রিটেনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ‘নিরাপত্তা বাহিনী ও তাদের মিত্রদের হাতে উপকূলীয় অঞ্চলে ৩১১ আলাউইত বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।’ সংস্থাটির মতে, এদের ‘নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে’ এবং একই সঙ্গে তাদের ‘বাড়িঘর ও সম্পত্তি লুট’ করা হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের ফলে সামগ্রিক মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫২৪-এ পৌঁছেছে, যার মধ্যে নতুন সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর ৯৩ জন সদস্য ও ১২০ জন আসাদপন্থী যোদ্ধা রয়েছেন।

এদিকে সরকারি বার্তা সংস্থা সানা শনিবার জানিয়েছে, ‘ক্ষমতাচ্যুত শাসকের অনুসারীরা’ উপকূলীয় শহর লাতাকিয়ার জাতীয় হাসপাতালের ওপর হামলা চালিয়েছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘সাধারণ নিরাপত্তা বাহিনী হামলা প্রতিহত করছে।’

সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা শুক্রবার এক ভাষণে বিদ্রোহীদের উদ্দেশে বলেন, ‘দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই অস্ত্র ত্যাগ করে আত্মসমর্পণ করুন।’  

পশ্চিমা দেশগুলো ও সিরিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো নতুন শাসনব্যবস্থার অধীনে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি পুনর্গঠনের জন্য তারা আন্তর্জাতিক সহায়তা চাচ্ছে। অবজারভেটরি জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে একাধিক ‘গণহত্যার’ ঘটনা ঘটেছে, যেখানে নারী ও শিশুরাও নিহত হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, ‘মৃত্যুবরণকারীদের বেশির ভাগকেই প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত বাহিনীর সদস্যরা নির্বিচারে হত্যা করেছে।’

এদিকে অবজারভেটরি ও অ্যাক্টিভিস্টদের এমন কিছু ফুটেজ প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা গেছে, বেসামরিক পোশাক পরা বেশ কিছু মরদেহ একটি বাড়ির বাইরে স্তূপ করে রাখা হয়েছে, আশপাশে রক্তের দাগ ও নারী স্বজনদের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে। অন্য ভিডিওগুলোতে সামরিক পোশাক পরা ব্যক্তিদের কাছ থেকে গুলি চালাতে দেখা গেছে।

তবে স্বাধীনভাবে এসব ফুটেজের সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ