মস্কো ও কিয়েভ আসলে কী চায়

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
মস্কো ও কিয়েভ আসলে কী চায়
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সপ্তাহে রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলাদা আলাদা ফোনালাপ করেছেন। ছবি : এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সপ্তাহে রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলাদা আলাদা ফোনালাপ করেছেন। দীর্ঘ এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই আলোচনাগুলোকে শান্তি আলোচনার সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এএফপি এই প্রতিবেদনে পর্যালোচনা করেছে, মস্কো ও কিয়েভ বর্তমানে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সম্ভাব্য আলোচনার বিষয়ে কী অবস্থান নিচ্ছে।

রাশিয়া : সংঘাতের ‘মূল কারণ’ সমাধান
ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করতে হলে এই সংঘাতের ‘মূল কারণগুলো’ সমাধান করতে হবে।

আরো পড়ুন
পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপ, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা শুরু হবে

পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপ, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা শুরু হবে

 

এটি সম্ভবত সেই নিরাপত্তা দাবির প্রতি ইঙ্গিত, যা মস্কো ২০২১ সালের শেষের দিকে ন্যাটো ও ওয়াশিংটনের কাছে তুলে ধরেছিল, যেসব দাবি রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের কয়েক সপ্তাহ আগেই জানিয়েছিল।

এই দাবির মধ্যে ছিল ইউরোপের নিরাপত্তা কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনীকে সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্র ও পূর্ব ইউরোপীয় ব্লকের দেশগুলো থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। এর মধ্যে বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো, রুমানিয়া ও বুলগেরিয়া অন্তর্ভুক্ত, যারা বর্তমানে ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য।

রাশিয়া আরো দাবি করেছিল, কোনো সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্রকে ন্যাটোর সদস্য পদ দেওয়া যাবে না এবং সাবেক সোভিয়েত অঞ্চলে ন্যাটোর কোনো সামরিক অভিযান চালানো যাবে না।

আরো পড়ুন
ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ রাশিয়ায় যুক্ত হতে চায় : ক্রেমলিন

ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ রাশিয়ায় যুক্ত হতে চায় : ক্রেমলিন

 

এ ছাড়া আক্রমণের পর থেকে মস্কো স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোনো ভূখণ্ড বিনিময়ের ধারণা সমর্থন করে না, যেখানে ইউক্রেন রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডের বদলে রুশ নিয়ন্ত্রণাধীন অংশ পাবে।

মস্কো বলছে, যুদ্ধ শেষ করার জন্য যেকোনো চুক্তিকে অবশ্যই ‘নতুন বাস্তবতা’ প্রতিফলিত করতে হবে, যার মধ্যে ২০২২ সালে রাশিয়ার দখল করা ইউক্রেনের চারটি দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলীয় ভূখণ্ড এবং ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়ার অন্তর্ভুক্তি থাকতে হবে।

রাশিয়া আরো বলেছে, তারা ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করবে না। কারণ মস্কোর দাবি অনুযায়ী তার মেয়াদ গত বছর শেষ হয়েছে।

তবে ইউক্রেনে যুদ্ধকালীন আইন জারি থাকায় জেলেনস্কি এখনো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রেসিডেন্ট।

পুতিন ট্রাম্পের প্রশংসা করেছেন এবং তার সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এমনকি তিনি বলেছেন, যদি ট্রাম্প ২০২২ সালে হোয়াইট হাউসে থাকতেন, তাহলে যুদ্ধই শুরু হতো না।

ইউক্রেন : ‘ন্যায়সংগত শান্তি’
প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি চান যুদ্ধ দ্রুত শেষ হোক এবং ইউক্রেন এমন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পাক, যা ভবিষ্যতে রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকাতে পারে। এর মধ্যে ন্যাটোর সদস্য পদ বা বড় পরিসরের আন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষা বাহিনী মোতায়েনের মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

তিনি বলেছেন, আলোচনায় ইউক্রেন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে, যেহেতু ইউক্রেন বর্তমানে ইইউর প্রার্থীর তালিকায় রয়েছে এবং যোগদানের আশা করছে।

পাশাপাশি কিয়েভ রাশিয়ার কাছে কোনো ভূখণ্ড ছাড়তে চায় না। তবে জেলেনস্কি স্বীকার করেছেন, কিছু এলাকা কূটনীতির মাধ্যমে পরে পুনরুদ্ধার করা হতে পারে।

আরো পড়ুন
যুদ্ধ শেষ করতে পুতিনের সঙ্গে বসতে রাজি আছি : জেলেনস্কি

যুদ্ধ শেষ করতে পুতিনের সঙ্গে বসতে রাজি আছি : জেলেনস্কি

 

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট মিত্রদের যুদ্ধ সমাপ্তির জন্য ইউক্রেনের প্রস্তাবিত দুই নথি—‘পিস ফর্মুলা’ ও ‘ভিক্টরি প্ল্যান’-এর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে কোনো আলোচনা সফল হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

গত আগস্টে ইউক্রেন রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলের বড় অংশ দখল করে। কিয়েভের মতে, এটি ভবিষ্যৎ আলোচনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সম্পদ হতে পারে। এই সপ্তাহের শুরুতে জেলেনস্কি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিয়েছেন, অঞ্চলটি রুশ নিয়ন্ত্রিত কিছু ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের বিনিময়ে ফিরিয়ে দেওয়া যেতে পারে।

এর আগে তিনি বলেছিলেন, রাশিয়ার সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহারই আলোচনার পূর্বশর্ত এবং শুধু ‘ন্যায়সংগত শান্তি’ স্থায়ীভাবে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে।

পটভূমি
কিয়েভ মনে করে, রাশিয়া কোনো চুক্তি মানবে না, যদি না তাদের ওপর আন্তর্জাতিক নজরদারি থাকে। তারা অতীতের একাধিক চুক্তির ভিত্তিতে এই মতামত গঠন করেছে।

২০২২ সালের জুলাই মাসে মস্কো ও কিয়েভ তুরস্ক ও জাতিসংঘের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল, যাতে ইউক্রেন কৃষ্ণ সাগরের রুশ নৌ অবরোধ এড়িয়ে শস্য রপ্তানি করতে পারে। কিন্তু এক বছর পর রাশিয়া একতরফাভাবে এই চুক্তি বাতিল করে। কারণ হিসেবে তারা দাবি করে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা শিথিলের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি।

এদিকে এই সপ্তাহের মিউনিখ সম্মেলনে আলোচনা এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন এক দশক আগে ফ্রান্স, জার্মানি, ইউক্রেন ও রাশিয়া বেলারুশের রাজধানীতে একটি শান্তিচুক্তির চেষ্টা করেছিল। সেটির লক্ষ্য ছিল, রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনী ও কিয়েভের মধ্যে সংঘাতের অবসান ঘটানো। কিন্তু সেই নাজুক চুক্তিগুলো রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পূর্ব ইউক্রেনের বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার সুযোগ দেয়, যা কিয়েভের মতে রাশিয়াকে সামরিক প্রস্তুতির জন্য সময় দিয়েছিল এবং পরে ২০২২ সালে পূর্ণমাত্রায় আক্রমণ চালানোর পথ তৈরি করেছিল।

আরো পড়ুন
শান্তি আলোচনার কাঠামো নির্ধারণে মিত্রদের প্রতি জেলেনস্কির আহ্বান

শান্তি আলোচনার কাঠামো নির্ধারণে মিত্রদের প্রতি জেলেনস্কির আহ্বান

 
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

গাজায় ব্যাপক হামলা চলছেই, ইসরায়েলি হামলায় নিহত বেড়ে ৩৩০

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
গাজায় ব্যাপক হামলা চলছেই, ইসরায়েলি হামলায় নিহত বেড়ে ৩৩০
ছবিসূত্র : এএফপি

হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৩৩০ জনে পৌঁছেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর তারা হামলা চালাচ্ছে। ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরুর পর এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। গাজা শহরের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, ‘তারা গাজায় আবারও নরকের আগুন ছড়িয়ে দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অফিস বলছে, ইসরায়েল এখন থেকে ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তি দিয়ে হামাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। হামাস আমাদের জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসের বারবার অস্বীকৃতি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের দূত স্টিভ উইটকফ ও মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে আসা সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের জবাবে এই হামলা চালানো হচ্ছে।

হামাস ইসরায়েলকে নিরাপত্তাহীন বেসামরিক নাগরিকদের আক্রমণ করার অভিযোগ করে বলেছে, মধ্যস্থতাকারীদের উচিত যুদ্ধবিরতি ‘লঙ্ঘন এবং বাতিল’ করার জন্য ইসরায়েলকে সম্পূর্ণ দায়ি করা।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ মঙ্গলবার সকালে হামলার নির্দেশ দিয়েছেন বলে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

সামরিক কর্মকর্তারা জানান, হামাসের নেতৃবৃন্দ ও অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে।

অভিযানের নামে গাজায় রীতিমত ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে এমন কোনও স্থান বাকি নেই যেখানে ইসরায়েল হামলা চালায়নি। অবরুদ্ধ এই উপত্যকার স্কুল, হাসপাতাল, মসজিদ, আবাসিক ভবনসহ বেশির ভাগ স্থাপনাই ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

গাজা থেকে আল জাজিরার আরবি সংবাদদাতা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো খান ইউনিসের আবাসান শহরের পূর্বাঞ্চলে গোলাবর্ষণ করছে, একই সাথে তীব্র গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। আল জাজিরার লাইভে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সকালে আধা ঘণ্টায় গাজায় ৩৫টিরও বেশি ইসরায়েলি বিমান হামলা হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স এবং বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মীরা মৃত ও আহতদের সরিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় নিহতের সংখ্যা সাড়ে ৪৮ হাজার ছাড়িয়েছে। 

সূত্র : আলজাজিরা, রয়টার্স, বিবিসি
 

মন্তব্য

উদ্বেগজনক অবস্থায় চাঁদাবাজি, নিয়ন্ত্রণে পেরুতে জুরুরি অবস্থা ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
উদ্বেগজনক অবস্থায় চাঁদাবাজি, নিয়ন্ত্রণে পেরুতে জুরুরি অবস্থা ঘোষণা
ছবিসূত্র : এএফপি

পেরুর রাজধানী লিমায় এক মাসব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। স্থানীয় সময় সোমবার এই ঘোষণা দেওয়া হয়। চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত হত্যাকাণ্ডের পর এ ঘোষণা দেওয়া হয়। লিমা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

 

রোববার ৩৯ বছর বয়সী গায়ক পল ফ্লোরেসকে লিমার বাইরে একটি কনসার্ট থেকে বেরিয়ে আসার সময় হামলাকারীরা গুলি করে হত্যা করে। তাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, সঙ্গীতশিল্পীদের একটি অপরাধী চক্র তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করার হুমকি দিয়েছিল। এরপরেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন
চীনে সন্তান জন্মদান উৎসাহে নেওয়া হচ্ছে নতুন পরিকল্পনা

চীনে সন্তান জন্মদান উৎসাহে নেওয়া হচ্ছে নতুন পরিকল্পনা

 

ফ্লোরেসের হত্যার পর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে ঘোষণা করেন, ’আমরা আর একটি মৃত্যুও হতে দেব না’।

তিনি আরো বলেন, তিনি খুনি এবং চাঁদাবাজদের মৃত্যুদণ্ড পুনর্বহাল করার বিষয়টি ’গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা’ করছেন।

ল্যাটিন আমেরিকাজুড়ে চাঁদাবাজি একটি সমস্যা হলেও, পেরুতে এটি উদ্বেগজনক আকার ধারণ করেছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ৪৫০টিরও বেশি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনাটির জন্য আংশিকভাবে দায়ী ভেনেজুয়েলার ট্রেন ডি আরাগুয়ার মতো অপরাধী চক্র।

যারা বেশ কয়েকটি ল্যাটিন আমেরিকার দেশে কাজ করে। 

আরো পড়ুন
ইইউ-এর নতুন নিষেধাজ্ঞা, শান্তি বৈঠক থেকে সরে গেল এম-২৩ বিদ্রোহীরা

ইইউ-এর নতুন নিষেধাজ্ঞা, শান্তি বৈঠক থেকে সরে গেল এম-২৩ বিদ্রোহীরা

 

লিমা এবং এর বন্দর কালাওতে কার্যকর জরুরি অবস্থার অধীনে রয়েছে। সরকার নাগরিক স্বাধীনতা যেমন সমাবেশের অধিকার স্থগিত করতে পারে এবং বাড়ি তল্লাশি চালানো যেতে পারে।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

ইইউ-এর নতুন নিষেধাজ্ঞা, শান্তি বৈঠক থেকে সরে গেল এম-২৩ বিদ্রোহীরা

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
ইইউ-এর নতুন নিষেধাজ্ঞা, শান্তি বৈঠক থেকে সরে গেল এম-২৩ বিদ্রোহীরা
ছবিসূত্র : এএফপি

ডিআর কঙ্গোর সঙ্গে মঙ্গলবারই শান্তি বৈঠকে বসার কথা ছিল এম-২৩ বিদ্রোহীদের। কিন্তু ইইউ-র নতুন নিষেধাজ্ঞার জেরে তারা তা বাতিল করেছে। ডিআর কঙ্গোর সঙ্গে মঙ্গলবারই বৈঠকে বসার কথা ছিল এম-২৩ বিদ্রোহীদের। কিন্তু ইইউ-র নতুন নিষেধাজ্ঞার জেরে তারা তা বাতিল করেছে।

দীর্ঘদিন ধরে এই বৈঠকের আয়োজনের চেষ্টা হলেও এতদিন তা সম্ভব হয়নি। দুই পক্ষই এই আলোচনায় রাজি ছিল না। শেষপর্যন্ত তারা আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি হয়েছিল। অভিযোগ, এম-২৩ বিদ্রোহীদের রুয়ান্ডা সাহায্য করে।

ডিআর কঙ্গোয় তারা অস্থির পরিবেশ তৈরি করে। দীর্ঘদিন ধরেই এই পরিস্থিতি চলছে।

সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এম-২৩ এবং কিছু রুয়ান্ডার প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তার পরেই এম-২৩ জানিয়ে দিয়েছে, তাদের পক্ষে এই বৈঠকে বসা আর সম্ভব নয়।

ইইউ-এর এই পদক্ষেপের জন্যই তারা বৈঠকে বসছে না বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে রুয়ান্ডার প্রশাসন জানিয়েছে, তারা বেলজিয়ামের সঙ্গে সকল কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করছে। কিগালির দাবি, বেলজিয়াম নতুন করে সাম্রাজ্যবাদী আচরণ করছে। উল্লেখ্য, একসময় রুয়ান্ডা বেলজিয়ামের উপনিবেশ ছিল।

কঙ্গোর অবস্থান

ডিআর কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদি এতদিন এম-২৩ বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে রাজি ছিলেন না।

গত সপ্তাহে তিনি জানান, এবার বৈঠকে বসতে তার আপত্তি নেই। অ্যাঙ্গোলা এই আলোচনায় মধ্যস্থতা করছিল। কঙ্গোর তরফে জানানো হয়েছে, এম-২৩ বিদ্রোহীরা না এলেও তাদের প্রতিনিধিরা অ্যাঙ্গোলা যাবেন।

গত বছরে কঙ্গোর বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করেছিল এম-২৩। রুয়ান্ডা অবশ্য দাবি করেছিল, তারা এম-২৩ বিদ্রোহীদের সাহায্য করে না। উল্লেখ্য, পূর্ব কঙ্গোতে নিজেদের জমি শক্ত করতে চায় এম-২৩। ওই অঞ্চল প্রাকৃতিক খনিজ পদার্থে ভর্তি। অন্তত ২০টি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ওই অঞ্চল দখলে নিতে চায়।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

চীনে সন্তান জন্মদান উৎসাহে নেওয়া হচ্ছে নতুন পরিকল্পনা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
চীনে সন্তান জন্মদান উৎসাহে নেওয়া হচ্ছে নতুন পরিকল্পনা
ছবিসূত্র : এএফপি

চীনের অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলিয়ার রাজধানী হোহোট এই মাসে শিশু যত্নে বেশ কিছু ভর্তুকি ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া নতুন মায়েদের প্রতিদিন এক কাপ বিনামূল্যে দুধ দেওয়া হবে। বর্তমানে স্থানীয় প্রদেশগুলো দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

চীনজুড়ে গতকাল সোমবার ২০টিরও বেশি প্রাদেশিক পর্যায়ের প্রশাসন শিশু যত্নে ভর্তুকি দেওয়া শুরু করেছে।

সরকারি সিনহুয়া সংবাদ সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। তরুণ দম্পতিদের বিয়ে করাতে এবং সন্তান ধারণে উৎসাহিত করা নীতিনির্ধারকদের মূল লক্ষ্য এখন।

আরো পড়ুন
উসকানির অভিযোগে ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে আটক করেছে ইসরায়েল

উসকানির অভিযোগে ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে আটক করেছে ইসরায়েল

 

সবুজ তৃণভূমিতে ঘেরা উত্তরাঞ্চলের ব্যস্ত শহর হোহোট জানিয়েছে, দম্পতিরা তাদের প্রথম সন্তানের জন্য এককালীন ১০ হাজার ইউয়ান (১ হাজার৩৮২.৫১ ডলার) এবং দ্বিতীয় সন্তানের জন্য প্রতি বছর ১০ হাজার ইউয়ান পাবেন, যতক্ষণ না শিশুটি পাঁচ বছর বয়সে পৌঁছায়। তৃতীয় সন্তান ১০ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত বার্ষিক ১০ হাজার ইউয়ান ভর্তুকি পাবে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের বার্ষিক আয়ের প্রায় দ্বিগুণ।

হোহোট মায়েদের জন্য এক কাপ দুধের ব্যবস্থারও ঘোষণা দিয়েছে। যার মধ্যে ১ মার্চের পরে সন্তান জন্মদানকারী যেকোনো মায়েদের জন্য প্রতিদিন এক কাপ দুধ বিনামূল্যে পাওয়া যাবে।

২০২৪ সালে টানা তৃতীয় বছরের মতো চীনের জনসংখ্যা কমেছে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, বিবাহের হার এক-পঞ্চমাংশ কমেছে।

দেশটি অভূতপূর্ব জনসংখ্যা মন্দার মুখোমুখি হচ্ছে। এর প্রধান কারণ ১৯৮০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে চীনে আরোপিত এক সন্তান নীতি, দ্রুত নগরায়ন এবং পরিবার লালন-পালনের উচ্চ ব্যয়। ২০২১ সাল থেকে দম্পতিদের সর্বোচ্চ তিনটি সন্তান ধারণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন
গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ২০০

গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ২০০

 

এই মাসের শুরুতে চীনের সংসদের বার্ষিক সভায় প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং জন্মহার বাড়ানোর জন্য শিশু যত্নে ভর্তুকি এবং বিনামূল্যে প্রাক-বিদ্যালয় শিক্ষার ঘোষণা দিয়েছেন। রবিবার প্রকাশিত গৃহস্থালির খরচ বৃদ্ধির জন্য একটি কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের শিশু যত্নের জন্য ভর্তুকি দেওয়া উচিত।

সূত্র : রয়টার্স


 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ