ঢাকা, মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫
৪ চৈত্র ১৪৩১, ১৭ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫
৪ চৈত্র ১৪৩১, ১৭ রমজান ১৪৪৬

মস্কো ও কিয়েভ আসলে কী চায়

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
মস্কো ও কিয়েভ আসলে কী চায়
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সপ্তাহে রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলাদা আলাদা ফোনালাপ করেছেন। ছবি : এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সপ্তাহে রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলাদা আলাদা ফোনালাপ করেছেন। দীর্ঘ এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই আলোচনাগুলোকে শান্তি আলোচনার সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এএফপি এই প্রতিবেদনে পর্যালোচনা করেছে, মস্কো ও কিয়েভ বর্তমানে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সম্ভাব্য আলোচনার বিষয়ে কী অবস্থান নিচ্ছে।

রাশিয়া : সংঘাতের ‘মূল কারণ’ সমাধান
ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করতে হলে এই সংঘাতের ‘মূল কারণগুলো’ সমাধান করতে হবে।

আরো পড়ুন
পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপ, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা শুরু হবে

পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপ, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা শুরু হবে

 

এটি সম্ভবত সেই নিরাপত্তা দাবির প্রতি ইঙ্গিত, যা মস্কো ২০২১ সালের শেষের দিকে ন্যাটো ও ওয়াশিংটনের কাছে তুলে ধরেছিল, যেসব দাবি রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের কয়েক সপ্তাহ আগেই জানিয়েছিল।

এই দাবির মধ্যে ছিল ইউরোপের নিরাপত্তা কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনীকে সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্র ও পূর্ব ইউরোপীয় ব্লকের দেশগুলো থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। এর মধ্যে বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো, রুমানিয়া ও বুলগেরিয়া অন্তর্ভুক্ত, যারা বর্তমানে ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য।

রাশিয়া আরো দাবি করেছিল, কোনো সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্রকে ন্যাটোর সদস্য পদ দেওয়া যাবে না এবং সাবেক সোভিয়েত অঞ্চলে ন্যাটোর কোনো সামরিক অভিযান চালানো যাবে না।

আরো পড়ুন
ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ রাশিয়ায় যুক্ত হতে চায় : ক্রেমলিন

ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ রাশিয়ায় যুক্ত হতে চায় : ক্রেমলিন

 

এ ছাড়া আক্রমণের পর থেকে মস্কো স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোনো ভূখণ্ড বিনিময়ের ধারণা সমর্থন করে না, যেখানে ইউক্রেন রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডের বদলে রুশ নিয়ন্ত্রণাধীন অংশ পাবে।

মস্কো বলছে, যুদ্ধ শেষ করার জন্য যেকোনো চুক্তিকে অবশ্যই ‘নতুন বাস্তবতা’ প্রতিফলিত করতে হবে, যার মধ্যে ২০২২ সালে রাশিয়ার দখল করা ইউক্রেনের চারটি দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলীয় ভূখণ্ড এবং ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়ার অন্তর্ভুক্তি থাকতে হবে।

রাশিয়া আরো বলেছে, তারা ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করবে না। কারণ মস্কোর দাবি অনুযায়ী তার মেয়াদ গত বছর শেষ হয়েছে।

তবে ইউক্রেনে যুদ্ধকালীন আইন জারি থাকায় জেলেনস্কি এখনো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রেসিডেন্ট।

পুতিন ট্রাম্পের প্রশংসা করেছেন এবং তার সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এমনকি তিনি বলেছেন, যদি ট্রাম্প ২০২২ সালে হোয়াইট হাউসে থাকতেন, তাহলে যুদ্ধই শুরু হতো না।

ইউক্রেন : ‘ন্যায়সংগত শান্তি’
প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি চান যুদ্ধ দ্রুত শেষ হোক এবং ইউক্রেন এমন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পাক, যা ভবিষ্যতে রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকাতে পারে। এর মধ্যে ন্যাটোর সদস্য পদ বা বড় পরিসরের আন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষা বাহিনী মোতায়েনের মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

তিনি বলেছেন, আলোচনায় ইউক্রেন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে, যেহেতু ইউক্রেন বর্তমানে ইইউর প্রার্থীর তালিকায় রয়েছে এবং যোগদানের আশা করছে।

পাশাপাশি কিয়েভ রাশিয়ার কাছে কোনো ভূখণ্ড ছাড়তে চায় না। তবে জেলেনস্কি স্বীকার করেছেন, কিছু এলাকা কূটনীতির মাধ্যমে পরে পুনরুদ্ধার করা হতে পারে।

আরো পড়ুন
যুদ্ধ শেষ করতে পুতিনের সঙ্গে বসতে রাজি আছি : জেলেনস্কি

যুদ্ধ শেষ করতে পুতিনের সঙ্গে বসতে রাজি আছি : জেলেনস্কি

 

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট মিত্রদের যুদ্ধ সমাপ্তির জন্য ইউক্রেনের প্রস্তাবিত দুই নথি—‘পিস ফর্মুলা’ ও ‘ভিক্টরি প্ল্যান’-এর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে কোনো আলোচনা সফল হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

গত আগস্টে ইউক্রেন রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলের বড় অংশ দখল করে। কিয়েভের মতে, এটি ভবিষ্যৎ আলোচনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সম্পদ হতে পারে। এই সপ্তাহের শুরুতে জেলেনস্কি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিয়েছেন, অঞ্চলটি রুশ নিয়ন্ত্রিত কিছু ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের বিনিময়ে ফিরিয়ে দেওয়া যেতে পারে।

এর আগে তিনি বলেছিলেন, রাশিয়ার সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহারই আলোচনার পূর্বশর্ত এবং শুধু ‘ন্যায়সংগত শান্তি’ স্থায়ীভাবে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে।

পটভূমি
কিয়েভ মনে করে, রাশিয়া কোনো চুক্তি মানবে না, যদি না তাদের ওপর আন্তর্জাতিক নজরদারি থাকে। তারা অতীতের একাধিক চুক্তির ভিত্তিতে এই মতামত গঠন করেছে।

২০২২ সালের জুলাই মাসে মস্কো ও কিয়েভ তুরস্ক ও জাতিসংঘের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল, যাতে ইউক্রেন কৃষ্ণ সাগরের রুশ নৌ অবরোধ এড়িয়ে শস্য রপ্তানি করতে পারে। কিন্তু এক বছর পর রাশিয়া একতরফাভাবে এই চুক্তি বাতিল করে। কারণ হিসেবে তারা দাবি করে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা শিথিলের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি।

এদিকে এই সপ্তাহের মিউনিখ সম্মেলনে আলোচনা এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন এক দশক আগে ফ্রান্স, জার্মানি, ইউক্রেন ও রাশিয়া বেলারুশের রাজধানীতে একটি শান্তিচুক্তির চেষ্টা করেছিল। সেটির লক্ষ্য ছিল, রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনী ও কিয়েভের মধ্যে সংঘাতের অবসান ঘটানো। কিন্তু সেই নাজুক চুক্তিগুলো রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পূর্ব ইউক্রেনের বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার সুযোগ দেয়, যা কিয়েভের মতে রাশিয়াকে সামরিক প্রস্তুতির জন্য সময় দিয়েছিল এবং পরে ২০২২ সালে পূর্ণমাত্রায় আক্রমণ চালানোর পথ তৈরি করেছিল।

আরো পড়ুন
শান্তি আলোচনার কাঠামো নির্ধারণে মিত্রদের প্রতি জেলেনস্কির আহ্বান

শান্তি আলোচনার কাঠামো নির্ধারণে মিত্রদের প্রতি জেলেনস্কির আহ্বান

 
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

চীনে সন্তান জন্মদান উৎসাহে নেওয়া হচ্ছে নতুন পরিকল্পনা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
চীনে সন্তান জন্মদান উৎসাহে নেওয়া হচ্ছে নতুন পরিকল্পনা
ছবিসূত্র : এএফপি

চীনের অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলিয়ার রাজধানী হোহোট এই মাসে শিশু যত্নে বেশ কিছু ভর্তুকি ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া নতুন মায়েদের প্রতিদিন এক কাপ বিনামূল্যে দুধ দেওয়া হবে। বর্তমানে স্থানীয় প্রদেশগুলো দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

চীনজুড়ে গতকাল সোমবার ২০টিরও বেশি প্রাদেশিক পর্যায়ের প্রশাসন শিশু যত্নে ভর্তুকি দেওয়া শুরু করেছে।

সরকারি সিনহুয়া সংবাদ সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। তরুণ দম্পতিদের বিয়ে করাতে এবং সন্তান ধারণে উৎসাহিত করা নীতিনির্ধারকদের মূল লক্ষ্য এখন।

আরো পড়ুন
উসকানির অভিযোগে ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে আটক করেছে ইসরায়েল

উসকানির অভিযোগে ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে আটক করেছে ইসরায়েল

 

সবুজ তৃণভূমিতে ঘেরা উত্তরাঞ্চলের ব্যস্ত শহর হোহোট জানিয়েছে, দম্পতিরা তাদের প্রথম সন্তানের জন্য এককালীন ১০ হাজার ইউয়ান (১ হাজার৩৮২.৫১ ডলার) এবং দ্বিতীয় সন্তানের জন্য প্রতি বছর ১০ হাজার ইউয়ান পাবেন, যতক্ষণ না শিশুটি পাঁচ বছর বয়সে পৌঁছায়। তৃতীয় সন্তান ১০ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত বার্ষিক ১০ হাজার ইউয়ান ভর্তুকি পাবে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের বার্ষিক আয়ের প্রায় দ্বিগুণ।

হোহোট মায়েদের জন্য এক কাপ দুধের ব্যবস্থারও ঘোষণা দিয়েছে। যার মধ্যে ১ মার্চের পরে সন্তান জন্মদানকারী যেকোনো মায়েদের জন্য প্রতিদিন এক কাপ দুধ বিনামূল্যে পাওয়া যাবে।

২০২৪ সালে টানা তৃতীয় বছরের মতো চীনের জনসংখ্যা কমেছে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, বিবাহের হার এক-পঞ্চমাংশ কমেছে।

দেশটি অভূতপূর্ব জনসংখ্যা মন্দার মুখোমুখি হচ্ছে। এর প্রধান কারণ ১৯৮০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে চীনে আরোপিত এক সন্তান নীতি, দ্রুত নগরায়ন এবং পরিবার লালন-পালনের উচ্চ ব্যয়। ২০২১ সাল থেকে দম্পতিদের সর্বোচ্চ তিনটি সন্তান ধারণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন
গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ২০০

গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ২০০

 

এই মাসের শুরুতে চীনের সংসদের বার্ষিক সভায় প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং জন্মহার বাড়ানোর জন্য শিশু যত্নে ভর্তুকি এবং বিনামূল্যে প্রাক-বিদ্যালয় শিক্ষার ঘোষণা দিয়েছেন। রবিবার প্রকাশিত গৃহস্থালির খরচ বৃদ্ধির জন্য একটি কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের শিশু যত্নের জন্য ভর্তুকি দেওয়া উচিত।

সূত্র : রয়টার্স


 

মন্তব্য

ভারতের হিন্দু-মুসলিম সহিংসতার শুরু যেভাবে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভারতের হিন্দু-মুসলিম সহিংসতার শুরু যেভাবে
সংগৃহীত ছবি

ভারতের মহারাষ্ট্রে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি সরানোর দাবিকে ঘিরে ব্যাপক সহিংসতার পর নাগপুরের বেশ কয়েকটি এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়, সোমবার দুপুরে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কবর সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দল নাগপুরের মহাল এলাকায় একটি বিক্ষোভ জমায়েত করে। ওই বিক্ষোভে আওরঙ্গজেবের একটি ছবি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই পুলিশ সূত্র উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ওই বিক্ষোভ চলাকালে কোরআন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে গুজব ছড়ায়, যাতে মুসলমান সমাজের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়ায়।

পরে এই এই সংক্রান্ত একটি অভিযোগও পুলিশের কাছে দায়ের করা হয়।

নাগপুর পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অর্চিত চন্দক সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেছেন যে একটি গুজবের ফলেই সোমবারের ঘটনার সূত্রপাত। তিনি বলেন, কিছু ভুল তথ্যের ফলেই এই ঘটনা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

সবার কাছেই আবেদন যে ঘর থেকে বের হবেন না, পাথর ছুঁড়বেন না। গুজবে বিশ্বাস করবেন না।

এদিকে এই ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় প্রাথমিকভাবে ছয় জন বেসামরিক নাগরিক ও তিনজন পুলিশ অফিসার আহত হন। এরপরে কোতোয়ালি আর গণেশপেঠ এলাকাতেও সংঘর্ষ ছড়ায়।

হাজার খানেক মানুষ ব্যাপকভাবে পাথর ছোঁড়া, ভাঙচুর চালায়। দোকানপাট আর গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। মঙ্গলবার প্রায় ভোররাত পর্যন্ত পুলিশ নানা এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালিয়ে ২০ জনকে আটক করেছিল।

বেলা দশটা নাগাদ মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দফতরের রাষ্ট্র মন্ত্রী যোগেশ কদম সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, সহিংসতার কারণ এখনও খুঁজে বার করা যায়নি। এখনও পর্যন্ত ৪৭ জনকে আটক করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। যদিও কারফিউ জারি আছে সেখানে।

যে অঞ্চলে সংঘর্ষ ছড়িয়েছিল, সেই মহাল অঞ্চল ছাড়া শহরের অন্যান্য এলাকায় জনজীবন স্বাভাবিকই আছে বলে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানাচ্ছেন। তবে পুলিশ নাগরিকদের প্রতি আবেদন জানিয়েছে যাতে প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে না বের হন।

মন্তব্য

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু প্রশ্নে যা বললেন মার্কিন মুখপাত্র

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু প্রশ্নে যা বললেন মার্কিন মুখপাত্র
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়ন কী— এমন প্রশ্নের জবাবে বিষয়টিকে কূটনৈতিক আলোচনার অংশ বলে উল্লেখ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নবনিযুক্ত মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস। খবর ফক্স নিউজের।

গতকাল সোমবার স্থানীয় সময়ে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। 

ওই সাংবাদিক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের কয়েকদিন আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।

এখন নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নিয়েছে এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রায় ৬০ দিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি সম্পর্কে তার মূল্যায়ন কী? তিনি এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?

এ প্রশ্নের জবাবে ট্যামি ব্রুস বলেন, আপনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কথা বলছেন, যিনি অন্য দেশের ঘটনাবলি কীভাবে দেখেন তা নিয়ে কথা বলেছিলেন। তবে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও এই বিষয়ে তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করেন। কূটনৈতিক আলোচনা এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে কথোপকথনের বিষয়ে আমি কোনো পূর্বানুমান করতে চাই না।

এসব বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।

সাংবাদিক পুনরায় একই প্রশ্ন উত্থাপন করতে চাইলে ব্রুস তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, সরকার থেকে সরকার পর্যায়ে কূটনৈতিক আলোচনা বা কোনো নির্দিষ্ট দেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি সম্পর্কে সরাসরি মন্তব্য করা আমার কাজ নয়। আমি কোনো পূর্বানুমানও করতে চাই না।

এর আগে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও সহিংসতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড।

তাই এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

সরকার গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, আমরা গভীর উদ্বেগ ও হতাশার সঙ্গে তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য লক্ষ্য করেছি, যেখানে তিনি বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ‘নিপীড়ন ও হত্যা’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে বলেছেন, ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীদের হুমকি এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বৈশ্বিক তৎপরতা একই আদর্শ ও লক্ষ্য দ্বারা পরিচালিত হয়। সেই আদর্শ ও লক্ষ্য হলো ইসলামপন্থী খিলাফতের মাধ্যমে শাসন করা।’

তুলসী গ্যাবার্ডের এই মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনামের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলেছে, ‘বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইসলাম চর্চার জন্য সুপরিচিত এবং চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছে।’

আরো পড়ুন
খেলা শুরু করছো তোমরা, শেষ করব আমরা : সন্ত্রাসী সাজ্জাদের স্ত্রী

খেলা শুরু করছো তোমরা, শেষ করব আমরা : সন্ত্রাসী সাজ্জাদের স্ত্রী

 

গ্যাবার্ডের মন্তব্য কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ বা অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে করা হয়নি বলে বাংলাদেশ সরকার ওই বিবৃতিতে দাবি করে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিবৃতিতে উল্লেখ করে, তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্যে পুরো বাংলাদেশকে অন্যায় ও অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
 

মন্তব্য

উসকানির অভিযোগে ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে আটক করেছে ইসরায়েল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
উসকানির অভিযোগে ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে আটক করেছে ইসরায়েল
জেরুজালেমে ছেলের সঙ্গে আবদেল্লাতিফ। সূত্র: সিএনএন (পারিবারিক ছবি)।

ইসরায়েলি বিচারক মুক্তি দেওয়ার আদেশ দিলেও, ইসরায়েলি পুলিশ একজন সুপরিচিত ফিলিস্তিনি নারী সাংবাদিককে জেরুজালেমে আটক রাখার চেষ্টা করছে। যদিও তাকে ‘উসকানি’ এবং ‘সন্ত্রাসবাদের সমর্থন’ সম্পর্কিত অভিযোগে সোমবার আটক রাখা হয়েছে। আবদেল্লাতিফ এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

গতকাল সোমবার জেরুজালেমের একটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আবদেল্লাতিফকে হাজির করা হয়।

যেখানে একজন বিচারক জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে আরো পাঁচ দিনের জন্য আটক রাখার পুলিশের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। 

তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট অনুসারে লতিফেহ আবদেল্লাতিফ একজন ফ্রিল্যান্স ফটোসাংবাদিক। যার কাজ রয়টার্স, এবিসি নিউজ, বিবিসি, আল জাজিরা এবং টিআরটিতে প্রকাশিত হয়েছে।

আরো পড়ুন
মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি ঘিরে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, ভারতে কারফিউ জারি

মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি ঘিরে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, ভারতে কারফিউ জারি

 

 

ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, গত রবিবার জেরুজালেম জেলা পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে ‘সন্ত্রাসবাদের জন্য উসকানি এবং সমর্থনের সন্দেহে’ পুরাতন শহরে তার বাড়িতে গ্রেপ্তার করেছিলেন।

আবদেল্লাতিফের আইনজীবী এবং তার মা বলেছেন, বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অফিসাররা চিহ্নহীন যানবাহনে করে এসেছিল।

এক বিবৃতিতে পুলিশ আবদেল্লাতিফের প্রয়াত হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের একটি ভিডিও পোস্ট করার দিকে ইঙ্গিত করেছে। যেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘তিনি শহীদ হিসেবে মৃত্যুবরণ করতে চান।

’ 

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘এই ধরনের এবং অন্যান্য পোস্টগুলোতে স্পষ্ট যে, সন্দেহভাজন ব্যক্তি (আবদেল্লাতিফ) সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ডের প্রশংসা এবং মহিমান্বিত করছেন।’

আদালতে শুনানির পর আবদেল্লাতিফের আইনজীবী নাসের ওদেহ সিএনএনকে বলেন, ‘আদালত দেখেছেন, সাংবাদিক হিসেবে তার কাজের ভিত্তিতে এবং প্রতিরক্ষার ভিত্তিতে এই পোস্টগুলো তার পেশাগত কাজের অংশ। পোস্টগুলো ছয় মাসেরও বেশি পুরনো। তাকে আটকে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি জনসাধারণের জন্য বিপদ নয়।

’ তবে ইসরায়েলি পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তার মুক্তি স্থগিত করার জন্য সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করে।

আইনজীবী বলেন, ‘পুলিশ কেন্দ্রীয় আদালতে আপিল জমা না দেওয়া পর্যন্ত মুক্তির সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার অনুরোধ করেছে। বর্তমানে, আপিল প্রক্রিয়া কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত মুক্তির সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে।’

গত রবিবার আবদেল্লাতিফকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট সম্পর্কে তিন ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। 
আবদেল্লাতিফ এর আগেও ইসরায়েলি বাহিনীর দমন-পীড়নের শিকার হয়েছেন। 

আরো পড়ুন
গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ২০০

গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ২০০

 

২০২১ সালের মে মাসে অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে একটি ছোট ছেলেকে আটকের ভিডিও করার কারণে ইসরায়েলি সেনারা তাকে মারধর করেন, মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দেন এবং তার মাথার স্কার্ফ জোর করে খুলে ফেলেন। 

ঘটনার সময় আবদেল্লাতিফ ইসরায়েলি বাহিনীকে একটি শিশুকে আটক করতে দেখেন বলে জানান। শিশুটির বাবা ও অন্যান্য ফিলিস্তিনিরা এতে বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। আবদেল্লাতিফ তখন ঘটনাটি ভিডিও করার চেষ্টা করেন, কিন্তু ইসরায়েলি সেনারা তাকে ধাক্কা দেন, যদিও তিনি তাদের স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে তিনি একজন রিপোর্টার।

সেনারা তাকে উপেক্ষা করে পিছনে ঠেলে দিতে থাকে। তারপর তার হিজাব খুলে ফেলে এবং হাঁটুতে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফিলিস্তিনিরা আবদেল্লাতিফকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসে, ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এরপর তাদের বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সূত্র : সিএনএন, মিডল ইস্ট আই

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ