গাজায় ইসরায়েলি হামলায় জাতিসংঘের কর্মীরা হতাহত

বিবিসি
বিবিসি
শেয়ার
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় জাতিসংঘের কর্মীরা হতাহত
বিবিসির যাচাই করা ভিডিওতে দেখা যায়, আহতরা একটি অ্যাম্বুল্যান্স ও জাতিসংঘের গাড়িতে করে হাসপাতালে যাচ্ছেন, যাদের মধ্যে দুজন জাতিসংঘের নীল রঙের প্রতিরক্ষামূলক জ্যাকেট পরিহিত ছিলেন।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, বুধবার গাজায় তাদের একটি কম্পাউন্ড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনায় তাদের এক কর্মী নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে এই ঘটনার সঠিক পরিস্থিতি এখনো স্পষ্ট নয়। পাশাপাশি গাজায় হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি ইসরায়েলের হামলার ফলে ঘটেছে এবং পাঁচজন গুরুতর আহত বিদেশি কর্মী হাসপাতালে পৌঁছেছেন। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দেইর আল-বালাহতে জাতিসংঘ কম্পাউন্ডে হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছে।

এর আগে দুই মাসের যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েল গাজায় লড়াই ফের শুরুর ঘোষণা দেয় এবং একের পর এক হামলায় ৪০০ জনের বেশি নিহত হয় বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, তারা ‘পূর্ণ শক্তিতে লড়াই ফের শুরু করেছে।’

প্রাথমিকভাবে জাতিসংঘ জানিয়েছিল, তাদের দুজন কর্মী নিহত হয়েছেন। তবে পরে তারা স্পষ্ট করে জানায়, দ্বিতীয় ব্যক্তি জাতিসংঘের কর্মী ছিলেন না।

জাতিসংঘের প্রকল্প সেবা অফিস (ইউএনওপিএস) জানায়, ‘নিরিবিলি’ এলাকায় অবস্থিত ওই ভবনে ‘বিস্ফোরক ফেলা বা ছোড়া হয়েছিল’। এই ঘটনায় ব্যবহৃত গোলাবারুদের ধরন বা প্রকৃতি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ইউএনওপিএসের নির্বাহী পরিচালক জর্জ মোরেইরা দা সিলভা এটি ‘দুর্ঘটনা নয়’ উল্লেখ করে বলেন, ‘জাতিসংঘের কর্মী ও তাদের স্থাপনা সব পক্ষের জন্য সুরক্ষিত থাকা উচিত।’

বিবিসির যাচাই করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আহত ব্যক্তিরা একটি অ্যাম্বুল্যান্স ও জাতিসংঘের গাড়িতে করে হাসপাতালে যাচ্ছেন, যাদের মধ্যে দুজন জাতিসংঘের নীল রঙের প্রতিরক্ষামূলক জ্যাকেট পরিহিত ছিলেন।

আরো পড়ুন
জেরুজালেমে নেতানিয়াহুবিরোধী বিশাল বিক্ষোভ

জেরুজালেমে নেতানিয়াহুবিরোধী বিশাল বিক্ষোভ

 

এদিকে ইসরায়েল গাজায় লড়াই ফের শুরুর ঘোষণা দেওয়ার পর রাতভর বিমান হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, আল-মাওয়াসি মানবিক এলাকায় ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় একটি তাঁবুতে দুই বেসামরিক ব্যক্তি নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছে। সূত্র হিসেবে তারা রেড ক্রিসেন্টের চিকিৎসকদের উদ্ধৃত করেছে।

অন্যদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা হামাসের একটি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে, যেখান থেকে ইসরায়েলের দিকে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। হামাস নিয়ন্ত্রিত নৌযানগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবারের তুলনায় বোমাবর্ষণের মাত্রা কিছুটা কম হলেও ইসরায়েলের নতুন হামলা অব্যাহত রয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা ও জরুরি ত্রাণ বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল টম ফ্লেচার মঙ্গলবারের হামলা সম্পর্কে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের মাত্রা এখন সম্পূর্ণ মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।’

ওয়াফা আরো জানায়, খান ইউনিসের উত্তরে রাতভর বিমান হামলায় এক নারী ও এক শিশু নিহত হয়েছে, আর গাজা সিটিতে অন্য এক হামলায় চারজন নিহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৩৬ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ১৮৩ জন শিশু।

১৯ জানুয়ারি একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি-বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর মঙ্গলবারের হামলাই ছিল সবচেয়ে বড় আক্রমণ। তবে ইসরায়েল ও হামাস এই চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে যেতে ব্যর্থ হয়। চুক্তিতে তিনটি ধাপ ছিল, যার দ্বিতীয় ধাপে নিয়ে আলোচনা ছয় সপ্তাহ আগে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। প্রস্তাবিত দ্বিতীয় ধাপে ইসরায়েলকে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা ছিল, তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ধাপের সময়সীমা বাড়ানোর ওপর জোর দেয়, যাতে আরো ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তির বিনিময়ে হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা যায়।

নেতানিয়াহু যুদ্ধ ফের শুরুর পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য হলো ‘জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা ও হামাসকে নির্মূল করা’। তবে গাজায় আটক জিম্মিদের স্বজনরা এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করে বলেছে, এতে সরকার তাদের প্রিয়জনদের ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ইতিমধ্যে হাজারো ইসরায়েলি জেরুজালেমে বিক্ষোভে যোগ দিয়ে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে দুর্বল করা ও গাজায় যুদ্ধে ফের জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ তুলেছে, যা গৃহবন্দিদের পরোয়া না করেই চালানো হচ্ছে। ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাস এখনো ৫৯ জন জিম্মিকে আটকে রেখেছে, যার মধ্যে ২৪ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

পাকিস্তানে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ পোস্টের অভিযোগে সাংবাদিক আটক

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
পাকিস্তানে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ পোস্টের অভিযোগে সাংবাদিক আটক
প্রতীকী ছবি

পাকিস্তানের অনলাইন মিডিয়া চ্যানেল ‘রাফতার’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক ফারহান মল্লিককে রাষ্ট্রদ্রোহী পোস্ট ও ভুয়া তথ্য প্রচারের অভিযোগে শুক্রবার (২১ মার্চ) আদালতে তোলা হয়েছে।

সংশোধিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফআইএ তাকে গ্রেপ্তার করে। আদালত তাকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ফারহান মল্লিক ইচ্ছাকৃতভাবে এমন তথ্য প্রচার করেছেন, যা ‘মিথ্যা বা আতঙ্ক সৃষ্টিকারী’ হতে পারে।

সংশোধিত আইনের আওতায় এ ধরনের অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

রাফতার চ্যানেল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এখন পর্যন্ত কোনো শক্তিশালী প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি, যা মল্লিক বা তার চ্যানেলের বিরুদ্ধে আনা রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগকে সমর্থন করে।’

বিগত কয়েক বছরে রাফতার চ্যানেলের বেশ কয়েকটি ভিডিও মিলিয়নের বেশিবার দেখা হয়েছে, যেখানে পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভূমিকার বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

এই গ্রেপ্তারের পর পাকিস্তানের মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

হিউম্যান রাইটস কমিশন অব পাকিস্তান এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সরকারি সংস্থাগুলোর এই ধরনের পদক্ষেপ নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলছে।’

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে পাকিস্তান বর্তমানে ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৫২তম অবস্থানে রয়েছে।

সংশোধিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবী ইমান মাজারি বলেছেন, ‘এই আইনের পরিবর্তনগুলো মূলত মতপ্রকাশ দমন, সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার ও সরকারের সমালোচনাকে বন্ধ করার জন্য আনা হয়েছে।

পাকিস্তানে দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেটের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। দেশটিতে একাধিকবার ইউটিউব, টিকটক সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। এমনকি বর্তমানে সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’ নিষিদ্ধ রয়েছে।

মন্তব্য

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ক্যান্সার হাসপাতাল বিধ্বস্ত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ক্যান্সার হাসপাতাল বিধ্বস্ত
সংগৃহীত ছবি

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ক্যান্সার রোগীদের জন্য পরিচালিত ‘তার্কিস-প্যালেস্টিনিয়ান ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল’ ধ্বংস হয়েছে।

হাসপাতালটি নেতজারিম করিডরের সালাহ আল দীন স্ট্রিটের কাছে অবস্থিত। এটি এর আগে, ইসরায়েলি বাহিনীর কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

২০১৭ সালে তুরস্ক ৩৪ মিলিয়ন ডলার অনুদানে দিয়ে হাসপাতালটি পুনর্নির্মাণ করা হয়।

শুক্রবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, আজ এটি সম্পূর্ণরূপে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ হাসপাতালে প্রতি বছর ১০,০০০ রোগীকে ক্যান্সারের চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ইসরায়েল নেতজারিম করিডর সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছে। এরপরই হাসপাতালটি ধ্বংস করে দেওয়া হলো।

গাজার উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের আল-রশিদ স্ট্রিট ব্যবহার করতে হবে, যা ইসরায়েলি আক্রমণের কারণে ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।

মন্তব্য

তুরস্কে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ চলছেই

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
তুরস্কে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ চলছেই
ছবি : এএফপি

তুরস্কে ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সরকারের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। তুরস্কে বিক্ষোভ-সমাবেশের ওপর চার দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।

দেশটির রাজনীতিতে সেক্যুলার দল হিসেবে পরিচিত রিপাবলিকান পিপলস পার্টির-সিএইচপি নেতা একরেম ইমামোগলু।

২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য দলের প্রার্থী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করার কথা ছিল এ সপ্তাহের শেষের দিকে।

এর মধ্যেই গত বুধবার দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তার অভিযোগে আরো ১০৫ জনের সঙ্গে ইমামোগুলোকেও আটক করা হয়।

এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘উসকানিমূলক’ পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে আরো অনেককে আটক করে সরকার। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দ্বিতীয় দিনের বিক্ষোভ-সমাবেশ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

তার ভাষায়, নাটক করছে বিরোধীরা।

এরদোয়ান বলেন, ‘তারা এতটাই ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে যে, পুলিশকে আক্রমণ এবং বিচারক ও আইনজীবীদের হুমকি দেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে পৌঁছে গেছে।’

এদিকে, সিএইচপি পার্টির নেতা ওজগুর ওজেল অভিযোগ করেছেন, ১০৫ জনকে আটক করে বিরোধীদের দমনের কৌশল নিয়েছে সরকার।

ইস্তাম্বুলের সিটি হলের বাইরে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি আরো বলেন, ‘সরকারের সেই চেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার অধিকার জনগণের রয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়েরলিকায়া ঘোষণা করেছেন অনলাইনে ২৬১ জন ‘সন্দেহভাজন অ্যাকাউন্ট ম্যানেজারকে’ শনাক্ত করেছে পুলিশ।

তাদের বিরুদ্ধে ‘মানুষকে ঘৃণা ও শত্রুতার দিকে ঠেলে দেওয়া’ এবং ‘অপরাধে প্ররোচনা দেওয়ার’ অভিযোগ রয়েছে।

ইয়েরলিকায়া বলেন, ‘৩৭ সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে এবং অন্যদেরও আটকের চেষ্টা চলছে।’

বৃহস্পতিবার ইমামোগলুর এক্স অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বার্তায়, ‘এই অন্যায় রুখে দাঁড়াতে’ তুরস্কের জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। পরিস্থিতির জন্য এরদোয়ানের দলকে দায়ী করে বিচার বিভাগকেও সোচ্চার হওয়ার তাগিদ দেওয়া হয় ওই পোস্টে।

এতে বলা হয়, ‘পরিস্থিতি শুধু রাজনৈতিক দল ও আদর্শের প্রশ্নে আটকে নেই আর। এখন সাধারণ মানুষ ও তাদের পরিবার পরিজনের ওপরও এর প্রভাব পড়ছে। এখনই সময় আওয়াজ তোলার।’

শহরের বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনে লাউডস্পিকারে ইমামোগলুর একটি বক্তৃতার রেকর্ড বাজছে। যাত্রীরা যখন ট্রেনে উঠতে উঠতে শুনছেন, ‘আপনাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমি অঙ্গীকার করছি, এই লড়াইয়ে জিতব।’

রাস্তায় মিছিল করছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। তুরস্কের বিরোধীদের স্লোগান হিসেবে পরিচিত সেই কথাগুলোতে বলা হচ্ছে, ‘আমরা ভীত নই, চুপ করিয়ে রাখা যাবে না আমাদের, আমরা মানব না।’

তবে, এক কোটি ৬০ লাখের বেশি জনসংখ্যার এই শহরে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা এখনও তুলনামূলকভাবে কম। আপাতত, ইমামোগলুকে মুক্তি দিতে এরদোগানের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়ানোর সম্ভাবনাও কম তাদের।

গত কয়েক মাসে দেশব্যাপী বড় ধরণের অভিযান চালিয়েছে তুরস্ক সরকার। বিরোধী রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং বিনোদন জগতের ব্যক্তিত্বরা ছিল সেইসব অভিযানের লক্ষ্যবস্তু। তারই ধারাবাহিকতায় ইমামোগলু এবং অন্যদের গ্রেপ্তার করা হলো।

আগামীতে এমন অভিযানের অংশ হিসেবে আরও অনেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হবে বলে আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। ভয় দেখাতেই তাদের আটক করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অবশ্য গ্রেপ্তারের জন্য এরদোয়ানকে দায়ী করার সমালোচনা করেছে বিচার মন্ত্রণালয়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর জোর দিয়েছে তারা।

গত বছর দ্বিতীয় মেয়াদে ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হন একরেম ইমামোগলু। সেই স্থানীয় নির্বাচনে ইস্তাম্বুল এবং আঙ্কারায় জয়ী হয় তার দল সিএইচপি।

এরদোয়ান ক্ষমতায় আসার পর ওই নির্বাচনেই প্রথমবারের মতো তার দল সারা দেশে ব্যালট বাক্সের হিসাব-নিকাশে পরাজিত হয়েছিল। ব্যক্তিগতভাবে এরদোয়ানের জন্যও ধাক্কা ছিল এটি। তার রাজনৈতিক বেড়ে ওঠা বিশেষ করে ক্ষমতায় আসার পথে একসময় ইস্তাম্বুলের মেয়রও ছিলেন তিনি।

২২ বছর ধরে তুরস্কের ক্ষমতার শীর্ষে আছেন এরদোয়ান। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি উভয় পদেই দায়িত্ব পালন করেছেন এরদোয়ান।

মেয়াদের বাধ্যবাধকতার কারণে, সংবিধান পরিবর্তন না করলে তিনি ২০২৮ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। অন্যদিকে, আগামী রবিবার প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রার্থী নির্বাচন করবেন সিএইচপির ১৫ লাখ সদস্য। যেখানে, ইমামোগলুই একমাত্র প্রার্থী।

এ ছাড়াও দলটি একটি প্রতীকী নির্বাচনের আয়োজন করতে যাচ্ছে। তুরস্কের বিভিন্ন জেলায় ব্যালট বাক্স রাখার পরিকল্পনা করেছে তারা। আটক মেয়রের প্রতি সমর্থন জানাতে ওই ব্যালট বাক্সগুলোতে নাগরিকদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য

ভারত সরকারের বিরুদ্ধে ইলন মাস্কের এক্সের মামলা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভারত সরকারের বিরুদ্ধে ইলন মাস্কের এক্সের মামলা
সংগৃহীত ছবি

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কন্টেন্ট অপসারণ করতে বেআইনি আদেশের অভিযোগে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্ম এক্স। মুম্বাই থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত ভারত বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে একটি, যারা সরকারিভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কন্টেন্ট অপসারণের জন্য সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অনুরোধ জানায়।

মামলাটি ভারত সরকারের সেন্সরশিপ ক্ষমতার বিরুদ্ধে এক্সের সর্বশেষ চ্যালেঞ্জ।

এমন সময়ে এই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, যখন ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংক ও টেসলা বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারতে প্রবেশের প্রস্ততি নিচ্ছে।

মামলাটি ভারতের তথ্য প্রযুক্তি আইনের একটি বিধানকে কেন্দ্র করা হয়েছে, যার অপব্যবহার করে সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কন্টেন্ট ব্লক করার আদেশ দিয়ে থাকে।

আইনি সংবাদ সম্পর্কিত ভারতীয় ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ‘এক্সের মতে এই বিধানটি তথ্য ব্লক করার ক্ষেত্রে একটি বেআইনি সমান্তরাল কৌশল হিসেবে অপব্যবহার করা হচ্ছে।’

এই সপ্তাহের শুরুতে মামলাটির সংক্ষিপ্ত শুনানিতে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি।

আগামী ২৭ মার্চ দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকের একটি আদালতে এই মামলার শুনানি হবে।

ভারতে কন্টেন্ট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আইনি লড়াইয়ে মাস্কের এই প্ল্যাটফর্মটি নতুন নয়। ২০২৩ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের সমালোচনাকারী টুইট ও অ্যাকাউন্টগুলো অপসারণের আদেশকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করে টুইটার (এক্স-এর আগের নাম)। তখন ভারতীয় আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে প্ল্যাটফর্মটিকে ৬১ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা করে।

প্রায় এক বছর পর এক্স জানায়, নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট ও পোস্টগুলোতে সরকারের ব্লক করার আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট আপিল বিচারাধীন রয়েছে।

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোম্পানিটি এক পোস্টে বলেছিল, ‘আমাদের অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভারত সরকারের ব্লকিং আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট আপিল এখনো বিচারাধীন রয়েছে। আমরা আমাদের নীতি অনুসারে প্রভাবিত ব্যবহারকারীদের এই পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে নোটিশও দিয়েছি।’

পোস্টে আরো বলা হয়, আইনি বিধিনিষেধের কারণে আমরা নির্বাহী আদেশগুলো প্রকাশ করতে পারছি না। তবে আমরা বিশ্বাস করি, স্বচ্ছতার জন্য সেগুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করা অপরিহার্য।

না প্রকাশ করলে জবাবদিহিতার অভাব ও স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিকে পরিচালিত করতে পারে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ