ইউক্রেনে পৌঁছেছে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের নতুন চালান

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইউক্রেনে পৌঁছেছে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের নতুন চালান
ছবিসূত্র : এএফপি

পশ্চিমা এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের একটি নতুন চালান ইউক্রেনে পৌঁছেছে। গতকাল ১৯ মার্চ সাংবাদিকদের কাছে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি এফ-১৬ এসেছে, তবে কতগুলো এফ-১৬ যুদ্ধবিমান তারা পেয়েছেন তা বলেননি। এর আগে রাশিয়ান মিডিয়া দাবি করেছিল, সুমি ওব্লাস্টে একটি এফ-১৬ বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে, এই দাবি ইউক্রেনের বিমান বাহিনী অস্বীকার করেছে।

জেলেনস্কি এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘অতিরিক্ত এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ইউক্রেনে পৌঁছেছে। রাশিয়ানরা মিথ্যা বলেছে যে, গুলি করে যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তারা কিছুই গুলি করে ভূপাতিত করেনি এবং সুখবর হলো, বেশ কয়েকটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ইউক্রেনে পৌঁছেছে।’

আরো পড়ুন
নাইজারে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে ১৩ সেনা নিহত

নাইজারে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে ১৩ সেনা নিহত

 

এদিকে জেলেনস্কি স্পষ্ট করেননি কোথা থেকে যুদ্ধবিমানগুলো সরবরাহ করা হয়েছে।

রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেন এফ-১৬-এর জন্য অনুরোধ করে আসছে, বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশের অনুমোদনের পর প্রথম জেটগুলো ২০২৪ সালের আগস্টে এসে পৌঁছেছিল। সেগুলো ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডস দিয়েছিল।

২০২৫ সালে নেদারল্যান্ডস আরো এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ইউক্রেনকে দেয়। তারা মোট ২৪টি যুদ্ধবিমান, তার যন্ত্রাংশ, ক্ষেপণাস্ত্র দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।

নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, বেলজিয়াম ও নরওয়ে ৬০টিরও বেশি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিতে রাজি হয়েছে। যুক্তরাজ্য ও রোমানিয়া ইউক্রেনের পাইলটদের এফ-১৬-র জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।

এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর ভলোদিমির জেলেনস্কি জানালেন, রাশিয়ার সঙ্গে আংশিক যুদ্ধবিরতিতে তিনি রাজি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ওয়াশিংটন ও কিয়েভের মধ্যে আংশিক যুদ্ধবিরতি নিয়ে যে মতৈক্য হয়েছে তার ফলে দ্রুত বিদ্যুৎকেন্দ্র, বন্দর, রেলের ওপর হামলা বন্ধ হবে।

তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা যতক্ষণ রাজি না হচ্ছি, যতক্ষণ আংশিক যুদ্ধবিরতি নিয়ে নথি তৈরি না হচ্ছে, ততক্ষণ সবকিছুই উড়তে থাকবে(ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র)।

জেলেনস্কি যা বলেছেন

জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আমার খুবই ইতিবাচক, খোলাখুলি ও অর্থপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। আমরা মনে করি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের অধীনে এই বছরের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ফেরানো সম্ভব হবে।’

জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি ও ট্রাম্প ঝাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র মার্কিন তত্ত্বাবধানে রাখা নিয়ে কথা বলেছেন। বর্তমানে রাশিয়া এটি অধিকার করে আছে। তিনি জানিয়েছেন, যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্যে থাকা ইউরোপের এই সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হতে দুই বছর সময় লাগবে। ইউরোপ ও ইউক্রেনের জন্য এই বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা খুবই জরুরি।

সাংবাদিকদের জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, রাশিয়ার পশ্চিম কুরস্ক অঞ্চলে যতদিন ইউক্রেনের সেনা থাকবে, ততদিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুাতন পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবেন না।

ট্রাম্প কি মস্কোর দাবি মেনে নেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন, এই প্রশ্নের জবাবে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘সেরকম কিছুই হয়নি। আপনারা জানেন আমি খোলাখুলি কথা বলি। সেরকম কিছু হলে আমি নিজে থেকেই বলতাম।’

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য

ট্রাম্প জানিয়েছেন, ‘ঘণ্টাখানেক সময় ধরে জেলেনস্কির সঙ্গে আমার খুব ভালোভাবে কথা হয়েছে। প্রসিডেন্ট পুটিনের সঙ্গে আমার যে আলোচনা হয়েছিল, তার ভিত্তিতে কথা হয়েছে। ইউক্রেন তাদের চাহিদা ও অনুরোধের কথা জানিয়েছে।’

ট্রাম্প বলেছেন, ‘নেতারা ঠিক পথেই আছেন। আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়ালটজকে বলব, যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তার বিবরণ দিতে।’

ট্রাম্প জানিয়েছেন, আলোচনার সময় তিনি প্রস্তাব দেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্র নিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকলে তার সুরক্ষা নিশ্চিত থাকবে। প্রস্তাবিত মার্কিন-ইউক্রেন খনিজ চুক্তি নিয়েও কথা হয়েছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লিভিট বলেছেন, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আংশিক যুদ্ধবিরতিতে রাজি।

সূত্র : ডয়চে ভেলে, দ্য কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্ট

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

চীনে বিয়ে করা আরো সহজ হলো

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
চীনে বিয়ে করা আরো সহজ হলো
প্রতীকী ছবি : এএফপি

চীন বিয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া সহজতর করতে ও দম্পতিদের আর্থিক চাপ কমাতে শনিবার কিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে, যা জন্মহার বৃদ্ধির জন্য বেইজিংয়ের সর্বশেষ উদ্যোগ। 

সামাজিক কলঙ্ক ও কম সুরক্ষার কারণে চীনে বিয়ের বাইরে সন্তান জন্মদান অত্যন্ত বিরল। দম্পতিরা বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া ও সন্তান ধারণে আগ্রহ হারানোর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যেমন নগদ প্রণোদনা ও শিশুর যত্নের পরিকাঠামো নির্মাণের প্রতিশ্রুতি।

নতুন পদক্ষেপটি দম্পতিদের তাদের বাসস্থানেই বিয়ের নিবন্ধন করার সুযোগ দেবে।

সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি শনিবার একটি সরকারি নথির উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর জানায়। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, ‘এই সংস্কারটি তাদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য, যারা তাদের নিবন্ধিত জন্মস্থানের বাইরে বসবাস বা কাজ করেন, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম।’

এখন পর্যন্ত দম্পতিদের যে জায়গায় বর বা কনের নাম নাগরিক নিবন্ধনে ছিল, সেখানে গিয়ে নিবন্ধন করতে হতো, যা ভ্রমণ ও আর্থিক বোঝা সৃষ্টি করত। যেমন বেইজিংয়ের উত্তরাঞ্চলে বসবাসরত একটি দম্পতি যদি দেশের অন্য কোনো জায়গা থেকে আসতেন, তবে তারা রাজধানীতে তাদের বিয়ে নিবন্ধন করতে পারতেন না।

 

সিসিটিভি বলেছে, ‘জনগণের প্রত্যাশার প্রতি আরো ভালোভাবে সাড়া দেওয়ার জন্য এবং পাইলট প্রকল্পগুলোর সফলতার ভিত্তিতে, দেশের পুরোপুরি বিয়ে নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হবে।’

অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে চীনে গত বছর বিয়ের সংখ্যা এক-পঞ্চমাংশ ও টানা তৃতীয় বছর জনসংখ্যা হ্রাস হয়েছে। সিসিটিভি জানিয়েছে, এই বিষয়টি সমাধান করতে আরো একটি পদক্ষেপ হিসেবে নাগরিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় যৌতুক ও বিয়ের অনুষ্ঠানে অপচয়ের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাবে।

যৌতুক প্রায়ই শ্বশুরবাড়ির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে এবং একটি তরুণ দম্পতির জীবনযাত্রার জন্য অবদান হিসেবে দেখা হয়।

তবে এই খরচ কখনো কখনো অত্যন্ত বেশি হতে পারে এবং বরের পরিবারে আর্থিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে, পাশাপাশি সামাজিক অসমতা বাড়াতে পারে।

বিভিন্ন কারণে তরুণ চীনারা বিয়ে ও সন্তান ধারণে হতাশাগ্রস্ত, এর মধ্যে একটি বড় কারণ হলো অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য সঞ্চয়ের অভাব, যা সাধারণত বিয়ের আগে করতে হয়। শিক্ষার খরচও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেমন ডে কেয়ারের খরচ বা প্রাইভেট টিউশন, যা একটি শিশুর একাডেমিক সাফল্যের জন্য প্রায় অপরিহার্য হিসেবে দেখা হয়।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

নাইজারে মসজিদে হামলায় নিহত ৪৪, ৩ দিনের শোক ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নাইজারে মসজিদে হামলায় নিহত ৪৪, ৩ দিনের শোক ঘোষণা
নাইজারে পুলিশের টহল। ফাইল ছবি : এএফপি

নাইজারের সরকার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একটি মসজিদে হামলার ঘটনায় তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে শুক্রবার প্রচারিত এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দেশটির সীমান্তবর্তী কোকোরু শহরের ফামবিতা এলাকায় এই ‘নৃশংস’ সশস্ত্র হামলায় অন্তত ৪৪ জন নিহত ও আরো ১৩ জন আহত হয়েছে।  

পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে ২০১২ সালের তুয়ারেগ বিদ্রোহের পর মালির উত্তরাঞ্চলে আল-কায়েদা ও আইএসআইএল (আইএসআইএস) সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোর উত্থানের ফলে। এরপর সহিংসতা প্রতিবেশী দেশ নাইজার ও বুরকিনা ফাসোতে ছড়িয়ে পড়ে এবং সাম্প্রতিক সময়ে টোগো ও ঘানার মতো পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলীয় দেশগুলোতেও বিস্তৃত হয়েছে।

 

নাইজারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলাটি মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসে জুমার নামাজের সময় মসজিদে সংঘটিত হয়। ভারি অস্ত্রে সজ্জিত সন্ত্রাসীরা মসজিদ ঘিরে ফেলে এবং অস্বাভাবিক নিষ্ঠুরতার সঙ্গে গণহত্যা চালায়। তারা স্থানীয় একটি বাজার ও বেশ কয়েকটি বাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করে।  

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই হামলার জন্য ইসলামিক স্টেট ইন দ্য গ্রেট সাহারা (ইআইজিএস) নামের আইএসআইএল সংযুক্ত একটি গোষ্ঠীকে দায়ী করা হচ্ছে।

তবে এই অভিযোগের বিষয়ে এখনো ইআইজিএসের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। নাইজারে আগের বেশ কয়েকটি হামলার দায় আল-কায়েদার সহযোগী গোষ্ঠীগুলো স্বীকার করেছিল।

এদিকে সরকার হামলাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সামরিক শাসিত নাইজারে প্রায়ই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়, যেখানে সাধারণ মানুষ সহিংসতার শিকার হয়ে থাকে।

সংঘাতবিষয়ক তথ্য সংরক্ষণকারী বেসরকারি সংস্থা এসিএলইডির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত নাইজারে কমপক্ষে দুই হাজার ৪০০ জন নিহত হয়েছে।

এ ছাড়া সাহেল অঞ্চলে সামগ্রিকভাবে কয়েক লাখ মানুষ নিহত ও লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো শহর, গ্রাম ও সরকারি নিরাপত্তা স্থাপনায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারগুলোর নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারে ব্যর্থতা ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে মালিতে দুটি, বুরকিনা ফাসোতে দুটি ও নাইজারে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিন দেশেই এখনো সামরিক শাসন চলছে, যদিও আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে নির্বাচনের আয়োজন করার জন্য।

এই অভ্যুত্থানগুলোর পর থেকে দেশগুলোর নেতৃত্ব পশ্চিমা মিত্রদের থেকে দূরে সরে গিয়ে রাশিয়ার সামরিক সহায়তা গ্রহণের দিকে ঝুঁকছে।

সূত্র : আলজাজিরা

মন্তব্য

সৌদি আরবে শান্তি আলোচনা নিয়ে অগ্রগতির আশা মস্কোর

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
সৌদি আরবে শান্তি আলোচনা নিয়ে অগ্রগতির আশা মস্কোর
সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়া সোমবার সৌদি আরবে অনুষ্ঠিতব্য আলোচনায় ‘কিছুটা অগ্রগতি’ অর্জনের আশা করছে। দেশটির এক আলোচক রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন, যার লক্ষ্য হচ্ছে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধ থামানোর পথ খোঁজা।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মস্কো প্রত্যাখ্যান করেছে।

এর বদলে তারা কেবল জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এ প্রস্তাব সত্ত্বেও আলোচনা শুরুর আগ পর্যন্ত উভয় পক্ষই বিমান হামলা চালিয়ে গেছে। শুক্রবার রাতে রাশিয়ার একটি হামলায় ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর জাপোরিঝিয়ায় তিনজনের একটি পরিবার নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।  

সৌদি আরবে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের আলোচকরা আলাদাভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

মার্কিন দূত কিথ কেলোগ এটিকে হোটেল কক্ষের মধ্যে ‘শাটল ডিপ্লোমেসি’ বলে উল্লেখ করেছেন। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কূটনৈতিক তৎপরতা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।

রাশিয়ার প্রতিনিধি দলনেতা সিনেটর গ্রিগরি কারাসিন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল জভেজদাকে বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছু অগ্রগতি অর্জন করতে চাই।’ তবে তিনি নির্দিষ্ট করে কিছু উল্লেখ করেননি।

তিনি আরো জানান, তার সহআলোচক ও এফএসবি উপদেষ্টা সের্গেই বেসেদা আলোচনা প্রক্রিয়ায় ‘লড়াইপূর্ণ ও গঠনমূলক’ মনোভাব নিয়ে অংশ নেবেন।  

এদিকে এক দিন আগেই একজন জ্যেষ্ঠ ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কিয়েভ অন্তত জ্বালানি, অবকাঠামো ও সমুদ্রবন্দর লক্ষ্যবস্তুতে হামলা বন্ধ করার বিষয়ে সমঝোতা করতে চায়।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন চ্যানেল জভেজদাকে কারাসিন বলেন, ‘আমরা অন্তত একটি সমস্যার সমাধানের জন্য লড়তে যাচ্ছি।’ রাশিয়ার প্রতিনিধিদল রবিবার সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা দেবে এবং মঙ্গলবার ফিরে আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি।  

পরিবার নিহত
শান্তি আলোচনা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে রাশিয়ার আলোচক নির্বাচন নিয়ে।

কারণ আলোচকদের কেউই ক্রেমলিন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন। কারাসিন একজন কূটনীতিক, যিনি বর্তমানে রাশিয়ার সংসদের উচ্চকক্ষে দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে বেসেদা দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির সঙ্গে যুক্ত এবং বর্তমানে সংস্থাটির পরিচালককে পরামর্শ দিচ্ছেন। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ইইউপন্থী বিপ্লবের সময় কিয়েভে রক্তক্ষয়ী দমন-পীড়নের ঘটনায় বেসেদার ভূমিকা ছিল বলে স্বীকার করে এফএসবি।  

ইউক্রেন রাশিয়ার সদিচ্ছা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে এবং চলমান হামলার জন্য দেশটির সমালোচনা করেছে, যদিও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত মঙ্গলবার সেনাবাহিনীকে ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো থেকে বিরত থাকতে বলেছেন।

এদিকে ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনী শনিবার জানিয়েছে, রাশিয়া রাতভর ১৭৯টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। জাপোরিঝিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে শুক্রবার রাতে এক পরিবারের ওপর ড্রোন হামলা চালানো হয়, এতে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীসহ পুরো পরিবার নিহত হয়। গভর্নর ইভান ফেদোরভ টেলিগ্রামে জানান, ‘মেয়েটি ও তার বাবার মরদেহ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। চিকিৎসকরা দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা মায়ের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন।’  

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির দপ্তরের প্রধান আন্দ্রি ইয়ারমাক বলেন, ‘রাশিয়া আবারও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে এবং একটি শাহেদ ড্রোন ব্যবহার করে জাপোরিঝিয়ায় ১৪ বছরের এক শিশুকে হত্যা করেছে।’ রাশিয়া ইরানি ধাঁচের এই বিস্ফোরক ড্রোনগুলো দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসছে।  

ইউক্রেনও রাশিয়ায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে, এতে দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ-অন-ডন শহরে দুজন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি পূর্বাঞ্চলীয় শহর পোক্রোভস্কে অবস্থানরত সেনাদের পরিদর্শন করেছেন। এই শহরটি কয়েক মাস ধরে রুশ বাহিনীর অবরোধের শিকার।

মন্তব্য

কড়াইয়ে গুলি ছেঁকছিলেন এসআই, সেখান থেকেই বিস্ফোরণ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
কড়াইয়ে গুলি ছেঁকছিলেন এসআই, সেখান থেকেই বিস্ফোরণ
প্রতীকী ছবি : এএফপি

ভারতের কেরালা রাজ্যে গত ১০ মার্চ আচমকাই বিস্ফোরণ হয় কোচি পুলিশের ত্রিপুনিথুরা পুলিশ শিবিরে। বিস্ফোরণের কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশের একটি দল। এবার জানা গেল কিভাবে ঘটেছিল সেই বিস্ফোরণ। ভারতীয় গণমাধ্যম শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি বলছে, কোচি সিটি পুলিশের আর্মড রিজার্ভ ক্যাম্পে বাহিনীর গোলাবারুদ শাখার দায়িত্বে যে কর্মকর্তা ছিলেন, তার গাফিলতিতেই এমন ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ কমিশনার পুত্তা বিমলাদিত্যের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপপরিদর্শক মর্যাদার এক কর্মকর্তা সেদিন গুলি পরীক্ষা করে দেখছিলেন। শিবিরের অস্ত্রাগারে মরচে ধরা বেশ কিছু গুলি চোখে পড়ে তার। সেই গুলিগুলো ঠিক আছে কি না, দেখার জন্য তিনি কড়াইয়ে রেখে ছেঁকা শুরু করেন।

আর তার জেরেই বিস্ফোরণ হয় পুলিশ শিবিরে।

আনন্দবাজার অনুসারে, সেই ঘটনায় পুলিশ শিবিরের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে কেউ হতাহত হননি। এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে, তা কারো ধারণাতেই ছিল না বলে পুলিশের সূত্রের দাবি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ