রুশ বোমারু বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা, ভয়াবহ বিস্ফোরণ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
রুশ বোমারু বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা, ভয়াবহ বিস্ফোরণ
ছবিসূত্র : ভিডিও থেকে সংগৃহীত

রাশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বোমারু বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেন ড্রোন হামলা চালিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা এই তথ্য জানিয়েছেন। এর ফলে একটি বিকট বিস্ফোরণ এবং আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

 

রয়টার্স কর্তৃক যাচাইকৃত ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, বিমানঘাঁটি থেকে একটি বিশাল বিস্ফোরণ ছড়িয়ে পড়েছে এবং কাছাকাছি কটেজগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা রাশিয়ান অঞ্চলগুলোতে ১৩২টি ইউক্রেনীয় ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। অন্যান্য যাচাইকৃত ভিডিওতে ভোরের আকাশে বিশাল ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা গেছে এবং তীব্র আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

রাশিয়ার সারাতোভ ওব্লাস্টের শহর এঙ্গেলসের ওই ঘাঁটি সোভিয়েত আমলে বানানো।

এখানে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ভারী কৌশলগত বোমারু বিমান ‘টুপোলেভ টিইউ-১৬০’ রয়েছে, যা ‘হোয়াইট সোয়ান’ নামেও পরিচিত।

সারাতোভের গভর্নর রোমান বুসারগিন বলেছেন, এঙ্গেলস শহরে একটি ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলা হয়েছে, যার ফলে একটি বিমানঘাঁটিতে আগুন লেগেছে। কাছাকাছি বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি নির্দিষ্টভাবে এঙ্গেলস ঘাঁটির কথা উল্লেখ করেননি, তবে এটি এই এলাকার প্রধান বিমানঘাঁটি।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের বাহিনী বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে এবং দ্বিতীয় দফায় গোলাবারুদের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। কিয়েভ আরো জানিয়েছে, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর জন্য এঙ্গেলস ঘাঁটি ব্যবহার করেছে।

রাশিয়ার স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, হামলায় ১০ জন আহত হয়েছেন। কিছু স্থানীয় বাসিন্দা তাদের বাগানে ইউক্রেনীয় ড্রোনের বিভিন্ন অংশ পেয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। শট টেলিগ্রাম চ্যানেল জানিয়েছে, ইউক্রেন পিডি-২ এবং লিউতি ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে।

এঙ্গেলস জেলা প্রধান ম্যাক্সিম লিওনভ স্থানীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার কথা জানালেও বিস্তারিত কিছু বলেননি। রয়টার্স স্বাধীনভাবে বিমানঘাঁটিতে কী ঘটেছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি।

ইউক্রেন ২০২২ সালের ডিসেম্বরেও এঙ্গেলস বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল। গত জানুয়ারিতে তারা দাবি করেছিল, ঘাঁটিতে পরিবেশনকারী একটি তেল ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। যার ফলে বিশাল আগুন লেগে যায় এবং নেভাতে পাঁচ দিন সময় লাগে। ইউক্রেনের একটি নিরাপত্তা সূত্র সেই সময় বলেছিল, এঙ্গেলস ঘাঁটিতে গাইডেড বোমা এবং ক্ষেপণাস্ত্র ধারণকারী একটি গুদামে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে।

সূত্র : রয়টার্স

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

নাইজারে মসজিদে হামলায় নিহত ৪৪, ৩ দিনের শোক ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নাইজারে মসজিদে হামলায় নিহত ৪৪, ৩ দিনের শোক ঘোষণা
নাইজারে পুলিশের টহল। ফাইল ছবি : এএফপি

নাইজারের সরকার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একটি মসজিদে হামলার ঘটনায় তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে শুক্রবার প্রচারিত এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দেশটির সীমান্তবর্তী কোকোরু শহরের ফামবিতা এলাকায় এই ‘নৃশংস’ সশস্ত্র হামলায় অন্তত ৪৪ জন নিহত ও আরো ১৩ জন আহত হয়েছে।  

পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে ২০১২ সালের তুয়ারেগ বিদ্রোহের পর মালির উত্তরাঞ্চলে আল-কায়েদা ও আইএসআইএল (আইএসআইএস) সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোর উত্থানের ফলে। এরপর সহিংসতা প্রতিবেশী দেশ নাইজার ও বুরকিনা ফাসোতে ছড়িয়ে পড়ে এবং সাম্প্রতিক সময়ে টোগো ও ঘানার মতো পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলীয় দেশগুলোতেও বিস্তৃত হয়েছে।

 

নাইজারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলাটি মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসে জুমার নামাজের সময় মসজিদে সংঘটিত হয়। ভারি অস্ত্রে সজ্জিত সন্ত্রাসীরা মসজিদ ঘিরে ফেলে এবং অস্বাভাবিক নিষ্ঠুরতার সঙ্গে গণহত্যা চালায়। তারা স্থানীয় একটি বাজার ও বেশ কয়েকটি বাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করে।  

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই হামলার জন্য ইসলামিক স্টেট ইন দ্য গ্রেট সাহারা (ইআইজিএস) নামের আইএসআইএল সংযুক্ত একটি গোষ্ঠীকে দায়ী করা হচ্ছে।

তবে এই অভিযোগের বিষয়ে এখনো ইআইজিএসের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। নাইজারে আগের বেশ কয়েকটি হামলার দায় আল-কায়েদার সহযোগী গোষ্ঠীগুলো স্বীকার করেছিল।

এদিকে সরকার হামলাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সামরিক শাসিত নাইজারে প্রায়ই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়, যেখানে সাধারণ মানুষ সহিংসতার শিকার হয়ে থাকে।

সংঘাতবিষয়ক তথ্য সংরক্ষণকারী বেসরকারি সংস্থা এসিএলইডির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত নাইজারে কমপক্ষে দুই হাজার ৪০০ জন নিহত হয়েছে।

এ ছাড়া সাহেল অঞ্চলে সামগ্রিকভাবে কয়েক লাখ মানুষ নিহত ও লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো শহর, গ্রাম ও সরকারি নিরাপত্তা স্থাপনায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারগুলোর নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারে ব্যর্থতা ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে মালিতে দুটি, বুরকিনা ফাসোতে দুটি ও নাইজারে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিন দেশেই এখনো সামরিক শাসন চলছে, যদিও আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে নির্বাচনের আয়োজন করার জন্য।

এই অভ্যুত্থানগুলোর পর থেকে দেশগুলোর নেতৃত্ব পশ্চিমা মিত্রদের থেকে দূরে সরে গিয়ে রাশিয়ার সামরিক সহায়তা গ্রহণের দিকে ঝুঁকছে।

সূত্র : আলজাজিরা

মন্তব্য

সৌদি আরবে শান্তি আলোচনা নিয়ে অগ্রগতির আশা মস্কোর

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
সৌদি আরবে শান্তি আলোচনা নিয়ে অগ্রগতির আশা মস্কোর
সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়া সোমবার সৌদি আরবে অনুষ্ঠিতব্য আলোচনায় ‘কিছুটা অগ্রগতি’ অর্জনের আশা করছে। দেশটির এক আলোচক রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন, যার লক্ষ্য হচ্ছে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধ থামানোর পথ খোঁজা।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মস্কো প্রত্যাখ্যান করেছে।

এর বদলে তারা কেবল জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এ প্রস্তাব সত্ত্বেও আলোচনা শুরুর আগ পর্যন্ত উভয় পক্ষই বিমান হামলা চালিয়ে গেছে। শুক্রবার রাতে রাশিয়ার একটি হামলায় ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর জাপোরিঝিয়ায় তিনজনের একটি পরিবার নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।  

সৌদি আরবে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের আলোচকরা আলাদাভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

মার্কিন দূত কিথ কেলোগ এটিকে হোটেল কক্ষের মধ্যে ‘শাটল ডিপ্লোমেসি’ বলে উল্লেখ করেছেন। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কূটনৈতিক তৎপরতা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।

রাশিয়ার প্রতিনিধি দলনেতা সিনেটর গ্রিগরি কারাসিন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল জভেজদাকে বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছু অগ্রগতি অর্জন করতে চাই।’ তবে তিনি নির্দিষ্ট করে কিছু উল্লেখ করেননি।

তিনি আরো জানান, তার সহআলোচক ও এফএসবি উপদেষ্টা সের্গেই বেসেদা আলোচনা প্রক্রিয়ায় ‘লড়াইপূর্ণ ও গঠনমূলক’ মনোভাব নিয়ে অংশ নেবেন।  

এদিকে এক দিন আগেই একজন জ্যেষ্ঠ ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কিয়েভ অন্তত জ্বালানি, অবকাঠামো ও সমুদ্রবন্দর লক্ষ্যবস্তুতে হামলা বন্ধ করার বিষয়ে সমঝোতা করতে চায়।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন চ্যানেল জভেজদাকে কারাসিন বলেন, ‘আমরা অন্তত একটি সমস্যার সমাধানের জন্য লড়তে যাচ্ছি।’ রাশিয়ার প্রতিনিধিদল রবিবার সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা দেবে এবং মঙ্গলবার ফিরে আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি।  

পরিবার নিহত
শান্তি আলোচনা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে রাশিয়ার আলোচক নির্বাচন নিয়ে।

কারণ আলোচকদের কেউই ক্রেমলিন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন। কারাসিন একজন কূটনীতিক, যিনি বর্তমানে রাশিয়ার সংসদের উচ্চকক্ষে দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে বেসেদা দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির সঙ্গে যুক্ত এবং বর্তমানে সংস্থাটির পরিচালককে পরামর্শ দিচ্ছেন। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ইইউপন্থী বিপ্লবের সময় কিয়েভে রক্তক্ষয়ী দমন-পীড়নের ঘটনায় বেসেদার ভূমিকা ছিল বলে স্বীকার করে এফএসবি।  

ইউক্রেন রাশিয়ার সদিচ্ছা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে এবং চলমান হামলার জন্য দেশটির সমালোচনা করেছে, যদিও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত মঙ্গলবার সেনাবাহিনীকে ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো থেকে বিরত থাকতে বলেছেন।

এদিকে ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনী শনিবার জানিয়েছে, রাশিয়া রাতভর ১৭৯টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। জাপোরিঝিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে শুক্রবার রাতে এক পরিবারের ওপর ড্রোন হামলা চালানো হয়, এতে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীসহ পুরো পরিবার নিহত হয়। গভর্নর ইভান ফেদোরভ টেলিগ্রামে জানান, ‘মেয়েটি ও তার বাবার মরদেহ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। চিকিৎসকরা দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা মায়ের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন।’  

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির দপ্তরের প্রধান আন্দ্রি ইয়ারমাক বলেন, ‘রাশিয়া আবারও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে এবং একটি শাহেদ ড্রোন ব্যবহার করে জাপোরিঝিয়ায় ১৪ বছরের এক শিশুকে হত্যা করেছে।’ রাশিয়া ইরানি ধাঁচের এই বিস্ফোরক ড্রোনগুলো দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসছে।  

ইউক্রেনও রাশিয়ায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে, এতে দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ-অন-ডন শহরে দুজন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি পূর্বাঞ্চলীয় শহর পোক্রোভস্কে অবস্থানরত সেনাদের পরিদর্শন করেছেন। এই শহরটি কয়েক মাস ধরে রুশ বাহিনীর অবরোধের শিকার।

মন্তব্য

কড়াইয়ে গুলি ছেঁকছিলেন এসআই, সেখান থেকেই বিস্ফোরণ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
কড়াইয়ে গুলি ছেঁকছিলেন এসআই, সেখান থেকেই বিস্ফোরণ
প্রতীকী ছবি : এএফপি

ভারতের কেরালা রাজ্যে গত ১০ মার্চ আচমকাই বিস্ফোরণ হয় কোচি পুলিশের ত্রিপুনিথুরা পুলিশ শিবিরে। বিস্ফোরণের কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশের একটি দল। এবার জানা গেল কিভাবে ঘটেছিল সেই বিস্ফোরণ। ভারতীয় গণমাধ্যম শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি বলছে, কোচি সিটি পুলিশের আর্মড রিজার্ভ ক্যাম্পে বাহিনীর গোলাবারুদ শাখার দায়িত্বে যে কর্মকর্তা ছিলেন, তার গাফিলতিতেই এমন ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ কমিশনার পুত্তা বিমলাদিত্যের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপপরিদর্শক মর্যাদার এক কর্মকর্তা সেদিন গুলি পরীক্ষা করে দেখছিলেন। শিবিরের অস্ত্রাগারে মরচে ধরা বেশ কিছু গুলি চোখে পড়ে তার। সেই গুলিগুলো ঠিক আছে কি না, দেখার জন্য তিনি কড়াইয়ে রেখে ছেঁকা শুরু করেন।

আর তার জেরেই বিস্ফোরণ হয় পুলিশ শিবিরে।

আনন্দবাজার অনুসারে, সেই ঘটনায় পুলিশ শিবিরের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে কেউ হতাহত হননি। এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে, তা কারো ধারণাতেই ছিল না বলে পুলিশের সূত্রের দাবি।

মন্তব্য

জার্মানির শিল্প খাতে বাড়ছে চীনা প্রভাব, হুমকিতে কর্মসংস্থান-জিডিপি

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
জার্মানির শিল্প খাতে বাড়ছে চীনা প্রভাব, হুমকিতে কর্মসংস্থান-জিডিপি
জার্মান গাড়ি নির্মাতা অডির কারখানায় একজন কর্মী কাজ করছেন। ফাইল ছবি : এএফপি

জার্মানির শিল্প খাতে ক্রমাগত চীনের প্রভাব বাড়ছে। চীন শুধু জার্মানির ফোকসভাগেন, মার্সিডিজের মতো গাড়ির বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই থেমে থাকেনি। রাসায়নিক ও প্রকৌশল খাতেও বাড়ছে চীনের উপস্থিতি। সেন্টার ফর ইউরোপীয় রিফর্মের (সিইআর) একটি প্রতিবেদন বলছে, জার্মানির শিল্প কারখানার কাঠামো বেশ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।

যে কারণে আগামী পাঁচ বছরে শিল্প উৎপাদন কমে গিয়ে ৫৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান ও জিডিপির ২০ শতাংশ হুমকির মুখে পড়তে পারে।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর জার্মানি তার দীর্ঘদিনের মিত্র রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনে। যে কারণে রাসায়নিক ও ইস্পাতের মতো শিল্পের খরচ বেড়ে গিয়েছে। আর সেই অবস্থায় বাড়তি চাপ তৈরি করেছে চীনের ‘মেইড ইন চায়না ২০২৫’ কৌশল, যা চীনের স্বল্প মূল্যের উৎপাদন থেকে উচ্চ-প্রযুক্তি শিল্পে রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করেছে এবং সেটি জার্মানির মূল অর্থনৈতিক খাতের সঙ্গে সরাসরি প্রতিযোগিতা করছে।

শুরুতে জার্মানি চীনের অর্থনৈতিক উত্থানে প্রভাবিত হয়নি। কারণ তারা প্রযুক্তিগতভাবে নিম্ন প্রযুক্তির পণ্য উৎপাদনে সীমাবদ্ধ ছিল। তবে বেইজিংয়ের শিল্প নীতি যখন থেকে জার্মানির গুরুত্বপূর্ণ শিল্প, যেমন মোটরগাড়ি, ক্লিন টেকনোলজি ও যন্ত্র প্রকৌশলে সম্প্রসারিত হয়েছে, তখন থেকে দেশটির প্রভাব পড়া শুরু হয়েছে জার্মানিতে।

চীনের দ্রুত অগ্রগতি সবচেয়ে স্পষ্টতই অটোমোবাইল বা গাড়ির শিল্পে।

জার্মান গাড়ি নির্মাতারা বৈদ্যুতিক যানবাহনের দিকে ধীরগতিতে স্থানান্তরিত হওয়ার জন্য ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যাপক ছাঁটাই ও দেশীয় কারখানা বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে দেশটিতে।

জার্মানির যন্ত্র প্রকৌশল খাতেও এর প্রভাব পড়েছে। ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত শিল্প যন্ত্রপাতি রপ্তানির বৈশ্বিক বাজার কিছুটা হ্রাস পেলেও চীনে অর্ধেকেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে জার্মানিকে ছাড়িয়ে গেছে।

জার্মান শিল্পগুলোর মুখোমুখি হওয়া সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি হলো চীনের ব্যাপক ভর্তুকি। ২০১৯ সালে চীনের শিল্প ভর্তুকির পরিমাণ ছিল আনুমানিক ২২১ বিলিয়ন ইউরো, যার মধ্যে রাসায়নিক, যন্ত্রপাতি, মোটরগাড়ি ও ধাতু শিল্পগুলো সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছিল। ফলশ্রুতিতে চীনের নির্মাতারা কম খরচে উৎপাদন করতে পারছেন, যা জার্মান নির্মাতাদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন করে তুলেছে।

জার্মান মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানিগুলো চীনের প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে বেশ হিমশিম খাচ্ছে। কারণ চীন তাদের চেয়ে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কম দামে পণ্য সরবরাহ করতে পারে। চীনে জার্মান চেম্বার অব কমার্সের একটি জরিপে দেখা গেছে, অর্ধেকেরও বেশি জার্মান সংস্থা মনে করছে, চীনের কম্পানিগুলো পাঁচ বছরের মধ্যে বিশ্বে বেশ প্রভাবশালী হয়ে উঠবে।

তবে অর্থনীতিবিদরা জার্মানিকে পরামর্শ দিচ্ছেন, সব ক্ষেত্রে আধিপত্য পুনরুদ্ধারের চেষ্টার পরিবর্তে ওষুধ, জৈবপ্রযুক্তি ও জ্ঞানভিত্তিক শিল্পের মতো যেসব ক্ষেত্রে এখনো জার্মানির শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে সেগুলোতে মনোনিবেশ করা। এ ছাড়া ব্যাবসায়িক নেতা ও নীতিনির্ধারকদের বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্বিবেচনার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। কেউ কেউ যুক্তি দিচ্ছেন, ঝুঁকির মুখে থাকা শিল্পগুলোকে রক্ষা করার ওপর জার্মানির মনোযোগ উদ্ভাবনকে ধীর করে দিয়েছে।

এদিকে আগামী ১২ বছরে এক ট্রিলিয়ন ইউরোর প্রতিরক্ষা ও অবকাঠামো ব্যয় পরিকল্পনা জার্মানির অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সাহায্য করতে পারে। তবে উদ্বেগ রয়েছে, এই বিনিয়োগের একটি বড় অংশ উচ্চ-প্রবৃদ্ধির শিল্পকে উৎসাহিত করার পরিবর্তে সামরিক প্রকল্পগুলোতে ব্যয় হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ