কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগামী ২৮ এপ্রিল আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি মোকাবেলার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর জায়গায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা কার্নিকে বেছে নিয়েছিল কানাডার মধ্যপন্থী লিবারেল পার্টি। যদিও তিনি কখনো দেশটির জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি।
আগামী অক্টোবরে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তবে সেই নির্বাচন কয়েক মাস এগিয়ে আনার মধ্য দিয়ে তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, ট্রাম্পের ক্রমাগত হুমকি এবং বাণিজ্য যুদ্ধই হবে তাঁর প্রচারণার মূল বিষয়।
গতকাল রবিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে কার্নি বলেন, ‘আমি গভর্নর জেনারেলকে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার এবং আগামী ২৮ এপ্রিল নির্বাচন আয়োজনের অনুরোধ জানিয়েছি। তিনি সম্মতি দিয়েছেন।
’
কার্নি আরো বলেন, ‘ট্রাম্প আমাদের বিভক্ত করতে চান, যাতে আমেরিকা আমাদের মালিক হতে পারে। আমরা তা হতে দেব না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অযৌক্তিক বাণিজ্যিক পদক্ষেপ এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি তাঁর হুমকির কারণে আমরা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংকটের মুখোমুখি। আমাদের প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিত একটি শক্তিশালী অর্থনীতি এবং আরো নিরাপদ কানাডা গড়ে তোলা।
’
এক দশক ক্ষমতায় থাকা লিবারেল সরকারের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। কিন্তু দেশপ্রেমের ঢেউ তুলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে মুখিয়ে আছেন কার্নি।
কানাডার নির্বাচনে সাধারণত জীবনযাত্রার ব্যয় এবং অভিবাসনের মতো অভ্যন্তরীণ বিষয় প্রাধান্য পেয়ে থাকে। তবে এবার তালিকার শীর্ষে রয়েছে—কে ট্রাম্পকে ভালোভাবে মোকাবেলা করতে পারবেন।
ব্যাপক সমালোচনার মুখে ট্রুডো ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান।
এরপর বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির পিয়েরে পইলিভর আলোচনায় চলে আসেন। কয়েক সপ্তাহ আগেও জনমত জরিপে এগিয়ে ছিলেন তিনি। তবে লিবারেলদের ক্ষমতা নেওয়ার পর সেই ব্যবধান ঘুচিয়ে এনেছেন কার্নি।
সিবিসি নিউজ পোল ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত লিবারেল পার্টি ৩৭.৫ শতাংশ সমর্থন নিয়ে এগিয়েছিল। অন্যদিকে কনজারভেটিভদের প্রতি সমর্থন ছিল ৩৭.১ শতাংশ ভোটারের।
জগমিত সিংয়ের নেতৃত্বাধীন বামপন্থী নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রতি ১১.৬ শতাংশ ভোটারের সমর্থন রয়েছে।
দলগুলো কানাডার আইনসভার নিম্নকক্ষ হাউস অব কমনসের ৩৪৩টি আসনে লড়াই করবে। যে দল সবচেয়ে বেশি আসন পাবে তাদেরই সাধারণত সরকার গঠন করতে বলা হয়। আর ওই দলের নেতাই প্রধানমন্ত্রী হয়ে থাকেন। সূত্র : এএফপি, আলজাজিরা